ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম

ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম

বাংলাদেশের তুলনায় ভারতে গরুর খামার হয় বেশি। ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করে উৎপাদিত হয়। তাই বিভিন্ন জাতের উন্নত মানের গরু খুবই কম দামে কিনতে পাওয়া যায়। তাই অনেকেই খামারের জন্য অথবা গরুর মাংস বিক্রির জন্য ভারত থেকে গরু নিয়ে আসতে চান। সাধারণত ভারত থেকে গরু রপ্তানি সামইয়িক ভাবে নিষিদ্ধ কেননা বাংলাদেশের মানুষ বেশিরভাগ গরুর মাংস খাওয়ার জন্য গরু ক্রয় করে থাকে।

তাই আজকে আমরা ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – ভারত থেকে আমদানি পদ্ধতি

ভারত থেকে সহজে গরু আনার পদ্ধতি

ভারত এবং বাংলাদেশে দুটি আলাদা দেশ তাই ভারত থেকে কিছু আনতে হলে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে স্থল ও নদীপথে গরু এনে বাংলাদেশ সরকারকে শুল্ক দিয়ে দেশে ঢোকাতে হবে। দুই দেশের বর্ডারে যে কোন পন্য বা পশুর ক্লিয়ারেন্স লাগবে। সেখানে রপ্তানির ও এদেশে আমদানির অনুমতি থাকলে সে সাপেক্ষে গরু আনা যাবে।

তবে ভারতীয় সরকার জানে বাংলাদেশের আগ গরু জবাই করেন মাংস খাওয়ার জন্য তাই সে দেশে গরু রপ্তানির অনুমতি দেয় না। তবুও বাংলাদেশের প্রতিবছর মাংসের যে চাহিদা পূরণ হয় তার ৬০ ভাগ আসে ভারতীয় গরু থেকে। বৈধ উপায়ে গরু আমদানি বন্ধ তাই বিভিন্ন পদ্ধতিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু নিয়ে আসা হয় নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

দালালের মাধ্যমে ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম

বাংলাদেশের খামারিরা গরু পালানোর জন্য অথবা ঈদুল আযহা কুরবানী ঈদের সময় ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানি করে থাকে। যেহেতু ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু রপ্তানি নিষিদ্ধ তাই ভারতে বিপুল পরিমাণ খামারীরা লসের সম্মুখীন হয়। তাই তারা বিভিন্ন দালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে গরু রপ্তানি করে থাকে। বাংলাদেশিরা গরু আম্বানির জন্য খামারীদের কাছে ব্যাংক বা বিভিন্ন উপায়ে টাকা পাঠায়।

এরপর গরু কেনার পর দালালরা ভারতের বর্ডারের কিছু টাকা দিয়ে গরু বাংলাদেশের সীমান্তে নিয়ে আসে। এখানে গরু নিয়ে আসার পর বিজিবির কাছে কাছে হস্তান্তর করে। তারা কাস্টমস এর মাধ্যমে গরুগুলো নিলামে তোলে। এরপর কাস্টম নামমাত্র গরু গুলোকে নিলামে সেসব দালালদের কাছে বিক্রি করে থাকে। কেননা কাস্টমস জানে এগুলো গুলোর দাম আগে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এভাবে দালালদের মাধ্যমে প্রতিবছর ১০ থেকে ২০ লক্ষ গরু বাংলাদেশে নিয়ে আসা হচ্ছে।

আরো পড়ুন – বাংলাদেশ থেকে ভারতে কুরিয়ার করার নিয়ম

বৈধ পদ্ধতিতে ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম

তবে আমাদের সরকার ভারত থেকে বৈধ পথে গরু আমদানের উদ্যোগ নিয়েছে। অনুসন্ধান চলছে গরুর বিকল্প বাজার এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমার, নেপাল থেকে গোরু আমদানি করার জন্য ও মাংসের সরবরাহ নিশ্চিত ভোক্তাদের জন্য সহকর্ম করার চেষ্টা গ্রহণ করা হচ্ছে। ভারত সীমান্ত ৩১ দিয়ে গরু আমদানি চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে হবে এছাড়া বর্ডার হাট গুলোতে গরু বেচা বিক্রি হতে পারে কিনা সে বিষয়ে কৌশল নির্ধারণ করা হবে।

চোরাই পথ ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম

অনেক সময় গরুর খামার করতে দেশে পালিত ব্রাহমা বা অন্য জাতের ভারতীয় কর বাংলাদেশের সমুদ্রপথে অথবা বিমানকে বাংলাদেশে আসে স্থলপথে আনতে হলে চোরাই পথে বিনাশুল্কে শুধুমাত্র বিএসএফ জওয়ানবাগ বিজেপি সদস্যদের ঘুষ দিয়ে দেশে নিয়ে আনতে হয়। ভারত সরকার দুটি গরু রপ্তানি অনুমতি দেয় এবং বাংলাদেশের সেই আমদানি স্থল বন্দর বা নদী পথ দিয়ে বাংলাদেশ আনা যাবে।

এছাড়া চোরাই পথে দেশের প্রতি মাসে বহু ভারতীয় গরু বাংলাদেশে কাস্টম কেয়ারে প্রবেশ করে। এইভাবে চোরাই পথে গরু আমদানি করা যায়।

চোরাচালান পদ্ধতি

ভারতের সংবিধানে গরু রপ্তানি বাণিজ্যিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাই ভারতে ব্যাপক হারে গরু পালন হলেও বাণিজ্যিক ভাবে পরিবর্তন হয়ে আসে। গরু চোরাচালানের আরেকটি বড় কারণ হলো পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালা ছাড়া অন্যান্য রাজ্যের গরু জবাই করে নিষিদ্ধ করা আছে। কিন্তু এই নিয়মের ফলে গরু একটা সময়ে রোগা হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে যা পালনকার জন্য জটিলতা সৃষ্টি করে।

তাই অবৈধ পথে প্রতিদিন অনেক গরু আসে আমাদের দেশে আর সবথেকে বেশি আসে কোরবানি উপলক্ষে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ গরু। চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে এই গরুর চামড়ায আবার চোরাচালান হয়ে ফিরে যায় ভারতে। এর প্রধান কারণ হলো ভারত এবং বাংলাদেশের দামের পার্থক্য। কেননা ভারতের যে গরুর দাম ১০০ ডলার বাংলাদেশি তারা ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলার মূল্যে বিক্রি হয়।

ফলে গরুর চোরাচালান সবচেয়ে লাভজনক পদ্ধতি। বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত সুরক্ষিত নয় কারণ হলো চার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিশ্চিত করা সম্ভব না এর উপর আছে সীমান্ত রক্ষীদের উপরে আই। ফলে ভারতের ব্যবসায়ীদের জন্য গরু চোরাচালান এক লোভনীয় ব্যবসা।

বর্ডার হাট

এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতার আশেপাশের সীমান্তবর্তী হাতগুলোতে খুবই কম দামে গরু বিক্রি হয় যেখানে দালালরা সেসব হাট থেকে বাংলাদেশসহ সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে গরু অবৈধভাবে রপ্তানি করে থাকে। এক্ষেত্রে খামারীদের সাথে পূর্বে যোগাযোগ করে দালালরা গরু রপ্তানিতে সহায়তা করে। এবং এর জন্য বর্ডার গার্ড কেও আলাদাভাবে টাকা দিতে হয়।

আমার সাথে বর্ডার গার্ড সীমান্তরক্ষী এবং কাস্টমস জড়িত থাকে। যার ফলে খুব কম ভেগ বা সুরক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে গরু বাংলাদেশে হবে বিনা দেশের রপ্তানি করার সুযোগ দিয়ে থাকে।

ভারত থেকে গরু আমদানের ভ্যাট বা শুল্ক

যেহেতু ভারত থেকে বৈধভাবে গুরু আমদানি করা নিষিদ্ধ। তাই অফিসিয়ালি সরকার বা কাস্টমস অফিসারদের ভ্যাট বা শুল্ক দিতে হয় না। কিন্তু অবৈধ চোরাচালানের মাধ্যমে গরু দেশে প্রবেশ করানোর জন্য বিজেবি বা সীমান্তরক্ষীদের বিভিন্ন ধরনের ঘুষ প্রদান করতে হয়। এছাড়াও কাস্টমস এর কাছে চোরাচলানো সময় গরু হস্তান্তরের সময় নির্দিষ্ট কিছু পরিমাণ ভ্যাট বা নামমাত্র শুল্ক প্রধান করতে হয়।

মন্তব্য

আজকে আমরা ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি ভারত থেকে গরু আমদানি কিভাবে করতে হয় তা খুব সহজেই বুঝাতে পেরেছি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনাদের ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন। এবং আর্টিকেলটি সম্পর্কে কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই আপনাদের কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

ভারত থেকে গরু আমদানির নিয়ম

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply