কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম
প্রতিবছর অনেক প্রবাসী উন্নত চাকরির জন্য মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে পাড়ি জমায়। বর্তমানে কাতারে যেসব প্রবাসী ভাইরা রয়েছেন তাদের জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ হচ্ছে কাতার থেকে পোল্যান্ড কাজের ভিস নিয়ে ইউরোপে যাওয়ার ।ইউরোপের কাজের বেতন মধ্যপ্রাচ্যে তুলনায় সাধারণত বেশি হয়। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যে কাজের নিয়ম কানুন অনেক কঠিন সে তুলনায় ইউরোপে কাজের নিয়ম কানুন তুলনামূলক সহজ। এ জন্য প্রতিবছর অনেক প্রবাসী মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়।
আজকে আমরা কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম – কাতার টু পোল্যান্ড কাজের ভিসা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। কাতার থেকে পোল্যান্ড কিভাবে যাবেন, কাতার থেকে পোল্যান্ড কাজের ভিসা দাম কত, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং কাজের বেতন সম্বন্ধে পরিষ্কার একটি ধারণা পাবেন আশা করি।
পোল্যান্ড কাজের ভিসা
কাতার থেকে সাধারণত কোন ভিসা এজেন্সি মাধ্যমে পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত ভিসা প্রসেসিং হতে 40 থেকে 50 দিন সময় লাগে। কাতার থেকে পোল্যান্ড কাজের ভিসা আবেদন করার সময় আপনার আকামার মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে। এরপর পোল্যান্ড গিয়ে এক মাসের একটি ভাষার ট্রেনিং কোর্স করতে হবে এবং এরপর থেকে আপনি কোম্পানিতে চাকরির জন্য জয়েন করতে পারবেন।
সাধারণত যেভাবে প্রবাসী ভাইয়েরা কাতারে কম বেতন পান তারা তুলনামূলক ভালো বেতন পাওয়ার আশায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে মালটা এবং পোল্যান্ডে পাড়ি জমান। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে কেননা কাতারে বেশিরভাগ ভিসা এজেন্সি ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে টাকা খেয়ে নেয় তাই আপনি কোন পেশায় এজেন্সিকে টাকা দিয়েছেন সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কাতার থেকে পোল্যান্ড কিভাবে যাবেন
উপরে আমরা পোল্যান্ড কাজের ভিসা সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা নেয়ার চেষ্টা করেছি এখন আমরা দেখব কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম।
- কাতার থেকে পোল্যান্ড কাজের ভিসা আবেদনের সময় কাতার আকামার মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে।
- আপনার পাসপোর্ট এর 48 পৃষ্ঠার সম্পূর্ণ স্ক্যান করে দিতে হবে
- রঙিন ছবি লাগবে
- তোমাদের যেখানেই কাজ করেন সেই কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র লাগবে
- কাতারে পুলিশ ভেরিফিকেশন করা লাগবে। এক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের সমস্যা হলে কাতারের স্থানীয় কোনো নাগরিকের সহযোগিতা নিতে পারেন।
- বাংলাদেশ আপনার নামে মামলা আছে কিনা তা যাচাই করা হবে
কাতার টু পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ
সাধারণত কাতারের দোহা থেকে পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা গুলো অ্যাপ্রভাল করা হয়। সম্পূর্ণ ভিসা প্রসেসিং এ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ লক্ষ টাকার মতো প্রয়োজন হয়। কাতারের দোহায় অসংখ্য ভিসা এজেন্সি আছে যারা আপনাকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর জন্য সহযোগিতা করবে। তবে এর মধ্যে কিছু এজেন্সি আছে যারা ভিসা দেয়ার নাম করে টাকা খেয়ে নেয়।
তাই চেষ্টা করুন ইতোপূর্বে কাতার থেকে পোল্যান্ড গিয়েছে এমন কারো সাথে যোগাযোগ করতে এবং তার মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করতে। যেহেতু মধ্যপ্রাচ্যে তুলনায় ইউরোপে কাজের নীতিমালার সহজ, বেতন ভালো এবং ওভারটাইম করার সুযোগ থাকে বর্তমানে প্রচুর প্রবাসী কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এই সুযোগে কিছু অসাধু এজেন্সি ভিসা দেয়ার কথা বলে টাকা খেয়ে নেয়।
পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
পোল্যান্ডের সাধারণত সিরামিক ও বেকারি ইন্ডাস্ট্রি অনেক উন্নত। কাতার থেকে যারা পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যান তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন ফাস্ট ফুড ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। এছাড়াও অটোমোবাইল মেশিনারি, কনস্ট্রাকশন, আবাসিক হোটেল ওরে স্টুডেন্ট ভিসায় প্রচুর কাজে রয়েছে। নিচে তালিকা আকারে দেয়া হলো পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি
- ফাস্ট ফুড ফ্যাক্টরি
- অটোমোবাইল এন্ড মেশিনারী
- কনস্ট্রাকশন
- আবাসিক হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট
- এসি ফ্রিজ সার্ভিসিং
- ড্রাইভিং
কাতার টু পোল্যান্ড কাজের ভিসা বেতন
উপরে আমরা কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করেছি। কাতার টু পোল্যান্ড কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাদের বেশিরভাগই যে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত তা হচ্ছে পোল্যান্ডে কাজের বেতন কেমন। যেমনটা আমরা করেছি ইউরোপে সাধারণ কাঁচের ভেতর তুলনামূলক বেশি হয় তবে কাজের ভেতরে কিছুটা নির্ভর করবে আপনার ভিসা ধরন ও কিরকম কাজ করছেন তার ওপর।
সাধারণ ৮ ঘন্টা ডিউটির চাকরিগুলোতে বেতন ৬০০ ইউরো থেকে শুরু হয় যা বাংলাদেশী টাকায় ৫০ হাজার টাকার মতো। তবে ইউরোপে কাজ করা সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি ওভারটাইম করতে পারবেন। তাই বেতনের বাইরে মাস শেষে খুব ভালো একটি অ্যামাউন্ট অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ রয়েছে।
পোল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম
আমরা কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করেছি এখন আমরা জানবো পোল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম নিয়ম। ইতোপূর্বে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া তুলনামুলক সহজ ছিল তবে বর্তমানে ইউরোপের নাগরিকত্ব পাওয়া আগের চেয়ে অনেক কঠিন হয়ে গেছে। প্রবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব পেতে হলে কিছু কঠিন শর্ত পূরণ করতে হয় এর মধ্যে একটি হচ্ছে আপনাকে কমপক্ষে আট বছর সে দেশে থাকতে হবে।
হঠাৎ কমপক্ষে আট বছর বলে না থাকার পর আপনি সে দেশে নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এরপর পুলিশ আপনার সব কাগজপত্র যাচাই করবেন এবং আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করে যদি সব ঠিক থাকে তাহলে সহজে নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুন – কুয়েত খাদেম ভিসা বেতন কত – খাদেম ভিসা আবেদনের নিয়ম ও খরচ
কাতার থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম
উপরে আমরা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি প্রাপ্তি আপনাদের উপকারে এসেছে। যেমনটা আমরা এত করে বলেছি মধ্যপ্রাচ্যের তুলনায় ইউরোপে কাজের বেতন বেশি দায়ী থাকে তাহলে অবশ্যই ইউরোপের একটি দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করতে পারেন। ভালো লাগলে পেজটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোস্ট পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ
আরো পড়ুন – কুয়েত আজাদী ভিসা খরচ কত। কুয়েত আজাদ ভিসা বেতন ও সুবিধা অসুবিধা