চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করবেন?

চোখ উঠলে কোন ড্রপ

চোখের সাধারণ রোগ গুলোর মধ্যে চোখ ওঠা খুব বেশি পরিচিত। এই চোখ ওঠা শুনতে সাধারণ মনে হলেও এর ভোগান্তি অনেক। চোখ উঠলে চোখের জ্বালা পোড়া ভাব বেড়ে যাওয়া ফুলে বড় হয়ে যাওয়া চোখ দিয়ে পানি পড়া সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তি খুবই অস্বস্তি অনুভব করে।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের ড্রপ পাওয়া যায়। অনেকেই জানেন না চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হয়। আজকে আমরা চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হয় এবং চোখ ওঠা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক কাজে লাগবে।

চোখ ওঠা রোগ কি?

অনেকে চোখ ওঠাকে ডাক্তারি ভাষায় কনজাংটিভিটিস বা কনজাংটিভিটি বলে। মূলত চোখের আবরণে প্রদাহ হয়ে থাকে বলে একে চোখ উঠা রোগ বলে। বিশেষ করে গরমে এবং বর্ষা সময়ে অতিরিক্ত চোখ ওঠার সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি লক্ষ্য করা যায়। তবে যে কোন ভাইরাসজনিত সমস্যার কারণে এই চোখ ওটা রোগ হতে পারে।

চোখ ওঠা প্রধানত ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত জনিত কারণে হয়ে থাকে। তাই এটি এক ধরনের ছোঁয়াচে রোগ বলেই জানা যায়। এই চোখ উঠা একজনের হলে খুব দ্রুত পরিবারের বা আশেপাশে সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও অতিরিক্ত এলার্জিজনিত সমস্যার কারণেও অনেকের চোখ উঠে থাকে।

চোখ ওঠার কারণ

সাধারণত ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠার রোগ হয়। আবার কখনো কখনো এলার্জির কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে সে সময়ে এই চোখ ওঠার সমস্যা বেশি মানুষের হতে লক্ষ্য করা যায়। তবে ডাক্তারি ভাষায় মূলত তিন কারণেই চোখ ওঠার রোগ হয়ে থাকে। আর তা হলো ভাইরাস এলার্জি এবং ছোঁয়াচে। তাছাড়া অপরিষ্কার ও নোংরা জীবন যাপন চোখ ওঠার অন্যতম কারণ।

চোখ উঠার লক্ষণ

চোখ উঠার লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানলে চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করা ভালো সে সম্পর্কে জানা যাবে।

  • চোখ ওঠা রোগে চোখ লাল হয়ে যায়
  • এই কন্সাল্টিভিয়ার নালিগুলো প্রদাহার কারণে ফুলে বড় হয়ে যাওয়া
  • রক্ত প্রবাহ বেড়ে যাওয়া
  • ঘুম থেকে উঠলে চোখ আঠা আঠা লাগে
  • সব সময় চোখের ভিতরে কিছু একটা পড়েছে এমন অনুভূতি হয়
  • চোখ চুলকানো
  • জ্বালাপোড়া করা
  • আলোর দিকে তাকালে অস্বস্তি লাগা
  • সবকিছু ঘোলা ঘোলা দেখা
  • চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়া
  • চোখের কোনায় ময়লা জমে থাকা
  • চোখ ফুলে যাওয়া
  • চোখ খুলতে কষ্ট হওয়া

চোখ উঠলে কোন ড্রপ দিতে হয়?

বাজারে বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ড্রপ চোখের জন্য পাওয়া যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে ভাইরাসে আক্রমণের পর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটে এই জন্য দিনে তিন থেকে চারবার চোখের এন্টিবায়োটিক ড্রপ ক্লোরোমফেনিকল ব্যবহার করতে হবে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ না হলেও সেকেন্ডারি ইনফেকশন প্রতিরোধ করার জন্য এটি ব্যবহার করা যায়।

চোখে চুলকানি থাকলে এন্টিহিস্টামিন সেবন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও চোখ উঠলে চোখে ক্রিম ব্যবহারের জন্য অনেক সময় চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

চোখ ওঠার চিকিৎসা

কনজ্যান্তি ভাইটিসের কারণ এর উপর নির্ভর করে চোখ ওঠা রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চোখ উঠলে চিকিৎসা প্রতি চার থেকে ছয় ঘণ্টা পরপর এন্টিবায়োটিক মলম বা ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ব্যবহারের জন্য এন্টিবায়োটিক মলম দিতে পারেন। ভাইরাস বা এলার্জির কারণে হলে এন্টিবায়োটিক মলম দেওয়া যেতে পারে।

যেসব বিষয় এলার্জি আছে তা এড়িয়ে চলা বেশ জরুরি। যেমন ধুলাবালি ধোঁয়া সুইমিংপুলের ক্লোরিনযুক্ত পানি বিশেষ কোন প্রসাধনী। আবার রাসায়নিক প্রভাবে চোখ উঠলে সেগুলো সংস্পর্শ অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।

বাচ্চাদের চোখ উঠলে করণীয়

  • সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে স্বাভাবিক সময় থেকে বেশি হাত পরিষ্কার রাখতে হবে
  • বাচ্চার মা অথবা বাচ্চার সাথে যারা থাকে তাদের হাতে পরিষ্কার রাখতে হবে
  • চোখ একদম ভেজা রাখা যাবে না। কোন কারণে ভেজা থাকলে টিস্যু দিয়ে মুছে দিতে হবে
  • একটি টিস্যু একবারে বেশি চোখের ব্যবহার করা যাবে না
  • একটি টিস্যু শুধু এক চোখে ব্যবহার করা যাবে
  • ব্যবহার শেষের নির্দিষ্ট ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলে দিতে হবে
  • চোখ উঠলে ধুলাবালি ধোঁয়া এবং নিজের অজান্তে হাতের স্পর্শ থেকে এবং আলোর অস্বস্তি থেকে রক্ষা করতে বাচ্চার চোখে চশমা ব্যবহার করতে হবে
  • ভাইরাসজনিত হোক বা ব্যাকটেরিয়াজনিত হোক অথবা এলার্জিজনিত হোক ছোয়াচে ভাবে চোখ উঠা রোগ হোক চোখ উঠলে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে মাঝে মাঝে ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখে পানি ঝাপটা দিতে হবে।
  • কিন্তু অতিরিক্ত পানি ঝাপটা দেওয়া উচিত নয়
  • এছাড়াও অতিরিক্ত সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে
  • ধুলাবালি ময়লা থেকে দূরে থাকতে হবে
  • এছাড়া উপরে আমরা চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করবেন তা উল্লেখ করেছি।

চোখ ওঠার ঘরোয়া চিকিৎসা

একটি পরিষ্কার তুলা বা সাদা পরিস্কার নরম সুতির কাপড় গরম পানিতে ডুবিয়ে চেপে নিয়ে হালকা করে ওই কাপড়টা তুলো দিয়ে চোখের পাতা ্বারবার পরিষ্কার করতে হবে। দিনে কয়েকবার এটিই করা যেতে পারে। দুটি চোখের জন্য আলাদা আলাদা কাপড় তোলা পানি পাত্র ব্যবহার করতে হবে। গরম শেখ দেওয়ার কয়েক মিনিট পরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে কাপড় তুলে ঠান্ডা পানিতে কাপড় এবং তুলা ঢুকিয়ে ঠান্ডা শেক দেওয়া যেতে পারে।

চোখের উপর চাপ পড়ে সময় এমন কোন কাজ করা যাবে না। বেশিক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটার বা ছোট ছোট লেখাপড়া যাবেনা। ঘরোয়া পদ্ধতিতে না সারলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করবেন তা জেনে নিতে হবে।

চোখ ওঠার পর করণীয়

  • ঠান্ডা পরিষ্কার পানির ঝাপটা নিতে হবে
  • কোনভাবেই নোংরা পানি লাগানো যাবে না
  • ধুলোবালে দূষিত বাতাস যেন প্রবেশ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে
  • সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখে ঠান্ডা পরিষ্কার পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে
  • অনেকে চোখ উঠলে বারবার পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন বা চোখে ঝাপটা দেন এটা মোটেই ঠিক নয়
  • সানগ্লাস আক্রান্ত চোখ নিয়ে বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। এটি রোদের থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখবে এবং চোখের জ্বালাপোড়া কমাবে।
  • কিছুক্ষণ পর পর পরিষ্কার করে হাত ধুয়ে নিতে হবে
  • কোন কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে এবং ব্যবহারে টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। তা না হলে ব্যবহার করা শিশু টিস্যু পেপার থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
  • এছাড়া চোখ উঠলে চশমা ব্যবহার করুন এতে চোখে স্পর্শ করা কমবে এবং ধুলাবালু ধোঁয়া রোদ থেকে চোখ রক্ষা পাবে।
  • অতিরিক্ত আলো থেকে দূরে থাকুন
  • চিকিৎসকের পরামর্শ এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করুন
  • নিজের ব্যবহার করা প্রসাধনীয় ব্যক্তিগত কাপড় অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না
  • একইভাবে অন্যের ব্যবহৃত কোন জিনিস ব্যবহার করবেন না
  • চোখ বারবার ঘষা বা চুলকানো যাবে না
  • অন্য কারো আই ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না
  • প্রয়োজনের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
  • ভিটামিন সি এর পাশাপাশি খাবার খেতে হবে
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে
  • সর্বশেষ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করবেন তা জেনে নিন

চোখ উঠলে কি কি করা যাবে না

চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করার ভালো তা জানার পাশাপাশি চোখ ওঠার রোগ হলে কি কি করা যাবে না তা জানা প্রয়োজন। অনেকেই চোখ উঠলে রোগের কি কি করা যাবে না সে সম্পর্কে জানেন না। কারো চোখ উঠলে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য চোখ ওঠা ব্যক্তিকে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন-

  • চোখ ওঠা রোগ ছোয়াছে তাই চোখের রোগের আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য প্রসাধন এবং কাপড়চোপড় অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।
  • একই রকম অন্য কারো জামা বা ব্যবহার যে জিনিস আক্রান্ত ব্যক্তিকেও ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।
  • হাত বা কাপড় দিয়ে চোখ রগরানো বা ঘষা বা চোখ মুছা যাবে না
  • অন্যের ব্যবহার করা চোখের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না
  • অন্যের চোখ উঠলে তার ড্রপ কেউ ব্যবহার করলে তার তারও চোখে উঠারও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  • অতিরিক্ত এলার্জিকা জনিত কারণে চোখ খুলে আক্রান্ত ব্যক্তির যেসব খাবার এলার্জি আছে সেসব খাবার বন্ধ করতে হবে
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এলার্জির ঔষধ খেতে হবে
  • চোখে কোনভাবেই বরফ পানি দেওয়া যাবে না
  • চোখে সূর্যের আলো লাগানো যাবে না
  • এছাড়াও চোখে কোনভাবেই হাত দিয়ে ঘষাঘষি করা যাবে না

বাচ্চাদের চোখ উঠার ড্রপ

বর্তমান সময়ে আতঙ্ক ছড়ানো রোগের নাম হচ্ছে চোখ ওঠা। বড়রা চোখ ওঠার রোগের কষ্ট কিছুটা সহ্য করতে পারলেও ছোটরা খুব একটা সহ্য করতে পারে না। তাই সবসময় হাতের কাছে বাচ্চাদের চোখ ওঠার জন্য ক্লোরাম ক্রিম- Cloram e/d কে ড্রপটি সবসময় ঘরে রাখতে হবে। যদিও বাচ্চাদের কোন ডাক্তারের পরামর্শ দিতে ড্রপ ইউজ করা উচিত নয়। তবে এটি ইমার্জেন্সির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

চোখ ওঠার রোগ ছোঁয়াচে কিনা?

চোখ ওঠা রোগ ছোঁয়াচে রোগ। তাই চাঁদের চোখ উঠেছে তাদের সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে। চোখে আক্রান্ত ব্যক্তির রুমাল কাপড়চোপড় তোয়ালে ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি হ্যান্ড সেক এর মাধ্যমে অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন এজন্য হাত তাড়াতাড়ি সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ধুয়ে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। এবং নোংরা হাতে চোখ কখনো লাগানো যাবে না।

এছাড়াও বাইরে যাওয়ার সময় চোখে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। চোখ ওঠার আগে আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের সরাসরি তাকানোটা বিপদজনক হতে পারে।

যাদের ঝুঁকি বেশি

বয়ষ্ক ও শিশুদের মধ্যে চোখ ওঠা খুবই সাধারন রোগ। বাচ্চাদের স্কুল বা খেলার মাঠ থেকে অন্যের সংস্পর্শ থেকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বয়স্ক ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাই তারাও ঝুঁকিতে থাকেন। যারা সম্প্রতি শ্বাসনালী সমস্যা যেমন সর্দি হাঁচি কাশী আক্রান্ত তাদের চোখ ওঠার ঝুঁকি বেশি থাকে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সমস্যা, দুর্বল করে এমন কোন অসুখ থাকলে বা নিয়মিত কাউকে মেডীসিন নিতে হলে তার চোখ ওঠার ঝুঁকি বেশি থাকে। ছাড়াও যারা নিয়মিত জনসমাগম স্থল যেমন বাসস্ট্যান্ড লঞ্চঘাট ট্রেন স্টেশনে চলাচল করে তারা খুব সহজেই চোখ ওঠার আগে আক্রান্ত হয়।

উপরে আমরা চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করা উচিত তা আলোচনা করেছি। রোগের লক্ষন দেখা দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রপ ব্যবহার শুরু করতে হবে।

চোখ উঠা সারতে কতদিন সময় লাগে

সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই চোখ ওঠার রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ১৫ দিনের মত সময় লাগতে পারে। সাধারণত চোখ ওঠারও ভালো হওয়ার নির্ভর করে আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের উপর। অনেকের শুধু সামান্য চোখ লাল হয়ে ফুলে যায় আবার অনেকেরই চোখ আটা হয়ে চোখ লেগে যায়।

চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে। তাদের ক্ষেত্রে চোখের উঠার রোগ সারতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

চোখ ওঠা রোগের দোয়া

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্মীয় গ্রন্থ আল-কোরান। যেখানে আছে সকল রোগের সকল সমস্যার সমাধান। সূরা কফ এর ২২ নাম্বার আয়াতে আছে যেকোনো কারণে চোখে ব্যথা অনুভব হলে এই দোয়াটি পড়তে বলা হয়েছে-

দোয়া- “ফাকাদ কিন্তা ফি গাফ্লাতিম মিন হাসাফাকা শাফনা আনকা গিতায়াকা ফাবাকারুকাল ইয়াওমা হাদিদ”

বিভিন্ন হাদিসে বলা আছে যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজ শেষে সূরা কফ এই আয়াত দুই তিনবার করে পাঠ করবে। তার সকল চোখের ব্যথা ও চোখের সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যাবে।

যেসব খাবার চোখের রোগের জন্য উপকারি

  • কিসমিস
  • পিঙ্ক সল্ট
  • হলুদ এবং কমলা রঙের ফল
  • সবুজ শাকসবজি

চোখ উঠলে যেসব জিনিস খাওয়া যাবেনা

  • রিফাইন খাবার
  • অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার
  • প্রসেসড মিট
  • ডুবো তেলে ভাজা খাবার
  • মার্জারিন কেন ফুড

চোখের রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

  • সব সময় চোখের যত্ন সঠিক ভাবে নিতে হবে
  • অপরিষ্কার এবং অগোছালো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে না বলতে হবে
  • ধুলাবালি অতিরিক্ত রোধ করা
  • দীর্ঘক্ষণ কোন কিছু দেখা যা চোখের উপর প্রেসার পড়ে এমন কোন কাজ করা যাবে না
  • দীর্ঘক্ষন কাজ করার জন্য চশমা ব্যবহার করতে হবে
  • ফোন ল্যাপটপ অথবা অতিরিক্ত আলো জাতীয় জিনিস থেকে দূরে রাখতে হবে
  • গোসল ছাড়াও সারাদিনে কয়েকবার পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করে চোখে পানির ঝাপটা দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে
  • চোখে কোনভাবেই ময়লা পড়তে দেওয়া যাবে না
  • রাস্তায় বের হলে অবশ্যই চোখে সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে
  • ঘর ব্যবহার যে জিনিসপত্র সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে
  • ধুলোবালি অথবা এলার্জি সমস্যা থাকলে সব সময় এলার্জি কম হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে
  • অতিরিক্ত এলার্জি থাকে এলার্জির ওষুধ সেবন করতে হবে
  • এলার্জি হয় এমন খাবার খাওয়া যাবে না
  • চোখ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না
  • নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে
  • চোখ ওঠা ব্যক্তির ব্যবহার করা কোন জিনিস কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না
  • যেখানে সেখানে যার তার বিছানায় শোয়া যাবেনা
  • নিজের বিছানা কিংবা নিজের বেড রুমে সবাইকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না

চোখ ওঠা সম্পর্কে প্রশ্ন এবং উত্তর

চোখ উঠলে কি ড্রপ দিতে হয়?

উত্তর-  অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ক্লোরোমোফেনিকল ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে ভাইরাস জনিত সমস্যার কারণে চোখ উঠলে এন্টিবায়োটিক টপ এই ড্রপ ব্যবহার করলেই চোখ দ্রুত সেরে যায়।

শিশুদের চোখ উঠলে করণীয় কি?

উত্তর- সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে স্বাভাবিক সময় থেকে বেশি হাত পরিষ্কার রাখতে হবে।বাচ্চার মা অথবা বাচ্চার সাথে যারা থাকে তাদের হাতে পরিষ্কার রাখতে হবে। চোখ একদম ভেজা রাখা যাবে না। কোন কারণে ভেজা থাকলে টিস্যু দিয়ে মুছে দিতে হবে। একটি টিস্যু একবারে বেশি চোখের ব্যবহার করা যাবে না। একটি টিস্যু শুধু এক চোখে ব্যবহার করা যাবে। ব্যবহার শেষের নির্দিষ্ট ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলে দিতে হবে।

চোখ উঠলে ধুলাবালি ধোঁয়া এবং নিজের অজান্তে হাতের স্পর্শ থেকে এবং আলোর অস্বস্তি থেকে রক্ষা করতে বাচ্চার চোখে চশমা ব্যবহার করতে হবে। ভাইরাসজনিত হোক বা ব্যাকটেরিয়াজনিত হোক অথবা এলার্জিজনিত হোক ছোয়াচে ভাবে চোখ উঠা রোগ হোক চোখ উঠলে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে মাঝে মাঝে ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখে পানি ঝাপটা দিতে হবে।

কিন্তু অতিরিক্ত পানি ঝাপটা দেওয়া উচিত নয়। এছাড়াও অতিরিক্ত সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।ধুলাবালি ময়লা থেকে দূরে থাকতে হবে।

বাচ্চাদের চোখ উঠলে চোখে ড্রপ দেওয়া ভালো নাকি দেওয়া উচিত নয়?

উত্তর- চোখ উঠলে প্রাথমিক অবস্থায় কোন কিছু ব্যবহার না করলেও সমস্যা নেই। তবে চোখ ওঠার স্বার্থে বেশি সময় লাগে এবং জ্বালাপোড়া করে। তবে ২৮ দিনের কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চোখে যে কোন ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারপর ব্যবহার করতে হবে। কারণ বাচ্চাদের চাইলেই যে কোন ড্রপ ব্যবহার করা যায় না। তাই বাচ্চাদের যে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা কি?

উত্তর – চোখ উঠলে সাধারণত ঘরোয়া চিকিৎসা দিয়ে ঠিক হয়ে যায়। অনেকে মনে করে চোখে পানি ঝাপটা দিলে ঠিক হয়ে যাবে বা ভালো হবে মাঝে মাঝে চোখে পানির ঝাপটা দিতে হবে। যাতে চোখ আঠা হয়ে লেগে না যায়। কিন্তু অতিরিক্ত পানির ঝাপটা দিলে আরো বেশি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ঘরোয়া চিকিৎসা কাজ না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করবেন তা জেনে নিতে হবে।

চোখ উঠলে কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?

উত্তর- চোখ উঠলে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে গেলে, চোখ খুব বেশি লাল হয়ে থাকলে, চোখ বেশি চুলকালে অথবা অতিরিক্ত ফুলে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এবং চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করা উচিত তা জেনে নিতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ

চোখ মানুষের শরীরের একটি সেনসিটিভ অঙ্গ। চোখে যে কোন সমস্যার কারণে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন ড্রপ ব্যবহার করা উচিত নয়। সাধারণত চোখ উঠা খুব বড় রকমের কোন চিন্তার রোগ নয়। চোখ উঠলে প্রাথমিক অবস্থায় ডাক্তার দেখানোর কোন প্রয়োজন নেই। এর সাধারণত সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজ থেকে সম্পূর্ণ ঠিক হয়ে যায়। তবে জ্বালাপোড়া এবং কষ্ট হলে দুই থেকে চার দিন পর্যন্ত ঠিক না হলে তখন চিন্তার বিষয়।

  • তবে চোখের অবস্থা স্বাভাবিক না থাকলে
  • দীর্ঘদিন চোখ ওঠার আগে আক্রান্ত থাকলে
  • দৃষ্টি ঝাপসা হলে
  • চোখ খুব বেশি লাল হলে
  • খুব বেশি চোখ চুলকানি থাকলে
  • অতিরিক্ত ফুলে গেলে

অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তা না হলে চোখের বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

চোখ উঠলে কোন ড্রপ

মন্তব্য

আজকে আমরা চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করা ভালো সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমরা অতি শীঘ্রই আপনাদের কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন নিউজ সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply