বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম
নিজের বাচ্চাকে সুন্দর কোমলমতি কে না দেখতে চায়। বাচ্চারা এমনি দেখতে অনেক মায়াবী হয়। তবে অনেকেই নিজের বাচ্চার ত্বকের রঙ নিয়ে খুশি নন। ছোটবেলা থেকেই বাচ্চার ত্বকের যত্ন নিলে এবং খাবার তালিকায় বিশেষ নজর দিলে বাচ্চাদের ত্বকের গ্লো বৃদ্ধি পায়।
সেজন্যই আজকে আমরা বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম এবং বাচ্চাদের স্কিন কেয়ার সম্পর্কে আপনাদের কে কিছু ধারনা দিব।
বাচ্চা ফর্সা হয় কিভাবে
সাধারণত বাচ্চারা তার বাবা-মা কিংবা বংশীয় ভাবে গায়ের রং পেয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে তার উল্টোটা ও হয়ে থাকে। আজকাল অনেক গবেষণায় দেখা যায় গর্ভকালীন সময়ে বাচ্চার মায়ের খাবারের তালিকা বাচ্চার গায়ের রং এবং বুদ্ধিমত্তার উপর প্রভাব পড়ে।
বাচ্চা কালো হলে বাবা মা অনেক চিন্তিত থাকেন। বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম বা সাবান ব্যবহার করেন। যা মোটেও উচিত নয়। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি বাচ্চাকে কোন স্কিন ডাক্তার দেখান। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাচ্চার যত্ন নিলে আশা করি বাচ্চার স্কিন কিছুটা হলেও সুন্দর হবে এবং গ্লো করবে।
শিশুর ত্বক ফর্সা করার জন্য কোন সাবান ভালো
বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম পাওয়া যায়। মূলত ফর্সা না করলেও ত্বক সুন্দর রাখে। বাচ্চা জন্মের প্রথম তিন মাস অলিভ অয়েল ছাড়া অন্য কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত নয়। পরবর্তীতে জনসন বা কোডোমো ব্র্যান্ডের স্কিন কেয়ার এর জিনিস ব্যবহার করা যায়।
শিশুর ত্বকের যত্ন
বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর পরবর্তীতে বাচ্চার অনেক যত্ন নিতে হয়। কারণ জন্মের পর বাচ্চাদের ত্বক অনেক সেনসিটিভ থাকে। সেজন্য বাচ্চাকে সবসময় পরিষ্কার ও সুন্দর রাখতে হয়। যার ফলে পরবর্তীতে বাচ্চার ত্বক নষ্ট হয় না। বাচ্চাকে গোসল করানো, বাচ্চাদের রোদে রাখা, এবং সঠিক নিয়মে মাসাজ করা বাচ্চার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
যেহেতু বাচ্চাদের ত্বক অনেক সেনসিটিভ থাকে তাই শিশুর শরীরে অলিভ অয়েল বা বেবি অয়েল মাসাজ করা যেতে পারে ।প্রথম তিন মাসের পর বিভিন্ন ধরনের ক্রিম লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাচ্চাকে সঠিক নিয়মে গোসল করানো
যারা নতুন মা হয়েছেন তারা অনেকেই বুঝতে পারেন না কিভাবে বাচ্চার সঠিক যত্ন নিবেন। সঠিক ভাবে যত্ন নিলে বাচ্চার জন্মের সময় যে লাবণ্য থাকে পরবর্তীতে তা হারিয়ে যায় না। যার ফলে বাচ্চাকে ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করানো লাগে না।
বাচ্চাকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হয়। গোসলের পূর্বে বিভিন্ন ধরনের শরীর পরিষ্কার করার শ্যাম্পু পাওয়া যায়। সেসব দিয়ে বাচ্চাকে পরিষ্কার করতে হয়। গোসলের পর লোশন অথবা অলিভ অয়েল দিতে হয়। তাহলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় না।
বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিমের নাম
বাজারে বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন ক্রিম লোশন পাওয়া যায়। তবে কিছু জনপ্রিয় ক্রিম রয়েছে তাদের মধ্যে জনসন বেবি লোশন, ফেইস ক্রিম, প্যারাসুট জাস্ট ফর বেবি, কোডোমো ফেইস ক্রিম অন্যতম।
তবে বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভালো ক্রিম পাওয়া যায়। সেগুলো একটু ব্যয়বহুল হলেও শিশুর ত্বকের জন্য উপকারী। যেমন Aveeno আভিনো ক্রিম।
ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম
সাধারণত বাচ্চারা ছোটবেলা থেকেই মায়ের যত্ন থাকে বলেই তাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায় না। তবে বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের ত্বকের মলিনতা লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত ডাক্তাররা ছোট বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার কোন ক্রিম সাজেস্ট করেন না। কারণ এর সাইড ইফেক্ট রয়েছে যা বাচ্চাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
তবে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফর্সা হওয়ার ক্রিম পাওয়া যায়। ঘরোয়াভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় তাই ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার না করাই ভালো।
আরো পড়ুন – বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায
বাচ্চাকে ফর্সা করার টিপস
বাচ্চাকে কৃত্রিম জিনিস এর মাধ্যমে ফর্সা করার চিন্তা দূর করে ঘরোয়া ভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে না। নিচে কিছু ঘরোয়া টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করা হলো।
তেল মালিশ – বাচ্চা জন্মের পরবর্তী সময়ে বাচ্চা হাড়কে মজবুত রাখার জন্য এবং মাসেল ঠিক রাখার জন্য হালকা গরম তেল মালিশ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যা পরবর্তী সময়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
পরিষ্কার রাখা – বাচ্চার ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখা উচিত। বাচ্চাকে সবসময় পরিষ্কার জামা কাপড় পড়ানো উচিত। পরিষ্কার রাখলে ত্বকের ময়লা জমে না ফলে ত্বকের উজ্জলতা নষ্ট হয় না।
ময়েশ্চার – বাজারে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের মশ্চারাইজার পাওয়া যায়। পরিষ্কার করার পর অথবা গোসলের পর অবশ্যই শিশুর শরীরে এবং মুখে মশার ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
হলুদ – বড়দের পাশাপাশি ছোটদের ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত।বাচ্চার বয়স বৃদ্ধি পেলে ঘরেই বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। যেমন কাঁচা হলুদের সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে লাগানো যেতে পারে। অথবা গোলাপের পাপড়ি লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে মুখে লাগানো যেতে পারে।
ঘরোয়া প্যাক – ঘরে থাকা বিভিন্ন উপাদান দিয়ে রূপচর্চার বিভিন্ন ধরনের প্যাক তৈরি করা যায়। তাদের মধ্যে চন্দনের গুঁড়া, লেবুর রস,গোলাপজল ওমধু মিশ্রিত প্যাক অন্যতম। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এবং ত্বকে কালো ছাপ পড়তে দেয় না। এই প্যাকটি বড়দের পাশাপাশি ছোটরা ব্যবহার করতে পারে।
কোন কোন খাবার খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
সাধারণত যেকোনো মানুষের গায়ের ত্বকের উজ্জ্বলতা ফর্সা হওয়ার প্রবণতা তার খাবারের চাট এর উপর ডিপেন্ড করে। তেমনি বাচ্চাদের বিভিন্ন খাবারের কারণে গায়ে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেতে পারে নিচে এরকম কয়েকটি খাবারের নাম আপনাদের সুবিধার্থে দেওয়া হল।
দুধ ও জাফরান – অনেক আগ থেকেই মানুষের মাঝে শোনা যায় জাফরান গায়ের রং ফর্সা করার জন্য অনেক উপকারী। এটির দাম একটু বেশি হলেও অনেক মানুষই বর্তমান এটি ব্যবহার করেন। জাফরানের বিভিন্ন ক্রিম পাওয়া যায়।
গাজর – গাজর ভিটামিন এ ভরপুর। স্কিনের জন্য ঔষধের মত কার্যকর। বেশি বেশি গাজর খাওয়ার মাধ্যমে বাচ্চাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায় এটি বাচ্চাদের ত্বক ফর্সা করে।
টমেটো – গাজর এর মত টমেটো ও রূপচর্চার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাচ্চাদের বিভিন্ন খাবারের সাথে টমেটো ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখের স্ক্রাব এর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এর কোন সাইড ইফেক্ট নেই।
ফর্সা হবার ক্রিম এর সাইড ইফেক্ট
বাচ্চাদের মুখের চামড়া অনেক পাতলা হয়। সে জন্য মুখে কোন কিছু ব্যবহার করার পূর্বে সে প্রোডাক্ট সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। বাজারে বিভিন্ন ধরনের নকল পাওয়া যায় বাচ্চাদের ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ফর্সা হওয়ার যে কোন ক্রিম নাম জানার সাথে সাথে তা বাচ্চাদের উপর এপ্লাই করা উচিত নয়।
বেশিরভাগ সময় বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার কালো হওয়ার পেছনে তার বংশ কারণ থাকে। সুতরাং কৃত্রিমভাবে পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। তবে উপরে আমরা যে প্রোডাক্টগুলো বলেছি সেগুলো ব্যবহার করলে চেহারার গ্লো বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্য
আমরা আজকে জানলাম বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম এবং বাচ্চাদের স্কিন কেয়ার এর ঘরোয়া কিছু টিপস। আশা করছি আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক কাজে লাগবে। আপনাদের কোন মতামত অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি দ্রুতই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরো পড়ুন – বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় – ছোট বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ