বুকের ব্রণ দূর করার উপায় [১০০% কার্যকরী]

বুকের ব্রণ দূর করার উপায়

আমাদের স্কিনে যেসব রোগ খুব বেশি হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলে ব্রণ। মুখ,পিঠ বা ঘাড়ের পাশাপাশি ব্রণ অনেক সময় বুকে উঠতে লক্ষ্য করা যায়। তবে সবারই এই সমস্যা দেখা যায় না। যাদের স্কিন অতিরিক্ত তৈলাক্ত তাদের বুকে ব্রণ হতে লক্ষ্য করা যায়। বুকের ব্রণ দূর করতে ঘরোয়া উপায়ের কোন বিকল্প নেই। কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই কিছু উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে বুকে ব্রণ দূর করা সম্ভব হয়।

আজকে আমরা বুকের ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – ব্রেস্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ঢাকা

বুকের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়

লেবুর রস- লেবুর রস ব্রনের জীবাণু ধ্বংস করতে খুব বেশি কার্যকরী উপাদান। এটি জনের জীবাণু ধ্বংস করে ব্রণ কে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে ফেলে। লেবুর স্লাইস ব্রনের উপর কিছুক্ষণ ঘষে নিতে হবে অথবা লেবুর রসের ব্রণের উপর লাগাতে হবে। শুকিয়ে গেলেই পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

টুথপেস্ট- ব্রণের সংক্রমন বন্ধ করার জন্য অন্যতম উপাদান হিসেবে টুথপেস্ট খুব বেশি পরিচিত। টুথপেস্ট এর অ্যান্টি ব্যাক্টের উপাদান ব্রণের জীবনে ধ্বংস করে এবং বুকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করে দেয়। রাতে ঘুমানোর পূর্বে ব্রণের উপর টুথপেস্ট দিয়ে ঘুমাতে হবে। সকালে উঠে ঠান্ডা পানি দিয়ে বুকে টুথপেস্ট গুলো ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়ি বুকের ব্রণ দূর হয়ে যায়।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার- খুব দ্রুত ব্রণ শুকানোর জন্য আপেল সিডার ভিনেগার সাহায্য করে। দুই ভাগ পানির সঙ্গে একভাগ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিয়ে একটি তুলার বলের সাহায্যে বুকের ব্রণের উপরে মিশ্রণটি লাগিয়ে নিতে হবে। শুকিয়ে গেলেই ধুয়ে ফেলতে হবে এছাড়া এই ভিনেগারের সঙ্গে গ্রীনটি চিনি ও মধু মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এক সপ্তাহের মধ্যে বুকের ব্রন চলে যাবে।

বেকিং সোডা- সামান্য পানির সাথে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে বুকের ব্রণের উপর লাগাতে হবে। শুকিয়ে গেলেই ঠান্ডা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই উপাদানটি ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ত্বকের মরা কোষ দূর করে এবং ত্বককে নরম ও সতেজ করে তুলতে সহায়তা করে।

অ্যালোভেরার রস- রূপচর্চা এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য অ্যালোভেরা খুব বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করে এবং চুলকানি সমস্যার সমাধান হিসেবে এলোভেরা রস ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্রণের উপর সরাসরি এলোভেরা রস লাগিয়ে কিছুক্ষণ মাসাজ করতে হবে। এভাবে দশ মিনিট মাসাজ করার পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। একদিনে দুবারের বেশি এই রস ব্রণে লাগালে অনেক দ্রুতই বুকের ব্রণ খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।

পাকা পেঁপে- এক কাপ পাকা পেঁপে চটকে নিয়ে এর সঙ্গে এক চামচ পাতি লেবুর রস এবং প্রয়োজনমতো চালের গুড়া মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি বুকের ব্রণ সহ শরীরের যেসব জায়গায় ব্রণ রয়েছে সেখানে ২০ থেকে ২৫ মিনিট মাসাজ করে এরপরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। পেঁপে ছাড়াও এই মিশ্রণে ব্যবহার করা যেতে পারে ঘৃতকুমারির রস।

পুদিনা পাতার রস- পুদিনা বাটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করে সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে। সেটি ব্রনের জাযগায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঘষতে হবে। ব্রণের সংক্রমণ তো কমবে সঙ্গে ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাবও খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। ব্রনের দাগ দূর করার জন্য পুদিনা পাতার রস খাওয়া যেতে পারে।

লবঙ্গ- লবঙ্গ মূলত মসলা হিসেবে পরিচিত হলেও এটি বুকের ব্রণ সারাতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। লবঙ্গের তেল দিয়ে স্কিন মাসাজ করা খুবই উপকারী। ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেড়ে গেলে লবঙ্গ গুঁড়া করে তাতে গোলাপজল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এরপর বুকসহ শরীরের যেসব জায়গায় ব্রণ রয়েছে সে জায়গাগুলোতে এই মিশ্রনের প্রলেপ দিয়ে ২০ মিনিট রেখে পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে খুব সহজে ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

কদবেল- টক কদবেল খেতে অনেকেই ভালোবাসে। তবে কাঁচা কদ বেলের রস ব্রণের জন্য খুবই উপকারী এটা খুব কম মানুষই জেনে থাকে। কাঁচা কদবেলের রস তুলতে ভিজিয়ে আক্রান্ত জায়গা গুলোতে লাগানো যেতে পারে। ১০ মিনিট রেখে এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করার ফলে খুব সহজে ব্রণ চলে যাবে।

নিমপাতা- নিমপাতা জীবাণু নাশক হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। তাই বুকের ব্রণ সারাতে নিম পাতা খুব ভালো কাজ করে থাকে। নিমপাতা বাটার সঙ্গে চন্দনের গুড়া মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণটি আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

গোলাপ জল- গোলাপ জল নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ ও ব্রণ দুটোই খুব সহজেই সেরে যায়। চন্দন এর সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে ও মিশ্রণটি ব্রণের উপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ব্রণের সংক্রমণ চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

নিম পাতার শরবত- ১ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম টাটকা নিমপাতা কে জাল দিতে হবে। এরপর পানির পরিমাণ অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত জাল দিতে হবে। এই পানি ছেকে ঠান্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই জল পান করলে খুব সহজে ব্রণ দূর হয়ে যায় এবং আরও ছড়ানোর আশঙ্কা সম্ভাবনা অনেক আংশেই কমে যায়।

সরিষা- সরিষা তে প্রচুর পরিমাণে সেলাসিলিক এসিড রয়েছে যা ব্রণের সংক্রমণ এবং ব্রণের জীবাণু দূর করতে সহায়তা করে। সামান্য সরিষার গুড়ার সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্রণ যুক্ত স্থানে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে ব্রণ দূর হওয়ার পাশাপাশি ব্রনের দাগ এবং ব্রণের সংক্রমণ অনেকাংশে কমে যাবে।

বরফ- অনেক সময় ব্রণ অনেকের স্ক্রিনের সাথে মিশে যায়। সে স্থানে বরফ মাসাজ করলে ব্রণ ধীরে ধীরে ছোট হয়ে শুকিয়ে যায় এবং ব্রণের সংক্রম অনেক কম হয়। তবে ব্রণ যুক্ত স্থানে কখনোই নখ লাগানো উচিত নয়। এতে ব্রণ বা স্ক্রিনে ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও খুব গুরুতর হলে ক্যান্সারও হতে পারে।

বুকের ব্রণ দূর করার ক্রিম

বাজারে বুকের ব্রণ দূর করার উপায় হিসেবে বিভিন্ন কোম্পানির ব্রণ-দূর-করার-ক্রিম সাবান ও লোশন পাওয়া যায়। তবে আসল ঔষধ বা ক্রিম এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের নকল ক্রিম পাওয়া যায়। তাই কেনার পূর্বে সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। সোমা ক্রিম, বেটনোভেট, বোরো প্লাস,রেমি ,নভাক্লিয়ার একনে ক্রিম, নরমে একনে ক্রিম, ডারমাডিস্ক এন্টি একনে সিরাম,ওয়ান নাইট এন্টি একনে প্যাচ, fonacream plat,pimplex cream এই ক্রিমগুলো সাধারণত ব্রণের জন্য মানুষ বেশি ব্যবহার করে থাকে।

তবে সবচেয়ে ভালো হয় একজন স্কিন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে স্ক্রীন টাইপ অনুসারে ব্রণের চিকিৎসা করা। ডাক্তার নিজেই ক্রিম সাজেস্ট করবেন।

ব্রণ দূর করার ঔষধ

অনেক সময় ব্রণ মারাত্মক আকার ধারণ করে যা শুধুমাত্র ক্রিম বা ঘরোয়া চিকিৎসা মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হয় না। ফলে বিভিন্ন ঔষধ সেবন করতে হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোনো ঔষধে গ্রহণ করা উচিত নয়। ট্রেভিটা টেন এমজি ক্যাপসুল ব্রণের জন্য সুপরিচিত।

এটির প্রধান কাজ হচ্ছে মুখে তেল উৎপাদন কম করা। যে কোন ফার্মেসিতে বুকের ব্রণ দূর করার ঔষধ পাওয়া যায়। ত্বক তৈলাক্ত কম রাখাই বুকের ব্রণ দূর করার উপায়।

এছাড়াও বাজারে আরো কিছু ব্রন দূর করার ঔষধ পাওয়া যায় সেগুলো হলো- acnegel,aclene plus gele,adaben duo gel,fresh look,No mark gel, To na plus,Adagel plus

বুকের ব্রণ দূর করার উপায়

মন্তব্য

আজকে আমরা বুকের ব্রণ দূর করার উপায় এবং বুকের ব্রণ দূর করার সহজ ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন। এবং আর্টিকেল সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply