সর্দির ট্যাবলেট এর নাম
জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি কিছুদিন পর পর হয় না এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমাদের শরীরে যে রোগ গুলো খুব সহসাই দেখা যায় তাহলেও সর্দি জ্বর। সর্দি জ্বর বিভিন্ন কারণে হতে পারে অনেক সময় ফ্লু জনিত কারণে বা অনেক সময় পরিবেশের কারণে। তাই অনেকে সর্দির ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করে থাকেন।
আজকে আমরা সর্দির ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।
আরো পড়ুন – সর্দি কাশি গলা ব্যথার ওষুধ ছাড়া কিভাবে ভাল করবেন
সর্দি মূলত কি?
সর্দি হল নাকের এক ধরনের শ্লেষ্মা। সাধারণত সর্দি হলে আমাদের নাক দিয়ে পানি বের হয়। অনেক সময় নাক বন্ধ হয়ে যায়। শরীরের বিভিন্ন এলার্জি বা ঠান্ডা সমস্যা জনিত কারণে সাধারণত সর্দি হয়। তখন নাক দিয়ে পানি পড়াকে সর্দি বলা হয়।
সর্দি কেন হয়?
সর্দির ট্যাবলেট এর নাম জানার পাশাপাশি সর্দি হবার কারন জানা দরকার। যেমন-
- অনেক সময় ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া কারণে সর্দি হতে পারে
- এছাড়া ধুলাবালি যুক্ত স্থানে থাকলে
- নিজের ব্যবহারের জিনিস্পত্র পরিষ্কার না রাখলে
- শরীর এলার্জির পরিমাণ বেশি হলে
- সিজন পরিবর্তনের সময়
- অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়লে
- ঠান্ডা জিনিস ঠান্ডা পানি আইসক্রিম ফ্রিজের যেকোনো জিনিস খেলে
- এছাড়াও ফ্লু জনিত যে কারো সর্দি কাশি হলে তার আশেপাশে থাকলে শরীরের সর্দি হতে পারে
ঠান্ডাজনিত সর্দির লক্ষণসমূহ
সর্দির ট্যাবলেট এর নাম আমরা নিচে উল্লেখ করেছি। তবে আগে সর্দির লক্ষন জানতে হবে-
- কাশি
- গলা ব্যথা
- হাঁচি
- নাক দিয়ে পানি
- পড়া নাক বন্ধ হওয়া
- মাংসপেশিতে ব্যথা
- মাথা ব্যথা
- জ্বর
- স্বাদ এবং ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসা
- কানের মুখে চাপ অনুভব করা
- নিশাস নিতে কষ্ট হওয়া
সর্দির ট্যাবলেট এর নাম
সর্দির ট্যাবলেট এর নাম এর তালিকা নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো-
- Histachin
- Histalex
- Fexo 120mg
- Deslor
- Ace+
- Neocilor
- Napa extend
- Filamex 400
- Metrik
- Rupa
- Alatrol
স্কয়ার কোম্পানির সর্দির ট্যাবলেট এর নাম
ওষুধের কোম্পানি গুলোর মধ্যে স্কয়ার কোম্পানি সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত হয়। সর্দির যেসব ট্যাবলেটগুলো রয়েছে সেগুলোর নিচে দেওয়া হল-
- Carva 75
- Cetofil 250
- Cetofil plus
- Cinaron
- Cinaron plus
জ্বর সর্দি কাশির ট্যাবলেট
- এইচ প্লাস
- নাপা এক্সটেন্ড
- ফিলমেট
- হিস্টালেক
- হিস্টর সিং
- নিউ সিলর
সর্দির সিরাপের নাম
অনেকে আছে যারা সর্দির ট্যাবলেট খেতে পছন্দ করেন না বা খেতে পারেন না। তারা চাইলেই সর্দির জন্য সিরাপ খেতে পারেন। সর্দির সিরাপ বাজারে অনেকগুলো পাওয়া যায়। নিচে নাম উল্লেখ করা হলো-
- পেডিয়ামিন
- হিস্টাসিন
- তুসকা
- এডভান্স
- এলাট্রল
- citizen
- পিউরিসাল
সর্দির ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
অনেক সময় আমাদের সর্দি কাশি হলে আমরা সর্দি সারানোর জন্য যে কোন ট্যাবলেট সেবন করি। সাধারণত দিনে তুলনায় রাতে সর্দি কাশি বেশি দেখা দেয়। তাই সর্দি কাশির ওষুধ এমন উপাদান রয়েছে যা আপনাকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে তুলতে পারে। এছাড়াও মেজাজ খিটখিটে হওয়া নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া সহ সর্দির সাথে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। তাই সর্দির ওষুধ খাওয়ার পর সতর্ক থাকুন। গাড়ি চালানো বা বাইরে বের না হয় উত্তম। সর্দির ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সর্দি হলে করণীয়
- ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া
- তরল সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
- দিনে দুই থেকে তিনবার মধু খাওয়া
- বিশ্রাম নেওয়া
- হট স্যালাইন পান করা
- অনেক বেশি বেশি পানি পান করা
- হাচির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা
- বারবার সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করা
- নিজের রুম ব্যবহারের জিনিসপত্র ধুলাবালি মুক্ত রাখা পরিষ্কার রাখা
- হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা
- গরম সুপ খাওয়া
- ন্যাপথলের গরম পানির ভাপ নেওয়া
সর্দি হলে বর্জনীয়
সর্দির ট্যাবলেট এর নাম নাম জানার পাশাপাশি সর্দি হলে কি কি কাজ করা ঠিক নয় তা জানা দরকার। তা হল-
- স্ট্রবেরি ফল খাওয়া যাবেনা
- টক জাতীয় ফল এড়িয়ে চলবেন
- গলায় চুলকানো হয় এমন কোন খাবার খাওয়া যাবেনা
- এলার্জি থাকলে এলার্জিজনিত খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে
- দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাবেন
- ঠান্ডা খাবার খাওয়া যাবেনা
- কলা খাওয়া যাবেনা
- চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন
- অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা
সর্দি সারানোর ঘরোয়া উপায়
জ্বর ঠান্ডা সর্দি সারানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলেই খুব সহজেই সরতে ভালো হয়ে যায়। সাধারণত সর্দি কাশি কিছুদিন পর এমনি ভালো হয়ে যায় কোন ওষুধ খাবার প্রয়োজন হয় না। তবে অতিরিক্ত হলে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন-
মেন্থল এবং গরম পানির ভাপ নেওয়া- হালকা গরম পানিতে মেন্থল দিয়ে একটি কাপড় দিয়ে নিজের মাথা ঢেকে বাটির উপর কিছুক্ষণ রেখে নিঃশ্বাস নিতে হবে। দিনে দুই থেকে তিন বার এই গরম পানির ভাপ নিলে খুব সহজেই সর্দি সেরে যাবে।
সরিষার তেল এবং রসুন- একটি চামচে এক চামচ সরিষার তেল নিয়ে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন তাতে গরম করে সেই তেল হাতে বুকে নাকের মালিশ করলে খুব সহজেই সর্দি ভালো হয়ে যায়।
মধু এবং তুলসী পাতার রস- মধুকে বলা হয় সর্ব রোগের ঔষধ। মধুর সাথে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে খুব সহজেই সর্দি কাশি ভালো হয়ে যায়।
মধু এবং লেবুর রস- সর্দি হলে লেবু খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এ সময় ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত। এক চামচ মধুর সাথে দুই থেকে তিন ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন। এতে করে সর্দি খুব সহজেই ভালো হয়ে যাবে।
হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করা- সর্দি হলে অনেকে গোসল করা বন্ধ করে দেয় যার ফলে সর্দি নাকি আটকে যায় বা সর্দি ঘন হয়ে যায় ফলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মূলত সর্দি হলে হালকা কুসুম গরম পানিতে প্রতিদিন গোসল করলে শরীর তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায় এবং সর্দিও বন্ধ হয়ে যায়।
মাথা উঁচু বালিশে দেওয়া- সাধারণত মানুষের নাক দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বিশেষ করে রাতের বেলায় সর্দি খুব বেড়ে যায় তাই সর্দি কাশি হলে অবশ্যই নিচু বালিশে ঘুমানো যাবে না। উঁচু বালিশে ঘুমাতে হবে।
এসির টেম্পারেচার কমিয়ে রাখুন- সারাদিন এসি না চালিয়ে কিছুক্ষণ পর পর অফ করে নরমাল আবহাওয়া সাথে এডজাস্ট করা উচিত। এসির বাতাসে অনেক সময় অনেকের সর্দি লেগে যেতে পারে।
সরাসরি ফ্যানের নিচে না ঘুমানো- সরাসরি ফ্যানের নিচে ঘুমালে অনেক সময় বুকে বাতাস লাগে যার ফলে সর্দি লেগে যায়। তাই সর্দি লাগলে অবশ্যই এখানে কিছুটা দূরে ঘুমাতে হবে যার ফলে সেরে যাবে।
গরম স্যুপ খাওয়া- সর্দি হলে গরম স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। চিকেন স্যুপ ভেজিটেবল সুপ সহ বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত করে পাওয়া যায় সেগুলো রান্না করে দিনে দুই থেকে তিনবার খেলে সর্দি খুব সহজেই ভালো হয়ে যাবে।
চা কফি- সর্দি হলে অবশ্যই আদা চা এবং লেবু চা খেতে পারেন। চা কফি যদি অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয় তবে সর্দি হলে চা কফি খেলে সর্দি অনেকটাই কমে যাবে।
সর্দি কাশি প্রতিরোধে করনীয়
- সব সময় নিজের ব্যবহার যে জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখা
- অন্যের ব্যবহার করার জিনিস ব্যবহার না করা
- এলার্জি থাকলে এলার্জি জনিত খাবার থেকে দূরে থাকা
- কারো সর্দি কাশি হলে তার থেকে দূরে থাকা
- দিনে দুই থেকে তিনবার ভালো ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে
- যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলা
- সীজন পরিবর্তনের সময় নিজের যত্ন নেওয়া
- গরমে ঘাম হলে সঙ্গে মুছে ফেলা
- রোদে ছাতা ব্যবহার করা
- ঠান্ডা বরফ জিনিস না খাওয়া
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
সাধারণত সর্দি কাশি গুলো ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে হয়ে থাকে যার ফলে কিছুদিন পর নিজ থেকেই সেরে যায় বা ওষুধ সেবন করলেই সেরে যায়। তবে অনেক সময় সর্দি কাশি সহজেই সারতে চায় না। এতে করে নাকি চামড়া উঠে যায় এবং নাকে ঘা দেখা দেয়। এ ছাড়া নাকের সাথে পানির সাথে রক্ত যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। এবং যেকোনো ঔষধ বা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিত।
সর্দির ট্যাবলেট এর নাম
আজকে আমরা জ্বর ঠান্ডা সর্দির ট্যাবলেটের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি সর্দির ট্যাবলেট এর নাম আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলকে ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।
প্রতিদিন নতুন নতুন সব আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।
আরো পড়ুন –
- ৩ মাসের শিশুর সর্দি হলে করণীয়
- বাচ্চাদের কাশির সিরাপ, বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম
- চুলকানির ঔষধের নাম, চুলকানির ট্যাবলেটের নাম