আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
উচ্চশিক্ষা যাদের স্বপ্ন আমেরিকা তাদের প্রধান গন্তব্যস্থলে পরিনত হয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ তরুন উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে কিন্তু সঠিক নিয়ম না জানার কারনে বেশিরভাগের ই ভিস ক্যান্সেল হয়ে যায়। আজকে আমরা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ ও আবেদনের নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করছি আজকের ব্লগটি ভালো ভাবে পড়লে আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না। সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা ধরন
আমেরিকা সাধারনত বিদেশী ছাত্রদের কয়েক ধরনের ভিসা প্রদান করে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন ভিসা আবেদনের নিয়ম ও খরচ ভিন্ন। তাই ভিসা আবেদনের পূর্বে চলুন আমরা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার ধরন সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে আসি।
f-1 ভিসা: বাইরে থেকে যেসব ছাত্ররা আমেরিকা পড়তে আসে তারা মূলত এই f-1 ভিসা নিয়েই পড়তে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত শিক্ষা গ্রহন করতে অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কিংবা প্রাইভেট বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা নিতে হলে বিদেশী ছাত্ররা এই f-1 ভিসা নিয়ে পড়তে আসতে হবে। এছাড়া আপনি যদি অন্য কোন ধরনের শিক্ষা নিতে আসেন আর আপনার ক্লাসের পরিমান যদি সপ্তাহে ১৮ ঘন্টার বেশি হয় তাহলেও আপনাকে আই f-1 ভিসা বা রেগুলার স্টুডেন্ট ভিসা নিয়েই যুক্ত্রাষ্ট্রে যেতে হবে। বাংলাদেশ থেকে সাধারনত ছাত্ররা এই ভিসা নিয়েই আমেরিকা পড়তে যায়।
M-1 ভিসা: এই ভিসা মূলত প্রোফেশনালদের জন্য। আপনি এই ভিসার আন্ডারে আপনি রেগুলার ডিগ্রি নিতে পারবেন না বরং বিভিন্ন স্পেশালাইজড ও প্রোফেশনাল ডিগ্রি নিতে হলে এই ভিসার মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এই ভিসা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম
সাধারনত বাংলাদেশ থেকে যত ছাত্র যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যায় বেশিরভাগ ই স্কলারশীপ নিয়ে পড়তে যায়। কারন আমেরিকায় লিভিং কস্ট অনেক বেশি ও টিউশন ফি ও অত্যাধিক। এছাড়াও বিদেশী ছাত্ররা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে যাওয়ার সময় ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হয়। তাই আজকে আমাদের আলোচনা হবে মূল স্কালারশীপ নিয়ে পড়তে যাওয়ার খরচ ও নিয়ম সম্পর্কে। ইউএসএ এম্বাসির পরামর্শ অনুযায়ী স্কলারশীপের জন্য সাধারনত ৭/৮ টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা উচিত। সাধারনত আবেদনের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার কনফারমেশন লেটার চলে আসে ছাত্রের কাছে। কনফারমেশন লেটার চলে আসলে এবাসি তে দেখিয়ে ভিসা আবেদনের বাকি কাজ খুব দ্রুত ই করে ফেলা যায়।
ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
এতক্ষন আমরা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আলোচনা পড়ছিলাম এখন আমরা জানবো আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস। যেহেতু সাধারনত আমাদের দেশ থেকে অনার্স বা মাস্টার্স সমমান ডিগ্রির জন্য স্টুডেন্টরা আমেরিকা যায় আজকে আমরা সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমানের সনদ। (উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা অনার্স সার্টিফিকেট)
- IELTS/ TOFEL সার্টিফিকেট। অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে IELTS/ TOFEL না থাকলেও সমস্যা হয় না কারন এটা এম্বাসির আরোপিত কোন শর্ত নয় বরং ইউনিভার্সিটির শর্ত। তাই আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করছেন সেখানে IELTS/ TOFEL চাচ্ছে কি না তার উপর নির্ভর করবে সার্টিফিকেট লাগবে কি না।
- স্কলারশীপের ক্ষেত্রে অনার্সের রেজাল্ট বা IELTS এর রেজাল্ট খুবই হেল্পফুল হিসেবে কাজ করে। যাদের IELTS এ ৬.৫ রেজাল্ট থাকে তারা সহজেই ভালো ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স এর সুযোগ পেয়ে যান সাথে স্কলারশীপ পাওয়ার চান্স ও অনেক বেশি থাকে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট: স্টুডেন্টভিসায় পড়তে যাওয়ার সবচেয়ে বড় একটি বাধা হচ্ছে আপনার নিজের অথবা আপনার বাবা, মায়ের ব্যাংক একাউন্টে ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা জমা দেখাতে হবে। যেহেতু আমেরিকায় লিভিং কস্ট অনেক বেশি তাই এই ব্যাংক স্টেট্মেন্ট দেখানোর মাধ্যমে এম্বাসি নিশ্চিত হবে আপনি সে দেশে গিয়ে নিজের লিভিং কস্ট চালানোর মত ক্ষমতা আছে।
- টিউশন ফি: যদি ১০০% স্কলারশীপ হয় তাহলে আপনার টিউশন ফি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তবে ১০০% স্কলারশীপ না হলে ভিসা আবেদনের সময় প্রথম সেমিস্টারের সময় টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস হচ্ছে কমন। অর্থাৎ আপনি যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান না কেনো আপনার এই ডকুমেন্টস গুলো লাগবেই। এছাড়াও প্রতিষ্ঠান ও স্ক্লারশীপের ধরন ভেদে কাগজপত্র আরো কম বেশি লাগতে পারে। তাই ভিসা আবেদনের পূর্বে কনফার্ম হয়ে নিন আপনার কি কি কাগজপত্র লাগবে।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কিছুটা নির্ভর করে স্কলারশীপের ধরন ও প্রতিষ্ঠানের ধরনের উপরে। তবুও আমরা একটা সাধারন ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কেমন পড়তে পারে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন: সাধারনত বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন এখন সম্পূর্ন অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে অর্থাৎ আপনি চাইলে নিজে ঘরে বসেই ফ্রি তে আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সিলেক্ট হয়ে থাকেন তাহলে তারা সাধারনত ২৮ দিনের মধ্যে কনফার্মেশন লেটার পাঠাবে আর এর জন্য আপনার খরচ হবে $400 থেকে $500
- কনফার্মেশন লেটার হাতে আসার পর আপনাকে সার্ভিসা চার্জ দিতে হবে $250
- এম্বাসি ফি $180 দিতে হবে।
- অর্থাৎ আপনার সব মিলিয়ে ভিসা ও আবেদন সহ খরচ পড়বে $880 থেকে $900 যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত।
আমেরিকা ভিসা চেক করার নিয়ম
অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ভিসা চেক করার প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ ভিসাটির বর্তমান অবস্থা, অনলাইনে এসেছে কি না, অথবা ভিসাটি সঠিক কি না এইরকম অনেক তথ্য চেক করার প্রয়োজন পড়তে পারে। বর্তমানে ভিসা চেক করতে আর পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয় না। খুব সহজেই নিজের পারপোর্ট নাম্বার দিয়ে ঘরে বসেই আমেরিকা ভিসা চেক করতে পারেন।
ভিসা চেক করতে নিচের বাটনে ক্লিক করুন। তারপর প্রয়োজনীয় তথ্য ও ক্যাপচা কোড পূরন করে আপনার ভিসার বর্তমান অবস্থা দেখে নিন খুব সহজে।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা: মাসিক খরচ ও পার্ট টাইম জব
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ যেহতু একটু বেশি তাই সাধারনত ছাত্ররা পড়তে গেলে সবার প্রথমে চিন্তা থাকে পার্ট টাইম জব করে নিজের লিভিং কস্ট ম্যানেজ করার। কিন্তু আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় পড়তে গেলে প্রথম বছর কোন জব করতে পারবেন না। এরপর চাইলে বিভিন্ন শরনের পার্ট টাইম জব করতে পারেন ঘন্টা $15 থেকে $20 করে। সাধারনত পড়াশুনার পাশাপাশি আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা ও সামার ভেকেশনে ফুলটাইম কাজের সুযোগ পাবেন।
চাকুরি ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
পড়াশুনা শেষ করার পর আপনি ৬ মাস সময় পাবেন চাকুরি খুজে নেয়ার। এই ৬ মাসের মধ্যে চাকুরি ব্যবস্থা হয়ে গেলে আপনাকে টানা ২ বছর চাকুরি করতে হবে TRP (Temporary Resident Permit) এর মাধ্যমে। এর পর আপনি স্থায়ীভাবে চাকুরির আবেদনের সুযোগ পাবেন। তাছাড়া আপনি যদি টানা ১০ বছর আমেরিকায় থাকেন এরপর স্থায়ীভাবে নাগরিকত্ত্বের জন্য আবেদন করতে পারেবেন।
লিথুনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম, খরচ
সতর্কতা
যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া হাজার হাজার তরুনের স্বপ্ন এবং প্রতিবছর হাজার হাজার ছাত্র আবেদন করে তাদের স্বপ্নের দেশের যাওয়ার জন্য। এই সুযোগে একদল দালাল চক্র ভিসা দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা লুপে নেয় ছাত্রদের কাছ থেকে। তাই ভিসা আবেদনের পূর্বে দালাল এজেন্সিগুলো থেকে সাবধান থাকতে হবে। ধন্যবাদ
আচ্ছা ভাইয়া বা স্যার, আমি আমেরিকায় যেতে ইচ্ছু। কিন্তু অনেকে বলে যে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা লাগে এটার মানে কি? ইউনিভার্সিটি টিউশন ফিজি বাংলাদেশ থেকে দিতে হবে নাকি ওইখানে ইনকাম করে তারপর ওদেরকে প্রতি মাসে দিতে হবে এটা যদি আমাকে ইমেইল করে যদি বলতেন তাহলে আমার জন্য অনেক ভালো হতো? আর বাংলাদেশ থেকে গেলে কত টাকা লাগবে এবং ওইখানে থাকলে কত টাকা খরচ হবে বা কত টাকা ইনকাম হবে এটার একটা লিস্ট তৈরি করে আমাকে ইমেইলে পাঠান। প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ
স্কলারশীপ মানে হচ্ছে আপনার টিউশন ফি দিতে হবে না। অর্থাৎ আপনি পড়াশুনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন খরচ দিতে হবে না কিন্তু আপনার থাকা খাওয়া সহ সব খরচ নিজে দিতে হবে। তাই আপনি আমেরিকা গিয়ে নিজের খরচ চালাতে পারবেন সেটা প্রমান করার জন্য ব্যাংকে ২০ লাখের মত জমানো টাকা দেখাতে হয়। যদিও ওই দেশে গিয়ে নিজেই পড়াশুনার পাশাপাশি কাজ করে খুব সহজেই নিজের খরচ চালাতে পারবেন।
আপনারা কি USA স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রসেসিং করেন?
না। আমরা ভিসা প্রোসেসিং এর কাজ করি না।
Congratulations on the content. Interesting.. 15742766