জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম, আশারায়ে মুবাশশারা

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম

যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামকে নিজের চোখে দেখেছেন তার দেখানো পথে চলেছেন তাদেরকে সাহাবী বলে। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম জীবিত অবস্থায় ২০ জন সাহাবীর নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন। যারা জান্নাতের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন তাই জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম কি বা আশারায় মুবাশশারা কাদের বলা হয় সে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান।

আরো পড়ুন – দুই লাইনের রোমান্টিক স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, উক্তি

সাহাবী কারা?

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম

সাহাবী নামের অর্থ হল সাহাবীগ ণ সঙ্গী সাথী। ইংরেজিতে যাদেরকে বলা হয় the companions। সাহাবী শব্দটি আরবি ভাষার সহবত শব্দের একটি রূপ। একবচনে সাহাবী। বহুবচনের সাহাবাতন ও আসহাব হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যার আভিধানিক অর্থ সঙ্গী সাথী বন্ধু অনুসারে সহচর একসাথে জীবন যাপনকারী।

ইসলামে সাহাবী দ্বারা হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সঙ্গী সাথীদের বুঝানো হয়।

মোট সাহাবীদের সংখ্যা কত

মোট সাহাবীদের সংখ্যা কত তা সঠিকভাবে ইসলামের কোথাও বলা নেই। এটা সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। ইমাম আবু স্যার আর রাজি রাহমাতুল্লাহি বলেন মহানবী সাঃ যখন মারা যান তখন যারা তাকে দেখেছেন এবং যারা তার কথা শুনেছেন এমন লোকের সংখ্যা নারী-পুরুষ মিলে এক লাখের উপরে হবে বলে ধারণা করা হয়।

তাদের প্রত্যেকেই মুহাম্মদ সাঃ হাদিস বর্ণনা করেছেন সুতরাং বোঝা যায় সাহাবীদের মোট সংখ্যা অনেক তার গণনা করা সম্ভব নয়।

আশারায়ে মোবাশশারা কারা

আসারা আরবি শব্দ যার অর্থ হলো দশ। আর মুবাশশারা অর্থ সুসংবাদপ্রাপ্ত। অতএব আশারায়ে মোবাশ্বরা হল ১০ জন সুসংবাদপ্রাপ্ত। ইসলামী পরিভাষা আশারায় মুবাশ্বরা বলতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যে দশজন সাহাবীকে হাদিস অনুযায়ী তার জীবন দশায় জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

আল্লাহতালার পক্ষ থেকে সুসংবাদ এসেছে তাদেরকে আশারায়ে মোবাশশারা বলা হয়ে থাকে।

আশারায়ে মোবাশশারা সাহাবীদের নাম

এই পর্যায়ে আমরা জানবো আশারায়ে মুবাশশারা সাহাবীদের নাম-

  1. হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু
  2. ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু
  3. ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু
  4. আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু
  5. তালহা ইবনে উবাই বিল্লা রাদিয়াল্লাহ
  6. জুবায়ের ইবনুল আউয়াম রাদিয়াল্লাহু
  7. আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু
  8. সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু
  9. সাদ ইবনে সাঈদ রাদিয়াল্লাহু
  10. আবু উবাইদা ইবনুল জাররা রাদিয়াল্লাহু

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের জীবন দশায় ২০ জন সাহাবীদের জান্নাতি বলে ঘোষণা করেছেন। নিচে আমরা তা উল্লেখ করা হলো-

  1. ওহাব ইয়াসির ইবনে আমির বা ইবনে ওহাব
  2. ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মদ
  3. বাশার হাবিব বিনতে মাসলামা
  4. সাইব বিনতে মালিক
  5. সালমান আল ফার্সি
  6. হাসান ইবনে সাবিত
  7. হোসাইন ইবনে আলী
  8. উমায়ের ইবনে ওয়াহাব
  9. ইবনে আফফান
  10. ওয়াকিব ইবনে আব্দুল্লাহ
  11. হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু
  12. ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু
  13. ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু
  14. আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু
  15. তালহা ইবনে উবাই বিল্লা রাদিয়াল্লাহ
  16. জুবায়ের ইবনুল আউয়াম রাদিয়াল্লাহু
  17. আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু
  18. সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু
  19. আবু উবাইদা ইবনুল জাররা রাদিয়াল্লাহু

আশারায়ে মোবাশশারা সাহাবীদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম সহ নিচে আশারায়ে মোবাশশারা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা করা হল-

আবু বকর সিদ্দীক- আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু ইসলামের জন্মের দুই বছর পর জন্মগ্রহণ করেন ও তার মৃত্যুর দুই বছর পর ২৩ আগস্ট ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ইসলামের প্রথম খলিফা এবং প্রথম মুসলিমদের তালিকায় অন্যতম। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন হযরত আবু বকর সিদ্দিক।

তিনি মোহাম্মদ সাঃ এর শ্বশুর ছিলেন। তাকে তার অতুলনীয় বিশ্বাসের জন্য সিদ্দিক বা বিশ্বস্ত উপাধিতে হযরত মুহাম্মদ সাঃ ভূষিত করেন।

উমর ইবনুল খাত্তাব- উমর এর জন্ম ৫৮৩ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যুর ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল। ইসলামী দ্বিতীয় খলিফা এবং প্রধান সাহাবীদের অন্যতম হলেন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু এর মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্ব নেন। মেয়ের জন্য তাকে আল-ফারুক বা সত্য মিথ্যার পার্থক্য কারো উপাধি দেয়া হয়।

আমিরুল মুমিনিন উপাধিটি সর্বপ্রথম তার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা।

ওসমান ইবনে আফফান- উসমান ইবনে আফফান ৫৮0 খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৭ জন ৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন ইসলামিক তৃতীয় খলিফা ৬৪৪ থেকে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি খেলাফতের দায়িত্ব পালন করেন। খলিফা হিসেবে তিনি চারজন খোলাফা রাশি দিনের একজন।

তিনি সেই ছয় জন সাহাবীদের অন্যতম যাদের উপর আল্লাহ খুশি। তাকে দুই নুরের অধিকারী হিসেবে নামকরন করা হয়।

আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু – ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬৬১ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। খলিফা ছিলেন হযরত মুহাম্মদ সাঃ তিনি ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হন। ইসলামের মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম ব্যক্তি যে মহানবী সাঃ এর সাথে একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন।

তালহা ইবনে উবাই বিল্লা রাদিয়াল্লাহ- ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম আট জনের একজন। তিনি একজন কনিষ্ঠ সাহাবী ছিলেন দ্বিতীয় যুদ্ধে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জুবায়ের ইবনে আওয়াম- জুবায়ের ইবনুল ইসলামের প্রথমদিকে একজন সাহাবী তিনি আসার আই মোবাশশারা ১০ জন সাহাবীদের একজন।

আব্দুর রহমান ইবনে আউফ- আব্দুর রহমান ইবনে আউফ ৭২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। প্রথমে তার নাম ছিল আব্দুল অমর বা আমরের দাস। ইসলাম গ্রহণ করার পর হযরত মুহাম্মদ সাঃ তার নাম দেন তালহা ইবনে উবাই বিল্লা রাদিয়াল্লাহ।

সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু- ১৭ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে ১৭তম ব্যক্তি ছিলেন। ৬১৬ এবং ৬৫১ সালে তিনি কূটনীতির দায়িত্ব নিয়ে চীনে গিয়েছিলেন।

সাদ ইবনে সাঈদ- সাঈদ ওমর রাদিয়াল্লাহু এর ভাগ্নির প্রতি অর্থাৎ মনের মন ফাতেমা বিনতে খাত্তাবের স্বামী ছিলেন। তিনি পুর্তলিকতা থেকে মুক্ত ছিলেন। ৬৭৩ খ্রিস্টাব্দে ৮০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আবু ওবাইদ ইবনে ওমর- ইবনে আব্দুল্লাহ সেনাবাহিনী সেনাপতি ছিলেন। তিনি ৫৮৩ সালে বণিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সদস্য ছিলেন ইসলাম গ্রহণের পরীয়দিনে অন্যতম কুরাইশএবং সকলের গণ্য হতেন তিনি তার অমায়িকতা এবং সাহসিকতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

আশারায়ে মুবাশশারা এর ঘটনা

হিজ্রি দশম সালের মদিনায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। যার ফলে অনেক লোক অনাহার এবং অর্থহারে দিন পার করছিল। কোন দিক থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতা এবং খাদ্য সামগ্রী আমদানি হওয়ার সম্ভাবনা ছিলনা। এমনই একসময় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম মদিনা মসজিদে খুতবা দান করছিলেন।

এমন সময় হঠাৎ কেউ একজন সংবাদ দিলো যে শ্যাম দেশ থেকে প্রচুর খাদ্য সামগ্রী নিয়ে একদল বণিক মদিনায় আগমন করেছে। তখন সাহাবায়ে কেরাম বণিক দলের নিকট তাড়াতাড়ি করে চলে যায়। কেবলমাত্র ১0 জন সাহাবা সেখানে না গিয়ে মনোযোগ সহকারে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর খুতবা শুনার জন্য বসে রইলেন।

মোহাম্মদ সালাহ সালাম তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে একে একে তাদের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে আশারায় মুবাশ্বেরিন বা বেহেস্তবাসী বলে ঘোষণা করেন।

আশারায়ে মোবাশশারা সম্পর্কে হাদিস

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম নেচে উল্লেখ করা হল। সাঈদ ইবনে সাঈদ রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন আব্দুর রহমান ইবনুল আকনাস বলেন যে তিনি যখন মসজিদে প্রবেশ করেন তখন একজন ব্যক্তি আলীকে সালাম দেন তখন সাইর ইবনে সাঈদ দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বলেন আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে আল্লাহর নবী বলতে শুনেছি যে ১০ জন লোক জান্নাতে যাবে।

তারা হল- হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু, ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু, ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু, আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু, তালহা ইবনে উবাই বিল্লা রাদিয়াল্লাহ, জুবায়ের ইবনুল আউয়াম রাদিয়াল্লাহু, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু,সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু, আবু উবাইদা ইবনুল জাররা রাদিয়াল্লাহু।

আমি কি দশম ব্যক্তির নাম বলব লোকেরা বলল কে সে তিনি চুপ থাকলেন লোকেরা আবার বলল কে সে তিনি হলেন সে হলো সাদ ইবনে সাঈদ।

জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম

মন্তব্য

আজকে আমরা জান্নাতি ২০ সাহাবীর নাম সহ বিস্তারিত তথ্য ও শেয়ার করার চেষ্টা করব। আশা করছি  আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন।

এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply