গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়
গর্ভবতী অবস্থায় সময়ের সাথে সাথে মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন রকম পরিবর্তন দেখা যায়। গর্ভাবস্থায় যে সমস্যাগুলো সবচেয়ে বেশি একজন গর্ভবতী মায়েদের কষ্ট দেয় তার মধ্যে একটি হচ্ছে বমি বমি ভাব। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলা বমি বমি ভাব একটু সমস্যা দেখা দেয় এটাকে মেডিকেলের ভাষায় মর্নিং সিকনেস চলো আজকে আমরা জানবো মর্নিং সিকনেস সকালে বমি বমি ভাব এর মূল কারণ কি এদিকে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ভালো নাকি খারাপ এবং এর সমাধান চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যায়।
স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার ইসলামিক উপায়
মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব কি?
মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব গর্ভবতী মায়েদের একটি প্রধান ও প্রাথমিক লক্ষন। অর্থাৎ একজন নারী গর্ভবতী হওয়ার প্রথম লক্ষণ প্রকাশ পায় তা হল বমি বমি ভাব আর এটি শুরু হয়ে মূল গর্ভবতী হওয়ার প্রথম কয়েক সপ্তাহ পরে। আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব এটা কোন রোগ বা সমস্যা নয় একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় 85 পার্সেন্টের বেশি গর্ভবতী মায়েদের এই সমস্যাটি করে থাকে। তাই আপনার যদি বমি ভাব হয়ে থাকে তাহলে ঘাবড়ে না গিয়ে নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হোন কারন এটি খুব নরমাল একটা ব্যাপার।
ব্রেস্ট টিউমার কী, ব্রেস্ট টিউমারের লক্ষণ, চেনার উপায় ও করনীয়
গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়
এখন আমরা জানবো গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয় হয়। সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার চতুর্থ সপ্তাহ থেকে বমি হওয়া শুরু হয়ে গেল নাকি ষষ্ঠ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে তবে অর্থাৎ প্রথম ট্রাইমেস্টারে এই সমস্যা প্রবল থাকে। ব্যক্তি বিশেষে এই সমস্যা কম বেশি হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে চতুর্থ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত এই সমস্যাটি হয়ে থাকে।
তবে যদি আপনার বোমির সমস্যা প্রবল আকার ধারণ করে তাহলে আপনার হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম এই রোগটি হয়েছে। চলুন তাহলে এই রোগটি সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক
হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম কি?
গর্ভবতী নারিদের চতুর্থ সপ্তাহ থেকে সাধারনত বমি বমি ভাবের সমস্যা টি শুরু হয়। দিনে একবার বা দুইবার বমি হওয়া খুবই সাধারন একটি ব্যাপার কিন্তু বমির পরিমান যদি এর চেয়ে বেড়ে যায় তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিৎ। কারন দিতে চারবার বা তার বেশি বমি হওয়া হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম রোগের লক্ষন। আপনার হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম হয়েছে কি না তা নিজে নিজে যাছাই করতে চাইলে কিছু উপসর্গ আছে। অর্থাৎ অধিক বমির সাথে এই উপসর্গ গুলো থাকলে আপনার দ্রুত ডাক্তার দেখানো উতিচ। উপসর্গ গুলো হলো
- খাবার রুচি মারাত্মকভাবে কমে যাওয়া
- গলা ও মুখ শুকিয়া যাওয়া
- পানির পিপাসা লাগা
- ওজন কমে যাওয়া
- তল পেটের বা পাশে ব্যথা করা
গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার মূল কারনগুলো কি
যেমনটা আমরা ইতপূর্বে বলেছি, গর্ভাবস্থায় বমি হওয়া খুবই সাধারন ও স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া তাই আপনাকে এই নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। তবে কিছু কিছু ব্যাপার এই বমি বমি ভাবের উপর প্রভাব ফেলে। চলুন তাহলে এক নজরে দেখে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার মূল কারন গুলো কি কি
- অপুষ্টিজনিত সমস্যা: গর্ভবতী মায়েদের বমির সমস্যা হওয়ার মূল কারনগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আপুষ্টিজনিত সমস্যা। একজন নারীর গর্ভাবস্থায় অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি পরিমান পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে। গর্ভাবস্থায় সঠিক ও পরিমান মত পুষ্টি না পেলে বমির সমস্যা প্রবল হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় অত্যাধিক ভাজাপোড়া খাবার বা তৈলাক্ত খাবার খেলে বমির সমস্যা প্রবল হতে পারে।
- জিনগত সমস্যা: যদি আপনার বংশের পূর্বে কারো এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনার ও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- কারো যদি মোলার প্রেগনেন্সি হয়ে থাকে তাহলে তার গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা প্রবল হতে পারে।
- কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে গর্ভে যদি মেয়ে সন্তান বা কন্যা সন্তান থাকে তাহলে নাকি মর্নিং সিকনেস বা বমির সমস্যা হয়ে থাকে।
- গর্ভাবস্থায় ওজন বেশি হলে মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাবের সমস্যা হয়ে থাকে।
গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর্যন্ত বমি হয়
গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয় এবং বমি হওয়ার মূল কারন গুলো কি কি। এখন আমরা জানবো গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর পর্যন্ত বমি ভাব থাকে। সাধারনত চতুর্থ সপ্তাহ থেকে বমি হওয়া শুরু হয় এবং এটি ২০ তম সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। তবে যেমনটা আমরা বলেছি কিছু কিছু মায়েদের এটি ডেলিভারির আগে পর্যন্ত ও হতে পারে। দিনে এওবার বা দুইবার বমি হুয়া বা বমির ভাব হওয়া কোন সমস্যার কিছু না।
চুল পড়া বন্ধের কার্যকরী পদ্ধতি। চুল পড়া কমানো শতভাগ কার্যকরী উপায়।
গর্ভাবস্থায় অত্যাধিক বমি হলে করনীয়
গর্ভাবস্থায় দিনে একবার বা দুইবার বমি হওয়া খুবই সাধারন একটি ব্যাপার। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকের এই সমস্যা টি অনেক বেশি হয়। এখন আমরা আপনাদের এমন কিছু টিপস বলে দিবো যা ফলো করলে গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা কিছুটা নয়ন্ত্রনে আসবে আশা করা যায়।
- একবারে বেশ না খাওয়া: গর্ভাবস্থায় একবারে বেশি না খেয়ে চেষ্টা করতে হবে দুই এক ঘন্টা পর পর অল্প অল্প করে খাবার গ্রহন করা। একবারে বেশি খাবার খেলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- বেশি পরিমান সবুজ শাক ও ভিটামিন সি জাতিয় ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- আপনার ঘরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন ও ধুলাবালি থেকে বেচে থাকুন।
- বেশি পরিমানে পরিষ্কার পানি পান করুন।
গর্ভাবস্থায় বমি হলে কি বাচ্চার ক্ষতি হয়?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে গর্ভাবস্থায় বমি হলে কি বাচ্চার কোন ক্ষতি হয় কি না। উত্তর হচ্ছে ‘না’। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বাচ্চার কোন ক্ষতি করে না বরং কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মরে গর্ভাবস্থায় নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বমি হওয়া বাচ্চার জন্য ভালো। তাই গর্ভাবস্থায় বমি হলে ঘাবড়ে যাবেন না। এটি খুবই স্বাভাবিক ও সাধারন একটি পক্রিয়া।
শেষকথা: গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়
উপরের আলোচনা থেকে গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয় এই ব্যাপারে একটা বিস্তারিত ধারনা দিতে পেরেছি আশা করি। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের নিজের শরীর ও স্বাস্থের প্রতি সর্বোচ্চ নজর দিতে হবে। কারন আপনার উপর ই নির্ভর করছে আপনার বাচ্চা কেমন হবে। তাই আপনার স্বাস্থ্য ও খাবারের দিকে বিশেষ নজর দেয়ার জন্য বিশেষভাবে বলা হচ্ছে। আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ