দুধ খাওয়ার উপকারিতা
যেসব খাবারে সব ধরনের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান তাদের মধ্যে অন্যতম হলো দুধ। দুধ এমন একটি খাবার যাতে রয়েছে আয়রন ক্যালসিয়াম থেকে শুরু করে বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান যা একজন মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অনেকেই দুধ খেতে চান না বা দুধ খাওয়ার অপকারিতা বা উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না।
তাই দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এবং দুধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা-অজানা তথ্য জানতে গুগলে সার্চ করে থাকেন। আজকে আমরা দুধ খাওয়ার উপকারিতা সহ দুধ সম্পর্কে বিভিন্ন জিজ্ঞাসিত তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।
আরো পড়ুন – প্রিয় মানুষের জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস
গরুর দুধ খাওয়ার উপকারিতা
দুধ খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিচে বর্ননা করা হল-
- শরীরের কোলেস্ট্রল নিয়ন্ত্রণে রাখে
- ঘুম ভালো হয়
- হাড় মজবুত করে
- সারাদিনের শক্তি সঞ্চয় হয়
- ত্বক সুন্দর রাখে
- ক্যালসিয়াম দাঁত এবং হাড়ের গঠন মজবুত করে
- প্রতিদিন দুধ পান করলে দাগ হয়ে যাওয়া দাঁতে পোকা এবং হলুদ ছোপ পড়া হাড়ের ক্ষয়ের মত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে
- প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করলে অন্যান্য খাবারের চাহিদা অনেক অংশে মিটে যায়
- নাস্তার সময় দুধ পান করলে সেটা অনেকক্ষণ পেটে থাকে ফলে ক্ষুধা কম থাকে।
- স্বাস্থ্য সম্মতভাবে ওজন কমানোর জন্য দুধ খাওয়া যেতে পারে
- দুধে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল শরীরের ফিটনেস বাড়ায়
- এবং মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করে
- দুধ পানে ঘুমের উদ্রেক হয় যার ফলে মস্তিষ্ক শিথিল থাকে এবং মানসিক চাপমুক্ত হয়
- দুধ ডিহাইড্রেট করতে সাহায্য করে
- ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভুগলে এক গ্লাস গরুর দুধ পান করে নিন সুস্থবোধ করবেন।
- এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলেও দুধ পান করা যেতে পারে
- শরীরের ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের মধ্যে ঠিক না থাকলে ফ্রি মেনুয়াল সিম হতে পারে
- পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথা এবং এসিডিটি সমস্যা হলে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে পারেন।
- দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন যা মাংস পেশি গঠনের সহায়তা করে
- মাংসপেশির আড়াশটতা দূর করে
- নিয়মিত ব্যায়ামের ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস দুধ পান করতে পারেন
- বাড়ন্ত শিশুদের মাংসপেশির গঠন উন্নত করতে প্রতিদিন দুধ পান করা উচিত
- বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন থাকে যা ত্বকের ইলাস্টিক সিটি বজায় রাখতে সাহায্য করে ফলে ওকালে চামড়া ঝুলে যায় না এবং ত্বক নরম ও সতেজ দেখায়।
ছাগলের দুধের উপকারিতা
অনেকেই হয়তো জানেন না গরুর দুধের তুলনায় ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ খুবই বেশি। ছাগলের দুধও গরুর দুধের মতই সুমিষ্ট এবং উপকারে ভরপুর। নিচে ছাগলের দুধের উপকারিতা বর্ণনা করা হলো-
- হার্ট ভালো রাখে
- এলার্জির প্রবণতা কমিয়ে দেয়
- লো ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ
- ত্বকের যত্নে উপকারী
- ল্যাকটোস অসহিষ্ণু
- সহজে হজম করা যায়
- এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করে
- হাড়ের গঠনকে শক্তিশালী করে
- বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুবই উপকারী
- কোলেস্টরল কম
রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খাবার শরীরের উপর বিভিন্নভাবে এফেক্ট করে। তবে দুধ দিনের বেলা চাইতে রাতের বেলায় এক গ্লাস করে খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়। নিচে দুধের উপকারিতা কি সেগুলো বর্ণনা করা হলো-
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে- প্রতিরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি কেউ এক গ্লাস করে লো ফ্যাট দুধ খায় তাহলে শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল অনেকটাই কমে এবং শরীর সুস্থ থাকে। দুধের মধ্যে যে কোলেস্টেরল থাকে তা খারাপ কোলেস্ট্রল কমিয়ে ভালো কোলেরস্টলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। গরুর দুধ ভিটামিন এ ডি এবং ক্যালসিয়ামের সমৃদ্ধ যা আমাদের সুস্থ রাখতে অনেক সাহায্য করে থাকে।
হাড় মজবুত করা- দুধের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় মজবুত করার জন্য অনেক উপকারী। অধিকাংশ নারী বা পুরুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন রাতে একগ্লাস দুধ খেলে এ ধরনের রোগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি মিলবে। পাশাপাশি শরীরের বাতের সমস্যা ও বাসা বাঁধতে পারবেনা।
ঘুম ভালো হয়- অনেকেরই ঘুম না হওয়ার সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে এটি খুবই সহজ একটি রোগ। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ চিকিৎসকরা আগে পরামর্শ দেন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অবশ্যই এক গ্লাস গরম দুধ খেতে। দুধের বায়ো একটি ধর্ম স্ট্রেস কমিয়ে ভালো ঘুম হতে আমাদের সাহায্য করে থাকে।
ত্বক সুন্দর রাখা- অনেকেই ত্বকের ত্বকের কোমলতা বাড়াতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যজ্জ্বল যত্ন করতে দুধের সর মুখে মাখেন। দুধ খেলেও কিন্তু ত্বক ভীষণভাবে উজ্জ্বল হয় এবং ত্বক তারুণ্যে ভরপুর থাকে। কেননা দুধে ভিটামিন বি ১২ এবং ক্যালসিয়াম আছে। দুধ এর উপকারিতা অনেক।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা- শোয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। এতে করে মাঝরাতে অস্বাস্থ্যকর স্নেক্স থেকে দূরে থাকতে সুবিধা হয় এবং অতিরিক্ত স্বাস্থ্য বা ওজন বৃদ্ধি পায় না। দুধ খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
দাঁতের ক্ষয় রোধ করা- অনেকেই দাতের জন্য মুখ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং দাত ক্ষয় হতে থাকে। নিয়ম করে গরম দুধ পান করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। দুধ পানে দাঁত হবে শক্তিশালী এবং দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। দুধ এর উপকারিতা এছাড়া আরো রয়েছে।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ- রাতে ঘুমানোর আগে মিষ্টি ছাড়া এক কাপ হালকা গরম দুধ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং এরকম ভালো ফলাফল পাওয়া যায় যাদের রক্তের শর্করা উঠানামা রয়েছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে উপকার পাবেন।
শক্তি সঞ্চয় করা- রাতে এক গ্লাস হালকা গরম দুধ খেয়ে ঘুমালে পরদিন সকালে আপনার শরীরে এনার্জি ঠিক থাকবে। যেহেতু দুধের মধ্যে প্রোটিন এবং ল্যাকটিন রয়েছে তা আপনাকে সব সময় মানুষকে অবসর থেকে দূরে রাখে এবং রিলাক্স করতে সাহায্য করে। ফলে আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠবেন এবং ফ্রেশ অনুভব করবেন।
কেন দুধ পান করবেন?
দুধ পুষ্টি গুনে ভরপুর। শিশু প্রাপ্তবয়স্ক বৃদ্ধ সবারই প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত। দুধ ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের উৎস। দুধে আছে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট চর্বি ওমেগা থ্রি ওমেগা সিক্স সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দুধকে বলা হয় সুপার ফুড। এতে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন বি ১২ যা মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজন। দুধ শরীরকে কর্ম ক্ষম রাখতে ও সাহায্য করে। এছাড়া দেহের টিস্যু এবং কোষ গঠন এবং মেরামতের জন্য দুধ-দারণ উপকারী খাদ্য। তাছাড়া আমাদের দেশে গরু এবং ছাগলের দুধ সহজলভ্য। শিশুরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ পান করতে পারে এরপর মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি গরু বা ছাগলের দুধ পান করা উচিত।
গরম দুধ সুস্বাদু করার উপায়
অনেকেই সাধারণত গরু বা ছাগলের দুধ খেতে চায় না। তাই দুধকে হালকা গরম করার পরে এতে কিছু হালকা মসলা মিশালে স্বাদ আরো বৃদ্ধি পাবে এবং দুধের গন্ধ লাগবে না। গরম দুধের সঙ্গে দুই চিমটি হলুদ মেশালে হজম ভালো হয়। এতে সাধ পরিবর্তন হয়। হলুদে অনেক উপকারী এনটিঅক্সিডেন্ট হয়েছে এই উপাদানটি শরীরের প্রদাহ দূর করে থাকে।
বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি
কিছু বাচ্চাকে গরুর দুধ খাওয়ানো শুরু করার মত এমন একটা সমস্যা হয় না তবে অনেকেই গরুর দুধ খেতে চায় না। কারণ এর টেস্ট বা মায়ের দুধ থেকে ভিন্ন হয় সেজন্য যদি এমন হয় তবে শুরুতেই বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধের সঙ্গে গরুর দুধ মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
এরপর আস্তে আস্তে গরুর দুধের অনুপাত বাড়াতে থাকুন। বাচ্চার জন্য খাবার তৈরিতে গরুর দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও দুধ থেকে তৈরি বিভিন্ন খাবার দিতে পারেন। যেমন- দই , পায়েশ। যেহেতু খাওয়ার উপকারিতা অনেক তাও ধীরে ধীরে অভ্যাস করতে হবে।
দুধের অপকারিতা
দুধ খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে। যেকোনো খাবারের উপকারিতা বা অপকারিতা রয়েছে তবে ডিপেন্ড করে তা কোন ধরনের মানুষ খাবে তার ওপর। দুধের পুষ্টিগুণ খুবই বেশি অপকারিতা খুবই কম। তবে কিছু মানুষের জন্য দুধ খাওয়া কিছুটা ক্ষতিকর হতে পারে।
- দুধ পেট নরম করে যাদের লুজ মোশন এর সমস্যা রয়েছে তারা দুধ কম খেতে পারেন
- যাদের গ্যাস্ট্রিকের প্রবলেম খুব বেশি হয় তারা দুধের সাথে এক চিমটি লবন মিশিয়ে খেতে পারেন
- প্রতিদিন এক গ্লাসের দেশে দুধ খাওয়া উচিত নয় এতে করে পেটে হজমের সমস্যা হতে পারে
- বিভিন্ন ধরনের জটিল অপারেশনের পর দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার গ্রহণ করা নিষেধ থাকে
- দুই বছর পূর্বে কোন শিশুকে গরুর দুধ সরাসরি খাওয়ানো উচিত নয় এতে করে লিভারের সমস্যা হতে পারে
- যাদের শরীরে ল্যাকটিস নামক এনজাইনের অভাব আছে তাদের উচিত দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
- এছাড়া এলার্জি থাকলেও দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হতে হবে
- যাদের পাকস্থলীর আলসার টা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা তাদের খাওয়া উচিত নয়
- পেটের অপারেশন করা হয়েছে এমন ব্যক্তির দুধ খাওয়া উচিত নয়
দুধ খাওয়ার উপকারিতা
আজকে আমরা নিয়মিত দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। দুধ খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন সব আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।
আরো পড়ুন –
- মধ্যবিত্ত পরিবার নিয়ে উক্তি, বানী, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন
- প্রতারনা নিয়ে উক্তি, বেইমান বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে উক্তি
- বেইমান নারী নিয়ে উক্তি, ছলনাময়ী নারী স্ট্যাটাস