বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি

অল্প সময়ে অনেক টাকা আয়ের জন্য অনেকেই সরকারি চাকরির চেয়ে বেসরকারি চাকরিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে অনেক প্রাইভেট ফার্ম বর্তমানে সরকারি কর্মস্থানের পাশাপাশি সমানতালে তাল মিলিয়ে চলছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। আজকে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

এবং সরকারি চাকরির সুবিধা অসুবিধা আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো সরকারি চাকরি

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরির তালিকা

বর্তমানে সরকারি চাকরির তুলনায় বেসরকারি চাকরির সংখ্যাই বেশি এবং বেসরকারি চাকরি লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়ে থাকে। বেতনের দিক থেকে বেসরকারি চাকরির অবস্থা মোটামুটি ভালো। নিচে বেশ কিছু ভালো বেসরকারি চাকরি সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা হলো-

আইটি ম্যানেজার

একজন আইটি ম্যানেজার সর্বোচ্চ বেতন ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আইটি ম্যানেজার একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যবহৃত প্রযুক্তির তত্ত্বাবধানের জন্য কাজ করে থাকে। তারা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কোম্পানির ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড টেকনোলজির সাথে তাছাড়া আইটি ম্যানেজাররা নির্দিষ্ট কাজ এবং দায়িত্বগুলি সংস্থার আকার এবং প্রকারের উপর নির্ভর করে কম বেশি হয়ে থাকে।বাংলাদেশ আইটি ম্যানেজারের পোস্টের চাহিদা অনেক বেশি। যথাযথ দক্ষতা প্রদর্শনের মাধ্যমে ভালো কোম্পানিতে আইটি ম্যানেজার এ চাকরি পাওয়া খুবই সহজ।

মার্কেটিং ম্যানেজার

বর্তমানে মার্কেটিং সেক্টর খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মার্কেটিং কার্যক্রম একটি কোম্পানি টিকে থাকার ব্যাপারে বেশ অবদান রাখে। একটি কোম্পানিতে যত বেশি মার্কেটিং এর পরিমাণ ভালো বা পারফরম্যান্স ভালো দেখা যায় সে কোম্পানি প্রোডাক্ট সেলস তত বেশি হয়ে থাকে এবং সে কোম্পানির লাভের পরিমাণও তত বেশি হয়ে থাকে। যার কারণে যে কোন কোম্পানিকে মার্কেটিং ম্যানেজারকে খুব বেশি প্রায়োরিটি প্রদান করে থাকে। আমাদের দেশে বেতনের দিক থেকে একজন মার্কেটিং ম্যানেজারের কোম্পানি ভেদে দেড় লাখ থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

প্রফেসর/লেকচারার

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রফেসর কিংবা লেকচারার ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। শিক্ষিত জাতি তৈরিতে তাদের অবদান শীর্ষে। তাছাড়া উক্ত প্রফেশনে যথেষ্ট ভালো সম্মান এবং শ্রদ্ধা রয়েছে বেতনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে এভারেজ একজন প্রফেসরের বেতন দেড় লাখ টাকা থেকে শুরু করে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এখানে গেস্ট টিচার হিসেবেও লেকচারার পদে যোগদান করা যায় তাই একই সাথে একজন প্রফেসর বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিগুলোতে লেকচারার পদে যোগদান করতে পারে।

এইচ আর ম্যানেজার

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্মী বাছাই খুবই কঠিন একটি কাজ। আর এই কাজ করার জন্য ব্যক্তি সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্মী বাছাই দায়িত্ব পালন করে তিনি হচ্ছেন হিউম্যান রিসার্চ অফিসার বা এইচ আর ম্যানেজার। যেকোন শিল্প প্রতিষ্ঠানে এই পোস্টে কর্মীরা নিয়োগপ্রাপ্ত হয় এবং এভারেজ বেতনের দিক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকে।

সফটওয়্যার এন্ড অ্যাপ ডেভলপার

বর্তমানে তরুণরা খুব বেশি ইন্টারনেটের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। তাই অন্যান্য চাকরির তুলনায় সফটওয়্যার ভিত্তিক কাজ খুব বেশি আগ্রহের সঙ্গে করে থাকে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মোবাইলে যে সকল অ্যাপ্লিকেশন গুলো ব্যবহার করে থাকি সেগুলোকে সংক্ষেপে অ্যাপ বলা হয়। অন্যদিকে কম্পিউটার যে সকল প্রোগ্রামের মাধ্যমে কম্পিউটার ভিত্তিক কার্যক্রম সম্পাদন করা হয় সেগুলোকে সফটওয়্যার বলে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যক্তিগত এক এবং সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্ট এর জন্য অথবা বিভিন্ন সমস্যা ফিক্স করার জন্য সফটওয়্যার এন্ড ডেভলপারদের চাকরি দিয়ে থাকে। এই সেক্টরে দক্ষতার সাথে কাজ করলে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়ার সম্ভব।

ইঞ্জিনিয়ার

বর্তমানে সরকারি এবং বেসরকারি ইউনিভার্সিটি গুলো থেকে যে সেক্টরে সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রীরা পাশ করে তা হল ইঞ্জিনিয়ারিং। ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে বিভিন্ন সেক্টরের হয়ে থাকে। সাধারণত ইঞ্জিনিয়ার পেশাকে ক্ষুদ্র ১৫ টি ভাগে ভাগ করা হয়। যার প্রতিটি সেক্টরে নতুন কিছু করে তোলা বা স্থাপনার ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ার কাজ করে থাকে। যদিও কাজের ক্ষেত্র বিশেষে একেক ধরনের ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন একেক রকম হয়ে থাকে। তবে এভারেজে প্রায় এক লাখ থেকে শুরু হয় বিভিন্ন অংকের বেতন একজন ইঞ্জিনিয়ার আয় করে থাকে।

ডাক্তার

ডাক্তার মূলত মানব সেবার জন্য কাজ করলেও সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তাররা সেবা দিয়ে থাকেন। তাদের কাজটি সেবামূলক হলেও এই কাজে যেমন সম্মান রয়েছে সাথে রয়েছে বড় একটি আর্থিক সুবিধা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গড়ে একজন ডাক্তার এক লাখ টাকা অব্দি আয় করে থাকে তবে ক্ষেত্র বিশেষে এর চেয়েও বেশি বা কম হতে পারে।

অনলাইন মার্কেটিং প্রফেশনাল

যেকোন প্রতিষ্ঠানে পূর্ণ বা গ্রাহকের কাছে উপস্থাপনের সর্বোত্তম উপায় হল মার্কেটিং। মার্কেটিং একটি বিস্তৃত সিস্টেম। যুগ যুগ ধরে ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত রয়েছে বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে যেহেতু বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেটের সাথে বেশি সংযুক্ত তাই তুলনামূলকভাবে অনলাইনে মার্কেটিং এর কাজই বেশি করা হয়। যে বা যারা অনলাইনে মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে প্রফেশনাল তাদের অনলাইন মার্কেটিং বা ডিজিটাল মার্কেট বলা হয়।

এক্ষেত্রে অনলাইন মার্কেটিং প্রফেশনাল এর বেতন পঞ্চাশ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে অবশ্যই ক্ষেত্রবিশেষে এই অ্যামাউন্ট পরিবর্তনশীল।

আর্কিটেক্ট

আর্কিটেক্ট সাধারণত যে কোন বিল্ডিং বা স্থাপনা করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এই চাকরির জন্য সকলকে ওয়েল এডুকেটেড হতে হয়। বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট হাতে নেয়ার মাধ্যমে বৃত্তি পর্যায়ে অথবা এজেন্সির হয়ে কাজ করে আর্কিটেকরা এভারেজে মাসে ৯০০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।

ম্যানেজার

যেকোনো প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপকের প্রয়োজন হয়। সকল ধরনের ব্যবস্থাপকের মূল উদ্দেশ্য হলো ওই প্রতিষ্ঠানের সব কাজকর্ম এর সাথে নিয়োজিত লোকের সমন্বয়ে সাধন ঘটানো যার উদ্দেশ্যে একজন ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এক্ষেত্রে একজন ম্যানেজারের অ্যাভারেজ স্যালারি হয়ে থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তবে সকল ধরনের ম্যানেজারদের বেতন একই রকম হয় না বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং প্রয়োজন অনুসারে ম্যানেজারের বেশ ভাগ রয়েছে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বেতনের বেসরকারি চাকরি

  • আইটি ম্যানেজার- ২ লাখ ৭১ হাজার ২৪৪৭ টাকা
  • মার্কেটিং ম্যানেজার- ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা
  • প্রফেসর বা লেকচারার- ১ লাখ ৯৭৪৭ টাকা
  • প্রফেসারী হাই এইচ আর ম্যানেজার- ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫১ টাকা
  • সফটওয়্যার অ্যাপ ডেভলপার- ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৪০ টাকা
  • ইঞ্জিনিয়ার- এক লাখ ২৪ হাজার ৭৬৮ টাকা
  • ডাক্তার- এক লাখ তিন হাজার আটশ ছাপান্ন টাকা
  • অনলাইন মার্কেটিং প্রফেশনাল- ৯৬৩৭৮ টাকা
  • আর্কিটেক্ট- ৯৪ হাজার ১২০ টাকা
  • ম্যানেজার- ৭৮ হাজার ৪২১ টাকা

বেসরকারি চাকরির সুবিধা

  • বাংলাদেশের বিচারকারী চাকরিগুলো প্রায়ই খন্ডকালীন এবং ফ্রিল্যান্স পথসহ আরো নমনীয় কাজের অফার করে থাকে
  • বেসরকারি চাকরি পেশাগত বৃদ্ধি এবং অগ্রগতির সুযোগ দেয় যার মধ্যে রয়েছে চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ
  • এবং চাকরি কালীন প্রশিক্ষণ ও সুযোগ গ্রহণের সুযোগ
  • বেসরকারি চাকরিগুলো উদ্যোক্তা হওয়া এবং নিজের ব্যবসা শুরু করার সুযোগ দেয়
  • অল্প সময়ে অধিক বেতনে সুযোগ হয়

বেসরকারি চাকরির অসুবিধা

  • এখানে সময়ের খুব বেশি সুবিধা দেওয়া হয় না
  • এছাড়াও সরকারি চাকরির তুলনায় ছুটি কম পাওয়া যায়
  • এছাড়াও খুব বেশি প্রফেশনাল কাজে অগ্রগতির সাধন করতে দেওয়া হয় না
  • একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর পেনশন পাওয়া যায় না
  • বেতনের তুলনায় অধিক পরিমাণে পরিশ্রম করতে হয়
  • যেকোনো সময় যেকোনো নোটিশে চাকরি থেকে বের করা সম্ভব হয়
  • ক্যারিয়ারের জন্য বেসরকারি চাকরি অনিশ্চিত

কোন পেশায় টাকা বেশি

দেশ ভেদে এটি আলাদা হতে পারে। বাংলাদেশের অবস্থা অনুযায়ী এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট এর ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি টাকা আয় করা যায়। প্রথম কথা হচ্ছে সৎভাবে অনেক টাকা আয় করতে চাইলে আপনাকে ব্যবসা করতে হবে। যেকোন ব্যবসা ভালোভাবে করতে পারলে ভালো আয় করা সম্ভব।

এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এর ব্যবসার পাশাপাশি আইটি সেক্টরে ইনভেস্ট করে বর্তমানে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব। আপনার অভিজ্ঞতা ও ইনভেস্ট অনুযায়ী যেকোন ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক পেশার নাম

শিক্ষকতা ও ডাক্তারি পেশাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পৃতীবির সবচেয়ে মহৎ পেশা ও বলা হয় ডাক্তারি পেশা কে। এছাড়াও চাকরির পাশাপাশি ব্যবসাকে ও বেশ সম্মান জনক পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কেননা ব্যবসায়ী নিজের পাশাপাশি অন্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও করে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি

মন্তব্য

আজকে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি সবার অনেক ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply