অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম কোনটা ভালো

অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম

মানুষের স্কিন বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তার মধ্যে ড্রাই স্কিন সেনসিটিভ স্কিন এবং অয়েলি স্কিন সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায়। এসব স্কিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দেয় তৈলাক্ত ত্বকে। বাজারে অয়েলি স্ক্রিনের জন্য সিরাম পাওয়া যায় তবে অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম কোনটা ভালো বা সেসব সিরাম এর দাম সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক তথ্য জানা নেই।

আজকে আমরা অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – ই ক্যাপ 400 এর উপকারিতা ও অপকারিতা

সিরাম কি?

অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম কোনটা ভালো তা জানার আগে সিরাম কি সে সম্পর্কে জানা উচিত। সিরাম হচ্ছে এক ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট যা স্কিন পরিষ্কার করার পর এবং মশ্চারাইজার ব্যবহার করার পূর্বে স্কিনে ব্যবহার করতে হয়। সিরাম খুব ছোট ছোট মলিকলস তারা তৈরি হয়। যা ত্বক বা চুলের সহজেই মিশে যেতে পারে। যার ফলে স্কিন কেয়ারের বিভিন্ন বিষয় যেমন ত্বকের বলি রেখা, বয়সের ছাপ, ত্বকের ছোপ ছোপ দাগ দূর করার জন্য সিরাম খুবই কার্যকরী।

সিরাম ব্যবহারের নিয়ম

ত্বকের গভীরে যেকোনো বিউটি প্রোডাক্ট সহজেই পৌঁছে দিতে সিরাম ব্যবহার করা হয়। সরাসরি ত্বকে কাজ করে বলে সিরাম ব্যবহারে দারুন ফলাফল পাওয়া যায়। বিশেষত দাগ ছোপ বলিরেখা শুষ্কতা তৈলাক্ত ভাব ইত্যাদি মোকাবেলায় সিরাম অন্নতম। তাই ত্বক পরিষ্কার করার পর সিরাম ব্যবহার করা উচিত।

সিরাম লাগিয়ে মুখে হালকা ম্যাসাজ করতে হবে এতে করে ত্বক তাড়াতাড়ি সিরামটি শুষে নিবে এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে অন্য যেকোন ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত দিনে দুবার ব্যবহার করা উচিত সিরাম। সকালে এবং রাতে।

সিরামের গুনাগুন

  • ব্যবহার করতে বেশি সময় লাগে না
  • ত্বকে তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করে
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
  • ত্বকের রং ফর্সা করে
  • ত্বকের গভীরে গিয়ে আদ্রতা বজায় রাখে
  • যেকোনো স্কিনের সাথে খুব সহজেই মিশে যায়
  • ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না
  • ফোলা ফোলা ভাব কম করে
  • ছোপ ছোপ দাগ দূর করে
  • সহজে কোন স্কিনের দাগ ছাড়িয়ে তোলে
  • ডার্ক সার্কেল দূর করে
  • ফর্সা করে তোলার কাজ শুরু করে

বিভিন্ন স্কিনের জন্য সঠিক সিরাম

প্রতিটি সিরামই কার্যকরী উপাদানে ভরপুর তবে একেক ধরনের ত্বকের জন্য একেক রকম সিরাম বাজারে পাওয়া যায়। তাই প্রথমে সিরামের বোতলের পিছনে যা লেখা থাকে তাতে কোন কোন উপাদান আছে তা জেনে নিতে হবে এবং সিরাম কিনার সময় অবশ্যই হালকা ব্যবহার করে দেখা উচিত। সিরাম স্কিনে কোন সমস্যা করছে কিনা। তবে কোন ত্বকের জন্য কোন ধরনের সিরাম সবচেয়ে ভালো তা বোঝার জন্য কিছু টিপস রইল-

১। ব্রণ ফুসকুড়ি বেশি হয় এমন ত্বকের জন্য ভিটামিন সি জিংক স্যালি সিলিক এসিড ও রেটিনোলযুক্ত সিরাম সবচেয়ে ভালো হয়। জিংক ত্বকের জালা এবং অস্বস্তিত্ব দূর করে রেটিনাউট ফোলা ভাব কমায় এবং সেলিসিলিক এসিড লোম পরিষ্কার করে এবং ভিটামিন সি ত্বকে তেল উৎপাদন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

২। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিতে হবে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ সিরাম। গ্লাইকোলিক এসিড এবং হাইড্রোলিক এসিডযুক্তির উপাদান গুলি ত্বককে ময়শ্চারাইস করে এক্স ভলিয়ট করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে স্কিনকে করে তোলে অনেক সুন্দর এবং নরম।

৩। নিষ্প্রান স্কিনের জন্য অ্যান্থ অক্সিডেন্টযুক্ত সিরাম সবচেয়ে ভালো। গ্রিন টি এক্সট্র্যাক রয়েছে এমন সিরাম ব্যবহার করলে নিষ্প্রান্ত ধীরে ধীরে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দিনে দুইবার করেছিলাম ব্যবহার করলে তাও অনেক সতেজ দেখায়।

৪। ত্বকের কোন কুঁচকানো ভাব কম করতে পেপটাইডস সমৃদ্ধ সিরাম বেছে নেওয়া উচিত। এর ফলে ক্লোজার এবং ইলাস্টিন উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক হয়ে ওঠে টানটান।

অয়েলি স্কিন বা যে কোন স্কিনের জন্য ঘরোয়া সিরাম

হোমমেড যে কোন প্রোডাক্টটি স্কিনের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এতে করে ক্ষতিকর কোন কেমিক্যাল থাকে না এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারী হয়। হোমমেড সিরাম প্রায় সব ধরনের স্ক্রিন অর্থাৎ ড্রাই স্কিন ন্যাচারালি স্ক্রিনের জন্য ইউজ করা যাবে। তিন ধরনের তেল দিয়েই সিরামটি বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

সিরাম তৈরিতে যা যা লাগবে- জোজবা অয়েল এক টেবিল চামচ, অর্গান অয়েল হাফ টেবিল চামচ, ল্যােন্ডার এসেন্সিয়াল অয়েল দুই থেকে চার ফোটা। ওয়েল ও অর্গান অয়েল একটি কাঁচের বোতলে প্রথমে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এতে এসেনশিয়াল ওয়েল এড করতে হবে বোতলের মুখ বন্ধ করে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। সিরিয়ালটি ভালো রাখতে এটি সব সময় ঠান্ডা এবং সানলাইট আসে না এমন জায়গায় রাখতে চেষ্টা করা উচিত।

অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম কোনটা ভালো

সাধারণত যাদের অয়েল স্কিন থাকে তাদের জন্য যে কোন প্রোডাক্ট ব্যবহারের পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করে ব্যবহার করা উচিত। বাজারে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বিভিন্ন ধরনের সিরাম পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো-

ক্লোভিয়া বোটানিকা এমএইসি ফেস সিরাম

এটা এমন একটি সিরাম যা তৈলাক্ত স্কিনের তেল দূর করে স্কিনে পড়া বার্ধকের ছাপ দূর করে দিবে। আর এই সিরাম তারুণ্য ত্বক দিবে এতে নল এবং নিআসি না মাইন্ডের মত সক্রিয় উপাদান রয়েছে যা বয়সে দাগগুলিকে উন্নীত করতে কার্যকর ভাবে কাজ করে। এই সিরামের অন্যান্য উপাদান যেমন- জাফরান তেল এবং কোলাজেন রয়েছে যা নিস্তেজতা কমাতে সাহায্য করে এবং স্কিনে পুষ্টি যোগায়।

ক্লোভিয়া বোটানিকা অয়েল কন্ট্রোল ফেইস সিরাম

এই ফেইস সিরাম ব্যবহারে তৈলাক্ত ত্বক চিরতরে ত্বক থেকে দূর হয়ে যাবে। রেগুলার এই সিরাম ব্যবহারের ফলে স্কিনে তেল জমে না। ফলে স্কিন পরিষ্কার এবং ফর্সা দেখায়। ক্লোবিয়া বোটানিকার তেল নিয়ন্ত্রণ সিরাম স্কিনকে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে এবং তেল নিঃসরণ করতে চমৎকার ভাবে কাজ করে। আসিনামাইট অতিরিক্ত তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা এবং ত্বকের নোংরা ভাব দূর করতে কার্যকর।

এটি অন্যান্য সমস্যা ও তার থেকে দূর করে যেমন ব্রণ দাগ ছোট ছোট ত্বকের গর্ত দূর করতে সহায়তা করে। সিলিক এসিড অ্যালোভেরার রস আঙ্গুরের বীজের নির্যাসসহ এই ফেইস সিরামটি হালকা এবং উজ্জ্বল এবং তৈলাক্ত স্কিনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

বোটানিক্যাল রেটিন অল ফ্রেশ সিরাম

এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটি রেগুলার সিরাম যা পুষ্টিহীন ত্বকে পুষ্টি যোগায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। সেই সাথে পার্থক্য জনিত কোন লক্ষণকে ত্বকে উপস্থিত হতে দেয় না এবং ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর করে ত্বককে নরম করে তোলে।

বোটানিকা স্পটলেস সিরাম

সাধারণত স্ক্রিনে বেশিরভাগ সময় ব্রণ লক্ষ্য করা যায়। তাই যাদের ওয়েল স্ক্রিন এবং তার ওপর অনেক ব্রণের সমস্যা থাকে তারাই সিরামটি ব্যবহার করতে পারেন। এই সিরাম ব্যবহার করার ফলে ত্বক ত্বকে ব্রণ উঠা একদমই দূর হয়ে যায়। এছাড়াও এতে রয়েছে ব্রণবিরোধী বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ছিদ্র খুলে দেয় এবং ব্ল্যাক হেডস হোয়াইটেরসহ ব্রণের বৃদ্ধি রোধ করে।

এরূপ অন্যান্য উপাদান রয়েছে যেমন এলোভেরা চা গাছের তেল যা ব্রনের হালকা দাগ দূর করতে সহায়তা করে এবং ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি রোধ করতে কাজ করে থাকে।

সিরাম এর দাম

বাজারে সাধারণত অরজিনালের কপি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিরাম পাওয়া যায়। কম দামে সবচেয়ে দামে বিক্রি হলেও এগুলো স্কিনের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিরাম গুলাই ব্যবহার করা উত্তম। ব্র্যান্ডের শ্রীরাম গুলো এর দাম সাধারণত ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে বারোশো টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন শোরুমে গেলে দামটা একটু বেশি নিতে পারে।

সিরাম ব্যবহারে সাবধানতা

যেহেতু বাজারে আসল প্রোডাক্টের পাশাপাশি বিভিন্ন নকল সিরামও পাওয়া যায়। তাই যেকোন সিরাম চিনে ব্যবহারের পূর্বে হাতে বা শরীরের অন্যান্য জায়গায় ব্যবহার করে দেখা উচিত। সেটা স্ত্রীর জন্য পারফেক্ট কিনা এতে করে সমস্যা হলেও খুব একটা গুরুতর হয় না। এছাড়া ত্বকের জন্য উপযুক্ত সিরাম অবশ্যই বেছে নিতে হবে। কেননা সঠিক ত্বকের জন্য সঠিক সিরামটি বেছে নিলে ত্বকের জন্য অনেক কার্যকরী হয়। নতুবা ত্বকের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যেতে পারে।

অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম

মন্তব্য

আজকে আমরা অয়েলি স্কিনের জন্য সিরাম ভালো সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটা আপনাদের ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন। এছাড়া আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন সব আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply