থাইরয়েড নরমাল কত – থাইরয়েড কমানোর উপায়

থাইরয়েড নরমাল কত

বর্তমানে মহিলাদের যে সমস্ত গুলো খুব বেশি হয়ে থাকে তার মধ্যে থাইরয়েড রোগ অন্যতম। মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদের থাইরয়েড রোগ হতে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সাধারণত পুরুষের তুলনায় থাইরয়েড রোগ মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। অনেকেই জানতে চায় থাইরয়েড নরমাল কত বা থাইরয়েড কমানোর উপায় কি।

আজকে আমরা থাইরয়েড নরমাল কত এবং থাইরয়েড সম্পর্কে জানা ও অজানা বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় 

থাইরয়েড কি?

প্রত্যেক মানুষের শরীরের গলার অংশে থাইরয়েড নামক একটি গ্রন্থি থাকে। যখন সেই গ্রন্থটি তার নিজ মাত্রায় থাকে তখন সেটিকে কোন রোগ বলা যায় না। কিন্তু যখন এটি তার নির্দিষ্ট আকৃতি চেয়ে বড় আকৃতি ধারণ করে তখন থাইরয়েড রোগে পরিণত হয়। থাইরয়েডের কারণে শারীরিক কিছু পরিবর্তন ঘটে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।

কেননা থাইরয়েড গ্রন্থে কাজ হল সে আয়োডিন ব্যবহার করে। শরীরে যতটুকু থাইরয়েডের দরকার ততটুকু তৈরি করে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু যতটুকু দরকার তার থেকে বেশি হরমোন যখন থাইরয়েড তৈরি শুরু করে তখনই থাইরয়েডের সমস্যা শুরু হয় এবং শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের দেখা দেয়।

আরো পড়ুন – BDTGame App Download and Earn ৳300000 Monthly

থাইরয়েড নরমাল কত হওয়া উচিত

শরীরের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থির মধ্যে একটি অন্যতম গ্রন্থি হল থাইরয়েড। হরমোনটি যখন বেড়ে যায় তখন বিভিন্ন সমস্যা শরীরে দেখা দেয়। সাধারণত মানুষের ক্ষেত্রে সাধারণ থাইরয়েডের মাত্রা ১০ থাকলে আমরা তাকে নরমাল থাইরয়েড বলে মনে করি। ১০ বা ১০ এর নিচে বা উপরে থাইরয়েডের মাত্রা থাকলে সেই রোগের ওষুধের প্রয়োজন হয় না।

এদিক থেকে একজন গর্ভবতী মায়ের তিনটি ভাগে ভাগ করে থাইরয়েড পরীক্ষা করা হয়। গর্ভবতী মহিলার প্রথম সপ্তাহ থেকে ২২ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে প্রথম সেমিনার এরপরে ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহ দ্বিতীয় সেমিনার সেকেন্ড সেমিস্টার থাইরয়েড হতে পারে। যদি এমন হয় যে প্রথম দিকে এসেছে আপার cut of ২.৫ থাকা উচিত সুতরাং যদি কারো থাইরয়েডের মাত্রা পাঁচ বা সাড়ে পাঁচ থাকে তাহলে তার ক্ষেত্রে ঔষধ প্রযোজ্য হবে।

এছাড়াও প্রথম টাইম স্টাররে গর্ভবতীদের স্বাভাবিকভাবে থাইরয়েডের মাত্রায় কিছুটা কমতে পারে। কেননা প্রেগনেন্সির শুরুর দিকে মায়ের শরীর ঠিক ভাবে কাজ করে না। টিএসএইচ লেভেল কমে যায় দেখে অনেকে ভয় পায় যে নিয়মিত থাইরয়েডের ওষুধ খেতে হবে। নরমাল থাইরয়েডের মাত্রা-

  • T3 total T3: 80-220ng/dl
  • T4 Total 4: 4.5-12.5ug/dl
  • TfT4 free T4: 0.8-1.8ng/dl
  • TFT3 Free T3: 2.3-4.2 pg/ml
  • TSH : 0.4-4.0 miu/L

ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের থাইরয়েড বেশি হওয়ার কারণ

নারীদের মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস এবং রক্তশূন্যতা আছে তারা নিয়মিত থাইরয়েড পরীক্ষা করানো উচিত। মেয়েদের থাইরয়েড এর একটু উপসর্গ হলো অনিয়মিত মাসিক, বন্ধ্যাত্ব, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ইত্যাদি। এমনকি নারীদের ক্ষেত্রে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করা প্রয়োজন যখন নারীদের ত্বক সুস্থ হয়ে যায়, অতিরিক্ত চুল পড়া শুরু হয়, ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয়।

তখনই বুঝতে হবে শরীরে থাইরয়েড আক্রান্ত হয়েছে। যে নারীদের সমস্যা থাকে তাদের থাইরয়েড হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। অনেক সময় দেখা যায় ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও নারীদের থাইরয়েডে আক্রান্ত হয়। কারণ ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে নারী শরীরে হরমোনে কিছুটা পরিবর্তন ঘটে যেটা পুরুষদের হয় না।

পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই সমস্যাগুলো বেশি হওয়ার ফলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের থাইরয়েডে আক্রান্ত হওয়ার জন্য বেশি হতে দেখা যায়।

থাইরয়েড সমস্যা দেখা দিলে শরীরের কি কি পরিবর্তন দেখা দেয়

এন্ড্রোজেন হরমোন এর প্রভাবে বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে নারীদের শরীরে। যেমন-

  • অতিরিক্ত ঋতুস্রাব
  • অনিয়মিত ঋতুস্রাব
  • শুধু মুখে নয় শরীরে বিভিন্ন স্থানে ব্রণ দেখা দেওয়া
  • পুরো শরীরের লোম অনেকাংশে বেড়ে যাওয়া
  • ঘার বগলসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মকমলের মতো কালো ত্বক হয়ে যাওয়া
  • তলপেটে ব্যথা করা
  • নারীদের বন্ধ্যাত্ব

থাইরয়েড কমানোর উপায়

  • নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।
  • গবেষণায় প্রমাণিত থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিলে আয়রন যুক্ত খাবার প্রত্যেক দিন খাওয়া উচিত।
  • যোগ ব্যায়াম এবং ধ্যান থাইরয়েড গ্রন্থিতে রক্ত প্রবাহকে সঠিক রাখে যার ফলে থাইরয়েডের সমস্যা কমতে থাকে।
  • আমাদের শরীরে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়োডিন থাকে না তখন থাইরয়েড হরমোন দেহ তৈরি করতে পারেনা। যা হাইপো থাইরয়েডিজমের দিকে পরিচালিত হয়।
  • যদি আপনার থাইরয়েড সমস্যা থাকে তাহলে আপনি প্রধানত চিনি খাবেন না। এ দুটি হরমোন উৎপন্ন হয় তাই থাইরয়েড রোগের জন্য চিনি খুবই খারাপ। চেষ্টা করবেন চিনি থেকে বিরত থাকতে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার কেমন ফল শাকসবজি দুধে সব খাবার খেতে হবে এগুলো থাইরয়েডের সমস্যা প্রতিরোধে খুবই সাহায্য করে থাকে।
  • এছাড়া ভিটামিন বি ১২যুক্ত খাবার থাইরয়েড গ্রন্থ থেকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে তাই এন্ড অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার আপনার ডায়েটে অবশ্যই রাখতে হবে।
  • অনেক সময় ভিটামিন বি এর অভাবে থাইরয়েড হয়ে থাকে এবং ভিটামিন বি এর সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো তাই দিনে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিটের আলো তে ঘোরাঘুরি করুন।
  • খাওয়ার সময় মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে খান।
  • খাবার সময় খুব বেশি তাড়াহুড়া করে খাবেন না। যেটা থাইরয়েড গ্রন্থের উপর ইফেক্ট করে তাই খাওয়ার সময় অবশ্যই চিবিয়ে চিবিয়ে খাবেন।
  • দোকানের খাবার এবং ফাস্টফুড যেমন এগ রোল চাওমিন বিরিয়ানি ভাজা পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে। থাইরয়েড রোগের এসব খাবার থেকে বেঁচে থাকলে অনেকটাই ভালো থাকা যায়।

থাইরয়েড হলে কি বাচ্চা হয় না?

অনেক সময় থাইরয়েড রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করলে বা চিকিৎসার করার পরও ভালো না হলে অনেক সময় বন্ধ্যাত্ত দেখা দিতে পারে। তবে অনেকেই আছেন যারা থাইরয়েডের সঠিক চিকিৎসা করার ফলে মা হতে পেরেছে। এজন্য থাইরয়েড রোগের ধরা পড়ার পরবর্তী সময়ে খুব ভালো একজন চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত থাইরয়েডের ঔষধ সেবন করে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলাফেরা করলে অবশ্যই থাইরয়েড কে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।

মা হওয়া সম্ভব হয় তবে থাইরয়েডের ধরণের উপর নির্ভর করে ব্যক্তি মা হতে পারবে কিনা। সেজন্যই থাইরয়েডের কোন লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করা অবশ্যই বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে চিকিৎসকের নিকট চলে যেতে হবে। অনেক সময় বিয়ের আগেও মেয়েদের থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দেয় এজন্য অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

থাইরয়েড টেস্ট করার নিয়ম

থাইরয়েড টেস্ট সাধারনত ব্লাড বা রক্তের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। সাধারণত টিএসএইচ ডি ফর্টি থ্রি এই তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েড টেস্ট করা হয়। তবে প্রত্যেকটি টেস্টের ধরন এবং টেস্ট রেজাল্ট দেখার নিয়ম আলাদা। প্রত্যেকটি মানুষ এর শরীরে বেশিরভাগ থাইরক্সিন হরমোন প্রোটিন জাতীয় পদার্থের দ্বারা আবদ্ধ অবস্থায় থাকে।

কিছু পরিমাণ থাইরয়েডসিন মুক্ত অবস্থায় থাকে থাইরয়েড টেস্ট করার সময় ডাক্তার আপনাকে ল্যাবে যেতে বলবে এবং পরীক্ষার সময় আপনাকে একটি চেয়ারে বসতে হবে বা টেবিলের শোয়ানো হবে। যে হাত থেকে রক্ত নেয়া হবে সে হাতটি স্যালাইনের তার অথবা শক্ত কিছু দিয়ে হাত বেঁধে নেবে যাতে করে রক্ত নারী দেখা যায়।

এরপর নার্স হাত থেকে একসিডেন্স রক্ত নেবে। থাইরয়েড পরীক্ষা দুটি পদ্ধতিতে হয়ে থাকে টিচার এন্ড টিএসএইচ টি ৪ পরীক্ষাটি থাইরক্সিন হিসেবে পরিচিত। ডিফার এর ফল যদি উচ্চস্তরে হয় তবে ওভার একটি থাইরয়েড নির্দেশ করে যদি আপনার tss 2.0ml এর উপরে মাপা হয় তবে আপনার হাইপোথাইরক্সিম দিকে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এই রোগ হলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। ক্লান্তি হতাশা ভঙ্গুর চুল এবং অন্তর্ভুক্ত হবে ডাক্তারের ক্ষেত্রে কমপক্ষে প্রতিবছর আপনাকে থাইরয়েড পরীক্ষা করতে বলবে। সঠিক চিকিৎসা নিলে ডাক্তারের পরামর্শে এক থেকে দেড় বছর রেগুলার ঔষধ খেলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে।

থাইরয়েড কি ভালো হয়?

থাইরার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। অনেকের মনে ভুল ধারণা রয়েছে যে থাইরয়েড হয়তো কঠিন কোন রোগ যা ভালো হয় না। তবে এটি সম্পূর্ণ ভুল সঠিকভাবে ভালো ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে চিকিৎসা করলে এক থেকে দেড় বছর নিয়মিত চেকআপ এবং ওষুধ খেলে থাইরয়েড রোগ ভালো হয়ে যায়। যদি আপনার হাইপো থাইরয়েডিজম হয় তাহলে আপনাকে সারাজীবন এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে।

আর যদি চিকিত্তসা না নেন তাহলে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন না। আর হাইপোথাইরয়েডিজম থাইরয়েড ডক্সিনোসিস এর ক্ষেত্রে এক থেকে দুই বছর যদি নিয়মিত চিকিৎসা নেয়া যায় তাহলে সুস্থ হয়ে যায়। থাইরয়েড সার্জারি করা যায় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এন্টি থাইরয়েড ওষধ চিকিৎসকরা রেফার করে থাকেন।

থাইরয়েড কমানোর খাবার

থাইরয়েড কমানোর জন্য প্রথমে খাবারের দিকে নজর দিতে হবে এবং সুসম সমস্ত খাবার খেতে হবে। এ ধরনের খাবার থাইরয়েডের জন্য খুব বেশি উপকারে। যেমন দুধ, দই ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে পারলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় যেমন শাকসবজির ফল ইত্যাদি।

আয়রনযুক্ত খাবার খেতে হবে থাইরয়েড কমানোর জন্য। সামুদ্রিক মাছ, পুনা মাছ, বাদাম, ডিম, চিংড়ি গরুর মাংস, মুরগির মাংস, কাঁকড়া, ঝিনুক ইত্যাদি হলো ঝিংক এর মূল উৎস। তাই এসকল খাবার থাইরয়েড কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

থাইরয়েড নরমাল কত

মন্তব্য

আজকে আমরা থাইরয়েড নরমাল কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি যারা থাইরয়েড নিয়ে জানতে চায় তাদের জন্য আর্টিকেলটা অনেক কাজে লাগবে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন। এছাড়াও আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন সব নতুন নতুন আপডেট নিউজ পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply