আজ না কাল” করার অভ্যাস কিভাবে বদলাবেন

“আজ না কাল” করার অভ্যাস কিভাবে বদলাবেন 

 

ধরুন আপনাকে মেডিটেশন করতে হবে কিন্তু আপনি প্রথমে বললেন যে সকালে আমি ফ্রেশ মুডে মেডিটেশন করব আর তারপর বললেন যে এখন দেরি হয়ে গেছে আমি বরং সন্ধ্যায় মেডিটেশন করব। তারপর বললেন যে সন্ধ্যায় আমার অনেক কাজ আছে এখন আমি সোজা রাতেই মেডিটেশন করব। আর তারপর আপনি রাতে ঘুমিয়ে পড়লেন। বারবার কাজ পিছিয়ে দেওয়ার এই অভ্যাসকে প্রক্রাস্টিনেশন বলে। আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে আমরা আজকের আর্টিকেলে ঠিক কি বিষয় নিয়ে কথা বলতে চলেছি। এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে বলবো কিভাবে আপনি আপনার প্রক্রাস্টিনেট করার অভ্যাস চিরতরে বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু এই সমস্যার সমাধান এর আগে আমি আপনাকে বলতে চাই কেন লোকেরা প্রক্রাস্টিনেশন করে কারণ যেকোন সমস্যার সমাধানে পৌঁছানোর আগে সমস্যার মূল খুঁজে বের করা প্রয়োজন। 

 

  • নিজের Comfort Zone থেকে না বেরোনো

 

যে কাজগুলো করতে আমাদের বেশি এফোর্ড দিতে হয় অনেক সময় আমরা সেই কাজগুলো করতে দেরি করি কারণ আমাদের সেই কাজগুলো করতে ভালো লাগে না আর আমাদের যে কাজগুলো করতে ভালো লাগে আমরা বারবার সেইগুলোই করতে থাকি। এই জিনিসটাকে বলা হয় কমফোর্ট জোন এর ভিতরে থাকা। কমফোর্ট থেকে কেউ বের হতে চায় না সেই কারণেই আমরা বারবার প্রক্রাস্টিনেশনকে হাতিয়ার বানিয়ে কাজ করতে দেরি করি বা কাজ না করার জন্য বাহানা খোঁজি। 

 

  • Rejection এর ভয় 

 

 আমাদের সবচেয়ে বড় ভয় হল রিজেকশন এর ভয়। রিজেক্ট হতে আমাদের মোটেও ভালো লাগে না। যদি কারো মাথায় খুব ভাল আইডিয়া আসে তবুও সে সেই আইডিয়াকে ভুলে যেতে থাকে সেই আইডিয়াকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য কোন অ্যাকশন নেয় না। আর সেটাকে প্রক্রাস্টিনেট করতে থাকে যাতে তাকে সেই কাজটা করতে না হয়। এটা ঘটে কারণ রিজিকের ভয়ে আমাদের মধ্যে ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে আর কেউ আমাদের ঠাট্টা করুক বা ইনসাল্ট করুক এটা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা। এই কারণে আমরা অনেক সময় আমাদের কাজকে প্রক্রাস্টিনাট করি।

 

  • Perfectionism এর রোগ 

 

perfection -এর পোকা ঢুকে বসে থাকে মানে কিছু মানুষ নিজের কাজ নিয়ে এতটাই প্রসেসিব যে ভাবাই যায় না এখানে পারফেকশনিস্ট মানে নিজের কাজকে পারফেক্টলি করা পারফেকশনের সঙ্গে করা। কিন্তু পারফেক্টলি কাজ করা তাড়নাই আমরা প্রায়ই আমাদের কাজ শুরু করতে পারিনা। আর কাজ পিছিয়ে দেই সেজন্য পারফেকশনিস্ট প্রক্রাস্টিনেশন এর একটা বড় কারণ।তো এতো গেল সমস্যার কথা এখন দেখা যাক কিভাবে প্রক্রাস্টিনেশন এর অভ্যাস দূর করা যায়। 

 

1.Be Specific About Your Action 

 

 অনেকেই একটা টু-ডু লিস্ট তৈরি করে কিন্তু তারা তাদের কাজ শুরু করার জন্য কোন স্পেসিফিক প্ল্যান তৈরি করতে পারে না। যেমন কেউ যদি ওজন কমাতে চায় তাহলে সেই হয়তো তার শিডিউলে হাঁটা বা জিমে যাওয়া অ্যাড করেছে। কিন্তু কখন জিমে যাবে বা হাঁটবে কতক্ষণ হাঁটবে বা ব্যায়াম করবে সেটা ডিসাইড করে রাখে না। যার কারণে সে কোন অ্যাকশন নিতে পারে না আর খালি কাজ পিছিয়ে দেয়।তাই আপনার কাজের ব্যাপারে আপনাকে স্পেসিফিক হতে হবে মানে কোন সময় বা কখন কাজ শুরু করবেন কতক্ষণের জন্য কাজটা করবেন এই বিষয়গুলো আগে থেকে ঠিক করা দরকার।

 

The 5 Second Rule

 

 কোন কাজ প্রক্রাস্টিনেশন করতে কমপক্ষে 5 সেকেন্ড সময় লাগে সেজন্য আপনি যদি এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে ফাইভ সেকেন্ড রুলটা ফলো করতে হবে। আপনি যদি কোন কাজ করতে চান তাহলে কোন কিছু না ভেবে শুধু 54321 বলুন আপনার কাজ শুরু করুন। আপনি যখন এই টেকনিকটা ব্যবহার করবেন তখন আপনি নিজেই দেখতে পাবেন যে আপনার কাজ পিছিয়ে দেওয়ার বা প্রক্রাস্টিনেশন করার অভ্যাস কমে গেছে। কারণ আপনি এই টেকনিকটা ব্যবহার করে কাজটা শুরু করে দিতে পারবেন। 

 

Eat The Biggest Frog First

 

 না আমি আপনাকে ব্যাং খেতে বলছি না প্রক্রাস্টিনেশন এর অভ্যাস ভাঙ্গতে এই টেকনিকটা আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। এই টেকনিক অনুযায়ী আপনাকে সবচেয়ে বড় ব্যাংটা ঘুম থেকে উঠে সবার আগে খেতে হবে যার মানে হল আপনাকে আপনার সবচেয়ে কঠিন কাজটা সবার আগে শেষ করতে হবে। আপনি আপনার টু-ডু লিস্ট এর সবচেয়ে বড় রাক্ষস তাকে হারানোর পরে বাকি কাজগুলো করা আপনার পক্ষে অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। আর সেই কাজগুলো করতে আপনার খুব বেশি সমস্যা হবে না বা আপনাকে খুব বেশি এফোর্ট দিতে হবে না। এভাবে আপনি সময়মতো আপনার কাজ করতে পারবেন।

 

Forgive Yourself For Procrastinating in Past

 

এমন অনেকেই আছে যারা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের কাজ নিয়ে তালবাহানা করে। এই কারণে সময়মতো কাজ করতে না পারায় কোথাও না কোথাও তাদের মধ্যে অপরাধবোধ তৈরি হয়। এই অপরাধবোধ বারবার তাদের কাজে বাধা দেয়।তাই আপনারা যদি দীর্ঘদিন ধরে কাজ নিয়ে টালবাহানা করার অভ্যাস থাকে তাহলে আপনাকে প্রথমে নিজেকে ক্ষমা করতে হবে। আপনাকে শুধু মুখে বললেই হবে না বরং নিজের মধ্যে সেই ফিলিংসটাকে অনুভব করতে হবে। আপনি যখন আপনার অতীতের ভুলের জন্য নিজেকে ক্ষমা করে অ্যাকশন নেওয়া শুরু করবেন। তখন আপনি নিজে থেকেই ফল পেতে শুরু করবেন। আপনি যদি এখনও পর্যন্ত প্রক্রাস্টিনেট করার অভ্যাসের কারণে নিজের উপর বিরক্ত থাকেন তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলে বলা উপায় গুলোকে কাজে লাগান।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর আমাদের সাইটের সাথে থাকবেন নতুন নতুন পোস্ট পেতে। আমার আর অন্যান্য পোস্ট:

ব্লগিং থেকে আয় করার উপায়

যে কোন প্রয়োজনে আমার সাথে যোগাযোগ করুন :

facebook contact me

 

ধন্যবাদ

 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply