শিশুদের বমির কারণ, ছোট বাচ্চাদের বমির ঔষধ

শিশুদের বমির কারণ

সম্প্রতি বাচ্চাদের খাবারের পর বমি করার প্রবণতা পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শূন্য থেকে 2 বছর বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে এই সমস্যার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। তুমি দেখা দিলে শুরুতেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ঘরোয়া ভাবে কিছু চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সেরে উঠবে বলে আশা করা যায়।

শিশুদের বমির কারণ

আজকে আমরা শিশুদের বমির কারণ, ছোট বাচ্চাদের বমির ঔষধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

বাচ্চাদের বমি হওয়ার কারন কি

০ থেকে ২ বছরের বাচ্চাদের স্বাভাবিকভাবেই মাঝে মাঝে বমি হয়ে থাকে এবং তা অল্পতেই আপনা-আপনি সেরে যায়। কিন্তু  অনেক সময় শিশুদের এই বমির কারণে মারাত্মক আকার ধারণ করে থাকে। এজন্য শিশুদের বমি হলে অভিভাবকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

নিজে আমরা শিশুদের বমির কারণ উল্লেখ করার চেষ্টা করছি

খাবারে এলার্জিজনিত কারণে: ডিম, দুধ, মাছ, চিনা বাদাম এসব কিছু খাবার সেবন করলে এলার্জি হতে পারে। যদি আপনার বাচ্চা নিয়মিত খাবার শেষে বমি করে তাহলে খেয়াল করুন নির্দিষ্ট কোন খাবারে বাচ্চার অ্যালার্জি আছে কিনা।

হজম জনিত সমস্যা: বাচ্চার যদি হজম জনিত কোন সমস্যা থাকে তবে খাবার খাওয়ানোর পর সে বমি করতে পারে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও শিশুদের বমির কারণ হতে পারে । বাচ্চাদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন একবারে অতিরিক্ত খাবার না দিয়ে অল্প অল্প খাওয়ার কিছু সময় পর পর দিতে। এতে করে বাচ্চার হজমের সমস্যা দেখা দেয় না।

জন্মগত ত্রুটির কারণে: অনেক সময় দেখা যায় জন্মের পর থেকে শিশুদের মুখে অভিরাম ফেনা পড়তে থাকে। তখন বুঝতে হবে ওই নবজাতকের খাদ্যনালীতে জন্মগত ত্রুটি আছে যার ফলে সে বমি করে। জন্মের পর কিছু দিনের মধ্যে বাচ্চার পেট ফুলে যায় এমন সে বমি করে।

সাধারনত ০ থেকে ১ বছর পর্যন্ত শিশু বমি করে থাকে আর এটা শিশুদের সাধারণ বমির কারণ হতে পারে।বাচ্চার কানে প্যানক্রিয়াটাইটিস, লিভারের রোগ সহ বিভিন্ন কারণে এ বয়সে বাচ্চাদের বমি হতে দেখা যায়।

বাচ্চাদের ব্রেনের সমস্যা যেমন হাইড্রো কেপেলাস সেফটিসেনিয়া থেকেও শিশুদের বমি হতে থাকে। গ্যাস্ট্রোএন্ডরাইটিস এর কারণেও শিশুদের বমি হয় আবার হরমোনের সমস্যার কারণে শিশুদের বমি হয়।

বাচ্চাদের মধ্যে বমি হওয়ার লক্ষণ:

ছোট বাচ্চাদের বমির ঔষধ দেয়ার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে এটি রোগ কিনা। যেমনটা আমরা বলেছিলাম ছোট বাচ্চারা সাধারণত একটু বমি করে থাকে এটি কোনো রোগ নয়। তবে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে বাচ্চার কোন সমস্যা হয়েছে এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

অতিরিক্ত বমি হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো…

  • হালকা জ্বর আসা
  • মাথা ঘুরানো
  •  মাথা ব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • খিটখিটে ভাব
  • ক্ষুধা কম হওয়া
  • ফ্যাকাসে চামড়া

উপরে যে লক্ষণগুলো বলেছি তার একটি বা একাধিক বাচ্চার মধ্যে দেখা দিলে বুঝতে হবে বাচ্চার বমি করাটা স্বাভাবিক নয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

বাচ্চাদের বমির ঘরোয়া চিকিৎসা

বাচ্চাদের অতিরিক্ত বমি নির্ণয়

আপনি যখন ক্লিনিকে বা ডাক্তারের কাছে যাবেন তখন ডাক্তার বাচ্চার কতবার বমি হয়েছিল , বমির পূর্বে খাবার গ্রহণ করেছিল কিনা, সমস্ত বিবরণ দেওয়ার পর, ডাক্তার নিম্নলিখিত টেস্ট দিবে। বাচ্চাদের রোগ নির্নয়ের জন্য সাধারনত কিছু টেস্ট দেয়া হয়। বাচ্চাদের অতিরিক্ত বমির টেস্টগুলো হলো…

  • পেটের এক্সরে
  • পেটের সিটি
  • রক্ত পরীক্ষা
  • প্রসাব পরীক্ষা
  • আলট্রাসনোগ্রাম

আরো পড়ুন – বাচ্চাদের বমির ঘরোয়া চিকিৎসা

ছোট বাচ্চাদের বমির ঔষধ

আমরা কখনোই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বাচ্চাদের বমির ঔষধ খাওয়ানো পরামর্শ দিব না। প্রথমেই আপনাকে শিশুদের বমির কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে অবস্থা জটিল হয়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ঔষধ খাওয়াতে পারেন।

  • Alset
  • Zofra odt mg
  • Emixtal serap

বাচ্চার বয়স ও ভূমির ধরনের ওপর নির্ভর করে ওষধ কতটুকু ও কতবার খাওয়াবেন তা নির্ভর করবে। তবে সাধারণত সিরাপ গুলো এক চামচ করে দিনে তিনবার খাওয়াতে বলা হয়।

বাচ্চাদের বমি বন্ধ করার দোয়া

এই পর্যায়ে আমরা বাচ্চাদের বমি বন্ধ করার দোয়া কুরআনের কিছু আয়াত নিয়ে আলোচনা করব। আপনারা জানেন পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং এর থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য দোয়া শিখিয়ে দেয়া হয়েছে।

বমি বন্ধ হওয়ার দোয়া: বিল্লা বিসমিল্লাহ এবং দুরুদ শরীফ পড়ে সূরা মুহাম্মদ এর ৬ নাম্বার আয়াতটি পড়ে পানিতে ফু দিয়ে পানি পান করলে, ইনশাআল্লাহ বমি বন্ধ হয়ে যাবে।

আয়াত: َٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَءَامَنُوا۟ بِمَا نُزِّلَ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَهُوَ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ

অর্থ: আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের সুস্থতা দান করেন।

বাচ্চাদের বমি বন্ধ করার ঘরোয়া ঔষধ

উপরে আমরা শিশুদের বমির কারণ আলোচনা করতে গিয়ে বলেছিলাম বাচ্চাদের মাঝে মাঝে বমি হওয়া খুবই সাধারণ একটি বিষয়। তবে ভূমির পরিমাণ যদি অত্যাধিক হয় এবং বাচ্চা খাবার খেতে না চায় সেক্ষেত্রে প্রথমেই ডাক্তারের কাছে না নিয়ে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে দেখতে পারেন।

নিচে আমরা বাচ্চাদের কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করব

  • অধিক পরিমাণে তরল খাবার দিন
  • আদার রস ও মধু মিক্স করে খাওয়ান
  • পুদিনা পাতার রস খাওয়াতে পারেন
  • অল্প পরিমাণে ভাতের মাড় বা ফ্যান খাওয়াতে পারেন
  • এলাচির বিচি পারেন
  • মৌরি খুব ভালো একটি বমির প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে
  • লবঙ্গ পানিতে সিদ্ধ করে পানি খাওয়ান

শিশুদের বমির ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

শিশুদের বমির কারণ

উপরে আমরা শিশুদের বমির কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।আশা করছি ব্লগটি আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে এসেছে। ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন যাতে তাদের কিছুটা উপকার হয়। এছাড়াও শিশুদের বমির কারণ ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা মতামত জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply