মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়
মাসিক বন্ধ হওয়ার ৩৫-৪০ দিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করালে বাচ্চা কনসিভ করছেন কি না তা সঠিকভাবে বুঝা যায়। অনেকে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর ধরে নেন যখন বাচ্চা কনসিভ হয়েছে কিন্তু শুধুমাত্র প্রেগনেন্সির কারণে মাসিক বন্ধ হয় না আরো অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। তাই শুধুমাত্র মাশিক বন্ধ হলেই আশাবাদী বা হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
সাধারণত মহিলাদের মাসিক বন্ধ হওয়ার ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে টেস্ট করালে বাচ্চা কনসিভ হয়েছে কিনা তা সঠিকভাবে বোঝা যায়। সাধারণত মহিলাদের প্রেগনেন্সি অবস্থায় ইউরিনে HCG নামের এক বিশেষ ধরনের হরমোন উপস্থিত থাকে। প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর কিট ব্যবহার করে খুব সহজেই ইউরিনে HCG হরমোনের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা যায় বাচ্চা কনসিভ হয়েছে কিনা।
অনেক সময় জন্মনিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার পরেও বাচ্চা কনসিভ হয়ে যেতে পারে। তাই মাসিক মিস হলে রিস্ক না নিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন।
আজকে আমরা মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার চেষ্টা করবো।
কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়
সাধারনত ডাক্তাররা সাজেশন দিয়ে থাকেন মাসিক বন্ধ হওয়ার ৩৫-৪০ দিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করালে নিখুঁত রিপোর্ট আসে। তবে এর আগে করালেও সমস্যা নেই। কোন মহিলা বাচ্চা কনসিভ করলে ইউরিনে HCG নামের এক বিশেষ ধরনের হরমোন তৈরি হয়। প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট দিয়ে ইউরিনে HCG হরমোনের উপস্থিতি আছে কিনা তা চেক করে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয়।
মাসিক বন্ধ হওয়ার ৩৫-৪০ দিনের পূর্বে প্রেগনেন্সি টেস্ট করালে অনেক সময় HCG হরমোন সঠিকভাবে ডিটেক্ট করে সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তাই ডাক্তাররা সাজেশন দিয়ে থাকেন সর্বশেষ মাসিক এর ৪০ দিন পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো উচিত।
বাচ্চা কনসিভ করার লক্ষণ
বেশিরভাগ বিবাহিত মহিলারা মাসিক বন্ধ হওয়াকে বাচ্চা কনসিভ করার লক্ষন মনে করে থাকেন। বেশিরভাগ মহিলার ক্ষেত্রে এটি সঠিক তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শারিরীক বিভিন্ন ঝটিলতার কারনেও মাসিক বন্ধ হতে পারে। তাই শুধুমাত্র মাসিক বন্ধ কে বাচ্চা কনসিভ করার লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। এই পর্যায়ে আমরা বাচ্চা কনসিভ করার প্রধান কয়েকটি লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করব
- বমি হওয়া (বাচ্চা কনসিভ করার ৪-৬ মাসের মধ্যেই বমি হতে দেখা যায়)
- ব্রেস্ট ভারি মনে হওয়া
- ক্লান্তি অনুভব হওয়া
- ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ
- ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং
- তল পেট কিছুটা ভারি ফিল হওয়া
- দ্রুত মুড সুইং হওয়া ও মেঝাজ খিটখিটে হওয়া
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধী
- মাথা ব্যথা ও মাথা যন্ত্রনা
- খাবারের রুচি কমে যাওয়া
- বার বার টয়লেটে যাওয়া
এর বাইরে ও ব্যক্তি বিশেষে বাচ্চা কনসিভ করার লক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। শরীরের যে কোন অস্বাভাবিক পরিবর্তনে ভীত না হয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কত দিন পর প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করা উচিত
মাসিক বন্ধ হওয়ার ৩৫ – ৪০ দিন পর প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করা উচিত। তবে এর আগে বা পরে করালেও সমস্যা নেই। তবে ১০০% নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাধারণত ৪০ দিন পর প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তাররা সাজেশন দিয়ে থাকেন। কেননা কোন মহিলা যখন প্রেগন্যান্ট হয় তখন ইউরিন এ HCG নামের এক বিশেষ ধরনের হরমোন দেখা যায়।
মাসিক বন্ধ হওয়ার ৪০ দিন পূর্ন না হলে HCG হরমোনের উপস্থিতি সঠিকভাবে পরীক্ষা করা যায় না। তাই নিশ্চিত হতে হলে ৪০ দিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো উচিত। তাহলে ভুল রিপোর্ট আসার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়
সাধারনত ৩০ – ৪০ দিন পর থেকেই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়। এই সময়ে পর্যায়ক্রমে শরীরে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন দেখা যায়। ব্যক্তি বিশেষে এই লক্ষণগুলো বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণ রয়েছে যা বেশিরভাগ না এক্ষেত্রে সমান। যেমন
স্তনযুগল ভারি হওয়া – সাধারণত বাচ্চা কনসিভ করার ৩০- ৪০ দিনের মধ্যেই স্তন যুগল ভারি ও ব্যথা করতে থাকে আর এটা বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে ই একই। তবে কিছু কিছু না এর ক্ষেত্রে এই লক্ষণ ৩০ দিনের আগেই দেখা যায়। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এটি ২ মাস পরে পরিলক্ষিত হয়।
বমি বমি ভাব – সাধারনত বাচ্চা কনসিভ করার ৩ মাস পর থেকে শরীর ক্লান্তি ও বমি বমি ভাব লক্ষ্য করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাচ্চা কনসিভ করার তিন মাস পূর্বেই এই লক্ষন গুলো দেখা যায়।
এছাড়াও শারীরিক নানা পরিবর্তনের পাশাপাশি আরো কিছু বিষয় লক্ষ করা যায়। যেমন
- ক্লান্তি অনুভব হওয়া
- ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ
- ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং
- তল পেট কিছুটা ভারি ফিল হওয়া
- দ্রুত মুড সুইং হওয়া ও মেঝাজ খিটখিটে হওয়া
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধী
- মাথা ব্যথা ও মাথা যন্ত্রনা
- খাবারের রুচি কমে যাওয়া
- বার বার টয়লেটে যাওয়া
পেগনেন্ট টেস্ট কিভাবে করে
সাধারণত বাজারে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কিট পাওয়া যায়। এটি সবচেয়ে সহজ এবং প্রচলিত প্রেগনেন্সি টেস্ট করার মাধ্যম। বাজারে যেকোনো মেডিকেল শপে গিয়ে এই কিট কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত বাচ্চা কনসিভ করার পর ইউরিনে beta HCG নামের বিশেষ এক ধরনের হরমোনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ইউরিনে HCG হরমোন আছে কিনা তা চেক করে খুব সহজেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়.
টেস্ট করার জন্য সাধারণত সকালবেলাযর ইউরিন এর কয়েক ফোটা কিটে দিয়ে টেস্ট করা হয়। তবে দিনের অন্য যেকোন সময়ের দিয়ে টেস্ট করলেও হবে। এছাড়াও সবগুলো কিটে ব্যবহারের নিয়ম বিস্তারিত দেয়া থাকে যা খুবই সহজ।
মন্তব্য
আজকে আমরা মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এই ব্যাপারে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ
আরো পড়ুন –
- বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার
- নারীদের জরায়ু ইনফেকশন কেন হয়
- গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকার দোয়া
- গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়