পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম
পলিটেকনিকে আবেদন প্রক্রিয়া 13 ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গেছে। যারা পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। পলিটেকনিকে পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম এখন খুব সহজ ব্যাপার কেননা পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম প্রক্রিয়া এখন সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। অর্থাৎ অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি পলিটেকনিকে আবেদন করা যায়।
আবেদন করার ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের http://www.bteb.gov.bd/ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সরাসরি সেখান থেকে আবেদন করে নিতে হবে। আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল ব্যাংকিং এর প্রয়োজন হবে। বিকাশ রকেট শিওর ক্যাশের মাধ্যমে আবেদন ফি জমা দেওয়া যায়। পলিটেকনিকে আবেদন করতে 160 টাকা আবেদন ফি জমা দিতে হবে। আপনার পছন্দের যে কোনো 15 টি ট্রেডে আবেদন করতে পারবেন।
যারা পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী আশাকরি মোটামুটি একটি ধারণা পেয়েছেন। চলুন এবার জেনে আসি পলিটেকনিকে আবেদনের পর্যায়গুলো সম্পর্কে
পলিটেকনিকে আবেদনের পর্যায়
পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম কানুন ভালোভাবে জানলে আপনি খুব সহজে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। পলিটেকনিকে আবেদনের তিনটি পর্যায় আছে।সাধারণত সরকারি পলিটেকনিক গুলো তিনটি পর্যায়ে তাদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন।
প্রথম পর্যায়ের আবেদন-প্রক্রিয়া অলরেডী শুরু হয়ে গেছে
প্রথম পর্যায়
আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর তারিখঃ 13 ডিসেম্বর 2022 আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আবেদন প্রক্রিয়া শেষ তারিখঃ 27 ডিসেম্বর 2022 আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হবে।
ফলাফলঃ 1 জনুয়ারি 2023 ফলাফল প্রকাশ হবে।
নিশ্চায়নের সময়সীমাঃ 2 জানুয়ারি থেকে 5 জানুয়ারি 2023।
দ্বিতীয় পর্যায়
আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর তারিখঃ 6 জানুয়ারি 2023 আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া শেষ তারিখঃ 7-1-2023 আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হবে।
ফলাফলঃ 11 জনুয়ারি 2023 ফলাফল প্রকাশ হবে।
নিশ্চায়নের সময়সীমাঃ 12 জানুয়ারি থেকে 14 জানুয়ারি 2023।
তৃতীয় পর্যায়
আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর তারিখঃ 15 জানুয়ারি 2023 আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া শেষ তারিখঃ 16 জনুয়ারি 2023 আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হবে।
ফলাফলঃ 21 জনুয়ারি 2023 ফলাফল প্রকাশ হবে।
নিশ্চায়নের সময়সীমাঃ 22 জানুয়ারি থেকে 23 জানুয়ারি 2023।
পলিটেকনিক ভর্তির যোগ্যতা
পলিটেকনিকে যে ভর্তি হতে চাইবে তাকে অবশ্যই এসএসসি পাস হতে হবে। এসএসসি পাস কৃত শিক্ষার্থীরাই পলিটেকনিকে আবেদন করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থীর পলিটেকনিকে আবেদন করতে নূন্যতম যোগ্যতা লাগবে ছেলেদের জন্য এসএসসিতে জিপিএ 3.00 এবং মেয়েদের জন্য 2.50 থাকতে হবে। এবং ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য সাধারণ গণিত অথবা উচ্চতর গণিতে 3.00 থাকতে হবে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে 2.00 থাকতে হবে।
উপরোক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা পলিটেকনিকে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে অথবা আবেদন করতে পারবে।
পলিটেকনিকে কোটা ব্যবস্থা
পলিটেকনিকে কোটা ব্যবস্থা চালু আছে। মহিলাদের জন্য 20 শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে যাকে মহিলা কোটা বলা হয়। এসএসসি ভোকেশনাল এর ক্ষেত্রে 15 % কোটা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য 5% কোটা নির্ধারণ করা আছে। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কর্মরত কর্মচারীদের সন্তানের জন্য 2% কোটা ব্যবস্থা আছে এবং বিভিন্ন পলিটেকনিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য 6 টি আসন বরাদ্দ আছে।
সরকারি পলিটেকনিক পড়তে কত পয়েন্ট লাগে
আপনারা যারা সরকারি পলিটেকনিকেল পড়তে চান তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হচ্ছে সরকারিতে চান্স পেতে হলে কত পয়েন্ট লাগে। সাধারণত সরকারি পলিটেকনিক গুলো যোগ্যতা অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের এসএসসিতে পাসের পয়েন্ট কত হলে আবেদন করতে পারবে তা আগে থেকেই বলে থাকেন। একজন শিক্ষার্থীর সরকারি পলিটেকনিকে আবেদনের নূন্যতম যোগ্যতা লাগবে ছেলেদের জন্য এসএসসি/দাখিল/এসএসসি (ভোকেশনাল) এ জিপিএ 3.00 পয়েন্ট এবং মেয়েদের জন্য 2.50 থাকলেই সে আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়াও ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য সাধারণ গণিত অথবা উচ্চতর গণিতের 3.00 থাকতে হবে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে 2.00 থাকলে আবেদন করতে পারবে।
পলিটেকনিক ভর্তির জন্য কি কি প্রয়োজন
আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আপনি যখন পলিটেকনিকে ভর্তির জন্য যাবেন। তখন পলিটেকনিক ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট অথবা কাগজপত্র জমা দিতে হয়। সেগুলো হচ্ছে
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং সদ্য তোলা স্ট্যাম্প সাইজের ছবি।
- এসএসসির মার্কশিটের ফটোকপি।
- আপনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেছেন সেই প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া প্রশংসা পত্রের ফটোকপি ।
- চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিক সনদ পত্রের ফটোকপি।
- এসএসসি এডমিট কার্ড অথবা রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি।
এছাড়া আরো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগতে পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কলেজের নোটিশবোর্ড থেকে জেনে নেবেন।
পলিটেকনিক এর মান
পলিটেকনিক এর মান এইচএসসি সমমান। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ডিপ্লোমা 4 বছর মেয়াদী কোর্স কমপ্লিট করতে হয় অপরদিকে এইচএসসি দুই বছরের মধ্যে কমপ্লিট করা যায়। সে ক্ষেত্রে চার বছর মেয়াদি পলিটেকনিকের চেয়ে দুই বছর মেয়াদী এইচএসসি করা ভালো। কিন্তু এখানে একটা ব্যাপার আছে সেটা হচ্ছে আপনি যদি চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স কমপ্লিট করতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন।
কেননা ডিপ্লোমা কোর্স করে খুব সহজে চাকরি পাওয়া যায়। অপরদিকে এইচএসসি করে আপনি সহজেই চাকরি পাবেননা। এই দিক থেকে বলা যায় এইচএসসি থেকে পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা করার মান তুলনামূলক ভালো।
আরো পড়ুন – কলেজে ভর্তি হতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে
পলিটেকনিক পাশ করে কি চাকরি হয়
Polytechnic থেকে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স কমপ্লিট করে আপনি খুব সহজেই চাকরি করতে পারবেন। কেননা অনেক কোম্পানি চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা পাস কৃত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কে চাকরির জন্য সুযোগ দিয়ে থাকে। এছাড়াও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা অনেক সুযোগ পেয়ে থাকে।
চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স কমপ্লিট করা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সরকারি অনেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। সেখান থেকে আবেদন করে চাকরির পরীক্ষায় দিয়ে খুব সহজে চাকরি ম্যানেজ করা যায়। যা কম বয়সের মধ্যে কেরিয়ার
পলিটেকনিকে পড়তে খরচ কেমন
পলিটেকনিক পড়তে যারা ইচ্ছুক তাদের মনে প্রশ্ন জাগে পলিটেকনিক পড়তে খরচ কি রকম হয়। যারা সরকারি পলিটেকনিকে চান্স পায় তাদের জন্য অনেক সুবিধা। কেননা সরকারি পলিটেকনিকে পড়াশোনার খরচ অনেক কম প্রতি সেমিস্টারে সেমিস্টার সেশনাল ফি 950 টাকা এবং রেজিস্ট্রেশন ফি 1050 টাকা। সাধারণত সরকারি পলিটেকনিক গুলোতে ছয় মাসে একটি সেমিস্টার সম্পন্ন হয়। প্রতি সেমিস্টারে মোটামুটি 2000 টাকা হলেই সেমিস্টার কমপ্লিট করা সম্ভব।
আবার সরকারি পলিটেকনিক গুলোতে ভালো স্টুডেন্টদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা আছে এছাড়াও স্টেপ বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। এইসব হিসেব করলে মোটামুটি বলা চলে পলিটেকনিকে পড়ার খরচ নেই বললেই চলে।
মন্তব্য
আজকে আমরা পলিটেকনিকে আবেদনের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আজকের আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু অথবা প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা খুব দ্রুত আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরো পড়ুন – ঢাকার সেরা সরকারি কলেজের তালিকা ২০২২