বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

অনেক সময় অনাকাঙ্খিতভাবে বাচ্চা গর্ভে চলে আসে যার ফলে অনেকেই সে বাচ্চা রাখতে চায় না। অথবা বিভিন্ন কারণে গর্ভে সন্তান রাখতে চান না তখন সে সময় বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেন। তবে বাচ্চা নষ্ট করার আগে অনেকেই বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয় তা জানতে গুগলে সার্চ করে থাকেন।

আজকে আমরা বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয় এবং বাচ্চা নষ্ট করার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো। আশা করছি ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – ১ মাসের বাচ্চা নষ্ট করার উপায়

বাচ্চা নষ্ট করার পর নিজের যত্নে করণীয়

সুষম আহার গ্রহণ করা- গর্ভপাতের পরে পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়ার উপর বেশি জোর দিতে হবে। সবুজ শাকসবজি মৌসুমী ফল, আদা, রসুন তেল এবং দুধের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ সময় জাঙ্ক ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে একদমই দূরে থাকতে হবে। এমনকি এয়ারেটেড তরল পানীয় পান করা যাবে না অর্থাৎ কোন কোল্ড ড্রিংস পান করা যাবে না। কারণ এগুলো আপনার স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব বিস্তার করবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন ব্যায়াম করতে পারেন।

ভারী ওয়ার্ক আউট করা যাবে না- বাচ্চা নষ্টের পর অনেকেই জিমে যাওয়া শুরু করেন। তবে এ সময় গর্ভপাতের পর ভারী ওয়ার্ক আউট থেকে দূরে থাকতে হবে। এমনকি কাপড় কাচা, বা সংসারের ভারী কাজ করা, পানির বালতি তোলার মতো কাজ করা যাবে না। ভারী কাজ করলে শরীরের জন্য ক্ষতি হতে পারে। তাই এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ কম পক্ষে ৮ ঘন্টা করে ঘুমানো অত্যন্ত জরুরী।

গরম পানি পান করা- গর্ভপাতের পর শরীরে পানির অভাব দেখা দেয় তাই এ সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখার জন্য হালকা গরম পানি পান করতে পারেন। প্রতিদিন সুস্থ থাকতে একজন ব্যক্তিকে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হয় আর এ সময় অবশ্যই শরীরে বেশি বেশি পানির প্রয়োজন হয়।

 বিশ্রাম নেওয়া- গর্ভপাতের পর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় যে কাজটি করতে হবে তাহলে পর্যন্ত পরিমাণ বিশ্রাম নেয়া। এ সময় প্রতিদিন দৈনিক 8 ঘণ্টা করে ঘুমানো এবং দুপুরে হালকা বিশ্রাম নেয়া উচিত। এতে করে শরীরের কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তা সহজে চলে যাবে।

হট কম্প্রেশন- গর্ভপাতের পর শরীরে মোচড় দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে হট ব্যাগ ব্যথা কম করতে সাহায্য করতে পারে। সেজন্য প্রায় মাঝেমাঝে বিভিন্ন স্থানে ব্যথা দেখা দেয়। সেখানে হট কম্প্রেশন নিতে পারেন।

বডি ম্যাসাজ করা- গর্ভপাতের ব্যথা এবং কষ্ট সহ্য করার প্রশান্ত এবং অবসাদভক্ত থাকতে বডি মাসাজ করাতে পারেন। সরষে্র তেল  বা তিলের তেল দিয়ে মালিশ করালে গর্ভপাতের শরীরে ব্যথা হয় তা থেকে মুক্তি পাবেন। তাই এ ব্যথা দূর করতে বডি মাসাজ করানো উচিত।

পুনরায় গর্ভধারণে তাড়াতাড়ি না করা- গর্ভপাতের প্রশাসনিক অবধারণ করা মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনেকে বাচ্চা নষ্ট করার পর বা বাচ্চা কোন কারণে নষ্ট হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আবার ওই গর্ভধারণ করার চেষ্টা করেন। গর্ভ পাতের তিন মাসের পর গর্ভধারণের পরিকল্পনা করতে পারেন। আবার ছয় মাস গর্ভপাত হয়ে থাকলে এক বছর পর্যন্ত গর্ভধারিনের বিষয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।

আরো পড়ুন – ১ মাসের বাচ্চা নষ্ট করার উপায়

বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

গর্ভপাতের পরবর্তীতে মহিলাদের অনেকগুলো সমস্যা শরীরের লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো হল-

রক্তক্ষরণ- বাচ্চা নষ্ট করার পর মাঝে মাঝেই যোনিপথে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ সময় রক্তক্ষরণ প্রায় কয়েক দিনের মধ্যে হয়ে থাকে আবার অনেক সময় কয়েক দিন পর পর হয়ে থাকে। যদি রক্তক্ষরণে পরিমাণ খুব বেশি হয় তবে অবশ্যই একজন দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

দুর্বলতা- বাচ্চা নষ্ট করার পর বাচ্চা ডেলিভারি করার মতই কিছুটা শরীরে ধকল যায়। তাই তা দূর  না করলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া সবার শারীরিক অবস্থা একই রকম একই পর্যায়ে থাকেনা। তাই বাচ্চা নষ্ট করার পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কোমর যন্ত্রণা- প্রায় সময়ই ব্লিডিং হবার ফলে কোমরা যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে। এই যন্ত্রণা কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যাথা প্রায় একমাস এই যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এর বেশিও থাকতে পারে। তাই বাচ্চা নষ্ট করার পরবর্তী সময় আয়রন ক্যালসিয়াম ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে হবে।

কালো কালো রক্তে যাওয়া- মাঝে মাঝে কালো কালো রক্ত আসতে দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন অংশ সাথে সাথে বের না হওয়ার কারণে পরবর্তীতে এগুলো কালো রক্ত আকারে বের হয়ে আসে। ডেলিভারির সময় যেভাবে অনুগ্রহ করে অভাবস্থার ফুলসহ বের হয়ে আসে অনেক সময় তা একই সাথে আসে না।

পেটে ব্যথা- বাচ্চা নষ্ট করার পর সবচেয়ে বেশি যে যন্ত্রণা অনুভব করতে হয় তাহলেও পেটে ব্যথা। অনেকেরই লম্বা সময়ই পেটে ব্যথা থাকে তবে গর্ভপাতের পর মাঝে মাঝেও পেটে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা বিশেষ করে দেখাতে যখন হালকা রক্তক্ষরণ হয় ঠিক তখনই হয়। এজন্য পেটের মধ্যে গরম পানি শেক দেওয়া যেতে পারে। এজন্যই পিরিয়ড না হওয়াটা স্বাভাবিক।

রক্তস্বল্পতা- বাচ্চা নষ্ট করার ফলে শরীরে অনেক বেশি বিল্ডিং দেখা যায়। সাধারণত জোরপূর্বক কোনো কিছু করলে অথবা বাচ্চা নষ্ট করার ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেক বেশি ব্লেডিং হয়। তাই শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে থেমে থেমে রক্ত ক্ষরণের কারণে শরীরে অনেক সময় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে পিরিয়ড হতে দেরি হয় এবং শারীরিক দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।

গর্ভধারণের ঝুকি- বাচ্চা নষ্ট করা ঠিক পর পরই কখনো গর্ভধারণ করা উচিত নয় বা যাতে সহজে গর্ভধারণ করা না হয় সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। এতে করে পরবর্তী বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে বাচ্চা নষ্ট হওয়ার পর পূর্ণ ধারণা গর্ভধারণ করা যায় না।

মানসিক অশান্তি- গর্ভের বাচ্চা যেভাবেই হোক নষ্ট হলে মনের মধ্যে অশান্তি বিরাজ করে। তাই যেভাবেই হোক সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়া মানে মানসিকভাবে প্রচণ্ড অশান্তির সৃষ্টি হওয়া। তাই এ সময় যে কাজটি সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে তা করতে হবে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে।

শারীরিক সমস্যা- বাচ্চা নষ্ট করার ফলে শারীরিক দুর্বলতা রক্তস্বল্পতা মেজাজ খিটখিটে সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য এক্ষেত্রে মানসিক অশান্তি এবং ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করতে না পারার কারণে শারীরিক দুর্বলতা ও দেখা দিতে পারে। কিন্তু বেশি সমস্যা হলে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করে নিতে পারেন।

গর্ভপাত সম্পর্কে প্রশ্ন এবং উত্তর

গর্ভপাতের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হতে পারে?

হ্যাঁ। বাচ্চা নষ্ট হওয়ার পরই প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। চিকিৎসক সেখানে মাধ্যমে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে কোনভাবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের রক্তশূন্য দেখা দিলে মারা যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।

প্রথম বাচ্চা নষ্ট করলে কি হয়?

প্রথম বাচ্চা নষ্ট করলে পরবর্তীতে গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে বা পরবর্তী বাচ্চা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

বাচ্চা নষ্ট করার কতদিন পর পিরিয়ড হয়?

এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে শারীরিক পরিস্থিতির উপর। সাধারণত বাচ্চা নষ্ট করার কতদিন পর পিরিয়ড হবে এটা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। বাচ্চা নষ্ট করার দেড় থেকে দুই মাস পরবর্তী সময়ে সব রেগুলার হয়ে যায়।

বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

আজকে আমরা বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয় আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন সব আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।

আরো পড়ুন – 

 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply