অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ 2023

অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ

বর্তমানে দেশের বাইরে ইউরোপে বিভিন্ন দেশগুলোতে পড়ালেখা করার জন্য অস্ট্রেলিইয়ায় খুবই উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যাল্যে বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থী পড়তে যাচ্ছে। আজকে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ শিক্ষা এবং অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ শিক্ষা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

বৃত্তি ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ

বৃত্তি ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাচেলার কোর্স, মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে। ব্যাচেলর পর্যায়ে বছরে ১৫ হাজার ডলার থেকে ত্রিশ হাজার ডলারের মত খরচ পড়বে এবং মাস্টার্স পর্যায়ে একজন স্টুডেন্টদের জন্য বছরে ২0 হাজার ডলার থেকে ৪০ হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এছাড়া পিএইচডি পর্যায়ে খরচ হতে পারে ২৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার ডলারের মতো।

বৃত্তিসহ অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ

বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে সরকারি বৃত্তির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি বৃদ্ধি স্টুডেন্টরা পেয়ে থাকে। এসব বৃত্তি পেলে তেমন একটা পড়ার জন্য খরচ করতে হয় না। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থাকা, খাওয়া এবং সেমিস্টার ফি, কোর্স ফি ফ্রি করা হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থী হিসেবে বিভিন্ন ধরনের অর্থ সহায়তা এবং চিকিৎসা সেবা, টিকেটের খরচ, থাকা খাওয়ার খরচ সহ বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন খাতে মাসিক টাকা দিয়ে থাকে।

জীবনযাত্রার মান এবং থাকা খাওয়ার খরচ

অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসা সেবা এবং সামাজিক নিরাপত্তা অনেক ভালো। আর ডুকেশন র‍্যাংকিং অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গ্লোবাল রেংকিং এর শীর্ষ একশোর মধ্যে রয়েছে। তবে জীবন যাত্রার মান অন্যান্য ইউরোপের দেশগুলোর মতই অনেক ব্যয়বহুল। বিশেষ করে বাসা ভাড়া এবং নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ কম বলা যাবে না কোনভাবেই। বরং অনেক বেশি খরচ করতে হয়।

প্রচুর টাকার প্রয়োজন হবে সেখানে থাকতে গেলে। এখানে প্রতি মাসে থাকা খাওয়ার জন্য প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার প্রয়োজন। মানে সহজ হিসাব বছরে ১২ মাসের জন্য একজন ছাত্রের জন্য ১৯ হাজার ৮৩০ ডলার খরচ হয়।

পড়াশোনার মান এবং পরিবেশ

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মত অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা কেন্দ্রিক। শুধু পিএসডি নয় মাস্টার্সেও শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য বিভিন্ন কাজ করতে হয়। এখানে সবার জন্য শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ অনেক বেশি। নারী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বৃত্তিসহ পড়ার সুযোগ পায়। এখানে অনেক সেমিস্টারে সমাপনী পরীক্ষা না হয়ে নানা ধরনের এসাইনমেন্ট দিয়ে মেধা যাচাই করা হয়।

শ্রেণিকক্ষে সৃজনশীলতা এবং গবেষণার দিকে আগ্রহী তোলা করে তোলা হয় এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এসাইনমেন্ট গ্রুপ ওয়ার্ক প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গবেষণা এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ায় স্কলারশিপ

অস্ট্রেলিয়া তে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচুর স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা রয়েছে যেমন- ফুল ফান্ডিং লিভিং এক্সপেন্সেস, টাইপ এন্ড স্কলার্শিপ ফুল ফান্ডিং স্কলার্শিপ, পারসিয়াল ফান্ডিং স্কলার্শিপ। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। আবার অনেক সময় অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি অনেক স্কলারশিপ দেয়।

স্কলারশিপ এর ক্ষেত্রে প্রায় সব ধরনের খরচ, আসা যাওয়ার বিমান ভাড়া, যাবতীয় পড়াশোনা খরচ, থাকা খাওয়ার খরচসহ সব খরচ সরকার বহন করে থাকে। আবার প্রতি মাসে নগদ অর্থ পাওয়া যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইটে নজর রাখতে হবে।

অস্ট্রেলিয়া পড়াশোনা করার যোগ্যতা

  • ব্যাচেলর ডিগ্রী তে ভর্তি হতে হলে সেকেন্ডারি এইচএসসি বা সম্মান পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে উত্তীর্ণ হতে হবে
  • এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রী থাকতে হবে এবং
  • পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রী থাকতে হবে
  • এক্ষেত্রে পূর্ব একাডেমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬০% নম্বরের প্রয়োজন হবে
  • অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষায় পড়াশোনা করতে গেলে জিআরজিএম মার্ক্স দরকার
  • বর্তমান কিছু বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে
  • এক্ষেত্রে আইএলটিএস টি, টোফেল যেকোনো একটি পরিমানে স্কোর বা মার্কস থাকলেই চলবে
  • আই ই এল টি এস এর ক্ষেত্রে স্কোর ৬.৫ বা ৭ এর মধ্যে হলে হয় এবং
  • এটি ৫৫ থেকে ৬০ মার্কস পেলেই হয়
  • টোফেলের ক্ষেত্রে ২৩৫ থেকে ২৪০ মার্ক্স পেলে ভালো হয়
  • অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষাবৃত্তি প্রদানকারী সংস্থা এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজ বা সামাজিক কাজ কর্মকাণ্ডগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ন মনে করে। এজন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বিভিন্ন কর্মকান্ডের চেষ্টা করতে হবে
  • সবচেয়ে ভালো হয় প্রোগ্রামিং দক্ষতা অর্জন করলে
  • তবে সিজিপিএ কম থাকলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিছু ভালো গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশনা থাকলে ভালো হয়
  • তাই স্কলারশিপ পাবার ক্ষেত্রে কাজে দিবে একটি অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তালিকাভুক্তির নিশ্চিতকরণ প্রশংসাপত্র
  • ইংরেজি ভাষার দক্ষতা

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • পূর্ববর্তী শিক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত রিকমেন্ডেশন লেটার
  • এবং এবং নিজের দক্ষতা রচনা আঁকারে উপস্থাপন
  • একটি স্টেটমেন্ট অফ পারপোস সিভি বা রিজিউম
  • ব্যাংক সলভেন্সি ডকুমেন্টস
  • পাসপোর্ট
  • হেলথ সার্টিফিকেট
  • সনাক্ত করা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
  • এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ ইত্যাদি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হতে পারে

আবেদনের সময়কাল

অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মত অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের দুটি সেশনে ভর্তি নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ায় সাধারণত ফেব্রুয়ারি এবং জুলাই মাসে সেশন গুলো শুরু হয়। মূলত আবেদনের পর উত্তীর্ণ হলে স্টুডেন্টদের কাছে অফার লেখার পাঠানো হয়। অফার লেটার পাওয়ার পর টিউশন সহ বিভিন্ন নির্দেশ পালনের মাধ্যমে কনফার্মেশন পাওয়া যায়।

মন্তব্য

আজকে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ এবং অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যে দেশের বাইরে অস্ট্রেলিয়া উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য স্টুডেন্টদের এ আর্টিকেলটি অনেক কাজে লাগবে। অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ আর্টিকেল সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply