গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল

গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল

গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক নারীর ফর্সা সন্তান লাভ করার অনেক ইচ্ছা থাকে। সাধারণত বাচ্চা দেখতে কেমন হবে তা ন্ডিপেন্ড করে বাবা-মায়ের উপর। তবে গর্ভে সন্তান আসার পরবর্তী সময়ে সন্তান সুস্থ থাকার জন্য বা সন্তান মনের মত হওয়ার জন্য কিছু আমল রয়েছে। অনেকেই জানার জন্য চেষ্টা করে থাকেন গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল আছে কিনা।

আজকে আমরা তাদের জন্য গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় সন্তান ফর্সা হওয়ার দোয়া এবং আমল

সাধারণত গর্ভাবস্থায় সন্তান সন্তান ফর্সা হবে এমন কোন নির্দিষ্ট আমল উল্লেখ নেই। তবে নেককার এবং সুন্দর সন্তান চাওয়াটা আপনার অধিকার। তাই আল্লাহ তাআলা কুরআন অনুযায়ী নবীর সুন্নাহ অনুযায়ী বিভিন্ন আমল করতে বলেছেন। আপনারা যদি সেই সুন্নাহ এবং কুরআনের আমল করেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আপনাদের দোয়া কবুল করবেন।

গর্ভবতী মায়েরা চেষ্টা করবেন সব সময় দোয়া এবং বিভিন্ন জিকির করতে। কোন মুহূর্ত নষ্ট না করে এই সময় আল্লাহকে খুশি করার উদ্দেশ্যে আমল করলে আল্লাহ মনের ইচ্ছা পূরণ করে দেন। এছাড়াও সূরা ইউসুফ পাঠ করলে গর্ভের সন্তান দেখতে সুন্দর হয় বলে জানা যায়। তাই গর্ভের সন্তান সুন্দর এবং ফর্সা চাইলে গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি সূরা ইউসুফ পাঠ করতে হবে।

গর্ভবতী মহিলাদের নয় মাসের আমল

সৎ এবং নেক সন্তানের অধিকারী হতে হলে কিছু আমল করা অত্যন্ত জরুরী। গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য আমল হলো – 

  • প্রথম মাসে সূরা আল ইমরান পড়লে আপনার সন্তান অত্যন্ত দামি মানুষ হবে
  • গর্ভাবস্থায় দ্বিতীয় মাসের সূরা ইউসুফ করলে আপনার সন্তান সুন্দর হবে
  • তৃতীয় মাসের সূরা মরিয়ম পড়লে আপনার সন্তান সবর ধারনকারি হবে
  • চতুর্থ মাসে সূরা লোকমান আপনার সন্তান হেকমতওয়ালা হবে
  • পঞ্চম মাসের সূরা মুহাম্মদ আপনার সন্তান চরিত্রবান হবে
  • ষষ্ঠ মাসের সূরা ইয়াসীন ফল আপনার সন্তান জ্ঞানী হবে
  • সপ্তম অষ্টম নবম এবং দশম মাসে সূরা ইউসুফ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের প্রথম থেকে দশ আয়াত পড়লে আপনার সন্তান নেক আমলকারী হবে
  • ব্যথা উঠলে সূরা ইনশিকাক পড়ে পানিতে ফু দিয়ে পান করতে হবে

নেক সন্তান লাভের দোয়া

হযরত মরিয়ম আলাইহিস সাল্লাম এর মত গর্ভাবস্থায় আমল করতে হবে। তিনি ছিলেন আশীর্বাদ প্রাপ্ত নারী কোরআনের সূরা আর ইমরানের ৩৫ নং আয়াতে আছে। “স্মরণ করুন যখন ইমরানের স্ত্রী বলল হে আমার প্রভু আমার পেটে যা আছে তা আপনার নামে মানত করলাম সুতরাং আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন। বস্তুত আপনি তো সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ” মরিয়ম যখন গর্ভে ছিলেন তখন এই দোয়া করতেন।

আপনার নেক সন্তান লাভের জন্য বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করুন। আর পড়ুন-

রাব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা অয়া আন্তা তাইয়েবাতান ইন্নাকা সামিউল দোয়া”

সূরা আল ইমরান আয়াত ৩৮- অর্থাৎ এ আমাদের প্রভু আপনার নিকট থেকে আমাকে পুতপবিত্র সন্তান দান করে নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা কবুলকারী।

গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল এর পাশাপাশি সুসন্তানের জন্য এই দোয়া গুলো করতে পারেন।

নেক সন্তান লাভের আমল

  • গর্ভবতী অবস্থায় প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে ১১ বার সূরা এখলাস পাঠ করতে হবে
  • গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ইবাদত করতে হবে
  • রাতে দীর্ঘ সময় ধরে নামাজ পড়া
  • গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে মাঝে মাঝে রোজা রাখা
  • গর্ভকালীন সময়ের কষ্ট আল্লাহর দরবারে অনেক মর্যাদা এবং সওয়াবের কারণ হয়। দীর্ঘ দশ মাস দশ দিন প্রতিটি দিন তার জন্য পালনকর্তার পক্ষ থেকে মর্যাদাপূর্ণ বিনিময়ে রয়েছে উত্তম প্রতিদান।
  • বিজ্ঞানীদের মতে গর্ভেষ্ঠ সবকিছুই শুনতে পায় এবং সে অনুযায়ী সাড়া দেয় গর্ভের শিশুর সাথে কথা বলুন গান করুন এবং ধর্মীয় বই বিখ্যাত মনীষীদের জীবনী পড়ুন।
  • মা প্রতিদিন কিছু সময় কোরআন তেলাওয়াত করে বাচ্চার মাঝেও কোরআনের সম্পর্ক জুড়ে দেওয়ার উপযুক্ত সময় এটি।
  • কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে গর্ভে থাকতে শিশু যে কণ্ঠস্বর শুনেছে জন্মের পর সেই কণ্ঠস্বর শুনলে শিশু শান্ত হয়
  • গর্ভধারণ এ কথাটা নিকট আত্মীয় স্বজন ছাড়া সবার কাছে গোপন রাখা।
  • ফেসবুক পোস্টে ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম খুলে সব জানানো উচিত নয় কেননা এতে করে অনেক সময় বদনজর লাগতে পারে
  • নেক সন্তান পেতে হলে অবশ্যই আল্লাহর কাছে দোয়া করার পাশাপাশি নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে

গর্ভ সন্তান ফর্সা করার খাবারের নাম

বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যারা গেছে সাধারণত শিশুর গায়ের রং নির্ভর করে তার বাবা-মায়ের জ্বীনের উপর। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যের তালিকা উপর নির্ভর করে সন্তানের গায়ের রং। চলুন জেনে নেয়া যাক গর্ভ অবস্থায় কোন খাবার গুলো খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হবে গর্ভে সন্তান ফর্সা হওয়ার আমলের পাশাপাশি এসব খাবারের তালিকা জানানো গুরুত্বপূর্ণ।

দুধ- ত্বকের যত্নের দুধ যাদুকরি কাজ করে তবে  দুধ শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভ অবস্থায় প্রতিটি নারীর উচিত বেশি করে দুধ খাওয়া অবশ্যই দরকার এবং বাচ্চার গায়ের রং এতে ফর্সা হয়।

ডিম- ডিম খাওয়া একজন মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিমের সাদা অংশ খেলে বাচ্চার গায়ে রং ফর্সা হয় এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মহিলাদের প্রত্যেকদিন একটি করে ডিম সিদ্ধ খাওয়া উচিত। ডিমের বেশিরভাগ পুষ্টিগুণ থাকে ডিমের কুসুমের মাঝে তাই গর্ভাবস্থায় মাটিম খেলে শিশুর নির্ধারণ বিকাশ ঘটে পাশাপাশি শিশুর গায়ের রং ও ফর্সা হয়।

নারিকেল- যদি আপনার গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করার কথা চিন্তা করেন তাহলে অবশ্যই নারিকেলের সাদা অংশ খেতে পারেন। কারণ নারিকেলের শ্বাস বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় শিশুর গায়ের রং ফর্সা করতে নারিকেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তবে অতিরিক্ত নারিকেল বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বাদাম- গর্ভাবস্থায় যদি বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে চান তাহলে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন খাবারের তালিকায় বাদাম রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় শুকনো বা ভেজানো আলমন্ড বাদাম খান। অনেকে বিশ্বাস করেন বাদাম মিশ্রিত দুধ গায়ের রং পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি বাদাম দুধ খাওয়া উচিত।

কমলালেবু- গর্ভাবস্থায় কমলালেবু খাওয়া উচিত। কমলাতে থাকা ভিটামিন সি এর বাচ্চার ত্বকের জন্য খুবই ভালো এবং ত্বকের রং উজ্জ্বল করতেও সহায়ক হয়।

চেরি জাতীয় ফল- চেরি ফলে উচ্চ মাথার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের ক্ষতিরোধ করে। তাই সুন্দর ত্বকের জন্য স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফল খাওয়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।

জাফরান দুধ– জাফরান গায়ের রং ফর্সা করে বলে অনেকেই বলে থাকে। অনেক মহিলা আছে তারা গর্ভাবস্থায় গায়ের রং ফর্সা করার জন্য জাফরান মিশ্রিত দুধ পান করে থাকে। চাইলে প্রতিদিন এক গ্লাস জাফরান মিশ্রিত দুধ পান করতে পারেন আপনার বাচ্চার তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ছাড়াও বাচ্চার বুদ্ধি বিকাশের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

টমেটো- টমেটো রূপচর্চা থেকে শুরু করে অনেক কাজেই লাগে। টমেটোতে থাকা লাইক ও করবেন যা ক্ষতিকর আলতা ভায়োলিটার বিরুদ্ধে লড়াই করে সূর্যের আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মাত্রার ত্বকে রক্ষা করে। বিশ্বাস করা হয় যে গর্ভ অবস্থা টমেটো খেলে বাচ্চার ফর্সা হয়।

ঘি- ঘি ত্বকের তেলতেলে ভাব তৈরি করে। তাই গবেষণায় দেখা গেছে যেসব নারীরা গর্ভাবস্থায় খাবারের মধ্যে ঘি এর মাত্রা বেশি পরিমাণ খায় তাদের বাচ্চা হওয়ার জন্য প্রসব যন্ত্রণা অনেকাংশে কম হয় এবং প্রচলিত চিন্তা ধারা অনুযায়ী বর্ণ উজ্জ্বল করতেও এই ঘি সহায়তা পালন করে। তাই বাচ্চা ফর্সা এবং স্বাস্থ্যবান হওয়ার জন্য প্রতিদিন খাবার তালিকায় রাখা উচিত।

গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকার দোয়া

গর্ভে পবিত্র কোরআন আমাদের জীবনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য বিভিন্ন ধরনের দোয়া রয়েছে। গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকার জন্য কুরআন এবং হাদিস থেকে বিভিন্নভাবে দোয়া বর্ণিত আছে। গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকা দোয়া সম্পর্কে হযরত জাকারী্যা আলাই সালাম এই দোয়া পাঠ করেছিলেন-

ইয়া আইয়ুহান নাসু রাব্বাকুম ইন্না জালজালা তাছাড়া সাথী সাইওল আজিম (সূরা হজ্জ- আয়াত ১০)

এছাড়াও তাফসির ইবনে তাফসীরে রয়েছে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু বলেন-

আল্লাহুম্মা ইন্না উয়িযুবিকা ওত যুঋয়্যাতাহা মিনাশ শাইতানির রাজিম” 

অর্থাৎ আমি তার এবং তার সন্তান সন্ততির জন্য অভিশপ্ত শয়তানের আক্রমণ থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।

“রাব্বি হাবলি মিনাস সালেহীন”

অর্থাৎ হে আমার রব আপনি আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করুন।

গর্ভাবস্থায় যেসব আমল করা জরুরী

  • গুনাহ থেকে বিরত থাকা
  • সব সময় নামাজ আদায় করা
  • বেশি বেশি জিকির করা
  • সব সময় পবিত্র অবস্থায় থাকা
  • সব সময় ওযু অবস্থায় থাকা
  • বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা
  • আল্লাহর কাছে দোয়া করা
  • শোকর আদায় করা
  • এবং ধৈর্য ধারণ করা

মন্তব্য

আজকে আমরা গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত এবং পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

প্রতিদিন নতুন নতুন আপডেট নিউজ পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply