ঢাকায় ঘোরার জায়গা ও খরচ
আমরা প্রতিদিন নিজেদের কর্মক্ষেত্র নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকি যে মাঝে মাঝে বিনোদনের জন্য ঘুরতে যাওয়া প্রয়োজন তা প্রায় ভুলেই বসেছি। পরিবার নিয়ে অথবা বন্ধুদের সাথে মাঝে মাঝে ঘুরতে সবার ই ভালো লাগে কিন্তু কোথায় এবং কিভাবে যাবেন তা সঠিকভাবে না জানার কারনে অনেকেই ঘুরতে যেতে ভয় পান।
আজকে আমরা ঢাকায় ঘোরার জায়গা ও খরচ নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে আমরা যায়গা গুলো সিলেক্ট করেছি।
আরো পড়ুন – ঢাকায় কম দামে আবাসিক হোটেল ভাড়া করার নিয়ম, ঠিকানা ও খরচ
কার্জন হল
কার্জন হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত। এটি একটি ঐতিহাসিক ভবন পুরাকীর্তি হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে সেখানে জীববিজ্ঞানের অনুষদের কিছু ক্লাস ও পরীক্ষার হল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জজ কার্জন ১৯০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই ঐতিহাসিক কার্জন হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কার্জন হল মূলত স্থাপিত হয়েছিল টাউন হল হিসেবে। তবে অনেকের মতে এটি ঢাকা কলেজের পাঠাগার হিসেবে স্থাপিত হয়েছিল। হাজার ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে পরবর্তীতে কার্জন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের জন্য।
কার্জন হলের সামনে খোলা মাঠ এবং গাছপালা থাকার ফলে অনেকেই সেখানে ঘুরতে যান।
কিভাবে যাবেন- ঢাকার ভেতর আপনি যেখানেই অবস্থান করেন না কেন যেকোনো বাসে স্টেশন থেকে শাহবাগ নেমে রিকশায় চড়ে যেতে পারেন। অথবা ঢাকার ভেতরেই রিক্সা বা সিএনজিতে করে আপনি যেতে পারেন। রিকশাভাড়া নির্ভর করবে আপনার অবস্থান করার জায়গা এবং গন্তব্য স্থানে দূরত্বের উপর নির্ভর করে।
আর্মেনিয়ান চার্চ
পুরনো ঢাকার আরমানিটোলা আর্মেনিয়ান চার্চ অবস্থিত। এটি 1781 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আরমানিটোলার ঐতিহাসিক এগিয়ে যার সাথে জড়িয়ে আছে আর্মেনিয়ান দের ইতিহাস। বর্তমানে যেখানে আর্মেনিয়ান চার্চ গির্জা অবস্থিত ধারণা করা হয় পূর্বে সেখানে আর্মেনিয়ান দের গোরস্থান ছিল।
মিনাজ কার্ড চেক নামে এক ব্যক্তি চার্চ বানানোর জন্য গোরস্থানের আশেপাশে তার জমি দান করেছিলেন। তবে লোকমুখে শোনা যায় এ গির্জা নির্মাণে সহায়তা করেছিলেন চারজন আর্মেনিয়ান। লম্বায় সাড়ে 700 ফুট গির্জাটির একটি বিশাল ঘন্টা ছিল। যে ঘন্টা বাজলে শহরের মানুষ তাদের ঘড়ি ঠিক করে নিতেন। হাজার ১৯৮০ সালের দিকে এ ঘন্টা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় যার কখনো বাজে নি।পুরনো ঢাকার আর্মেনিয়ান চার্চ বাগিচার প্রাঙ্গণ খুবই নিরিবিলি যাচঢাকায় খুব কমই আছে।
কিভাবে যাবেন- পুরান ঢাকায় সাধারণত রিক্সাতে করেই যাওয়া যায়। ঢাকার বেশিরভাগ ঘোরার জায়গা গুলো কাছাকাছি অবস্থিত। দূরের জায়গাগুলো বাসে ভ্রমন করলেও কাছাকাছি জায়গাগুলো রিকশাতে করেই ভ্রমণ করা যায়। রিক্সা ভাড়া নির্ভর করে আপনার অবস্থিত জায়গার উপর।
আহসান মঞ্জিল
ঢাকায় ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে আহসান মঞ্জিল অন্যতম। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে আহসান মঞ্জিল অবস্থিত। যা সাধারণত বড় কাটরা নামে পরিচিত। এটি ব্রিটিশ আমলে ঢাকার নবাব পরিবারের আবাসস্থল ছিল।খাজা আলীমুল্লাহ ১৮৩০ সালে ফরাসিদের থেকে একটি ক্রয় করে সংস্কার করে নিজের বাসস্থান হিসেবে উপযোগী করে তোলেন।
পরবর্তীতে নওয়াব আবদুল গনি ১৮৩৯ সালে সংস্কার করে তার পুত্র খাজা আহসানউল্লাহ নাম অনুসারে এটি নামকরণ করেন আহসান মঞ্জিল।
কিভাবে যাবেন- ঢাকার প্রায় সব যায়গা থেকেই গুলিস্তানের বাস পাওয়া যায়। গুলিস্তান থেকে সদরঘাট বাস ভাড়াদশ টাকা ধরা হয় রিক্সায় গেলে ৭০ থেকে ৮০ টাকা লাগতে পারে। সদরঘাট থেকে আহসান মঞ্জিল হেটে যেতে ১০ মিনিটের মত সময় লাগতে পারে।
পরিদর্শনের সময় (গরমের সময় অর্থাৎ এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) – সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আহসান মঞ্জিল টিকেট পাওয়া যায়। সপ্তাহে প্রতিদিন ছাড়া শুধুমাত্র শুক্রবারে বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত আহসান মঞ্জিল খোলা থাকে।
পরিদর্শনের সময় (শীতের সময় অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ) – শনিবার থেকে বুধবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আহসান মঞ্জিল খোলা থাকে। শুক্রবার আড়াইটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকে। বৃহস্পতিবার এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে।
টিকেটের দাম- প্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশী দর্শনার্থীদের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা। শিশুদের জন্য ১৫ টাকা। সার্কভুক্ত দেশীয় দর্শকদের জন্য ৩০ টাকা।অন্যান্য বিদেশী দর্শকদের জন্য ১০০ টাকা।প্রতিবন্ধী দের জন্য কোনো টিকেটের প্রয়োজন হয় না।এখানে অগ্রীম টিকেটের কোনো সুযোগ নেই।
লালবাগ কেল্লা
ঢাকায় ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে এটি একটি প্রাচীন দুর্গ মধ্যস্থলে অবস্থিত এই দুর্গটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। কি মসজিদসহ একটি জাদুঘরও আছে নবাবের হাম্মাম খানা জাতীয় ঢুকলেই চোখে পড়বে পরী বিবির মাজার রয়েছে মসজিদ আছে নবাবের হাম্মাম খানা সহ এখানে দেখার অনেক কিছুই আছে।
লালবাগ কেল্লা খোলা থাকবে সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের কোন টিকেট লাগবে ন। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি টিকিটের প্রতি মূল্য ৩০ টাকা।
কিভাবে যাবেন- লালবাগ কেল্লা আজিমপুর কবরস্থানের পাশাপাশি অবস্থিত হওয়ায় নিউমার্কেট এরিয়া বা পলাশীর মোড় থেকে রিক্সায় ৫0 থেকে 70 টাকা চলে যাওয়া যেতে পারে।অথবা সিএনজি, উবারেও সহজে যাওয়া যায়।
হাতিরঝিল
ইট পাথরের এই ব্যস্ত শহরে হাতির ঝিল হতে পারে আপনার বিনোদনের কেন্দ্র। দিনে রাতে যখনই সুযোগ হয় হাতির ঝিল ঘুরে আসা যায়। তবে দিনের তুলনায় রাতে হাতির ঝিলের সৌন্দর্য বেশি ফুটে উঠে।সাথে বিভিন্ন স্ট্রিট ফুট পাওয়া যায়।
হাতির ঝিল মূলত আগে বস্তি এলাকা ছিলো। পরবর্তীতে সরকার জানজট কমানোর জন্য ও ঘোরার জন্য বিনোদন মূলক জায়গায় পরিণত করা হয় এই হাতির ঝিলকে।
কিভাবে যাবেন- তেজগাঁও বাড্ডা, গুলশান, মৌচাক, রামপুরা ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার, মগবাজার এলাকার বাসিন্দা যারা আছেন তারা খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন হাতির ঝিল। এছাড়াও হাতির ঝিল যাবার বাস পাওয়া যায় নিকটস্থ বাস ট্যান্ডেই।
জাতীয় জাদুঘর
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর অবস্থিত। জাতীয় জাদুঘরে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক জিনিস সংরক্ষিত আছে। শিশুদের জন্য এটি একটি বিনোদনের জায়গা। নতুন অনেক কিছু তারা দেখতে পারবে উপভোগ করতে পারবে।বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বিশ মার্চ 1913 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতীয় জাদুঘরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় ৭ আগস্ট ১৯১৩।
১৯৮৩ সালের এদিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দেওয়া হয় প্রতিদিন প্রায় দুই হাজারেরও বেশি দর্শণার্থে যাতে জাদুঘর পরিদর্শন করতে আসেন অনেক সময় বিদেশিরাও এর ঐতিহাসিক জাদুঘর পরিদর্শক করতে আসেন
কিভাবে যাবেন- জাতীয় জাদুঘরটি শাহবাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বা রমনা পার্ক ও চারুকলার ইনস্টিটিউটের পাশে অবস্থিত। যেকোনো জায়গা থেকেই বাসে করে শাহবাগ চলে আসা যায়।ভাড়া নিতে পারে ৫ টাকা থেকে ৪0 টাকা পর্যন্ত।
টিকিটের মূল্য- জাতীয় জাদুঘরের প্রতি টিকিটের মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০ টাকা এবং বিদেশী দর্শনার্থি দের জন্য ৫০০ টাকা। সার্ক ভুক্ত দর্শনার্থী দের জন্য জাদুঘর পরিদর্শন করতে ৩০০ টাকা লাগবে।
শিশুপার্ক
ঢাকায় ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরার মত ভালো পার্ক হচ্ছে এটি । পূর্বে এটি শহীদ জিয়া শিশু পার্ক নামে পরিচিত ছিল।এটি বাংলাদেশের প্রথম শিশুদের বিনোদন পার্ক। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের একটি লাভজনক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে শিশু পার্ক প্রতিষ্ঠিত করে।
পার্কে অনেকগুলো রাইড রয়েছে। একটি মৃগো রাউন্ড, একটি হুইল ট্রে্ বেশ কয়েকটি চাকা ভিত্তিক রাইড। ঢাকার সব বিনোদন পার্কের মধ্যে শিশু পার্কের টিকেটের দাম সবচেয়ে কম। প্রতি বছর সিটি কর্পোরেশন এই পার্ক থেকে প্রায় বিশ কোটি টাকা আয় করে।
বর্তমানে পার্কের উন্নয়নের জন্য পার্ক টি র্সময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। আশা করছি উন্নয়ন কাজ শেষ হলে অতি শীঘ্রই শিশুদের জন্য পার্ক উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
কিভাবে যাবেন- ঢাকার শাহবাগে ঢাকায় ঘুরার জায়গাগুলোর মধ্যে শিশুর পাক রমনা পার্ক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সবগুলোই একসাথে রয়েছে।যেহেতু শাহবাগ বাস স্তেশন তাই যে কেউ ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে বাসে করে শাহবাগ চলে আসতে পারে।
টিকিটের দাম এবং রাইড এর দাম- শিশু পার্কে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা এবং প্রতি রাইড এর জন্য ১০ টাকা দিতে হয়। পার্ক টি সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার এবং শনিবার দুপুর ২ টা থেকে দুপুর ৭ঃ০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শুক্রবার আড়াইটা থেকে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে।
চিড়িয়াখানা
যেখানে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী বন্দী অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয় এবং গবেষণার জন্য রাখা হয় সে জায়গাকে চিড়িয়াখানা বলে। পৃথিবীর প্রায় সব শহরেই চিড়িয়াখানা আছে। বিভিন্ন চিড়িয়াখানা বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি থাকে। ঢাকায় ঘোরার জায়গা বা বিনোদনের জন্য চিড়িয়াখানা হতে পারে অন্যতম জায়গা। শিশুরা চিড়িয়াখানায় যেতে অনেক পছন্দ করে। তাই বাচ্চাদের নিয়ে ঢাকায় ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে চিড়িয়াখানা হতে পারে অনেক আনন্দময়।
কিভাবে যাবেন- যাবেন ঢাকার সদরঘাট, গুলিস্থা্ন, মতিঝিল, ফার্মগে্ট, গাবতলী হতে মিরপুর চিড়িয়াখানা যেতে যে কোন বাস অথবা ট্যাক্সি সিএনজি অথবা উবারে যোগাযোগ করে চিড়িয়াখানা সহজেই যাওয়া যায়।জ
টিকিটের মূল্য- চিড়িয়াখানা সাধারণত জনপ্রতি ৩0 থেকে ৪0 টাকা হয়ে থাকে।শিশুদের জন্য টিকেটের দাম ২০ টাকা। তবে বিদেশি দর্শকদের জন্য ৫০০ টাকা হয়ে থাকে। ঢাকার ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে যেহেতু এটি জনপ্রিয় কিন্তু চিড়িয়াখানা ঢাকা মিরপুরে হয়ায় জ্যাম এর জন্য যেতে অনেক সময় লাগতে পারে।
যমুনা ফিউচার পার্ক
যমুনা ফিউচার পার্ক বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে বারিধারাতে অবস্থিত যমুনা ফিউচার পার্ক মূলত বহু দল বিশিষ্ট একটি কেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিং মল এটি যমুনা গ্রুপ এটি ২০০২ সালে নির্মাণ করা শুরু করে যা ২০১৩ সালে এসে শেষ হয় এখানে শপিং এর পাশাপাশি সিনেমা হল রয়েছে বাচ্চাদের জন্য কিডস জন রয়েছে যেখানে অনেকগুলো রাইট পাওয়া যায়।
কিভাবে যাবেন – যমুনা ফিউচার পার্কটি ঢাকার অভিজাত এলাকা কুড়িল বারিধারা গুলশান ও প্রগতি স্মরনীর পাশে অবস্থিত যা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের খুব কাছে। কুড়িল ফ্লাইওভারের কাছে খুব কাছাকাছি যমুনা ফিউচার পার্ক যার ফলে উবার সিএনজি কিংবা বাস যাওয়ার জন্য এভেলেবেল পাওয়া যায়।
টিকেটের মূল্য – টিকেটের এর মূল্য সিঙ্গেল রাইড এবং কম্বো রাইড এর আলাদা আলাদা মূল্য রয়েছে। সাধারণত ১০০০ এ টাকার মধ্যে তিনটি রাইড পাওয়া যায়।
দিয়া বাড়ি
ঢাকার ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে দিয়াবাড়ি অন্যতম বিশেষ করে কাশফুলের সিজনের মানুষ সেখানে বেশি ঘুরতে যায়। খোলামেলা নদীর পাশে হওয়ায় সেখানে পরিবার নিয়ে পিকনিক করা যায়। দিয়াবাড়ি ঢাকার উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় স্থানের নাম। দিয়া বাড়ির ভিতরে রিক্সা দিয়েও ঘোরা যায় ছবি তোলা যায়।
কিভাবে যাবেন – দিয়াবাড়ি যেহেতু উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত তাই দিয়া বাড়ি যেতে চাইলে ঢাকার যে কোন প্রান্ত থেকে উত্তরা রাস্তায় চলাচলকারী বাসে করে হাউজ বিল্ডিং চলে আসুন। হাউজ বিল্ডিং এ অবস্থিত মাস্কট প্লাজা সামনে দিয়া বাড়ি যাওয়ার রিকশা বা লেগুনা পাওয়া যায় লেগুনা বা রিক্সা দিয়ে সরাসরি দিয়াবাড়ি বটতলায় চলে আসা যায়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঢাকায় ঘোরার জায়গা গুলার মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। কারণ বিকেলে সব ধরনের মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে অবস্থিত ঢাকার ভিতরে ঘোরার জায়গা কম থাকায় খোলামেলা জায়গা পেলে মানুষ সেখানে বিকেলে আড্ডা ঘোরাঘুরি করে।
কিভাবে যাবেন – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার যে কোন জায়গা হতে রিকশাতে করে যাওয়া যায়। দূর থেকে ঘুরতে আসতে চাইলে নীলক্ষেত মোড় অথবা শাহবাগ পর্যন্ত বাসে এসে সহজেই রিকশাযোগে চলে আসা যায়।
নকশী পল্লী
পূর্বাচল ঢাকার খোলামেলা জায়গা গুলার মধ্যে অন্যতম একটি। ঢাকার মোটামুটি কাছেই একটি জায়গা যদি আপনার একদিনের জন্য পরিকল্পনা থাকে খোলামেলা জায়গায় ঘুরতে চান তাহলে আপনি অবশ্যই পূর্বাচল যেতে পারেন।
কিভাবে যাবেন – ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে পূর্বাচল আসতে হলে আপনাকে প্রথমে ৩০০ ফুট আসতে হবে। ৩০০ ফুট থেকে পূর্বাচল যাওয়ার জন্য অটোতে করে ভাংগা ব্রিজ যেতে হবে। অটোতে প্রতিজনে ভাড়া ৩০ টাকা করে। অটো থেকে নেমে কিছুদূর হাঁটলেই নকশী পল্লী পাওয়া যাবে।
নন্দন পার্ক
নন্দন পার্ক ঢাকা সাভারের নবীনগর অবস্থিত। ঢাকার ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে নন্দন পার্ক অনেক আগ থেকেই সুপরিচিত নন্দন পার্ক রয়েছে নানা রকম রাইড, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড এবং ছোটখাটো একটি চিড়িয়াখানা। ঈদে অনেক ভিড় থাকলেও সাধারণত নন্দন পার্ক খোলামেলা জায়গার জন্য ঘোরাঘুরির জন্য ভালো একটি জায়গা।
টিকেটের মূল্য – নন্দন পার্ক খোলা থাকে বেলা 11:30 থেকে সাড়ে ৯ টা এরা সব রাইটসহ প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি 490 টাকা তবে যাদের কারো টিকেট লাগেনা অর্থাৎ দুই বছরের নিচে বাচ্চাদের রাত দশটা পর্যন্ত ছুটির দিন সকাল দশটা থেকে খোলা থাকে
বোটানিক্যাল গার্ডেন
বোটানিক্যাল গার্ডেন ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন নামেও পরিচিত। ঢাকার ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে এ উদ্যানটি ঐতিহাসিক উদ্যান হিসেবে পরিচিত। বোটানিক্যাল গার্ডেন ঢাকার মিরপুরে চিড়িয়াখানার পাশে অবস্থিত বলদা গার্ডেন এ উদ্যানের একটি অংশ। খোলামেলা এবং অনেক জায়গা থাকার ফলে সবুজ গাছ-গাছালের ভিড়ে পিকনিকে হতে পারে অনেক মজাদার।
কিভাবে যাবেন – যেহেতু এটি চিড়িয়াখানার পাশে অবস্থিত। সুতরাং মিরপুর – ১০ যেতে হলে আপনাকে মিরপুর ১০ এ যাওয়ার বাসগুলোর সন্ধান করে বাসস্ট্যান্ড যেতে হবে। বাসস্ট্যান্ড থেকে যাচাই করতে হবে আপনি চাইলে উবার বা সিএনজিতে করে খুব সহজেই বোটানিকাল গার্ডেন যেতে পারবেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান শাহবাগে টিএসসির মোড়ে অবস্থিত। এখানে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা হয় বছরে অন্যান্য দিনগুলোতে অনেক খালি জায়গা থাকার ফলে হাঁটাহাঁটি বা ঘুরার জন্য হতে পারে একটি ভালো পছন্দ। বিশেষ করে বিকেল বেলা পারিবারিকভাবে পিকনিকের জন্য সেখানে যাওয়া যেতে পারে।
কিভাবে যাবেন – শাহবাগে বাসস্ট্যান্ড থেকে পায়ে হেটে যেতে ১০ মিনিট এর মত লাগে। ঢাকার প্রায় সব যায়গা থেকেই শাহবাগ এর বাস পাওয়া যায়। শাহবাগ মোড়ে নেমে খুব সহজেই হেতে চলে যাওয়া যাবে।
রমনা পার্ক
ঢাকার রমনা এলাকায় অবস্থিত। প্রতিবছর এখানে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এটি ঢাকায় অবস্থানকারী ঢাকায় ঢাকা বাসীদের জন্য সকালের ভ্রমণের মূল কেন্দ্র এই উদ্যানটিতে। বিশাল পরিমাণ জায়গা থাকার ফলে এখানে কয়েক হাজার মানুষ সকাল বিকালে হাঁটতে পারে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মত রমনা পার্ক ও পরিবার নিয়ে ঘোরার মত পার্ফেক্ট একটি পছন্দ হতে পারে। বিকেল বেলা পরিবার নিয়ে পিকনিক কিংবা ঘুরে আসতে পারেন সুন্দর এই পার্ক।
কিভাবে যাবেন – রমনা পার্ক শাহবাগ টিএসসি মোড় ও জাতীয় জাদুঘর কাছাকাছি অবস্থিত। শাহবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে পায়ে হেটে যাওয়া দূরত্বে অবস্থিত পার্কটি। বাসে শাহবাগ পর্যন্ত আসলে পায়ে হেটেই চলে যেহে পারবেন রমনা পার্কে।
ধানমন্ডি লেক
ধানমন্ডি ঢাকার একটি আবাসিক এলাকা আর ধানমন্ডি লেক হচ্ছে এই আবাসিক এলাকার পাশে অবস্থিত। এটি হৃদ পাণ্ডব নদী হিসেবেও পরিচিত। এই লেক প্রথম দিকে কাওরান বাজার নদীর একটি অবহেলিত খাল ছিল। সময়ের পরিক্রমায় একটি একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয় এবং এর আশেপাশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে ওঠে। যার মধ্যে অন্যতম হলো রবীন্দ্র সরোবর যা লেকের পাশে অবস্থত।
কিভাবে যাবেন – ধানমন্ডি ৩২ এর আগেই নেমে রিক্সায় চড়ে রবীন্দ্র সরোবর চলে আসা যায়। বাসে আসলে ধানমন্ডি ১৫ নাম্বারের বাসে উঠলে ঢাকা সিটি কলেজের একটু পরেই ধানমন্ডি লেকের স্টেশন চলে আসবে।
জিয়া উদ্যান
জিয়া উদ্যান ঢাকায় ঘোরার জায়গা গুলোর মধ্যে ছোটখাটো একটি জায়গা হলেও অনেকেই সেখানে ঘুরতে চায়। সিটি রমনা পার্ক বা রমনা উদ্যানের মতই অনেক বড় একটি জায়গা। উন্মুক্ত যায়গা হওয়ায় পরিবারের সবাই মিলে পিকনিক করা যায়।
জিয়া উদ্যান সংসদ ভবনের পাশাপাশি অবস্থিত হওয়ায় চাইলে একসাথে জাতীয় সংসদ ভবন ও জিয়া উদ্যান একসাথে দেখার পরিকল্পনা করতে পারেন।
ঘুরতে যাওয়ার সময় সতর্কতা
উপরে আমরা ঢাকায় ঘোরার জায়গা ও খরচ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। পরিবার বা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার সময় কিছু অতিরিক্ত সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কারন এইসব ঘোরার যায়গা কিছু অসাধু চক্র আছে যারা মোবাইল মানিব্যাগ ছিনতাই করার জন্য ওত পেতে থাকে। তাই অবশ্যই সাবধানে থাকতে হবে আর সন্ধ্যার পর পরিবার নিয়ে বাইরে না থাকাই নিরাপদ।
আরো পড়ুন – ঢাকায় কম দামে আবাসিক হোটেল ভাড়া করার নিয়ম, ঠিকানা ও খরচ