কেমোথেরাপি কি, কেমোথেরাপি দাম কত

কেমোথেরাপি দাম কত

সময় যত যাচ্ছে মানুষের রোগগুলো কঠিন থেকে কঠিনতম হচ্ছে। কঠিন রোগ গুলো বা মরণব্যাধি রোগ গুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। ক্যান্সারের এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোন চিকিৎসা বা ঔষধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ক্যান্সার হলে থেরাপির মাধ্যমে কিছুটা সুস্থ থাকা সম্ভবত বা পুরোপুরি ভালো হওয়ায় সম্ভব।

তাই অনেকেই কেমোথেরাপি কি কেমোথেরাপি দাম কত সে সম্পর্কে জানতে চান। আজকে আমরা কেমোথেরাপি দাম কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।

কেমোথেরাপি কি?

কেমোথেরাপি দাম কত

কেমো থেরাপি হলো এক ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসা পদ্ধতি যা ক্যান্সারে কোষকে মেরে ফেলার জন্য এবং যাতে ক্যান্সারে কোষ পুনরায় জন্ম না দেয় সে জন্য ব্যবহার ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এটাই সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সারের চিকিৎসা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের কোষ শরীর থেকে মেরে ফেলার জন্য এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

এছাড়াও এ পদ্ধতিতে ক্যান্সারে কোষগুলো বৃদ্ধি হতে বাধা দেয়।

বাংলাদেশে কেমোথেরাপি দাম কত

বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১২ থেকে ১৬ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। গবেষণায় জানা যায় সরকারি হাসপাতালে কেমোথেরাপির জন্য তিন থেকে পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। আবার প্রাইভেট হসপিটালে প্রতিটি থেরাপির জন্য ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

ল্যাবএইড ইবনে সিনা সহ ব্যয়বহুল সব আধুনিক হাসপাতালগুলোতে কেমোর খরচ কিছুটা বেশি হলেও এর চিকিৎসা মান খুবই আধুনিক। টোটাল বাংলাদেশ একজন ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় বছরে আনুমানিক ৬ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

বিদেশে কেমোথেরাপি দাম কত

বিদেশে দেশের তুলনায় খরচ কিছুটা বেশি হয় কিন্তু চিকিৎসা সেবা খুবই উন্নত হয়। ভারতে কেমোথেরাপির জন্য ৩০০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। এদিকে দেশের বাইরে চায়না সিঙ্গাপুর ব্যাংকক সহ বিভিন্ন দেশে ২ লক্ষ থেকে শুরু করে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

ভারতে কেমোথেরাপির খরচ

বাংলাদেশ থেকে ভারতে যে কোন রোগের চিকিৎসা খরচ খুবই কম হয় এবং চিকিৎসার মানও অনেক ভালো থাকে। ভারতে কলকাতায় কেমো থেরাপির খরচ প্রতি সেশন ৩০০০ টাকা। গড় খরচ ১৮ হাজার টাকা সর্বোচ্চ খরচ ৫০ হাজার টাকা হতে পারে। সাধারণ খরচ নির্ভর করে ক্যান্সারের কোন ধাপে রয়েছেন বা কোন হসপিটাল থেকে কেমোথেরাপি সেবা নিচ্ছেন।

কেমোথেরাপি দেওয়ার নিয়ম

সাধারণত ক্যান্সার রোগী বা তাদের গার্ডিয়ানদের সব সময় আগ্রহ থাকে কিভাবে কেমো দেয়া হয় সে সম্পর্কে জানার জন্য। শুধুমাত্র একজন যোগ্য চিকিৎসক দ্বারাই থেরাপি দেয়া হয়। ইনজেকশনে মাধ্যমিক কেমোথেরাপি শিরায় প্রবেশ করানো হয়। অনেক সময় স্যালাইন যেভাবে দেয়া হয় কেমো থেরাপিও সেভাবে দেয়া হয়।

এতে করে ওষুধ কিছুটা পাতলা হয়ে আসে অনেক সময় শরীরে এক নির্দিষ্ট যারা নির্দিষ্ট পরিমাণ কেমন থেরাপি দিতে হয়। গোড়ালি কখনো কখনোই ট্যাবলেট গুলো রোগীকে দেওয়া হয় যা বাড়িতেও সেবন করতে পারে। তবে কেমো পরীক্ষার জন্য নিয়মিত হাসপাতালে যেতে হয় এবং চিকিৎসার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ঢুকে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হয়।

কেমোথেরাপি বা ওষুধগুলো সরাসরি মেইন শিরার মধ্যে দেয়া হয়। মস্তিষ্ক স্পাইনাল কর্ড কে বেষ্টনকারী দেশগুলির ফাঁকে ফাঁকে ইনজেকশন এর মাধ্যমে দেয়া হয়ে থাকে। ইনট্রাপেরtonal injection হিসেবে যা সরাসরি অন্ধ্র পেট এবং লিভারে দেয়া হয়। ইন্ট্রা আর টেরিয়ালি আর্টারি বা ধমনীর মধ্যে ইনজেকশন দেয়া হয়। যা ক্যান্সারের কোষ গুলোকে ধ্বংস করে।

কেমোথেরাপি কিভাবে কাজ করে

ক্যান্সারের ছেলের জন্য কেমোথেরাপি হচ্ছে এক ধরনের বিষের মত। এতে ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস হয় এটাকে বলা হয় সাইট অক্সাইড কেমিক্যাল। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে জিনিসটিকে শরীরে ক্যান্সারের কোষের জন্য বিষাক্ত হিসেবে দেখা হয় তবে সেটা শরীরের সুস্থ স্বাভাবিক কষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

তবে এই কেমোথেরাপি দিলে শরীরের ক্যান্সারে কোষ মরে গিয়ে শরীরকে সুস্থ করে তোলে।

কেমোথেরাপির উপকারিতা

কেমো থেরাপির উপকারিতা গুলো হলো-

  • রোগীর দেহে ক্যান্সারে কোষগুলোর সংখ্যা কমিয়ে দেয়
  • টিউমারের আকৃতিকে ছোট করে দেয়
  • যেহেতু এটি টিউমার সরবরাহকারি নতুন রক্তএর বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়
  • ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া কমিয়ে দেয়
  • ক্যান্সারের লক্ষণগুলোকে কমিয়ে দেয়
  • ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে কেমোথেরাপি যন্ত্রণা কম করতে সহায়তা করে

, কেমোথেরাপি সময়কাল কেমোথেরাপির জন্য নিয়মিতভাবে যেসব রোগের থেরাপি দেওয়া হয় বা চিকিৎসার সময় কাল কতক্ষন হবে তা নির্ভর করে ক্যান্সারে ধরন এবং ক্যান্সারে কোন স্তর রয়েছে তার ওপর এছাড়াও মুখে মোর দোষ কতটা হবে তার উপর নির্ভর করে কতটা সময় লাগতে পারে তবে একটি সিঙ্গেল ডোজ বা একমাত্রা থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে

কেমো থেরাপির পর করণীয়

কেমোথেরাপির পর যত্ন নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কি কি করবেন নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-

  • থেরাপি দিলে খুবই ক্লান্তি লাগতে পারে তাই প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে
  • প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে
  • খাওয়ার রুচি না থাকলেও জোরপূর্ব খাবার গ্রহণ করতে হবে
  • প্রচুর ফলমূল শাকসবজি গোটা শস্য প্রতিদিন খাবার তালিকা রাখতে হবে
  • প্রচুর পরিমাণে পানি এবং তরল খাবার খেতে হবে
  • কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিকরা দেখলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে
  • নিয়মিত ব্যায়াম করলে শারীরিক মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে

কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

কেমোথেরাপি দাম কত

ক্যান্সার রোগীদের কেমো থেরাপি দেওয়ার সময় বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল-

  • চুল পড়া
  • মুখে ঘা হওয়া
  • ডায়রিয়া সংক্রমণ
  • মাথাব্যথা
  • ক্লান্তি
  • বমি বমি ভাব
  • নখ মরে যাওয়া
  • চামড়া উঠে যাওয়া
  •  শরীরের পশম পরে যাওয়া
  • ঠোঁট কালো হয়ে যাওয়া
  • জ্বর
  • রক্তস্বল্পতা
  • ক্ষুধামন্দা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • মুখ জিব্বা গলা ব্যথা সমস্যা হওয়া
  • ত্বকের রঙের পরিবর্তন
  • প্রস্রাব- মুত্রাশয়ের পরিবর্তন
  • কিডনির সমস্যা
  • ওজন কমে যাওয়া
  • মেজাজের পরিবর্তন

কেমোথেরাপি সম্পর্কে সতর্কতা

যদি কোন ব্যক্তির রক্তপাত একটানা হয়, তীব্র ঠান্ডা, চুলকানি ফুসকুড়ি এলার্জি সমস্যা গলা বা মুখ ফুলে যাওয়া, বিভিন্ন অংশে ব্যথা তীব্র মাথাব্যথা শ্বাসকষ্ট ডায়রিয়া বমি বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত দেখা যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কেমোথেরাপি সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর

কেন ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি ব্যবহার করা হয়?

কেমো থেরাপি অনেক ধরনের ক্যান্সারের প্রথম সারির চিকিৎসা বলে জানা যায়। এটি একটি পদ্ধতিগত থেরাপি হিসেবে বিবেচিত হয় কারণ কেমোর ঔষধ গুলো সারা শরীরে রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ক্যান্সারে কোষগুলিকে মেরে ফেলে। কেমোথেরাপি চিকিৎসার জন্য দুটি উপায়ে ব্যবহার করা হয়।

কিউরে ডিব্বালিয়েটিভ ইউনিটিভ কেমোথেরাপি ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করে এবং ক্যান্সারে কোষ যাতে পুনরায় না হয় সে সম্পর্কে প্রতিরোধ করে তোলে।

কেন কেমোথেরাপি ব্যয়বহুল?

ক্যান্সার এর সব থেরাপিই ব্যায়বহুল।

কেমোথেরাপির খরচ ঔষধের ধরন ওষুধের ডোজ কেমন?

থেরাপি চক্রের সংখ্যা ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কেমোথেরাপীর খরচ কম বেশি হতে পারে।তবে এর সব মিলিয়ে কেমোথেরাপির বা চিকিৎসার খরচ অনেক ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। কিছু ওষুধ ব্যয়বহুল আবার কিছু ওষুধ রয়েছে সাশ্রয়।

কেমোথেরাপির চিকিৎসা কতদিন স্থায়ী হয়?

সাধারণত কেমোথেরাপির একটি সেশন তিন থেকে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। তবে এটি আপনার চিকিৎসার ধরণের উপর ভিত্তি করে কম বা বেশি সময় লাগতে পারে। কেমোথেরাপির কোর্স কেমোথেরাপীর চার থেকে আটটি চক্র রয়েছে এবং প্রতিটি চক্রের সময় ওষুধের ধরন এবং নির্ভর করে কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

কেমোথেরাপি কি কষ্টকর?

কেমো থেরাপির ঔষধ গুলো শিরার মাধ্যমে এবং মৌখিকভাবে দেয়া হয় যা সাধারণত কষ্টদায়ক হয় না। কিন্তু ইন্টারভেনাস ইনফিউশনের জন্য সহজ ঢোকানোর সময় অবশ্যই হালকা ব্যথা হতে পারে বা মুখের ঘা বার্নিং সেন্সেশন মাথা ব্যথা এবং বেশি এবং পেটের ব্যথার মত বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।

কেমোথেরাপি দাম কত

কেমোথেরাপি দাম কত

আজকে আমরা কেমো থেরাপি কি কেমোথেরাপি দাম কত সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন সব ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইট বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply