কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ
বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের যেসকল দেশে বেশি কাজ করতে যায় কুয়েত তার মধ্যে অন্যতম। প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য কুয়েত সরকার বিভিন্ন ধরনের দিয়ে থাকে। প্রত্যেকটি বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট নাম্বার ও ক্যাটাগরি থাকে। কুয়েতের 18 নাম্বার ভিসাটি হচ্ছে কুয়েত আজাদী ভিসা। বাংলাদেশ কুয়েত আজাদী ভিসা ফ্রী ভিসা নামে অনেকেই চেনেন। অনেকেই ভালোভাবে না জেনে কুয়েতে গিয়ে বিপদে পড়েন। তাই আমাদের সাজেশন থাকবে যেকোনো ভিসা নিয়ে বিদেশ যাওয়ার আগে সে ভিসা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। বিশেষ করে কুয়েত আজাদ এ বিষয়ে কিছু অসুবিধা রয়েছে।
আজকে আমরা কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত। কুয়েত আজাদ ভিসা বেতন ও সুবিধা অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। আশা করছি আজকে ভাবছি ভালোভাবে পড়লে কোন বিষয় নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না।
কুয়েত আজাদী ভিসা কি
আজাদী আরবি শব্দ এর অর্থ হচ্ছে স্বাধীন বা মুক্ত। প্রবাসীদের জন্য কুয়েত সরকার সকল ধরনের ভিসা কে নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দিয়েছে কুয়েত সরকার। কুয়েতের ১৮ নাম্বার ক্যাটাগরির ভিসা টি হচ্ছে কুয়েত ফ্রি ভিসা অথবা কুয়েত আজাদী ভিসা। সাধারণ অন্যান্য বিষয়গুলো নির্দিষ্ট কোন কাজের জন্য ঠিক করে দেয়া। যেমন, কুয়েত ড্রাইভিং ভিসায় গিয়ে আপনি ড্রাইভিং এর কাজ করতে পারবেন, অথবা কুয়েত খাদেম ভিসায় গিয়ে আপনি কোন মালিক এর আন্ডারে তার বাড়িতে কাজ করতে পারবেন। তবে যদি এমন হয় কুয়েতে গিয়ে আপনি নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো ধরনের কাজ করতে চান সে ক্ষেত্রে কুয়েত আজাদী ভিসা বা কুয়েত ফ্রি ভিসা আপনার জন্য।
অর্থাৎ কুয়েত ভিসা হচ্ছে এমন এক বিশেষ ধরনের ভিসা জানি কোন কাজের জন্য ঠিক করে দেয়া নেই আপনি নিজের মত কোম্পানি পরিবর্তন করে যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন বৈধভাবে। যদিও সরকার এখন কিছু নিয়ম ঠিক করে দিয়েছেন এবং কুয়েতের অন্যান্য ভিসার তুলনায় কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ বেশি।
তাই কুয়েত আজাদী ভিসায় বিদেশ যাওয়ার আগে ভালোভাবে খবর নিয়ে যাবেন। যাতে কোনভাবে প্রতারিত হতে না হয়
কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত
অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চান আজাদী ভিসা খরচ কত। বর্তমানে কুয়েত ভিসার খরচ ১৫০০ কুয়েতি দিনার যা বাংলাদেশী টাকায় ৪ লক্ষ টাকার মত। অন্যান্য ভিসা চেক কুয়েত আজাদী ভিসার দাম সাধারণত একটু বেশি হয় কেননা এই বিষয়ে আপনি অনেক বেশি টাকা ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে এবং নিজের মতো করে কোম্পানি পরিবর্তনের সুবিধা পাবেন। সাধারণত কুয়েতের অন্যান্য বিষয়ে আপনি তিন লক্ষ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন কিন্তু কুয়েত আজাদী ভিসা নিতে গেলে আপনার চার লক্ষ টাকার উপরে লাগবে।
তবে বর্তমানে কুয়েত আজাদী ভিসার উপরে সরকার অনেক রকমের বিধি-নিষেধ ঠিক করে দিয়েছেন। যেমন আগে সহজে কোম্পানির পরিবর্তন করা যেত তবে এখন ফ্রি ভিসার নির্দিষ্ট একটি কোম্পানির আন্ডারে কাজ করা লাগে। অর্থাৎ আপনি কুয়েত যাওয়ার আগে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির সাথে চুক্তি করে ফ্রি ভিসায় যেতে হবে। তাই কুয়েত আজাদী ভিসায় যাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে খবর নিন।
কুয়েত আজাদী ভিসা বেতন
কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত এই প্রশ্নটা সবার মনে আসে। কুয়েতের প্রবাসী শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৬০ কুয়েতি দিনার বাংলাদেশের প্রায় ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ কুয়েতে আপনি যেকোন ধরনের কাজই করেন না কেন আপনি কি মাসে সর্বনিম্ন 20 হাজার টাকা ইনকাম করবেন। তবে ফ্রি ভিসায় গেলে মূল বেতনের বাইরে অতিরিক্ত কাজ করে আইয়ের সুযোগ রয়েছে।বাংলাদেশীরা সাধারনত কুয়েত আজাদী ভিসায় ২০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করে থাকে।
সাধারণত আজাদী ভিসা বা ফ্রি ভিসা হচ্ছে আপনি কোন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ না হয়ে নিজের ইচ্ছা মত কাজ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি টাকা ইনকামের সুযোগ ছিল। তবে ঘটনার পর থেকে কুয়েত আজাদের সাথে এখন আগের মত যে কোন কোম্পানির সাথে কাজ করতে দেয় না। আপনাকে দেশে থাকতে ইচ্ছে কোন একটি কোম্পানির মাধ্যমে কুয়েত যেতে হবে।
কুয়েত আজাদী ভিসা আবেদনের নিয়ম
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। পাসপোর্ট না থাকলে খুব বর্তমানে খুব সহজেই অনলাইনে পাসপোর্ট করতে পারবেন।
- আপনার পাসপোর্ট বইয়ে কমপক্ষে ২ টি খালি পাতা থাকতে হবে।
- পূর্বের কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলে তা প্রমানের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হবে।
- আপনার সদ্য তোলা রঙ্গিন ৫ কপি রঙিন ছবি লাগবে। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা: আবেদনের সময় মেডিকেল রিপোর্ট দেখাতে হবে। মেডিকেল রিপোর্ট নেয়ার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এই রিপোর্ট অবশ্যই স্বিকৃত কোন মেডিকেল থেকে হতে হবে। অনলাইনে মেডিকেল রিপোর্ট চেক করার নিয়ম জানতে এই পোষ্টটি পড়ুন।
- জন্ম নিবদ্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দেখাতে হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ দেখাতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমানের সার্টিফিকেট। সর্বশেষ পাশ করা পাবলিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি দেখাতে হবে।
উপরে আমরা কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত। কুয়েত আজাদ ভিসা বেতন নিয়ে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ নিয়ে আপনাদের আর কোন প্রশ্ন নেই। এখন আমরা কুয়েত আজাদী ভিসা বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করব।
আরো পড়ুন – সৌদি আরব ভিসা ওকালা চেক – ভিসার ওকালা চেক করার নিয়ম
কুয়েত আজাদী ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা
সব ভিসার মত কুয়েত আজাদী ভিসার ও কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। যারা নিজের মতো রিস্ক নিয়ে কাজ করতে চান তাদের জন্য এটি অনেক ভালো। তবে ২০২০ সালে করোনার পর থেকে কুয়েত সরকার আজাদী ভিসার উপর অনেক কড়া করে নিয়ম আরোপ করেছেন। তাই বর্তমানে কুয়েত আজাদী ভিসায় সুবিধা-অসুবিধা একটু বেশি।
সুবিধা সমূহ
- কুয়েত আজাদী ভিসায় কপিল অর্থাৎ মালিক পরিবর্তন করা তুলনামূলক সহজ।
- কাজের বেতন সাধারণত বেশি হয়
- ওভারটাইম এবং অতিরিক্ত চাকরি করার সুযোগ থাকে।
- দেশে আসার সময় লম্বা ছুটি নেয়া যায়
অসুবিধাসমূহ
- কুয়েতের অন্যায় ভিসার তুলনায়কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ একটুবেশি। সাধারণত অন্যান্য ভিসা ৩৩ লক্ষ টাকার মধ্যে পেয়ে গেলেও আজাদী ভিসা নিতে গেলে প্রায় ৪ লক্ষ টাকার মতো খরচ করতে হবে।
- ভিসার মেয়াদ শেষে আকামা নিজেই করতে হবে।
- কাজ করতে গিয়ে কোন পুলিশি ঝামেলায় পড়লে সাপোর্ট দেয়ার মতো লোক থাকবে না।
- চাকরির স্থায়িত্ব থাকেনা। যেকোনো সময় কাজ চলে যেতে পারে
কুয়েত আজাদী ভিসায় যাওয়া উচিত কিনা
উপরে আমরা কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত। কুয়েত আজাদ ভিসা বেতন ও সুবিধা অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আশা করি আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কুয়েত আজাদী ভিসায় যাওয়া উচিত কিনা। তবে যদি আমাদের সাজেশন জানতে চান সেক্ষেত্রে আমরা বলব যদি সম্ভব হয় আপাতত কুয়েত আজাদী ভিসায় না যাওয়াই ভালো। কেননা ২০২০ সালে করোনার পর থেকে কুয়েত সরকার আজাদী ভিসার উপর অনেক কড়া নিয়মকানুন আরোপ করেছে।
কোন সমস্যার কারণে যদি একবার পুলিশের ঝামেলায় পড়েন তাহলে আজীবনের জন্য কুয়েতে আপনাকে ঢুকতে দেবেনা। তাই আজাদী ভিসায় যাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে খবর নিন আপনি কি ধরনের কোম্পানিতে কাজ করতে যাচ্ছেন।
আরো পড়ুন – দুবাই ভিজিট ভিসা কবে খুলবে । দুবাই ভিজিট ভিসা কত টাকা [নতুন আপডেট]
কুয়েত আজাদ ভিসা আপডেট
অনেকেই আমাদের কাছে কুয়েত আজাদী ভিসা আপডেট জানতে চেয়েছেন। গ্রুপে করোনাকালীন সময় আজাদের বিষয়ক নেয়া বন্ধ ছিল। তবে .২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কুয়েত সরকার পুনরায় আজাদী ভিসায় লোক নেয়া শুরু করেছেন। তবে ঘটনার পর থেকে লোক নেয়া অনেক কমে গেছে এবং বর্তমানে আজাদী পেপার অনেক করার নিয়ম কারণ দেয়া হচ্ছে। যেমন আপনি চাইলেই কোম্পানি পরিবর্তন করতে পারবেন না এবং যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন না। আপনাকে নির্দিষ্ট একটি কোম্পানির আন্ডারে কাজ করতে হবে।
এছাড়া পূর্বের তুলনায় কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ প্রায় ৪ লক্ষ টাকার উপরে। তাই কুয়েত আজাদী ভিসায় যাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে খবর নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় প্রতারণার স্বীকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত
উপরে আমরা কুয়েতের ভিসা খরচ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যেমনটা আমরা বলেছি কুয়েতের অন্যান্য ভিসার তুলনায় কুয়েত আজাদী ভিসার খরচ তুলনামূলক বেশি। তাছাড়া বাংলাদেশের অনেক দালাল আছে যারা ফ্রি ভিসার কথা বলে নিম্নমানের ভিসা ধরেই আপনাকে বিদেশ পাঠায়। তাই বিছানায় সময় দালাল থেকে সাবধান থাকবেন এবং ভালোভাবে খবর নিয়ে তারপর বিদেশ যাবেন।
বর্তমানে ফেইসবুক কাতার প্রবাসীদের অনেক গ্রুপ আছে যারা আপনাকে ভিসা সম্বন্ধে তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে। প্রয়োজনে ফেসবুক গ্রুপের সাহায্যে ভিসা নিয়ে ভালোভাবে খবর নেই। পরবর্তী ব্লগ পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
আরো পড়ুন –
- সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা 2022 (নতুন আপডেট)
- কুয়েত খাদেম ভিসা বেতন কত – খাদেম ভিসা আবেদনের নিয়ম ও খরচ