মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস করার নিয়ম – Metro Rail rapidpass

মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস করার নিয়ম

স্বপ্নের মেট্রো রেল গত ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়েছে। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের মেট্রোরেলে ও রেগুলার টিকিটের পাশাপাশি এম আর টি পাস বা রেপিড পাস এর ব্যবস্থার রাখা হয়েছে।

মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস, মেট্রো রেলের র‍্যাপিড পাস কিভাবে করে এসব কিছু বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আজকের আর্টিকেলে। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে।

এমআরটি পাস বা র‍্যাপিড পাস কি?

মেট্রো রেলের ভ্রমণের জন্য দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

  1. একক যাত্রা কার্ড (অস্থায়ী)
  2. এমআরটি পাস বা র‍্যাপিড পাস (স্থায়ী)

একক যাত্রা কার্ড – এখন যাত্রাগান বা অস্থায়ী কার্ড প্রতিটি ভ্রমণের জন্য আলাদাভাবে টিকিট কাউন্টার অথবা টিকেট বিক্রয় মেশিন থেকে নিতে হবে। অর্থাৎ এটি একটি ভ্রমণের জন্য শুধুমাত্র একবারই ব্যবহারযোগ্য এবং কাউন্টার থেকে বের হলে এটি আর ব্যবহার করা যাবে না।

এমআরটি পাস বা র‍্যাপিড পাস – যারা প্রতিনিয়ত ভ্রমণ করতে হবে অথবা প্রতিদিন আলাদাভাবে একক যাত্রা কার্ড করতে চান না তাদের জন্য র‍্যাপিড কার্ড নামে বিশেষ ধরনের কার্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কার্ডে ব্যালেন্স থাকলে প্রতিটি ভ্রমণের জন্য আলাদাভাবে টিকেট কাটতে হবে না।

MRT Pass এর ব্যালেন্স দিয়ে খুব সহজেই যখন খুশি ভ্রমন করা যাবে। ব্যালেন্স শেষ হলে পুনঃরায় রিচার্জ করে ভ্রমনের সুযোগ থাকবে।

মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস কিভাবে কাজ করে?

এমআরটি পাস বা র‍্যাপিড পাস সাধারণ ক্রেডিট কার্ডের মতোই একটি বিশেষ কার্ড। এই কার্ডে ১০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে। মেট্রোরেলে ভ্রমণের সময় কাউন্টার থেকে টিকেট না কেটে সরাসরি র‍্যাপিড পাসের মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মে চলে যেতে পারবে ব্যবহারকারী।

রেপিড পাস এর ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে মেট্রো রেল স্টেশনে অটোমেটিক রিচার্জ মেশিন থেকে যেকোন পরিমাণ রিচার্জ করিয়ে নিতে পারবেন। অথবা টিকেট কাউন্টার থেকেও নিজের ইচ্ছামত রিচার্জ করা যাবে।

মেট্রোরেলরেপিট পাস করার নিয়ম

বর্তমানে দুই ভাবে মেট্রোরেল রেপিড পাস এর জন্য আবেদন করা যায় ।

  1. ডাচ বাংলা ব্যাংক এর মাধ্যমে
  2. সরাসরি মেট্রো রেল স্টেশন থেকে

ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস করার নিয়ম

বর্তমানে ডাচ বাংলা ব্যাংক র যে কোন শাখা থেকে র‍্যাপিড পাস এর জন্য আবেদন করা যায়। আবেদন করার জন্য আপনার নিকটস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকে শাখায় যোগাযোগ করুন।

প্রথমত তারা আপনাকে মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস এর আবেদন পত্র প্রদান করবে। নাম, পিতা মাতার নাম এবং এর ঠিকানা সহ সাধারণ কিছু তথ্য পূরণ করার পর ছবি এবং আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিয়েই খুব সহজে মেট্রোরেলের পাশ পেয়ে যাবেন।

আবেদন করার পর টিকেট হাতে পেতে দুই দিন সময় লাগতে পারে।

সরাসরি মেট্রো রেল স্টেশন থেকে র‍্যাপিড পাস আবেদন

আপনি চাইলে সরাসরি মেট্রোরেল এর যেকোনো একটি স্টেশন থেকে র‍্যাপিড পাস এর জন্য আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রেও আবেদনের নিয়ম সম্পূর্ণ একই। অর্থাৎ প্রথমে র‍্যাপিড পাস এর জন্য একটি আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে এবং নাম, পিতা-মাতার নাম ও ঠিকানা সহ সাধারণ কিছু তথ্য পূরণ করে এর পাশের জন্য আবেদন করতে পারেন।

আবেদনের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্ডটি হাতে পেয়ে যাবেন। কার্ড হয়ে গেলে মেসেজ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে অথবা ফোন করা হবে।

মেট্রোরেল রেপিড পাস করার খরচ

ঢাকা মেট্রো রেল এর রেপিট পাস করতে ৪০০ টাকা খরচ হবে। এরমধ্যে ২০০ টাকা জামানত যা ব্যবহার অযোগ্য এবং ২০০ টাকা ব্যবহার করতে পারবে।

অর্থাৎ টিকিট করার সময় কাউন্টারে ৪০০ টাকা জমা দিতে হবে যার মধ্যে ২০০ টাকা আপনি কখনোই ব্যবহার করতে পারবেন না। বাকি ২০০ টাকা যাতায়াত ভাড়া হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

মেট্রোরেল রেপিড পাস রিচার্জ এর নিয়ম

বর্তমানে মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস রিচার্জ তিনভাবে করা যায় –

  1. স্টেশনে অটোমেটিক মেশিন থেকে
  2. মেট্রোরেল টিকেট কাউন্টার থেকে
  3. ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা থেকে

অটোমেটিক মেশিন থেকে – অটোমেটিক মেশিন থেকে র‍্যাপিড পাসের রিচার্জ করতে চাইলে প্রথমে মেশিনে কার্ডটি প্রবেশ করাতে হবে। এরপর রিচার্জ অপশন সিলেক্ট করুন এবং কত টাকা রিচার্জ করতে চান তা সিলেক্ট করুন। এরপর মেশিনে সে পরিমাণ টাকা প্রবেশ করাতে হবে।

মেশিনে টাকা প্রবেশ করালে অটোমেটিক আপনার কার্ডে সমপরিমাণ টাকা রিচার্জ হয়ে যাবে। টাকা প্রবেশ করানোর সময় অতিরিক্ত টাকা দিলে বাকি টাকা বেরিয়ে আসবে।

এমআরটি পাস বা রেপিড পাস মেয়াদ কত দিন থাকে

এমআররটি পাস বা র‍্যাপিড পাস এর মেয়াদ ১০ বছর হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি একটি কার্ড করলে কার্ডের ব্যালেন্স এর মেয়াদ পরবর্তী ১০ বছর পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য হবে।

একজন ব্যবহারকারীর এমআরটি কার্ড তার পরিবার কিংবা অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবেনা। অর্থাৎ ভ্রমণের সময় আপনার সাথে যদি কোন বন্ধু বা পরিবার সদস্য থাকে সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য আলাদা একক টিকেট ক্রয় করতে হবে।

মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস কত টাকা রিচার্জ করা যায়

এমআরটি কার্ড বা মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাসে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যায়। উপরে আমরা রিচার্জ করার পদ্ধতি বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ভবিষ্যতে বিকাশ, নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং থেকে সরাসরি রিচার্জ করার পদ্ধতি চালু করা হবে এবং এই উপলক্ষে তারা একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করার কাজ শুরু করছে।

মেট্রোরেলে মোট স্টেশন কতটি

মেট্রোরেলের বর্তমানে মোট ১৬টি স্টেশন চালু রয়েছে। বর্তমানে দিয়া বাড়ি থেকে উত্তরা পর্যন্ত মেট্রোরে চালু করা হয়েছে তবে ভবিষ্যতে এটি মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে এবং তখন স্টেশন এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

মেট্রোরেল এ সর্বমোট ৬ টি রুট নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে এটি রুট ৬ এর আওতায় ডেভলপ করা হয়েছে ভবিষ্যতে বাকি পাঁচটি লাইনের কাজও শুরু হবে।

মেট্রোরেল র‍্যাপিড পাস করার নিয়ম

মন্তব্য

উপরে আমরা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের কাজে এসেছে ভালো লাগলে আপনার বন্ধু প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কোন প্রশ্ন বা মতামত জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন –

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply