ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ – আবেদনের নিয়ম যোগ্যতা

ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ – আবেদনের নিয়ম যোগ্যতা

আধুনিক যুগে ঘরে বসে স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে সহজেই জানা যায় এবং অনলাইনে আবেদন করা যায়। আজকে আমরা ইউরোপের স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম যোগ্যতা সহ বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। আশা করছি দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া স্টুডেন্টদের জন্য আর্টিকেলটি অনেক কাজে লাগবে। তাই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার পরামর্শ রইলো।

ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩

ইউরোপের বড় বড় দেশগুলোর স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া কিছুটা জটিল। তবে যদি মেধাবী কোন ছাত্র-ছাত্রী এবং পড়াশোনা করার তীব্র ইচ্ছা থাকে তাহলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইউরোপের স্টুডেন্ট ভিসা এর মাধ্যমে যাওয়া যায়। এতে করে কোন ঝামেলা ছাড়াই ইউরোপে পড়াশোনা করার জন্য যাওয়া যায়।

স্টুডেন্ট ভিসার সবচেয়ে সুবিধা হল ভিসার মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যায়। এছাড়া ইউরোপে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে গিয়ে সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা হওয়া যায়। সেখানে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পত্তি ব্যবসা বা টাকা থাকলে ইউরোপের গ্রীন কার্ড ও পাওয়া যায়। তবে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হয়। ভালো ইংরেজি না জানলে ইউরোপের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায় না।

আরো পড়ুন – কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়

ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসার বিবরণ

ভিসার ধরনের উপর নির্ভর করে ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা কে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রত্যিকটি ভিসার কিছু আলাদা সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তাই ভিসা আবেদনের পূর্বে ভালো ধারনা রাখা প্রয়োজন।

ইউরোপ F1 ভিসা কি?

এটি হল সব থেকে প্রচলিত স্টুডেন্ট ভিসা। যদি যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপের কোন বিশ্ববিদ্যালয় যেমন যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদিত কলেজের বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ইত্যাদিতে প্রথাগত শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় বা ইংরেজি ভাষা বা ইংরেজি প্রোগ্রাম গ্রহণ করতে চায় তাহলে এফ ওয়ান প্রয়োজন হবে। হাত যেখানে সপ্তাহে ১৮ ঘণ্টার অধিক পড়াশোনার প্রয়োজন হয় সেখানে এরফান ভিসার প্রয়োজন হ

M1 ভিসা বস্তারিত

যদি কোন স্টুডেন্ট ইউএস প্রতিষ্ঠানে ও চিরাচরিত বা পেশাগত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করে তাহলে তার জন্য m1 ভিসা প্রয়োজন হবে। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে এবংইউরোপে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে ইউরোপের বিভিন্ন স্কুলের ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইটে ভিজিট করে দেখা যাবে।

আরো পড়ুন – উচ্চশিক্ষার জন্য কোন দেশ ভালো

ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা

  • প্রথম শর্ত হল আইইএলটিএস কোর্স নাম্বার ভালো থাকতে হবে
  • ইংরেজি ভাষার প্রতি দক্ষতা না থাকলে দক্ষতা অর্জন করতে হবে
  • এসএসসি এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট থাকতে হবে
  • একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের সনদ থাকতে হবে
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশংসাপত্র থাকতে হবে
  • কোন প্রকার মামলা বা অপরাধ করবে সাথে জড়িত থাকা যাবে
  • না শারীরিক মানসিক সুস্থতার জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে
  • কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একসেপটেড হলে তারা এফ ওয়ান ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে

ইউরোপ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • যদি এফ অথবা এম ভিসার জন্য আবেদন করা করতে চায় তাহলে নিচের নিয়মে জমা দিতে হবে-
  • একটি নন ইমিগ্রেট ভিসা ইলেকট্রনিক আবেদন পত্র ফরম
  • ইউরোপে যাত্রা করার জন্য একটি বৈধ পাসপোর্ট যার বৈধতার মেয়াদ অন্ততপক্ষে ইউরোপের দেশগুলো পরিকল্পিত ভ্রমণের সময়ের পর ছয় মাস স্থায়ী হবে
  • যদি পাসপোর্টে একাধিক ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে তাহলে যারা ভিসা চাইছে তাদের প্রত্যেককে আবেদন পত্র জমা দিতে হবে এবং তাদের নিজস্ব পাসপোর্ট থাকতে হবে
  • গত ছয় মাসের মধ্যে তোলা ২*২ (৫”) ছবি দিতে হবে
  • অন অধিবাসী ভিসা প্রক্রিয়ার অফ ফেরত যোগ্য
  • ফি ইউ এস ডলার ১৬০ এর সমপরিমাণ যা স্থানীয় মুদ্রা প্রদান করা হয়েছে তার একটি রশিদ
  • স্টুডেন্ট এ জাতীয়তার উপর নির্ভর করে একটি অতিরিক্ত ভিসা ইন্সুরেন্স
  • বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রোগ্রামের থেকে নেওয়া একটি অনুমোদিত ফরম
  • অফার letter
  • cv বা জীবন বৃত্তান্ত বা মোটিভেশন লেটার
  • সকল সার্টিফিকেট এবং
  • মার্কশিট
  • আইইএল টিএস কপি
  • ব্যাংক সলভেন্সি ডকুমেন্ট
  • টিউশন ফি পেমেন্টের কপি
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট

ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম

  • প্রথমে নন ইমিগ্রান্ট ভিসা ইলেকট্রনিক আবেদন পত্র ফরমটি পূরণ করতে হবে ভিসা আবেদন পত্র প্রক্রিয়ার ফি প্রদান করতে হবে
  • ওয়েব পেজে সাক্ষাৎকারের দিনটি নির্ধারণ করতে হবে এবং সাক্ষাৎকার দিনটি নির্ধারণ করতে নিচের তথ্যগুলোর প্রয়োজন হবে-
  • ব্যক্তির পাসপোর্ট নাম্বার
  • ভিসা ফির রশিদ থেকে প্রাপ্ত নম্বর
  • ds160 কনফার্মেশন পেজে উল্লেখিত ১০ সংখ্যার বারকোড নাম্বার
  • আপনার ভিসা-সাক্ষাৎকারের তারিখ ও সময়ে ইউ এস ইউরোপ দূতাবাস বা কনস্যুলেটর দেখা করতে হবে
  • আপনাকে অবশ্যই আপনার সাক্ষাৎকারের চিঠির একটি প্রিন্ট কপি আনতে হবে
  • গত ছয় মাসের তোলা একটি ছবি এবং
  • বর্তমানে এবং সমস্ত পুরন পাসপোর্ট সাথে আনতে হবে

ইউরোপের স্টুডেন্ট ভিসা খরচ

ইউরোপে যেতে কত টাকা লাগবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান তার ওপর। তবে স্টুডেন্ট ভিসা অন্যান্য ভিসার চাইতে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হয়। ইউরোপীয় কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে সেটা যাচাই বাছাই করার জন্য একটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট আছে। তবে সর্বনিম্ন দেড় লাখ থেকে শুরু করে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

https://www.vfsglobal.com/en/individuals/index.html ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রবেশ করে কোন ভিসার দাম কত তা জানতে পারা যায় এছাড়াও ভিসার বিভিন্ন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করা যায়।এবং কোন ভিসা বর্তমানে বন্ধ আছে, কোন দেশে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট বন্ধ সেসব সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানা যায়।

ভিসার জন্য ব্যাংক একাউন্ট সলভেন্সি

  • নরয়ের ক্ষেত্রে টাকার পরিমান ১২ হাজার ৫০০ ইউরো অর্থাৎ ১৩ লক্ষ টাকা
  • আমেরিকা ১০ লক্ষ টাকা
  • কানাডা ৮ লাখ টাকা
  • ব্রিটেনের ক্ষেত্রে ১০ হাজার পাউন্ড বা ১২ লক্ষ টাকা
  • সুইডেন এর ক্ষেত্রে ৮৭৫০০ বা সাড়ে দশ লক্ষ টাকা
  • ফিনল্যান্ডের ক্ষেত্রে ৬৭২০ ইউরো বা ৬ লক্ষ টাকা
  • আয়ারল্যান্ডের ক্ষেত্রে ৮ হাজার ইউরো আট লক্ষ টাকা
  • অস্ট্রিয়ারের ক্ষেত্রে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা
  • পোল্যান্ড ৫৫০০ ইউএসডি প্রায় ৪ লক্ষ টাকা লাগবে
  • লাটভিয়া লিথুয়া নিয়া এস্তোনিয়া ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫০০০ ইউরো
  • ইতালির ক্ষেত্রে ৭ লক্ষ টাকা
  • বেলজিয়াম নেদারল্যান্ড এর ক্ষেত্রে ৭৫০০ ইউরো
  • পর্তুগালের জন্য ৫ হাজার ইউরো বা ৫ লক্ষ টাকা
  • স্পেনের ক্ষেত্রে ছয় লক্ষ টাকা
  • রোমানিয়া বুলগেরিয়ে ক্ষেত্রে ৪ লক্ষ টাকা
  • সাইপ্রাসের ক্ষেত্রে ৫ হাজার ইউরো বা ৫ লক্ষ টাকা

পরামর্শ

  • সঠিকভাবে ভিসা ফর্ম পূরণ করতে হবে
  • ভিসা প্রতিটি উত্তর যথাযথ উত্তর দিতে হবে
  • ভিসা ইন্টারভিউয়ের দিন সঙ্গে সমস্ত ডকুমেন্ট রাখতে হবে
  • ইন্টারভিউ এর সময় কনফিডেন্ট এবং নম্র থাকতে হবে
  • আপনার কোর্স স্কলারশিপ স্পন্সার সিট ইত্যাদি সম্পর্কে ভালো হয়ে তৈরি হয়ে যেতে হবে যিনি ইন্টারভিউ নেবেন তিনি দেখবেন

ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা

মন্তব্য

আজকে আমরা ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ – আবেদনের নিয়ম যোগ্যতা ও এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। ইউরোপ স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ – আবেদনের নিয়ম যোগ্যতা সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপলাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply