আসল চামড়া চেনার উপায়
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। বর্তমানে অনলাইনের কল্যানে এখন সহজেই বিভিন্নভাবে চামড়ার জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। বর্তমানে সব যায়গায় ভালো জিনিসের চেয়ে খারাপ জিনিসের পরিমান অনেক বেশি হওয়ার ক্রেতারা বিভিন্নভাবে প্রতারিত হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে আসল চামড়ার পাশাপাশি চাইনিজ অনেক আর্টিফিশিয়াল চামড়া চলে এসেছে যা দেখতে এবং ধরছে অনেকটাই আসল চামড়ার মত কিন্তু গুনগত মান অনেক খারাপ।
যারা চামড়ার পণ্য ব্যবহারের জন্য ক্রয় করতে চান কিংবা চামড়ার পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতে চান তাদের জন্য আমাদের আজকের আয়োজন। আজকে আমরা দেখবো আসল চামড়া চেনার উপায় অর্থাৎ অরিজিনাল লেদার জিনিস চিনবেন যেভাবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
![আসল চামড়া চেনার উপায়](https://easyteching.com/wp-content/uploads/2022/06/%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%B2-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87-300x169.webp)
অরিজিনাল লেদার জিনিস চিনবেন যেভাবে
যারা সবসময় চামড়ার জিনিস ব্যবহারের জন্য ক্রয় করেন অথবা চামড়ার জিনিস নিয়ে অনলাইন ও অফলাইনে ব্যবসা করতে চান তারা সচরাচর এটা জানতে চান আসল চামড়া চেনার উপায়। চলুন তাহলে অরিজিনাল লেদার জিনিস চেনার কিছু ভালো উপায় আজকে আপনাদের জানাচ্ছি।
- আগুন জ্বালানোর মাধ্যমে: ম্যাছ বা দিয়াসলাই দিয়ে হালকা আগুন ধরান এবং তা চামড়ার কাছে ধরুন। অসল চামড়ার নিনিস যেমন মানিব্যাগ, বেল্ট বা চমড়ার ব্যাগ হলে তা এই হালকা আগুনা কুচকাবে না বা ভাজ হবে না। আর যদি অরিজিনাল চামড়া না হয় তাহলে এই হালকা আগুনে তা সামান্য ভাজ হয়ে যাবে। যদি ভাজ হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে এটা আসল চামড়ার জিনিস নয়, এটা আর্টিফিশিয়াল চামড়া।
- ভাজ করে দেখুন: চামড়ার পণ্যটি ভাজ করে দেখুন। যদি অরিজিনাল চামড়ার পণ্য হয় তাহলে ভাজ করে ছেড়ে দিলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে। কিন্তু যদি আর্টিফিশিয়াল চামড়ার হয়ে থাকে তাহলে ছেড়ে দেয়ার পর ভাজ করার দাগ থাকবে।
- পানি দিয়ে পরীক্ষা করুন: চামড়ার পণ্যতির উপর কয়েকফোটা পানি দিয়ে ঘষা দিন। অরিজিনাল চামড়া হলে ঘষা দেয়ার স্থানে কিছুটা ফুলে উঠবে যা আর্টিফিশিয়াল লেদারের ক্ষেত্রে হবে না। এছাড়া আর্টিফিশিয়াল চামড়ার উপর থেকে পানি কচু পাতার পর সম্পূর্ন ঝরে যাবে কিন্তু আসল চামড়ার উপর পানি দিয়ে ঘষা দিলে কিছুটা পানি লেগে থাকবে।
- চামড়ার গন্ধ দেখে: অরিজিনাল চামড়ার একটা গন্ধ থাকে। তাই চামড়ার পণ্য হাতে নিয়ে নাকের কাছে নিলে একটা বিশেষ ধরনের গন্ধ পাবেন। কিন্তু পণ্যটি যদি অরিজিনাল চামড়ার না হয় তাহলে ক্যামিকালের ঝাজালো গন্ধ পাবে অথবা রঙের গন্ধ পাবেন যা আপনি খুব সহজেই ধরতে পারবেন।
- পণ্যের ফিনিশিং দেখে: আর্টিফিশিয়াল চামড়া যেহেতু সেম্পূর্ন মেশিনে বানানো হয় তাই এর সেলাই ও কাটা খুবই নিখুত হয়। কিন্তু আসল চামড়ার পন্য তুলনাল মূলক মোটা হওয়ায় চাইলেও নিখুত ফিনিশিং দেয়া সম্ভব হয় না। তাই ১০০% পার্ফেক্ট ফিনিশিং দেখলে ধারনা করা যায় এটি অসল চামড়ার পন্য নয়।
আসল চামড়ার জিনিসের দাম
এতক্ষন আমরা আসল চামড়া চেনার উপায় উপাইয় নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি। অনেকেই জানতে চান আসল চামড়ার পণ্য অর্থাৎ চামড়ার মানিব্যাগ, চামড়ার বেল্ট বা চামড়ার ব্যাগ কিনতে গেলে কত দাম পড়তে পারে। নিচে আমরা বিভিন্ন চামড়ার পণ্যের পাইকারি ও খুচরা দাম উল্লেখ করার চেষ্টা করবো।
- চামড়ার মানিব্যাগ: চামড়ার কোয়ালিটি ও মানিব্যাগের কোয়ালিটি উপর নির্ভর করে দামের তারতম্য হতে পারে। তবে পাইকারি বাজার থেকে নিলে প্রতি পিছ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে পড়বে। আর খুচরা বাজার থেকে নিলে প্রতি পিছের দাম পড়বে ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা।
- চামড়ার বেল্ট: চামড়ার বেল্ট পাইকারি কিনতে গেলে প্রতি পিছ ৪৫০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত পেয়ে যাবেন। আর খুচরা কিনতে গেলে ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকার মত পড়বে।
- চামড়ার ব্যাগ: যারা ভালোমানের অফিস ব্যাগ বা চামড়ার ল্যাপটপ ব্যাগ নিতে চান তাদের বাজেট একটু বেশি রাখতে হবে। কারন আসল চামড়ার ব্যাগ খুচরা কিনতে গেলে প্রতি পিছ ২০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ হাজার টাকার মত পড়তে পারে। আর পাইকারি কিনতে গেলে চামড়ার কোয়ালিটি ও ব্যাগের ডিজাইনের উপর নির্ভর করে দাম খুচরা বাজারের চেয়ে কিছুটা কম হবে।
চামড়ার পণ্য কিনে ব্যবসা করুন
অনেকি চামড়ার পণ্য কমদামে কিনে ব্যবসা করতে চান। কিন্তু জানেন না কোথা থেকে কিনবেন। বর্তমানে অনলাইনের কল্যানে অনেক যায়গায় ই এখন চামড়ার পণ্য পাওয়া তবে এই মধ্যে ভালো খারাপ আছে। আপনি চাইলে সরাসরি গুলিস্থান থেকে নিজে দেখে পণ্য ক্রয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে দাম ও কিছুটা কম পড়বে আপনার লাভ বেশি হবে। এছড়াও ঢাকায় আরো অনেক যায়গা আছে যেখান থেকে আপনি হোলসেলে আসল চামড়ার পণ্য যেমন মানিব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ, বেল্ট এইসব কিনে নিজের এলাকায় ব্যবসা করে বেশ ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
চামড়ার জুতা তৈরির ব্যবসা
বর্তমানে বাংলাদেশে চাকরির বাজার অনেক কঠিন হয়ে উঠেছে। তাই পূর্বের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন শিক্ষিত যুবকরাও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করার চেষ্টা করছে। আপনারা যারা অল্প টাকায় হালাল ব্যবসা করে টাকা অনকাম করতে চান তাদের জন্য চামড়ার জুতা তৈরির ব্যবসা খুব ভালো একটি পছন্দ হতে পারে। বর্তমানে মানুষ চামড়ার জুতা পরিধানের দিকে ঝুকছে। তাই আপনি চাইলে চামড়ার জুতা তৈরির ব্যবসা করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি শুধু মেশিনটি কিনতে হবে। অনেক বড় বড় ডিলার আছে যারা নতুন অবস্থায় আপনাকে চামড়া বাকিতে বা অল্প টাকায় দিবে। আপনি শুধু একটি মেশিন ও সামান্য কিছু জনবল নিয়েই শুরু করে দিতে পারেন চামড়ার জুতা তৈরির ব্যবসা।