যদি রাত পোহালে শোনা যেত – jodi rat pohale sona jeto

যদি রাত পোহালে শোনা যেত

বাঙালি জাতির মুক্তির দূত হিসেবে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান পরিচিত তাকে বাঙালি জাতির পিতা বলা হয়। ১৯৭১ সালের সেই মুক্তিযুদ্ধের ডাক না দিলে আজ আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুর কৃতিত্ব এবং তার সাহসিকতার জন্য অনেক গান এবং কবিতা রচিত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো যদি রাত পোহালে শোনা যেত গানটি।

আজকে আমরা যদি রাত পোহালে শোনা যেত গানটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কের আরও কিছু কবিতা এবং গান তুলে ধরব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।

“যদি রাত পোহালো শোনা যেত” লিরিক্স

কন্ঠঃ সাবিনা ইয়াসমিন

যদি রাত পোহালে শোনা যেতো,

বঙ্গবন্ধু মরে নাই।

যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো,

বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই।

তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা,

আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।

যে মানুষ ভীরু কাপুরুষের মতো,

করেনি কো কখনো মাথা নত।

এনেছিল হায়নার ছোবল থেকে

আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা।

কে আছে বাঙালি তার সমতুল্য,

ইতিহাস একদিন দেবে তার মূল্য।

সত্যকে মিথ্যার আড়াল করে,

যায় কি রাখা কখনো তা।

যদি রাত পোহালে শোনা যেত,

বঙ্গবন্ধু মরে নাই।

যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো,

বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই।

তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা,

আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।

Jodi Rat Pohale shona jeto Lyrics

jodi rat pohale shona jeto,

bonggobondhu more nai.

jodi rajpothe abar michil hoto,

bonggobondhur mukti chai .

Tobe bissho peto ek mohan neta,

Amra petam fire jatir pita.

Je manus viru kapurusher moto,

Koreni to kokkhono matha noto.

ENe dilo haynar chobol theke,

amader prio sadhinota.

Tobe bissho peto ek mohan neta,

Amra petam fire jatir pita.

K ache banggali tar somotullo

itihas ekdin debe tar mullo.

Sotto ke mitthar aral kore,

jay ki rakha kokkhono ta.

Tobe bissho peto ek mohan neta,

Amra petam fire jatir pita.

jodi rat pohale shona jeto,

bonggobondhu more nai.

jodi rajpothe abar michil hoto,

bonggobondhur mukti chai .

Tobe bissho peto ek mohan neta,

Amra petam fire jatir pita.

যদি রাত পোহালে শোনা যেত গানের পটভূমি

গায়ক মলয় কুমার গাঙ্গুলীর প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেই যন্ত্রণা থেকেই মলয় তাকে নিয়ে একটি গান রচনা করতে চেয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দলীয় সম্মেলনে গান গাওয়ার দায়িত্ব পান মলয় কুমার গাংগুলি।

শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি করে দুটি গান লিখতে বলেন। শেখ মুজিবকে নিয়ে লেখা গান দায়িত্বের দিক থেকে কঠিন ছিল বিধায় তিনি প্রথমে রাজি না হলেও পরে বাধ্য হয়েছিলেন লিখতে। এরপর ভোরবেলায় যখন তার হত্যাকাণ্ডের কথা মনে পড়ল তখন তিনি গানের কথার জন্য কিছু ধারনা পেয়ে লিখে ফেলেন। এরপর সকালে তিনি মলয় কুমার গাঙ্গুলীর কাছে গিয়ে গানের কথাগুলো দেখান।

সঙ্গে সঙ্গে গানটির সুর করেন মলয় কুমার। সেই সম্মেলনে এটি গেয়েছিলেন মলয় গাঙ্গুলী। সম্মেলনে উপস্থিত শ্রোতারা গানটি খুব পছন্দ করেন এবং প্রশংসা ও করেন। ১৯৯৬ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক বছর পর প্রধানমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে গানটি গাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী ফরিদ আহমেদের পরিচালনায় শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন এই গানটি গেয়েছিলেন।

রেকর্ড এবং মুক্তি সম্পর্কিত তথ্য

তৎকালীন সময়ে সামরিক জাম্পার হুমকির ভয়ে ঢাকার কোন স্টুডিও গানটি রেকর্ড করতে না চাইলেও মলয় প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে গানটি রেকর্ড করেন। গানটি রেকর্ড করার জন্য সামরিক সরকার মলয় কুমার গাঙ্গুলীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ও তার সরকারি বাসভবন থেকে বের করে দেয়। বাংলাদেশের ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ পদত্যাগ করার পরবর্তীতে সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করা হয়।

এরপর হাসান মতিউর রহমান দ্বিতীয় বারের মত চেনা লেভেলে এই গানটি রেকর্ড করেন। জনতার নৌকা শিরোনামের অ্যালবামে এই গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণার অ্যালবাম প্রকাশের পর গানটি অনেক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৯১ সালে এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে লোকেরা ক্যাসেট কেনার জন্য লড়াইয়ে লিপ্ত হতো।

পুনর্নির্মাণ

কৌশিক হোসেন তাপস পরিচালিত গানটির তৈরি নতুন সংস্করণটি গান বাংলা এবং ইউটিউবে ১৫ ই আগস্ট ২০২১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।

যদি রাত পোহালে শোনা যেত গানের অর্জন

২০২০ সালে এই গানটি শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত হিসেবে নাট্যজন শ্যামল অধিকারী স্মৃতি পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এর মনোনয়ন দেন হাসান মোঃ মতিউর রহমান ।

এক নজরে যদি রাত পোহালে শোনা যেত

ভাষা- বাংলা

রচিত- ১৯৯০ সাল

প্রকাশিত- ১৯৯০ সাল

মুক্তি প্রাপ্ত- ১৯৯১ সালে

রেকর্ডক্রিত- ১৯৯১ সাল

স্টুডিও- ঝংকার স্টুডিও

থানা- ঢাকা

ধারা- আধুনিক গান

দৈর্ঘ্য- চার মিনিট ২৭ সেকেন্ড

লেভেল- চেনা সুর

সুরকার- মলয় কুমার গাঙ্গুলী

গীতিকার- হাসান মতিউর রহমান

প্রযোজক- হাসান মতিউর রহমান

প্রকাশিত অ্যালবাম- জনতার নৌকা

কণ্ঠশিল্পী- সাবিনা ইয়াসমিন

বঙ্গবন্ধু নিয়ে কিছু কবিতা ও গান

১। বঙ্গবন্ধু ও একটি কবিতা

-ফারুক চৌধুরী

ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে

একটি কবিতা লিখি, বঙ্গবন্ধু;

কিন্তু আবার যে ভাবি, তা,

কি আদৌ সাজে?

আমাদের অনাদিকালের

কবিতার পন্থিতে

তুমি নিজেই যে

সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা।

শুধু কি তাই?

 

আমাদের ইতিহাসের

অবিস্মরণীয় সেই অপরাহ্নে,

সুবিচার জন সমুদ্রের

মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, বজ্র কণ্ঠে

স্বাধীনতার মুক্তির

যে মহাকাব্যের সূচনা

তুমি করে গেলে

তার নামই তো বাংলাদেশ।

আর তুমি নিজেই যে

তার সার্থক মহা কবি।

তাই তোমাকে নিয়ে

সাধারন একটি কবিতা

কি আদৌ সাজে?

 

বঙ্গবন্ধু, তুমি আছো

আমাদের প্রতিটি সূর্যোদয়ের

উজ্জ্বল আশ্বাসে,

রক্তিম সূর্যাস্তের

প্রসন্ন তৃপ্তিতে;

উদার ধান খেতের

সবুজ ঢেউয়ে,

নীল আকাশের

নিস্তব্ধ অনন্তে।

 

তুমি আছো বঙ্গবন্ধু,

বাংলাদেশের প্রতিটি নিঃশ্বাসে।

তুমি আছো, স্বাধীনতার সিড়ি বেয়ে

মুক্তির পথ চলার

প্রতিটি দুর্গম বাকে।

তাই তোমাকে নিয়ে

একটি সাধারণ কবিতা

কি আদৌ সাজে?

২। শোনো একটি মুজিবরের কথা

গীতিকার- গৌরী প্রসন্ন মজুমদার

সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী- অংশুমান রায়

সঙ্গীত আয়োজনে- দীনেন্দ্র চৌধুরী

মূল গান- কণ্ঠশিল্পী অংশুমান রায়

শোনো একটি মুজিবরের থেকে

লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি

আকাশে বাতাসে ওঠে রণী

বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।

পথে এই সবুজের বুকে চেরা মিঠ পথে

আবার যে যাবো ফিরে, আমার

হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব

শিল্পে- কাব্যে কোথায় আছে

হায়রে এমন সোনার খনি।

বিশ্বকবির সোনার বাংলা;

নজরুলের বাংলাদেশ;

জীবনানন্দের রূপসী বাংলা

রূপের যেথায় নেইকো শেষ, বাংলাদেশ।

জয় বাংলা বলতে মন রে আমার

এখনো কেন ভাবো আবার

হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব

অন্ধকারে পূর্ব আকাশে উঠবে আবার দিন মণি।

৩। বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা মধুমতি

লেখক- শাহিন রেজা

জেগেছে জলের তৃষা; জল নয়

তাই তুমি এঁকে গেছো করুণা জলের

ভেসেছ জলের দেহে; জলযাত্রায়।

নাম তার মধুমতি আবাল্য সখা

ডুব দিয়েছে জলে মিটেছে ত্রিশা

জেনে গেছো ভালোবাসা সেও বুঝি তৃষা এক

সাজেও সকালে,

তাই তার ধ্যানে বসে থেকেছো একাকী

গভীর জ্যোতির ধ্যান জ্ঞানে অজ্ঞানে।

এই মাটি এই দেশ সোনার মানুষ

কাবিনের মত যেন বেঁধেছে তোমাকে।

মধুমতি ছাড়ে ডাক নিরন্নের কোলে

তোমার ধূসর হাতে ফসলের স্বাদ।

৪। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম লেখা গান

লেখক- শাহ আব্দুল করিম

‘পূর্ণ চন্দ্রে উজ্জ্বল ধারা

চৌদিকে নক্ষত্র ঘেরা

জনগণের নয়ন তারা

শেখ মুজিবুর রহমান

জাগো রে জাগোরে মজুর কিষান।

গণসঙ্গীত পরিবেশন করলাম যখন।

একশত টাকা উপহার দিলেন তখন।

শেখ মুজিব বলেছিলেন সৎ আনন্দমনে,

আমরা আছি করিম ভাই আছেন যেখানে।

মন্তব্য

আজকে আমরা যদি রাত পোহালে শোনা যেত গানটির লিরিক্স এবং পটভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন। অথবা আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব এবং প্রতিদিন নতুন নতুন আপডেট সব নিউজ পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

যদি রাত পোহালে শোনা যেত

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply