বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি

বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি নাম ও ব্যবহারের নিয়ম

বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি

বাচ্চাদের জ্বর হলে আমরা সাধারণত প্যারাসিটামল-জাতীয় ঔষধ দিয়ে থাকে। তবে যদি এমন হয় যে বাচ্চার জ্বর দিন দিন বেড়েই চলছে। অর্থাৎ 102 ডিগ্রি ফারেনহাইট এর ওপরে যা কোনভাবেই কমছে না। তখন আমরা বাচ্চাদের জ্বরের জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করে থাকি। মূলত যখন একটি বাচ্চা তার জ্বরের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণে ওষুধ খেতে পারছে না। বা খাওয়ালেও বমি করে দিচ্ছে এমত অবস্থায় এমন এক ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হয় যা পায়খানার রাস্তায় দেওয়া হয়ে থাকে এটাই মূলত সাপোজিটরি।

বাচ্চাদের সাপোজিটরি তখনই ব্যবহার করা উচিত যখন একটি বাচ্চা জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্যথা সহ বমি সমস্যায় ভোগেন অর্থাৎ মুখ দিয়ে ওষুধ খেতে সমস্যা হয়। আর বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি তখনই ব্যবহার করা হয় যখন বাচ্চাদের জ্বরের মাত্রা 102 ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে থাকে। আর কোনোভাবেই জ্বর থামেনা এই সময়ে সাধারণত বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহার করা উচিত।

জ্বরে সাপোজিটরি এর নাম

জ্বরে সাপোজিটরি নাম হচ্ছে নাপা সাপোজিটরি (Napa suppository)। বাচ্চার বয়স ও রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে ঔষধের পরিমান কিছুটা কম বেশি হতে পারে। সাধারনত Napa suppository 125, 250 ও 500 এই ৩টি সাপোজিটরি বাচ্চাদের দেয়া হয়।

তবে অবশ্যই সাপোজিটরি ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। কোন বয়সের জন্য কোন ধরনের সাপোজিটরি ব্যবহার করা উচিত এবং কিভাবে ব্যবহার করা উচিত তা ডাক্তার ভালো মতই জানে। অর্থাৎ অবশ্যই ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে। বাচ্চাদের জ্বর হলে যেমন বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয় তেমনই অন্যান্য রোগের জন্য অন্যান্য সাপোজিটরি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

নাপা সাপোজিটরি 500 এর ব্যবহার

ডাক্তাররা মূলত বয়স এবং ওজনের উপর নির্ভর করে সাপোজিটরি দিয়ে থাকেন। বাচ্চার বয়স যদি 5 থেকে 12 বছর হয় এবং যদি বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হয় তা হলে ডাক্তাররা নাপা সাপোজিটরি 500 এমজি দিয়ে থাকেন। এটি মুলত ব্যবহার করা হয় যখন বাচ্চার জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা বমি এর মাত্রা বেড়েই চলে কোনভাবে কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না। এবং বাচ্চার মুখের ঔষধ খেতে পারেনা সাধারণত এই সময় ডাক্তার নাপা সাপোজিটরি 500 দিয়ে থাকেন।

নাপা সাপোজিটরি 250 এর ব্যবহার

ডাক্তাররা মূলত বয়স এবং ওজনের উপর নির্ভর করে সাপোজিটরি দিয়ে থাকেন। বাচ্চার বয়স যদি 1 থেকে 5 বছর হয় এবং যদি বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হয় তা হলে ডাক্তাররা নাপা সাপোজিটরি 250 এমজি দিয়ে থাকেন। এটি মুলত ব্যবহার করা হয় যখন বাচ্চার জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা বমি এর মাত্রা বেড়েই চলে কোনভাবে কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না। এবং বাচ্চার মুখের ঔষধ খেতে পারেনা সাধারণত এই সময় ডাক্তার নাপা সাপোজিটরি 250 দিয়ে থাকেন।

নাপা সাপোজিটরি 125 এর ব্যবহার

ডাক্তাররা মূলত বয়স এবং ওজনের উপর নির্ভর করে সাপোজিটরি দিয়ে থাকেন। বাচ্চার বয়স যদি 0 থেকে 1 বছর হয় এবং যদি বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হয় তা হলে ডাক্তাররা নাপা সাপোজিটরি 125 এমজি দিয়ে থাকেন। এটি মুলত ব্যবহার করা হয় যখন বাচ্চার জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা বমি এর মাত্রা বেড়েই চলে কোনভাবে কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না। এবং বাচ্চার মুখের ঔষধ খেতে পারেনা সাধারণত এই সময় ডাক্তার নাপা সাপোজিটরি 125 দিয়ে থাকেন।

বাচ্চাদের জ্বর হলে করণীয়

বাচ্চাদের জ্বর হলে প্রথমে আমরা যে কাজটি করিয়ে সেটি হচ্ছে ঘরোয়া চিকিৎসা অবলম্বন করে অর্থাৎ বাচ্চার জ্বর হলে আমরা প্রথমে বাচ্চাকে মাথায় পানি দিয়ে থাকি। এছাড়াও বাজার থেকে নাপা সিরাপ অথবা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ কিনে এনে খাইয়ে থাকি। কিন্তু জ্বরের মাত্রা দিন দিন বেশি হলে অর্থাৎ কোনভাবে ও জ্বর না কমে বরং জ্বর 102° এর উপরে ওটা শুরু করে তখন আমরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হই।

ডাক্তার বাচ্চার অবস্থা দেখে ঔষধ লিখে দিয়ে থাকেন। যদি বাচ্চার অবস্থা খুব খারাপ হয় এবং বাচ্চা কোনভাবে ও মুখে খাওয়ার ওষুধ খেতে পারে না অর্থাৎ ওষুধ খেলেই বমি করে দেয় এমত অবস্থায় ডাক্তার বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

জ্বর হলে আমাদের করণীয়গুলো হচ্ছে

  • জ্বরের মাত্রা কম থাকলে ঘরোয়াভাবে চিকিৎসা করা।
  • বাচ্চার মাথায় পানি দেওয়া
  • প্রাথমিক অবস্থায় বাচ্চার জন্য নাপা সিরাপ অথবা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো।
  • জ্বরের মাত্রা যদি বেড়েই চলে অর্থাৎ কোনভাবে ও জ্বর না কমে তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • জ্বরের মাত্রা 102 ডিগ্রি  এর বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাপোজিটরি ব্যবহার করা।

Suppository কেন দেওয়া হয়

Suppository মূলত তখনই দেওয়া হয় যখন একটি বাচ্চা জ্বর ব্যথা সহ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন আর কোন ভাবে ও মুখের ওষুধ দিয়ে সেরে তোলা সম্ভব হয় না। মূলত তখন সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়। বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে জ্বরের মাত্রা যদি 102° এর বেশি হয় তখন সাপোজিটরি দেওয়া হয়।

 

বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি

পায়খানা সাপোজিটরি

পায়খানা সাপোজিটরি হচ্ছে এমন এক ধরনের সাপোজিটরি যখন একটি বাচ্চা অথবা একজন পূর্ণ বয়স্ক লোকের টয়লেট করতে সমস্যা হয়। অর্থাৎ কোষ্ঠ কাঠিন্য সমস্যায় ভুগে থাকেন। মূলত এই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করার জন্য পায়ুপথে এক ধরনের ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। যা পায়ুপথে গলে গিয়ে পায়খানা নরম করতে সাহায্য করে। সাধারণত পায়খানা সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয় পায়খানা নরম করার জন্য।

সে ক্ষেত্রে বাচ্চা এবং পূর্ণ বয়স্ক লোকদের জন্য আলাদা আলাদা সাপোজিটরি আছে যা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।

সাপোজিটরি দাম

বাজারে বিভিন্ন ধরনের সাপোজিটরি কিনতে পাওয়া যায় এগুলোর দামও ভিন্ন ভিন্ন। সাপোজিটরির দাম মূলত 50 থেকে 100 টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। সাপোজিটরি পাওয়ার এবং কোম্পানি অনুযায়ী দাম কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। তাই আপনারা চাইলে সরাসরি কোন ওষুধের দোকান অথবা ফার্মেসি তে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন সাপোজিটরি দাম কি রকম।

অর্থাৎ আপনি যে ধরনের সাপোজিটরি কিনতে চাচ্ছেন তা সরাসরি ফার্মেসীতে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা দাম বলে দেবে।

সাপোজিটরি ব্যবহার নিয়ম

আমরা অনেকেই সাপোজিটরি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম না জানার কারণে ভুলভাবে সাপোজিটরি ব্যবহার করে থাকি। অথবা সঠিকভাবে সাপোজিটরি ব্যবহার করতে পারি না। চলুন আমরা এবার জানবো কিভাবে সঠিক পদ্ধতিতে এটি ব্যবহার করা যায়

  • সাপোজিটরি ব্যবহারের আগে সম্ভব হলে মলত্যাগ করে নেওয়া উচিত।
  • পরিষ্কার হাতে কয়েকবার সাপোজিটরি হতে প্লাস্টিক সরিয়ে নিতে হবে।
  • শুয়ে আছো বাপ দাঁড়িয়ে দুই বা 90 ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে বাজাতে হবে। এরপর খুব ধীরে ধীরে সাপোজিটরি পায়ুপথে সম্পূর্ণ প্রবেশ করাতে হবে। যাতে করে সাপোজিটরি পিছনের দিকে ফিরে না আসে।
  • দুই পা সোজা রেখে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
  • সাপোজিটরি ব্যবহারের পর কমপক্ষে 1 ঘন্টা টয়লেটে যাওয়া যাবেনা। যদি তা কোষ্ঠকাঠিন্য ব্যবহার ব্যবহৃত হয়। তা না হলে সাপোজিটরি সম্পূর্ণ কাজ না করে বেরিয়ে আসতে পারে।

মূলত আপনারা যদি এভাবে সাপোজিটরি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় সাপোজিটরি কার্যকর ফলাফল প্রদান করবে।

মন্তব্য

আজকে আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করেছি বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি নিয়ে। সেই সাথে বাচ্চাদের সাপোজিটরি নাম, সাপোজিটরি ব্যবহার, বাচ্চাদের জ্বর হলে করণীয়, সাপোজিটরি দেওয়ার নিয়ম এ বিষয়গুলো সম্পর্কে।

আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার আপনাদের বন্ধু অথবা প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে জানাবেন আমরা খুব দ্রুত আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply