টিউমার ভালো করার ঔষধ

টিউমার ভালো করার ঔষধ

বর্তমান সময়ে জটিল রোগ গুলোর মধ্যে টিউমার অন্যতম। সঠিক সময়ে টিউমার এর সার্জারি না করলে অথবা টিউমার নিরাময়ের জন্য ঔষধ সেবন না করলে এর কারনে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। আজকে আমরা টিউমার কি এবং টিউমার ভালো করার ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আর্টিকেল স্কিপ না করে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।

আরো পড়ুন – মেয়েদের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভালো ডে ক্রিম কোনটি

টিউমার কি?

সাধারণত মানুষের শরীর অনেকগুলো কোষ তারা গঠিত। মানুষের শরীরে এই কোষ গুলোর অস্বাভাবিক বা অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিকে ডাক্তারের পরিভাষ্য মতে টিউমার বলা হয়ে থাকে। টিউমার সারা শরীর জুড়েই তৈরি হতে পারে। তারা টিস্যু গ্রন্থী এবং অঙ্গ কে প্রভা্বিত করতে পারে। টিউমারের আরেকটি শব্দ হলো নিউ প্লাজম।

টিউমারের ধরন

টিউমার ভালো করার ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করার পূর্বে টিউমারের ধরন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। এতে করে রোগ সনাক্ত করা সহজ হয়। টিউমার প্রধানত তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন-

বিনাইন টিউমার- এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং ছড়িয়ে পড়তে পারে না। এ ধরনের টিউমার গুলো বেশ ধীরে ধীরেই বাড়তে থাকে। কেউ খুব সহজেই সার্জারি মাধ্যমে শরীর থেকে টিউমার অপসারণ করতে পারে এবং সাধারণত এসব টিউমার অপারেশন করার পর শরীরে আর ফিরে আসে না।

প্রিমেলিগন্যান্ট টিউমার- এ ধরনের টিউমারে কোষগুলো এখনো ক্ষতিকর বা ক্যান্সার যুক্ত নয় বলে জানা গেছে। তবে যেকোনো সময় ক্যান্সারে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এসব টিউমার কেও ঔষধ বা সার্জারি মাধ্যমে নিরাময় করে ফেলা উচিত।

ম্যালিগমেন‍্যান্ট টিউমার- এ ধরনের টিউমার গুলো সাধারণত ক্যান্সারের রোগ ধরা হয়। ম্যালিগমেন্যান্ট টিউমারে সাধারণত কোষগুলো তুলনামূলকভাবে দ্রুত বাড়তে থাকে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এবং শরীরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করে। তাই টিউমারকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়।

টিউমার হওয়ার কারণ

  • সাধারণত আমাদের শরীরের কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিদিন অসংখ্য কোষ মারা গিয়ে শরীর থেকে ঝরে যায় এবং সেখানে নতুন নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। কোষের এই মৃত্যু এবং সৃষ্টি বা বৃদ্ধির ভাষা ও বিঘ্নিত হলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় টিউমার তৈরি হতে দেখা যায়।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় টিউমার হতে পারে
  • অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করা
  • বেনজিন এবং অন্যান্য রাসায়নিক এবং বিষাক্ত পদার্থ সংক্রমণ
  • পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থ যেমন- বিষাক্ত মাসুম আখলাক টক্সিন নামক বা চিনা বাদাম গাছে জন্মায়
  • অত্যাধিক সূর্যালোক
  • জেনেটিক সমস্যার কারনে
  • রেডিয়েশন
  • বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ

টিউমার কি ঔষধে ভালো হয়

টিউমারের বেশ কিছু ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে। ম্যালিগমেন‍্যান্ট টিউমার সাধারনত হোমিও ঔষধের মাধ্যমে ভালো হয়। তবে অপারেশন ব্যতিত শুধুমাত্র ঔষধের টিউমার ভালো হতে বেশ সময় লাগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২/ ৩ মাসের মত সময় লাগতে পারে। তবে কেউ যদি কোন সাইড ইফেক্ট ব্যতীত সময় নিয়ে টিউমার থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে হোমিও ঔষধ সেবন করতে পারেন।

টিউমারের বিভিন্ন ঔষধ

সাধারণত শরীরে টিউমার কোথায় হয়েছে তার ওপর ডিপেন্ড করে ঔষধ ডাক্তাররা সাজেস্ট করে থাকেন এবং টিউমার ঔষধের নিরাময় হবে কিনা তার টিউমারের অবস্থা এবং স্টেজ এর উপর নির্ভর করে। তবে বাজারে কিছু টিউমার দূর করনে প্রসিদ্ধ ঔষধ পাওয়া যায়। তবে ডাক্তারি পরামর্শ ব্যতীত কোন ঔষধই সেবন করা উচিত নয়। আজকে আমরা সেসব কিছু ঔষধের নাম বিস্তারিত আলোচনা করব।

Nublexa 40mg Tablet 

মূলত ক্যান্সার যুক্ত রোগ গুলিকে দমন করার জন্য এই ঔষধটি ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধের প্রধান কাজ হল টিউমারে ক্যান্সার কোষগুলিকে ও প্রোটিন গুলিকে বাধা দেওয়া যা কোষগুলির বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। ফলে এটি ক্যান্সার নিরাময়কারী হিসেবে অপরিচিত। এই ঔষধ একাধিক ধরনের টিউমারের জন্য সম্ভাব্য নিরাময়কারী এজেন্ট হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

এটি গ্যাস্ট্রোইন টেস্ট আয়নাল সোমাল টিউমার রোগীদের মধ্যে বেশি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া কলোরেক্টাল ক্যান্সারে ক্ষেত্রেও এই ঔষধটি ডাক্তাররা সাজেস্ট করে থাকেন। এটি সাধারণত দিনে একবার গ্রহণ করতে হয় এবং ৩ সপ্তাহ প্রতিদিন সেবন করতে হয়।

টিউমারের হোমিও ঔষধ

টিউমার চিকিৎসার জন্য হোমিও ঔষধ খুব বেশি জনপ্রিয়। সাধারণত হোমিও ঔষধ খেলে টিউমার একেবারে চলে যায়। তবে হোমিও ওষুধের কার্যকারিতা শুরু হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। অপরদিকে এলোপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করলে অথবা সার্জারি করলে একই জায়গায় বারবার টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিচে কিছু হোমিও ঔষধের নাম বলা হলো-

থুজা- হোমিও ঔষধর মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয় থুজা। এই ঔষধ নাকের ভিতরে বা কানের ভিতরে টিউমার হলে ওই ঔষধটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। এটি শরীরে খুব দ্রুত কাজ করে এবং টিউমার নিরাময়ের সহায়তা করে।

কোনিয়াম- টিউমার ভালো করার ঔষধ সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই হোমিও চিকিৎসার ঔষধ কনিয়াম ট্রাই করা উত্তম। এটি টিউমারের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত হয়। কোনিয়াম ওষধ শরীরের যেকোনো জায়গায় যেমন- পেটে, স্তনে টিউমার হলে সেবন করলে তাড়াতাড়ি সেরে যায়।

বেড়াইটাকার- এই ঔষধ মূলত নরম টিউমারে চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ যদি শিশুদের মাথায় টিউমার হয়ে থাকে ঔষধটি তখন ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধটি শিশুদের টিউমারের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাছাড়াও শরীরের চামড়ার উপরের টিউমার গুলো নরম হয় সেক্ষেত্রে মাংসের সাথে টিউমার না হলে এই ঔষধ সেবন করা যায়।

গ্রাফাইটস- যদি কারো চোখের পাতায় টিউমার হয়ে থাকে তাহলে এই ঔষধটি খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। চোখের পাতা টিউমারের জন্য হোমিও ডাক্তাররা এই ঔষধটি খুব বেশি ব্যবহার করে থাকেন।

ক্যালকেরিয়া ফ্লোর- শরীরে যদি টিউমার অতিরিক্ত শক্ত হয়ে যায় অথবা মাংসের সাথে টিউমার অবস্থান করে তাহলে এই ঔষধটি ব্যবহার করা যেতে পারে। শক্ত টিউমারের জন্য এই ঔষধটি খুবই কার্যকরী ঔষধ। এটি সেবনের ফলে টিউমার খুব সহজেই মিশে যায়।

টিউমার ঔষধের ক্ষতিকর প্রভাব

টিউমারের জন্য সেবনকারী এই ঔষধ এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।

  • শরীরে বিভিন্ন ধরনের লাল রঙের র্যাস দেখা যাওয়া
  • দূর্বলতা
  • রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া
  • কথা বলায় অসুবিধা
  • হিমোরেজ
  • বমি
  • মাথা ব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • সংক্রমণ
  • চুল পড়া
  • জ্বর
  • এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা
  • ডায়রিয়া
  • উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধ
  • খিদা না পাওয়া

টিউমার ভালো করার ঘরোয়া উপায়

  • তামাক পাতা বা এ জাতীয় দ্রব্য পরিহার করা
  • সব সময় স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করা
  • টিউমারের জায়গায় সবসময় পরিষ্কার রাখা
  • তেল যুক্ত খাবার পরিহার করা
  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে
  • নিরাপদ যৌন সম্পর্ক নিশ্চিত করা

টিউমার ভালো হবার খাদ্য

  • বেল
  • ব্রোকলি
  • সিম জাতীয় সবজি
  • হলুদ
  • গাজর
  • রোগ প্রতিরোধ খমতা বাড়ায় এমন খাবার

টিউমার হলে যেসব খাবার খাওয়া নিষেধ

  • অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার
  • প্রক্রিয়াজাত করা খাবার
  • কৃত্রিম ও প্রক্রিয়াজাত করা চিনি
  • প্রক্রিয়াজাত করা মাংস
  • সাদা আটা
  • সংরক্ষণ করা খাবার
  • কাচা খাবার

টিউমার ভালো হবার দোয়া

জীবনের যেকোনো সমস্যা অথবা কঠিন থেকে সহজে কোন রোগ ব্যাধির সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রথমেই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাইতে হবে। মহান আল্লাহতালা যদি চায় বান্দা সুস্থ থাকবে তাহলে কোন ঔষধ বা চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। তাই বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করতে হবে। বেশি বেশি দান খয়রাত করার চেষ্টা করতে হবে।

বান্দা আল্লাহকে ভয় করে ইবাদত করলে আল্লাহ বেশি খুশি হয়ে তার সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে। কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে সাহাবাদের রোগবালাই দেখা দিলে রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের নিচের দোয়াটি পড়ে ঝাড়ফোক করতেন। দোয়াটি হল- “আল্লাহুম্মা রাব্বানা নাসির বাল বাাআসা আনতা সাথী”

মন্তব্য

আজকে আমরা টিউমার ভালো করার ঔষধ সম্পর্কে একটি আর্টিকেল শেয়ার করেছি। এছাড়া টিউমার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার ফ্রেন্ড এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেট্লটি সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

টিউমার ভালো করার ঔষধ

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply