কর্পোরেট অফিস মানে কি?

কর্পোরেট অফিস মানে কি

আসসালামু আলাইকুম– সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, সবাইকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের প্রবন্ধে। আপনারা যারা কর্পোরেট অফিস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য আমাদের আজকের এই আলোচনা পর্ব।

আজ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব– কর্পোরেট অফিস মানে কি? কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান কি? কর্পোরেট জব কি? কর্পোরেট মার্কেটিং কি? কর্পোরেট কোম্পানি কি এবং কর্পোরেট জব বেতন কত ইত্যাদি সম্পর্কে। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং ধারণা অর্জন করে নিন কর্পোরেট অফিস মানে কি –এ বিষয়ে।

আরো পড়ুন – মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড ২০২৩

কর্পোরেট অফিস মানে কি?

কর্পোরেট শব্দটি বলতে মূলত যৌথ কিছুকে বোঝানো হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় যে, অংশীদারিত্বের উপর ভিত্তি করে বড় ধরনের অফিস পরিচালনা করা হয় এবং সেই অফিসে পুরো দেশ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পন্ন লোকবল নিয়োগ দেয়া থাকে এবং প্রত্যেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের বিক্রয় কেন্দ্রিক টার্গেট পূরণ করেন। এই ধরনের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের অফিসই মূলত কর্পোরেট অফিস নামে পরিচিত।

একটু সহজ ভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে– যৌথভাবে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত অফিস হচ্ছে কর্পোরেট অফিস। আর কর্পোরেট চাকরি বলতে সাধারণত বড় কোম্পানি বা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করাকে বোঝানো হয়ে থাকে। বর্তমানে ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে কর্পোরেট অফিস রয়েছ।

আর সেই সকল অফিসে কর্মরত রয়েছেন অসংখ্য চাকরিজীবী। যাদের কেউ কেউ চাকরি করছেন অতিরিক্ত বড় পদে, আবার কেউ কেউ নিম্নপদেও চাকরি করছেন। মূলত যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে একজন মানুষ চাকরির পদ লাভ করে থাকেন এবং সেই প্রতিষ্ঠানের হয়ে জব করেন।

কর্পোরেট অফিস এর কাজগুলো কেমন?

আমাদের আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই আপনি এটা জানতে সক্ষম হয়েছেন যে– কর্পোরেট হলো সেই সকল কোম্পানি যাদের বিজনেস ভলিউম অনেক অনেক বেশি। আর এই সকল কোম্পানিগুলো মূলত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি অথবা আন্তর্জাতিক সংস্থা হতে পারে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো একটি নির্দিষ্ট দেশের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে, আবার কখনো কখনো পৃথিবীর একাধিক দেশে তাদের ব্যবসা চলমান থাকে।

সরকারি বাজেট অনুযায়ী একেক সময় বিভিন্ন ধরনের কাজ আসে এবং সেই কাজগুলো সম্পন্ন করে বিল উত্তোলন থেকে যাবতীয় কাজ অথবা নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনে সুবিধা-সম্পন্ন এবং একজন নাগরিকের অধিকার সম্পন্ন কাজ বিভিন্নভাবে অফিসিয়াল করা হয়ে থাকে। আর এক্ষেত্রে কিছু কিছু সময় আপনাকে টেবিল চেয়ারে বসে কাজ করতে হয় আবার কখনো কখনো মাঠ পর্যায়ে কাজে নামতে হয়।

আর দেখুনঃ Zkteco f18 price in Bangladesh

কিন্তু কর্পোরেট জগত মূলত একদমই আলাদা একটা জায়গা। এখানে যদি আপনি কাজ করেন তাহলে সেটা মূলত একটি কর্পোরেশনের আন্ডারে করতে হবে এবং তাদের তৈরিকৃত নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলে হবে।
আর এই কর্পোরেট জগতে অবশ্যই আপনাকে ব্যস্ত মানুষ হতে হবে। কেননা কর্পোরেট চাকরি একজন মানুষকে মূলত ব্যস্ততায় ঘিরে ফেলে। তবে এখানে যেমন ব্যস্ততা রয়েছে তেমনি ভাবে টাকা ইনকামের সুযোগ রয়েছে প্রচুর। আপনি নিশ্চয়ই এটা জানবেন যে, বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং বহুজাতিক ক্যাটাগরিতে লোকবল নিয়োগ দেন।

এই যে, যে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ক্যাটাগরির শূন্য পদে নতুন নতুন দক্ষ ও যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের নিয়োগ দিচ্ছেন, সে সকল কোম্পানিগুলো মূলত কর্পোরেট কোম্পানি। কর্পোরেট জব বর্তমান সময়ে খুবই ডিমান্ডেবল পেশা। এখানে কম্পিটিশন তুলনামূলকভাবে অধিক বেশি। আর তাই যে বা যারা অফিস পলিটিক্স খাটাতে সক্ষম এবং ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের তাদের জন্য আদর্শ চাকরি কর্পোরেট চাকরি।

আর দেখুনঃ Convex mirror price in bangladesh

মর্যাদা ও বেতন এর জন্য মূলত কর্পোরেট জব বর্তমান তরুণদের ক্যারিয়ার গঠনের প্রথম আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। সামাজিক অবস্থান থেকে কর্পোরেট দুনিয়া প্রায় সব জায়গায় সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হল মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলে প্রয়োজনটুকু আদায় করে নেওয়া। আর তাই কর্পোরেট দুনিয়ায় কাজ করতে চাইলে আপনাকে ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের হতে হবে, হতে হবে প্রচন্ড স্মার্ট এবং থাকতে হবে বিজনেস আইডিয়া। এক কথায় কর্পোরেট লাইফে উন্নতি করতে চাইলে এবং এই কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করতে চাইলে আপনার জন্য দরকার পড়বে কিছু বিশেষ আদব-কায়দা।

কর্পোরেট অফিসে করণীয়

যেকোনো চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একটি নিয়ম মেইনটেইন করে চলতে হবে। শুধু এটুকুই নয়, চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু পদ্ধতি জানতে হবে এবং আপনার করণীয় কিছু কাজ করতে হবে। বর্তমানে অনেকেই কর্পোরেট অফিসে কর্পোরেট চাকরির জন্য আবেদন করছেন এবং অনেকেই সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। জীবনে যারা প্রথম কর্পোরেট চাকরিতে পদার্পণ করেছেন তাদের জন্য মূলত এই পয়েন্টটি অধিক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি যদি একটু ভালোভাবে চিন্তা করেন তাহলে এটা নিশ্চয়ই বুঝবেন চাকরি জীবনের সঙ্গে ছাত্র জীবনের বেশ পার্থক্য রয়েছে। তাই শিক্ষা জীবনে আপনি যে যে নিয়ম অনুসরণ করেছেন এর বাইরে কিছু নিয়ম অবশ্যই চাকরি জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। অবশ্য চাকরিজীবনের সাথে ছাত্র জীবনের কিছু নিয়ম কানুন এর সাথে সদস্যতা রয়েছে, যা আপনি নিজের পয়েন্টগুলো জানার পর বুঝতে পারবেন। তাহলে আসুন আলোচনার এ পর্যায়ে জেনে নেই কর্পোরেট অফিসে করণীয় কাজ সমূহ কি কি সে সম্পর্কে।

সবাইকে সম্মান দেখিয়ে চলা – মানুষের প্রতি respect রাখাটা আপনার একটি ভালো গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ। আর তাই অবশ্যই আপনার প্রত্যেক জনকে রেস্পেক্ট করতে হবে। তবে হ্যাঁ কর্পোরেট চাকরির ক্ষেত্রে অফিসে একসঙ্গে যখন অনেক কলীগদের সাথে থাকবেন তখন অবশ্যই সিনিয়র কলেজদের সম্মান দেখিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন এবং সেই সাথে জুনিয়রদের যথাসম্ভব সাহায্য করবেন।

মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা – যখন কর্পোরেট চাকরের সময় গুরুত্বপূর্ণ কোন মিটিংয়ে থাকবেন বা অফিসের ভেতরে যখন অবস্থান করবেন তখন খুব সম্ভবত নিজের ফোনের দিকে নজর রাখাটা জরুরী। এ সময় অবশ্যই মোবাইল ফোনে কথা বলার দরকার পড়লে সেটা এমনভাবে বলবেন যেন অন্য কারো কোন সমস্যা না হয় এবং আপনার বসের নজরে না আসে।

অনুমতি নেওয়ার অভ্যাস গড়ুন – কিছু কিছু মানুষের মাঝে যেখানে সেখানে হুটহাট বসে ফেলার বদভ্যাস থেকে থাকে। ছাত্র জীবনে আপনি নিশ্চয়ই এই শিক্ষাটা অবশ্যই প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটা শিক্ষকদের কাছ থেকে পেয়ে থাকবেন।

কেননা আমরা কখনোই স্যারদের জন্য বাছাই করা চেয়ার গুলোতে বসার অধিকার রাখে না। আর তাই কর্পোরেট চাকরির ক্ষেত্রে আপনি যখন কর্পোরেট অফিসের অবস্থান করবেন তখন ভুলেও অন্যের আসনে বসবেন না। আর যদি আপনার বসার প্রয়োজন পড়ে তাহলে সে যদি আপনার সরকারি হয়ে থাকে তবুও অনুমতি গ্রহণ করুন। আর বসের চেয়ার সেটা তো প্রশ্নই আসে না।

নিরবতা বজায় রাখুন – আমরা অনেকেই রয়েছি যারা অফিসের ভেতরে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কখনো কখনো বেশি কথা বলে ফেলি। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে চান তাহলে সামর্থ্য অনুযায়ী সেটা সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করুন এবং অন্যের সাথে তর্ক করা থেকে বিরত থাকুন। সুতরাং নীরবতা বজায় রাখুন।

পাশাপাশি সব সময় চেষ্টা করুন অফিসের অন্যান্য বিষয়ে নজর রাখার। কেননা আপনি যে অফিসে কাজ করছেন সেটার ভাল মন্দ আপনার ওপরেও অনেকটাই নির্ভর করবে। তাই এসকল বিষয় এ খেয়াল রাখা খুবই জরুরী। সেই সাথে অবশ্যই অন্যের নামে কটুক্তি, নালিশ বা বদনাম করা থেকে দূরে থাকবেন। সব সময় চেষ্টা করবেন সকলের সাথে মিলেমিশে থাকার এবং নোংরা বা অনৈতিক কাজকর্ম থেকে নিজেকে দূরে রাখার। কখনোই এমন কোন কাজ করবেন না যেটা অফিসের সুনাম নষ্ট করবে। যেকোনো কথা ভেবে চিন্তে বলবেন এবং প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাবধানতা অবলম্বন করবেন।

নিজেকে এমন ভাবে উপস্থাপন করবেন যেটা আপনাকে আপনার শিক্ষার প্রমাণ দেবে এবং আপনার কাজের ও কথার মাধ্যমে আপনার সুশিক্ষার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আর এটা শুধু কর্পোরেট অফিসে অবস্থানকালীন সময় নয় আপনি যে কোন চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে এবং আপনার করণীয় কাজ গুলো হবে এগুলো।

কর্পোরেট অফিস মানে কি

মন্তব্য

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কর্পোরেট অফিস মানে কি, কর্পোরেট জব বলতে কি বোঝায় এ সম্পর্কিত আমাদের আলোচনা পর্ব আজ এখানেই শেষ করছি। মূলত আপনি যদি কর্পোরেট চাকরি করতে চান এবং নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান আপনার জন্য আদর্শ চাকরি হতে পারে এটি।

কেননা সর্বনিম্ন ৩০০০০ টাকা শুরুতেই বেতন পেতে পারেন এই চাকরির মাধ্যমে। পরবর্তীতে পদোন্নতের সাথে সাথে টাকার পরিসীমাটা আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে, যা আপনাকে ক্যারিয়ার জীবনে উন্নতির কাজে আসবে। তাই যদি চিন্তা করে থাকেন কর্পোরেট জব করবেন তাহলে আজ থেকেই নিজের মাঝে সেই সকল গুণাবলী প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করুন, যেগুলো কর্পোরেট জবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply