কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় আজকের আর্টিকেলটি হবে সেই সম্পর্কে। পৃথিবীতে প্রায় 120 জাতের কবুতর দেখা যায় তার মধ্যে বাংলাদেশে 20 জাতের কবুতর পাওয়া যায়। এর মধ্যে গিরিবাজ কবুতর সব থেকে বেশি ডিম বাচ্চা করে থাকে। এই গিরিবাজ কবুতরের মধ্যে আবার অনেক জাত আছে এই জাত গুলো মূলত অনেক বেশি স্ট্রং হয়।
এছাড়া তারা অনেক বেশি এনার্জি ফুল হয়ে থাকে। সেজন্য তারা বেশি বেশি ডিম বাচ্চা করতে পারে। মূলত এই জাতের কবুতর তাদের বাচ্চা ছোট থাকা অবস্থায় তারা আবার ডিম দিয়ে থাকে। এরা সাধারণত বেশি উড়তে পারে তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে পুষ্টিকর খাদ্য শস্য এনে তাদের বাচ্চাদের কে খাওয়ায়। এতে করে বাচ্চা খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়। এদিকে আবার ডিম থেকে আবার বাচ্চা বের হয়। এভাবেই তারা বেশি বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে।
[irp posts=”3223″ ]
ভাল জাতের কবুতর চেনার উপায়
এখন গ্রাম এর মানুষের পাশাপাশি শহরের মানুষ তাদের বাসার ছাদে অথবা বারান্দায় কবুতর পালন করে আসছে। মূলত কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়? আমরা সবাই জানি যে জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সেই জাতের কবুতর ভাল জাতের হয়ে থাকে।কবুতর পালন যেহেতু একটি শখের পেশা অথবা কেউ ব্যবসায়িক ভাবেও কবুতর পালন করে আসছেন। কবুতর ব্যবসা করে অনেকেই মাসে 40 থেকে 50 হাজার টাকার মত ইনকাম করছেন।
তবে যারা নতুন করে কবুতর পালন করার ইচ্ছা পোষণ করছেন এবং জানতে চাচ্ছেন কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সেই সম্পর্কে। তাদেরকে অবশ্যই আগে ভাল জাতের কবুতর চেনার উপায় গুলো জানতে হবে। তা না হলে বাজার থেকে কবুতর কিনে নিয়ে এসে দেখা গেল কবুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে অথবা কবুতরের জাত মোটেও ভালো না তখন আর করার কিছু থাকবে না।
তাই কবুতর কেনার আগে অবশ্যই কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এবং ভালো কবুতরের জাত সঠিকভাবে চিনতে হবে। চলুন আমরা জেনে নেই ভাল জাতের কবুতর চেনার উপায় গুলো
- কবুতরের গায়ের পালক সাধারণত চকচকে উজ্জ্বল থাকবে
- ভালো কবুতরের চোখ উজ্জ্বল হয়
- নাক শুষ্ক থাকবে অর্থাৎ নাকে কোনরকম সর্দি থাকলে সেই কবুতর মোটেও কেনা যাবে না।
- কবুতরের ডানা যদি ঝুলে থাকে তাহলে কিনবেন না
- কবুতর গায় কোন আঘাত বা জখমের চিহ্ন থাকলে কিনবেন না
- ঠোঁটদুটো ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নেবেন
- কবুতরের পায়ের আংগুল ঠিক আছে কিনা। অর্থাৎ কবুতর হাঁটতে পারে কিনা তা যাচাই করে নিবেন।
- যেসব কবুতরের লেজ অনেক অপরিষ্কার এবং পায়ুপথে মর লেগে আছে এই ধরনের কবুতর কিনবেন না।
- যে সকল কবুতর হাঁপাতে থাকে সেসব কবুতর কিনবেন না।
- পাখি সুস্থ-সবল থাকলে বেশি নড়াচড়া করবে। যদি কবুতর একদম শান্ত হয়ে থাকে তাহলে সেই কবুতর কিনবেন না।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে ধারণা নিয়ে কবুতর কিনবেন তাহলে আশাকরি কবুতর কিনতে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না।
কবুতর পালন সঠিক পদ্ধতি
যদি আপনার কবুতর পালনের সঠিক পদ্ধতি গুলো জানা থাকে তাহলে আপনি খুব অল্প সময়ে মধ্যে কবুতর পালন করে লাভবান হতে পারবেন। তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই কবুতর পালনের সঠিক পদ্ধতি গুলো
বাসস্থান নির্বাচন
কবুতর পালনের জন্য বাসস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কেননা কবুতর যেখানে থাকবে সেখানের পরিবেশ যদি ভালো না থাকে তাহলে কবুতর বেশি দিন সুস্থ থাকতে পারবে না। বাসস্থানের ক্ষেত্রে অবশ্যই খোলামেলা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। সেটা হতে হবে অবশ্যই আপনার বাসস্থান থেকে প্রায় 50 থেকে 100 মিটার দূরে। আর কবুতরের বাসস্থান অবশ্যই মাটি থেকে 5 থেকে 6 ফিট উপরে হতে হবে।
খাঁচা তৈরির পদ্ধতি
আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে কবুতর পালন করে লাভবান চান তাহলে কবুতরের খাঁচার উপর খুব বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অনেক গুলো কবুতরের জন্য খোলামেলা এক খোপ খাঁচা তৈরি না করে বরং প্রতি জোড়ার জন্য আলাদা আলাদা করে খাঁচা তৈরি করতে পারেন। এতে করে কবুতরের রোগবালাই হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না সাথে প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
কবুতরের জন্য সুষম খাদ্য
আপনি যদি কবুতরের সুষম খাদ্য দিতে পারেন তাহলে কবুতর যেমন সুস্থ থাকবে এবং বেশি বেশি বংশ বিস্তার করবে। একটি সুস্থ কবুতরের জন্য দৈনিক 30 থেকে 50 গ্রাম খাবার লাগে। এবং পানি লাগে 60 থেকে 100 মিলি লিটার।
কবুতরের রোগ ব্যবস্থাপনা
কবুতরের সব রোগোই প্রায় সংক্রামক জনিত তাই কবুতরের রোগ ব্যবস্থাপনার উপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যদি কবুতর গুলোর মধ্যে কোন একটি কবুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে সাথে সাথে সে অসুস্থ কবুতরটিকে সেখান থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখতে হবে। কবুতরের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে তার মধ্যে বসন্ত, পরজীবী রোগ, কলেরা, আমাশয়, কৃমি রোগ ইত্যাদি।
উপরোক্ত এই সঠিক পদ্ধতি অনুসারে কবুতর পালন করলে আপনারা অবশ্যই লাভবান হতে পারবেন।
কবুতরের বাচ্চা পালার সঠিক পদ্ধতি
এমন জায়গায় কবুতর পালন করতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাওয়া যায়। ডিম থেকে যখন বাচ্চা বের হবে তখন যেন বাচ্চাটি সঠিক সূর্যের আলো পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একই খাঁচায় অধিক পরিমাণ কবুতর না রেখে শুধু একজোড়া কবুতর রাখাই উত্তম। তাহলে বাচ্চা বড় হতে কোন সমস্যা হবে না। মা কবুতর যাতে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
কোন কারনে মা কবুতর বাচ্চাকে খাওয়াতে না পারলে আপনারা হ্যান্ড ফিডিং এর মাধ্যমে খাওয়াতে পারেন।
কবুতর কত মাস বয়সে ডিম দেয়
কোন বয়সে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় অথবা ডিম দিয়ে থাকে আমাদের সেই সম্পর্কে জানার আগ্রহ সব থেকে বেশি থাকে। সাধারণত কবুতর 5 থেকে 6 মাস বয়সের মধ্যেই ডিম দিয়ে থাকে। এরপর 26 থেকে 28 দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। কবুতর সাধারণত 20 থেকে 30 বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। জংলি কবুতর পাঁচ বছর এবং গৃহপালিত কবুতর 10 থেকে 15 বছরের মতো বেঁচে থাকে।
কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়
কি খাওয়ালে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় অথবা তাড়াতাড়ি ডিম দিয়ে থাকে এই সম্পর্কে জানার আগ্রহ যারা কবুতর পালন করা নিয়ে ভাবছে। সাধারণত যখন একটি কবুতরের ডিম দেওয়ার সময় হয় তখন সেই কবুতরটির জন্য কিছু খাবারের প্রয়োজন হয়। যেগুলো খাওয়ালে কবুতর খুব সহজেই স্ট্রং ডিম দিবে।
যে খাবার গুলো দিলে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় সেই খাবার গুলো হচ্ছে
- ডিমের খোসা
- গ্রিট
- মাটি
- কয়লা
- ঘাস
কবুতরের বাচ্চার খাবার
যখন একটি কবুতরের বাচ্চা জন্মলাভ করে তখন সাত দিন পর্যন্ত বাচ্চা তার মা বাবার কাছ থাকে প্রকৃতিক উপায় খাবার গ্রহণ করে থাকে। এটাকে বলা হয় পিজিয়ন মিল্ক যা পুরুষ এবং স্ত্রী উভয়ে কবুতরের মধ্যে থাকে। পিজিয়ন মিল্ক অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার যা বাচ্চার জন্য অনেক উপকারী। এরপর যখন কবুতরের বাচ্চা আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করে তখন সে নিজে নিজেই খাবার খাওয়া শিখে যায়।
মন্তব্য
আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়। সেই সাথে ভাল জাতের কবুতর চেনার উপায়, কবুতর পালনের সঠিক পদ্ধতি এবং কবুতরের বাচ্চা পালনের সঠিক পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে এছাড়াও আরো আলোচনা করার চেষ্টা করেছি কবুতরের বাচ্চার খাবার গুলো সম্পর্কে।
আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা আপনাদের বন্ধু অথবা প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর আর্টিকেলটি সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট সেকশান এ জানাবেন খুব দ্রুত আমরা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
[irp]