ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম, ভালো ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম

বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ক্যাপসুল পাওয়া যায় তার মধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল অন্যতম। ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুল ত্বক সহ শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা খাবার থেকেই ভিটামিন গ্রহণ করে থাকে কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনের অভাবে শরীরের বিভিন্ন অনুযায়ী বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ভিটামিন ই ক্যাপসুল নখ ত্বক চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আজকে আমরা ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম এবং ভালো ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও ই ক্যাপসুল এর দাম কার্যকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – ঈদ নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস ২০২৩, ঈদুল ফিতর শুভেচ্ছা উক্তি

ভিটামিন ই ক্যাপসুল কি?

ভিটামিন ই ক্যাপসুল হল এক ধরনের ক্যাপসুল যা ভিটামিন ই সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের ভরপুর। ভিটামিন ই একটি সাপ্লিমেন্ট যা শরীরের ভিটামিন ই এর অভাব পূরণ করে। এটি বিভিন্ন ধরনের মেডিসিনের দোকানে এভেলেবেল পাওয়া যায়। এর দাম খুব বেশি না হলেও এর কার্যকারিতা গুণ অনেক। বেশি সাধারণত চুল পড়ার জন্য অথবা রূপচর্চার জন্য এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল বেশি খাওয়া হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন – মিষ্টি প্রেমের ছন্দ, ভালোবাসার পিকচার মেসেজ

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার সময়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাত। তবে আপনি সকালবেলা ও ভিটামিন ই ক্যাপগুলো খেতে পারেন।  যদি কোন ডাক্তারের পরামর্শ নেন তখন ডাক্তারি আপনাকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল রাতে খেতে বলবে। তবে ঔষধের পাতায় লক্ষ্য করলে দেখা যায় এটি সকাল এবং রাত দুই বেলাও খাওয়া যায়।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার একদম সঠিক নিয়ম হলো খাবার ঠিক ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর খাওয়া। তবে আপনি যদি ভিটামিন এই ক্যাপসুলের কাজ পরিমিত ভাবে পেতে চান তাহলে প্রতিদিন রাতের বেলায় খাবারের ৪0 মিনিট পরেই খেতে হবে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা পেতে সঠিক নিয়ম মেনে চললে এর কার্যকারিতা খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল কোনটা ভালো?

বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। তবে যদি আপনি চুলের বা ত্বকে অসুবিধা থাকে তাহলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কমলা কালারের ক্যাপসুল টা গ্রহণ করতে পারেন। তবে স্কিনকে সতেজ রাখতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে কমলা রঙের ক্যাপসুলের পাশাপাশি সবুজ রঙের ভিটামিন ই ক্যাপ খাওয়ার অভ্যেস করুন। দীর্ঘদিন এক টানা ভিটামিন ই কাপ খাওয়ার ফলে চুলের সমস্যা দূর হয়ে যায় এবং সেই সাথে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে যায়।

আরো পড়ুন – মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর কার্যকারিতা

  • শরীরের ত্বক উজ্জ্বল রাখে
  • শরীরের ত্বক সতেজে রাখে
  • চুলের গোড়া মজবুত ও শক্ত করে
  • চুলকে ঝলমলে ও সতেজ রাখে
  • চুল পড়া বন্ধ করে
  • ত্বকের কুঁচকে যাওয়া বন্ধ হয়
  • মুখের দাগ দূর করতে সহায়তা করে
  • মুখের বয়সের ছাপ অতি দ্রুত চলে যায়
  • ভিটামিন ই ক্যাপসুল অক্সিজেন থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করা হয়
  • হার্টের রোগের জন্য খুবই কার্যকারি
  • রূপচর্চার জন্য খুবই কার্যকরী ক্যাপসুল
  • এটি অ্যান্টিঅক্সাইড অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে
  • রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে
  • অল্প বয়সে পাকা চুল রোধ সাহায্য করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • ক্ষত সারাতে সাহায্য করে

ভিটামিন ই ক্যাপসুল ডোজ

থ্যালাসেমিয়া- প্রতিদিন ৮০০ আই ইউ

সিকেল সেল অ্যানিমিয়া- প্রতিদিন ৪০০ আই ইউ

স্কিন ও চুলের জন্য- প্রতিদিন ২০০ থেকে ৪০০ আই ইউ

প্রাপ্তবয়স্কদের দীর্ঘস্থায়ী ঠান্ডার জন্য- ২০০ iu প্রতিদিন

কার্ডিও ভাস্কুলার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য- প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৮০০ আই ইউ

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সিনড্রোম এর অভাব প্রতিদিন- ২০০ থেকে ৪০০ আই ইউ

সুদের মধ্যে অভাব সিনড্রোম- প্রতিদিন 200 আই ইউ

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম

অনেকেই ভিটামিন এ ক্যাপসুল কিনতে চায় কিন্তু ভিটামিন ই ক্যাপসুলের প্রকৃত দাম সম্পর্কে ধারণা থাকে না। যে কোন দোকানে ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। প্রতিটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম ৬ টাকা। নরমাল ভিটামিন এ ক্যাপসুল এর দাম ৮ টাকা। এছাড়াও ফার্মেসিতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছে যারা ভিটামিনের ক্যাপসুল এর দাম অনেক বেশি নিয়ে থাকে।

চুলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের নিয়ম

ভিটামিন এ ক্যাপসুলের ভিতরে যে জেলি জাতীয় পদার্থ থাকে। প্রথমে ক্যাপসুলটি কেটে হাতে নিয়ে ভালো করে চুলের গোড়ায় মেসেজ করতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যে কোন নিয়মিত ব্যবহারের নারিকেল বা হেয়ার অয়েলের সাথে মিশিয়ে তা ম্যাসাজ করলে। এরপর তা ৪০ মিনিট রাখতে হবে যখন চুলের মধ্যে তা শুকিয়ে যাবে এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে চার থেকে পাঁচ মাস ব্যবহার করলেই ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

যেসব রোগের জন্য ভিটামিন ই ব্যবহার করা হয়

১। সাইমার্স ডিজিজ রোধে- কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন ই গ্রহণ করলে এল সাইমার্স ডিজিজ এর বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যদিও সমস্ত গবেষণায় তা প্রমাণিত হয়নি তবুও ভিটামিন ই আর সাইমার্চ ডিজিজকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও তা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তবে এই রোগের ঔষধের সাথে ভিটামিন-ই সাপ্লিমেন্ট নিলে রোগের বৃদ্ধির গতিকে ধির করে দেয়।

২। ক্রনিক রোগের ফলে হওয়া অ্যানিমিয়া- অনেক ডাক্তারদের মতে ভিটামিন ই erythropoietin ঔষধের গ্রহণ ক্ষমতা শরীরে রক্ত বৃদ্ধি পায়। যা শিশু বা বড়দের ভেতর লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে থাকে।

৩। বিটা থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা- এই রোগটি একটি রক্ত সম্পর্কিত রোগ। যাতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ খুবই কমে যায়। যেসব শিশুদের মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া দেখা গেছে তাদের বেশিরভাগ শিশুদেরই ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্টারি হিসেবে খেতে দেওয়া হয়ে থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খেলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৪। এক্সট্রা ভেসেশন- এন্ট্রাভেসেশন ড্রাগ লীগেজ হয়ে আশেপাশের তওগতিশুদের ছড়িয়ে পড়লে তাকে এক্সট্রা ভেসেসান বলে। ডাই মিথাইল সাফিক্স সাইড এর সাথে ভিটামিন ই দিয়ে চিকিৎসা করলে এখানে কে্মো থেরাপির ফলে তৈরি হওয়া এই এক্সট্রা ভেটেশন কে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

ভিটামিন ই জাতীয় খাবার

ভিটামিন ই হল এমন একটি ভিটামিন যা ফ্যাটি এবং দ্রবীভূত। ভিটামিন ই পাওয়া যায় এমন কয়েকটি খাবার হল-

  • ভেজিটেবল অয়েল
  • ফিস অয়েল
  • মাংস
  • ফল
  • শাকসবজি
  • পোল্ট্রি ডিম
  • শস্য দানা
  • তাজা ফলমূল
  • অলিভ
  • পেঁয়াজ
  • চিনা বাদাম
  • আখরোট
  • বাদাম
  • উদ্ভিদ তেল
  • ডিমের কুসুম
  • গম
  • সয়াবিন
  • সূর্যমুখী
  • পালং শাক
  • বাঁধাকপি
  • ব্রকলি
  • কাঁচা শালগম
  • বিভিন্ন ধরনের মরিচ
  • মটরশুঁটি
  • লেবু
  • অ্যাভোকাডো
  • ডিম
  • সালমান মাছ
  • চর্বিবিহীন মাছ
  • সূর্যমুখী ফুলের তেল
  • কেউই ফল

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ভিটামিন ই যখনি খাওয়া হয় না কেন যখন তা সাধারণ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে কোন সাইড ইফেক্ট দেখা যায় না। তবে এর পরিমাণ দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রামের নিচে হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে ভিটামিন ই এর ডোজ যত বেশি বাড়তে থাকে তত সাইড ইফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। সাধারণত মাথা ঘোরা, বমি ভাব, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, দূর্বলতা ইত্যাদি সাইড ইফেক্ট দেখা যায়।

সাবধানতা

১। গর্ভাবস্থায় প্রেগনেন্সির প্রথমা ৩ সপ্তাহে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ই গ্রহণ করা উচিত নয়। যদিও প্রেগনেন্সির শেষের দিকে এটি একদম সেইফ। যদি দৈনিক এক হাজার মিলিগ্রাম পরিমাণে গ্রহণ করা হয় তাও অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

২। ব্রেস্ট ফিডিং যেসব মেয়েরা শিশুদের স্তন দুগ্ধ পান করাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ই খাওয়া একদম নিরাপদ। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত এই ওষুধটি খাওয়া একদমই উচিত নয়।

৩। শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ই সাধারণত নিরাপদ যদি তা সঠিক পরিমাণে খাওয়া হয়। এর থেকে তিন বছরে শিশুদের ক্ষেত্রে ৩০০ আই ইউ চার থেকে আট বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে ৪৫০ আই ইউ, ৯ থেকে ১৩ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে ৯০০ আই ইউ, ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ১২০০ আইয়ু হলো সঠিক পরিমাণ।

৪। এনজিওপ্লাস্টি এর ঠিক আগে এবং পরে ভিটামিন ই এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন যেমন ভিটামিন সি ভিটা ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। তা সুস্থতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৫। ব্লিডিং ডিসঅর্ডার থাকলে। ভিটামিন ই কোন ভাবে গ্রহণ করা যাবে না।

৬। ডায়াবেটিস থাকলে এবং তার সাথে ভিটামিন ই খেলে তা হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন ৪০০ আই ইউর বেশি ভিটামিন এ খাওয়া যাবে না এবং ভিটামিন এ খেতে হলে ডা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এরপর সেবন করতে হবে।

৬। সার্জারি সময়ে আগে এবং পরে ভিটামিন এ ব্লিডিং ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই সার্জারি কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে থেকে ভিটামিন ই খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।

৭। যাদের পূর্বে স্ট্রোক হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে ৪০০ আই ইউ এর বেশি ভিটামিন ই খুব বিপদজনক হয়ে ওঠে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

৮। ভিটামিন এ প্রোটেস্ট ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে এবং যে পুরুষরা ক্যান্সারে ভুগছেন তাদের অবস্থান আরো বেশি অবনতি হতে পারে।

৯। যাদের শরীরে ভিটামিন কে খুবই কম পরিমাণে রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ই রক্ত সঠিকভাবে জমাট বাঁধায় বাধা সৃষ্টি করে থাকে।

বাজারে কয় ধরনের ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়

বাজারে সাধারণত তিন ধরনের ক্যাপসুল পাওয়া যায়-

  • ২00 iu
  • ৪00 আইইউ এবং
  • ৬০০ আই ইউ

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম

মন্তব্য

আজকে আমরা ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম ভালো ভিটামিন এ ক্যাপসুল সহ ভিটামিন এ ক্যাপসুল এর দাম বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেলটি সম্পর্কে কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – বোরহান পিক ডাউনলোড, ফেসবুক আইডি নষ্ট করার পিক

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply