সৌদি যাত্রীদের এয়ারপোর্টে কি কি কাগজ লাগে
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। যারা প্রথমবারের মতো সৌদি আরব হওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাদের অনেকেই জানেনা এয়ারপোর্টে কি কি কাগজ লাগে কিংবা এয়ারপোর্টে কি কি করতে হয়। প্রত্যে দেশের এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে। সঠিকভাবে নিয়ম ফলো না করলে ইমিগ্রেশনে সমস্যা হতে পারে এমনকি আপনার ফ্লাইট ক্যানসেল হতে পারে। তাই প্রথমবার যারা সৌদি আরব যাওয়ার কথা ভাবছেন তাদের জন্য আজকের পোষ্টটি হেল্পফুল হতে পারে। কেননা এয়ারপোর্টে সাধারনত সিকিউরিটি অনেক হাই থাকে বিশেষ করে আপনি যারা সৌদি আরব ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজ করতে যান তাদের জন্য আরো অতিরিক্ত নিয়ম থাকে।
তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো সৌদি যাত্রীদের এয়ারপোর্টে কি কি কাগজ লাগে, এয়ারপোর্টে কি কি করতে হয়। এছাড়াও বিমানা উঠার নিয়ম নিয়েও বিস্তারিত থাকবে আজকের পোষ্টে। আশা করছি আজকের ব্লগটি আপনাদের খুব ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
সৌদি যাত্রীদের এয়ারপোর্টে কি কি করতে হয়
যেমনটা আমরা বলেছি এয়ারপোর্টের সিকিউরিটি ও নিয়ম কানুন অন্যান্য যায়গায় চেয়ে ভিন্ন ও অনেক কঠোর। তাই আপনি যদি সঠিক নিয়ম ফলো করে এয়ারপোর্টে না ঢুকেন সেক্ষেত্রে আপনি নানা রকম ঝামেলায় পড়তে পারেন। আমরা ধাপে ধাপে দেখার চেষ্টা করবো একজন সৌদি যাত্রীদের এয়ারপোর্টে কি কি কাগজ লাগে এবং এয়ারপোর্টে কি কি করতে হয়
- পাসপোর্ট ৬ মাস মেয়াদ
- ভিসা মেয়াদ
- সৌদি কাজের জন্য গেলে ম্যান পাওয়ার BMET স্মার্ট কার্ড সাথে থাকতে হবে
- এরাইভেল রেজিট্রেশন বা মুকিম রেজিট্রেশন দেখাতে হবে
- ফ্লাইটের ৩ ঘন্টা আগে উপস্থিত থাকতে হবে
- ট্রাভেল ইন্সুরেন্স থাকতে হবে
পাসপোর্ট দেখাতে হবে – প্রথমত আপনাকে আপনার বৈধ পাসপোর্ট সাথে নিয়ে যেতে হবে এবং ইমিগ্রেশনের সময় দেখাতে হবে। পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে এবং পাসপোর্টে কমপক্ষে ২ টি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে। বর্তমানে অনেকেই অনলাইনের ই পাসপোর্ট করছেন। ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
ভিসা – বিদেশ যাওয়ার সময় এয়ারপোর্টে যে গুরুত্বপূর্ণ কাগজটি আপনার সাথে থাকতে হবে তা হলো ভিসা মুল কপি। যেমনটা আপনারা জানেন সৌদি আরব বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা প্রবাসীদের জন্য দিয়ে থাকে। তাই আপনি কোন ভিসা নিয়ে সৌদি যাচ্ছে তা প্রমানে জন্য সাথে অবশ্যই ভিসা থাকতে হবে।
BMET স্মার্ট কার্ড – ম্যানপাওয়ার বা BMET স্মার্ট কার্ড সাথে থাকতে হবে। একটি বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের জন্য দিয়ে থাকে যারা বাইরে বিভিন্ন বিষয়ে কর্ম করার জন্য যায়।
মুকিম রেজিস্ট্রেশন – ওকে স্টেশন হচ্ছে আপনি নিজের মুখ ইমাম মালিকের কাজ করতে যাবেন সে কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ফরম। অর্থাৎ আপনি যদি আরব কাজ করার জন্য যাচ্ছেন তা প্রমাণের জন্য আপনার মালিকের পক্ষ থেকে অনুমোদন পত্র দেখাতে হবে।
পর্যাপ্ত সময় নিয়ে এয়ারপোর্ট যেতে হবে – যেমনটা আপনারা অনেকেই জানেন এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন প্রসেস অনেক জটিল এবং লম্বা সময় লাগে। বিশেষ করে যারা সৌদি আরব কাজ করতে যাবে তাদের ইমিগ্রেশনে অনেক বেশি সময় থাকতে পারে। হাতে যথেষ্ট পরিমাণ সময় নিয়ে এয়ারপোর্টে আসার নয়তো নাইট মিস হয়ে যেতে পারে। ফ্লাইটের কমপক্ষে তিন ঘন্টা আগে এয়ারপোর্টে প্রবেশ করা উচিত।
ট্রাভেল ইন্সুরেন্স – এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন এর সময়ে সৌদি প্রবাসীদের অবশ্যই ট্রাভেল ইন্সুরেন্স দেখাতে হবে। দেশে থাকতেই ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করে নেয়া যায়।
ইমিগ্রেশন কি এবং কিভাবে করে
ইমিগ্রেশন আছে এয়ারপোর্টে সিকিউরিটি সিস্টেম এবং ছাড়পত্র। যে কোন ব্যক্তি এয়ারপোর্ট এর মাধ্যমে ভ্রমণ করতে চাইলে তাকে নির্দিষ্ট নিয়ম ফলো করে চেক করা হয় এটি করার পদ্ধতিকে বলা হয় ইমিগ্রেশন। সাধারণত আপনার কাগজপত্র বৈধ কিনা, সাথে কোনো অবৈধ জিনিসপত্র আছে কিনা, আপনার বিদেশ গমনের উদ্দেশ্য তা ভালভাবে যাচাই করার জন্য ইমিগ্রেশন করা হয়। তবে সাধারণত যারা বাইরের দেশে কাজ করতে চান মূলত কাগজপত্র চেক করা। আপনার যদি সব কাগজপত্র সঠিক নিয়মে করা হয় তাহলে ইউনিভিশন নিয়ে আপনার চিন্তার কিছু নেই। খুব অল্পসময়ের মধ্যেই হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন – সৌদি ভিসা চেক করার নতুন নিয়ম – অনলাইনে সৌদি ভিসা চেক করার পদ্ধতি
বিমানে ওঠার নিয়ম
প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে আছে তাদের অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না বিমানে ওঠার নিয়ম কে এবং বিমানে কিভাবে সবকিছু করতে হয়। তাই নতুন অসুবিধার জন্য আমরা বিমানে কিভাবে উঠতে হয় এবং বিমানে উঠার নিয়ম নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করছি
টয়লেট ব্যবহার – বিমানে সাধারণত যে ভুলগুলো করে থাকে তা হচ্ছে টয়লেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে। অপরিষ্কার অবস্থায় টয়লেট রেখে আসা কিংবা টয়লেটে ঢুকলে লম্বা সময় লম্বা সময়ের জন্য টয়লেট ব্যবহার করা অভদ্রতা। তাই বিমানে টয়লেট ব্যবহারে সচেতন হোন।
অতিরিক্ত সুগন্ধি মাখানো – অনেকেই দেশের বাইরে যাবেন সে হিসেবে অনেক বেশি বডি স্প্রে কিংবা আতর মেখে বিমানে উঠেন যা মোটেই ঠিক নয়। যেহেতু বিমানের ভেতরে অল্প যায়গায় অনেক মানুষ বসে এবং বাতাস চলাচল থাকে না তেমন একটা তাই বন্ধ যায়গায় অনেক বেশি সুগন্ধি মাখলে তা অন্যের কষ্টের কারন হতে পারে।
মালামাল ঠিক যায়গায় রাখুন – প্রত্যেকের নিজস্ব জিনিস রাখার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম ও যায়গা ঠিক করে দেয়া আছে। কনভাবেই অন্যের যায়গায় রাখা যাবে না। নিজের জিনিসপত্র রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে অন্য কারো যেন ক্ষতি না হয়।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন – বিমানের ভেতর ধূমপান করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কোনভাবেই বিমানের ভেতর ধূমপান করা যাবে না। এতে করে আপনার শাস্তি হতে পারে।
বিমান বালাদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন – বিমানের ভেতর সার্বিক সহযোগিতার জন্য যেসব মেয়েরা থাকেন তাদের বিমান বালা বলা হয়। বিমান বালাদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। কোনভাবেই তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। কোন কিছু প্রয়োজন হলে ভদ্রভাবে তাদের ডাকুন।
সৌদি যাত্রীদের এয়ারপোর্টে কি কি কাগজ লাগে
উপরে আমরা এয়ারপোর্টে কি কি করতে হয় এবং বিমানে ওঠার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি সৌদি আরব গামী ভাইদের কিছুটা হলেও উপকারে এসেছে। ভালো লাগলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোষ্ট গুলো পড়ুন। আমরা নিয়মিত বিদেশ ও ভিসা রিলেটেড পোষ্ট করে থাকি। আশা করছি আমাদের অন্যান্য পোষ্টগুলো আপনাদের ভালো লাগবে। ভালো লাগলে ব্লগটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ
আরো পড়ুন – সৌদি যাত্রীদের এয়ারপোর্টে কি কি কাগজ লাগে – এয়ারপোর্টে কি কি করতে হয়