উকুন মারার ওষুধের নাম
মাথায় উকুন হওয়ার যে কারো জন্যই বিরক্তিকর ও বিব্রত করে কি ব্যাপার বিশেষ করে মেয়েদের মাথায় অমর হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায় অনেক সময় প্রিয়জনের সামনে কিংবা বাহির মানুষের সামনে মাথার উকুনের জন্য কবে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয় অনেকেই বিভিন্ন শ্যাম্পু সাবান ভেষজ ঔষধ চেষ্টা করে থাকেন কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল পান্না পাঁচ থেকে সাত দিন পর মাথায় আবার উপরে পড়ে যায় তাদের জন্য আজকের ব্লগ টি খুবই উপকারী হবে
আজকে আমরা মাথার উকুন মারার ওষুধের নাম, মাথার উকুন মারার ঘরোয়া পদ্ধতি, ও মাথার উকুন দূর করার ভেষজ উপায় এই তিনটা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব। আশা করছি ব্লগ টি পড়ার পর সবচেয়ে ভালো উপায় আমি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবেন এবং মাত্র ২ দিনে মাথার উকুন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক
উকুন হওয়ার কারণ
উকুন মারার ওষুধের নাম জানার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন উকুন হওয়ার কারন কি? আমরা অনেকেই মনে করি অপরিষ্কার চলাফেরা করলে এবং মাথায় নিয়মিত পরিষ্কার না করলে কিংবা মাথায় খুশকি হলে ওখানে জন্ম হয় কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। মাথা পরিষ্কার রাখা না রাখা সাথে উকুনের জন্ম নেয়ার কোনো সম্পর্ক নেই এবং এর বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখ্যা নেই। কারো মাথায় উকুন আশায় একমাত্র উপায় হচ্ছে অন্য কারো মাথা থেকে উকুন আসা। অর্থাৎ যার মাথায় তাগে থেকে উকুন আছে তার সাথে ঘুমানো কিংবা তার মাথার সংস্পর্শে আসলে আপনার মাথায় উকুন আসতে পারে এছাড়া আপনার মাথায় উকুন জন্মদিন অন্য কোন উপায় নেই।
আমরা অনেকেই ভাবি নিয়মিত শ্যাম্পু না করলে কিংবা মাথা পরিষ্কার রাখে উপর জন্মায় কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। নিচে আমরা উকুন নিয়ে আরো বেশ কয়েকটি ভুল ধারনা নিয়ে আলোচনা করবো।
উকুন নিয়ে কিছু ভুল ধারনা
যদিও আমাদের আজকে আলোচনা উকুন মারার ওষুধের নাম নিয়ে কিন্তু আমরা এর আগে আমাদের সমাজের উকুন নিয়ে কিছু ভুল ধারণা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব। কেননা উকুন কেন হয় এবং উকুন তাড়ানোর নিয়ে সঠিক ধারনা না থাকে আমার যেকোন সময় আপনার মাথায় আবার উকুন আবার ফিরে আসতে পারে। তাই চলুন অগ্নি আমাদের সমাজের ভুল ধারণা গুলো দেখে নেয়া যাক।
মাথা পরিষ্কার রাখলে উপর জন্মায় – যেমনটা আমরা উপরে বলেছি মাথা পরিষ্কার রাখার সাথে উপরের কোন সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ আমরা অনেকেই ভাবেন মাথায় খুশকি থাকলে কিংবা মাথা নিয়মিত পরিষ্কার না থাকলে উকুন জন্ম নেয় এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারো মাথায় উকুন একমাত্র উপায় হচ্ছে যার মাথায় আগে থেকে উকুন আছে এমন ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা বা তার সাথে ঘুমানো।
পোষা প্রাণী থেকে কখন হয় – যারা বাষায় পোষা বিড়াল বা কুকুরে রাখেন তাদের অনেকেরই ভাবে পোষা বিড়াল কুকুর থেকে উকুন জন্ম নেয়। কিন্তু এই ধারনা সম্পূর্ন ভুল।
যার মাথায় উকুন আছে তার জামা কাপড় ব্যবহার করা যাবে না – অনেকেই ভাবেন যাদের মাথায় উকুন আছে তাদের ব্যবহৃত জামা কাপড় কিংবা বিছানা ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো মাথার বাইরে গুণ বেশি সময় বাঁচতে পারে না। তাই কোনো কারণে যদি সামান্য চাদরের উপর পড়ে যায় তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে উকুনটি মারা যাবে।
উকুন মারার ঔষধের নাম
উকুন কেন হয় এবং উকুন নিয়ে কিছু ভুল ধারনা উপরে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এখন আমরা আমাদের মূল আলোচনা শুরু করব তা হচ্ছে উকুন মারার ওষুধের নাম। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন রকম ঔষধ পাওয়া যায় কিন্তু বেশিরভাগ ঔষধ ই কিছু উকুন মারে কিন্তু উকুনের ডিম সম্পূর্ন ধ্বংশ করতে পারে না যার ফলে কিছুদিন পর আবার ডিম থেকে নতুন উকুন জন্ম হয়। এখন আমরা উকুন মারার ওষুধের নাম বলবো তা টানা দুইদিন ব্যবহারে আপনার মাথা থেকে উকুন সম্পূর্নভাবে শেষ করবে এমনকি উকুনের ডিম ও শেষ করে দিবে।
বাংলাদেশ – ভিন্ন দেশে ভিন্ন নামে ঔষধটি পাওয়া যায়। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে আমাদের ব্লগ টি পড়ে থাকেন তাহলে বাজারে Alice or LIcnil এই নামে ওষুধটি কিনতে পাবেন। যেকোনো ধরনের ফার্মেসি দোকানে ওষুধ টি কিনতে পাওয়া যাবে। দাম নিবে ১৩০ থেকে ১৫0 টাকা।
আমেরিকা – আপনি যদি আমেরিকা থেকে আমাদের ব্লগ পোস্ট টি পড়ে থাকেন তাহলে Sklice এই নামে ঔষধটি কিনতে পেয়ে যাবেন।
ইন্ডিয়া – আপনি যদি নিজে থেকে আমাদের পাপ পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে Iver shine lotion or Ivrea shampoo এই নামে শ্যাম্পুটি কিন্তু পেয়ে যাবেন।
এলাইস লোশন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
উপরে আমরা উকুন মারার ওষুধের নাম হিসেবে এলাইস লোশনের নাম কি বলেছিলাম। এখন আমরা দেখে নেবো এই লোশনটি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম। কেননা সঠিকভাবে লোশনটি ব্যবহার করতে না পারলে আশানুরূপ ফলাফল পাবেন না আর এতে করে ওষুধের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাই ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই নিয়মটি ভালোভাবে পড়ে নিন।
প্রথমে মাথা পরিষ্কার পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন এরপর সামান্য লোশন হাতের আঙ্গুলে নিয়ে চুলের গোড়ায় ভালভাবে লাগিয়ে দিন। এরপর আস্তে আস্তে চুলের অন্যান্য অংশে লাগান। এমন ভাবে লাগাতে হবে যেন চুলের আগা থেকে গোড়া সম্পূর্ণ অংশে লোশনটি লাগে। এতে চুলের গোড়ায় থাকুন এবং চুলে অন্যান্য অংশে থাকা উকুনের ডিম সম্পূর্ণভাবে মারা যাবে। ভালোভাবে লাগানো হলে দশ মিনিট অপেক্ষা করুন। যদি সম্ভব হয় কিছু সময় রোদে গিয়ে বসার চেষ্টা করুন এতে করে ঔষধের কার্যকারিতা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে। ১০ মিনিট পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখতে হবে চুল ধোয়ার সময় মাথায় কোন ভাবেই শ্যাম্পু বা সাবান দেয়া যাবেনা। ঠিক একই ভাবে পরেরদিনও মাথায় আবার শব্দটি ব্যবহার করুন। এভাবে টানা দুই দিন ব্যবহার করলে মাথার উকুন সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে।
বাসায় অন্য কারো মাথায় ও যদি উকুন থাকে তাহলে একই দিনে লোশনটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। অন্যথায় যার মাথায় উকুন রয়ে গেছে তার সংস্পর্শে আসলে পুনরায় আপনার মাথায় উকুন চলে আসতে পারে। তাই পরিবারের একাধিক সদস্যের মাথায় উকুন থাকলে চেষ্টা করুন একই দিনে সবাই ঔষধ দিতে। তাহলে সবার মাথা থেকে উকুন এর সম্পূর্ণ ভাবে চলে যাবে।
মাথার উকুন মারার ঘরোয়া পদ্ধতি
উপরে আমরা যে উকুন মারার ওষুধের নাম বলেছি তা সম্পূর্নভাবে কাজ করে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এবং এই ঔষধটি যুক্তরাষ্ট্রের OTC – Over the counter সার্টিফিকেট পাওয়া অর্থাৎ ব্যবহারের জন্য শতভাগ নিরাপদ। কিন্তু এরপর ও যদি কেউ ঔষধ ব্যবহার করতে না চায় সেক্ষেত্রে তাদের জন্য আমরা একটি ঘরোয়া পদ্ধতি আলোচনা করবো। তবে এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনার মাথা থেকে উকুন সম্পূর্ন ধ্বংশ হতে ১০ থেকে ১৫ দিনের মত সময় লাগবে।
প্রথমে বাজার থেকে উকুনের চিরুনি নিয়ে আসুন।উকুনের চিরুনি গুলো নরমাল চিরুনির থেকে আলাদা হয়। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ভেজান কারন ভেজা চুলে উকুন নড়াচড়া করতে পারে না।এরপর ভালোভাবে চুল আছড়ে উকুন ফেলে দিন।
কিন্তু এই পদ্ধতিতো সবার ই জানা নতুন কি? নতুন হচ্ছে, আমরা এটা একদিন করবো না। ৩ দিন পর পর এইভাবে চুল আছড়াবেন। সাধারনভাবে আপনি যখন চুল আছড়ান বড় উকুন সব পড়ে গেলেও ছোট উকুন কিংবা উকুনের ডিম গুলো থেকে যায়। তাই আপনি যদি ৩ দিনের গ্যাপ দিয়ে নিয়মিত ভেজা চুল আছড়াতে থাকেন তাহলে একসময় উকুন আর ডিম পড়ার সুযোগ পাবে না এতে করে আপনার মাথা থেকে সম্পূর্ণভাবে উকুন চলে যাবে।
এখন আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন এভাবে কতদিন চুল আছে হবে? সাধারণত ১৫ দিন এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয় অর্থাৎ তিন দিন পরপর ১৫ দিনে মোট ৫ এই পদ্ধতি ব্যবহার করবেন। আশা করি এ ১৫ পর আপনার মাথায় আর কোন উপায় থাকবেনা। তবে খেয়াল রাখতে হবে পরিবারের অন্য কারো মাথায় অনেক উকুন থাকে তাহলে একই সাথে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চুল আঁচড়াতে হবে। তাহলে পুরো পরিবারের সবার মাথা থেকে উকুন ধ্বংস হয়ে যাবে।
ভেষজ উপায়ে উকুন দূর করা
উপরে উকুন মারার ওষুধের নাম নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি কিন্তু অনেকেই ঔষধ ব্যবহার না করে ভেষজ উপায়ে উকুন মারতে চান। ইউটিউব কিংবা ব্লগ উকুন মারার ঔষধ এর নাম খুঁজলে অনেকে বিভিন্ন ভেষজ উপায়ে উকুন মারার কৌশল পেয়ে যাবেন। রসুন, আমলকি, ট্রি-টি, অলিভ অয়েল, নিমপাতা, নারকেল তেল এরকম হাজারো উপাদানের নাম পেয়ে যাবে কিন্তু এই ধরনের ভেষজ উপাদান দিয়ে উকুন ধ্বংস হয়ে এর সঠিক কোন প্রমাণ নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের ডাক্তাররা গবেষণা করে এর কোন ফলাফল পাননি। বিশেষ করে নারকেল তেল এবং রসুন এখনো বিভিন্ন দেশের উকুন মারার ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে কিন্তু সত্যি বলতে এর কোন বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র কানাডা সহ বিভিন্ন দেশে স্কিন স্পেশালিস্ট পরীক্ষা করে এর কার্যকারিতা পাননি।
তবে আপনি চাইলে নিম পাতা, নারকেল তেলের মতো উপাদানগুলো ব্যবহার করতে পারে। যদি আপনার মনে হয় কাজ হচ্ছে তাহলে ব্যবহার করুন সমস্যা নেই। তবে আমাদের সাজেশন থাকবে ভেষজ উপায় মারার চেষ্টা না করে উপরে আমরা যে ঘরোয়া পদ্ধতি বলেছে সেটা অনুসরণ করুন এবং সম্ভব হলে উকুন মারার ওষুধের নাম বলেছি সেটি ব্যবহার করুন। কারন এই ঔষধের কার্যকারিতা ১০০%
ইংলিশ উকুন নাশক শ্যাম্পু
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উকুন মারার ওষুধের নাম বলতেই আমাদের মাথায় ইংলিশ উকুন নাশক শ্যাম্পু নামের এক বিশেষ ধরনের শ্যামপুর কথা মাথায় আসে। অনেক আগে থেকে বাংলাদেশে এই শ্যাম্পু ব্যবহার হয়ে আসছে। যদিও এটি কত টা কাজ করে তা নিয়ে বরাবরই সন্দেহ ছিল। বিভিন্ন দোকানে ১০ থেকে ১৫ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়। সমস্যা হচ্ছে এটি শুধুমাত্র কিছু বড় উকুন মারতে পারে উকুনের ডিম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারে না। তাই সামরিক সময় উপরের উপদ্রব কম কমলেও সাত থেকে দশ দিন পর আবার মাথা আবার উকুনে ভরে যায়। তাই আমরা তাদের সাজেশন থাকবে ইংলিশ উকুন নাশক শ্যাম্পু ব্যবহার না করে এলাইস লোশনটি ব্যবহার করতে পারেন।
উকুন মারার চিরুনি
উপরে উকুন মারার ওষুধের নাম এর পাশাপাশি বেশ কয়েকবার উকুন মারার চিরুনি শব্দটি ব্যবহার করেছি। কিন্তু অনেকেই উকুন মারার চিরুনি কেমন তা জানেন না এর আগে কখনো দেখেননি। এটি সাধারণ জীবনের মতই তবে এর দাঁতগুলো অনেকটাই চিকন হয় এবং শক্ত হয় যাতে করে ছোট উকুন ও পড়ে যায়। বাজারে এ ধরনের ১০ থেকে ২০ টাকার মধ্যে কিনতে পাওয়া যাবে। যেকোনো কসমেটিকস দোকানে গিয়ে উকুন মারার চিরুনি দিয়ে দেবে। তবে কোয়ালিটি ভেদে দাম একটু বেশি হতে পারে। ছবিতে যেমন টা দেখতে পাচ্ছেন সাধারণত উপরে চিরুনি দেখতে এরকম হয় তবে বর্তমানে বিভিন্ন ডিজাইনের ও ভিন্ন ভিন্ন কোয়ালিটি পাওয়া যায়। যেকোনো একটি ভালো মানের নিয়ে মাথা হারালেই হবে।
উকুন মারার ওষুধের নাম
উপরে উকুন মারার ওষুধের নাম, মাত্র ২ দিনে মাথার উকুন তাড়ানোর কার্যকরী উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি এই ব্লগটি আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে এসেছে। ভালো লাগে আপনার বন্ধু’ এবং প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে পারেন যাদের মাথায় উকুনের সমস্যা আছে। আশা করছি আমাদের ব্লগে বলার নিয়ম গুলো ফলো করলে উকুন চিরদিনের জন্য বিদায় নিবে। ভালো লাগলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ুন এবং আপনার কোন অভিযোগ বা মতামত থাকলে এই পোষ্টের কমেন্টে লিখতে পারেন। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা। ধন্যবাদ