পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
শুধুমাত্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিদর্শন নয় পদ্মা সেতু বাংলাদেশের একটি অহংকারের নাম। এই সেতুটি পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত বলে এর নাম পদ্মা সেতু হয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূল্য কার্যক্রম গুলোর মধ্যে পদ্মা সেতু অন্যতম। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অথবা অনেকে পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ও বিস্তারিত তথ্য জানতে চায়।
আজকে আমরা তাদের জন্যই পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ও পদ্মা সেতুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।
আরো পড়ুন – সৌদি আরবের কোম্পানি নাম ও তালিকা ২০২৩
পদ্মা সেতু/PADMA BRIDGE- পদ্মা সেতুর সরকারি নাম হল পদ্মা বহুমুখী সেতু। পদ্মা নদীর উপর নির্মিত এই সড়ক ও রেল সেতুটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। ২৫ জুন ২০২২ ইং তারিখে উদ্বোধন করা হয় এবং ২৬ জুন ২০২২ তারিখে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই পদ্মা সেতু বর্তমান সরকারের একটি বড় আধুনিক পদক্ষেপ।
২০০১ সালে ৪ জুলাই জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৬-২০০৭ সালের উন্নয়ন কর্মসূচিতে তখনকার বাংলাদেশ সরকার পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর ইতিহাস
স্বাধীনতার পরবর্তী কয়েক বছর পরেই জাপান থেকে আগত জরিপ বিশেষজ্ঞদের একটি দল বাংলাদেশে একটি সড়ক নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এই সড়কটি পদ্মা নদীর উপর নির্মিত হবে বলে ঠিক করা হয়। তখন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।
কিন্তু তার মৃত্যুর কারণে প্রকল্পটি অপূর্ণ রয়ে যায়। ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল গুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে পদ্মা নদীর উপর একটু সেতু নির্মাণের জন্য ৩৬৪৩.৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করে। ফলে ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
১৯৯৯-২০১১ সাল- বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থে ভূমিক অধিগ্রহণ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিকল্পনা সেতুর নকশা তৈরি করা প্রভৃতি কাজগুলো করেন এবং ২৮ এপ্রিল ২০০৯ সালে বিশ্ব ব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের ঋণযুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০১১ -২০১২- ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে বিশ্ব ব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি হয়। কিন্তু উইকিপিডিয়া অনুযায়ী ১০ অক্টোবর ২০১১ সালের দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্ব ব্যাংক।
২০১৪ সালের ১৭ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতুটি নির্মাণের জন্য চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের চুক্তি হয়।২০২২ সালের ২৩ জুন এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। ২৫ জুন ২০২২ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ২৬ জন এই সড়কের ব্যবহার শুরু হয়। পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান নিচে আরো বিস্তারিতভাবে জানানো হচ্ছে।
আরো পড়ুন – সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়ার উপায় ২০২৩
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এবং বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন উত্তর
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ও বিস্তারিত তথ্য এবং কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর নিচে বর্ণনা করা হলো-
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
উত্তর- পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হলো ৬.১৫ কিলোমিটার বা ২০ হাজার ১৬০ ফুট বা ৩.৮২ মাইল।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু মূল প্রকল্পের নাম কি?
উত্তর- পদ্মা সেতুর মূল প্রকল্পের নাম হল পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কত কিলোমিটার?
উত্তর- পদ্মা সেতুর ভায়া ডাক্ট ৩.১৮ কিলোমিটার।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর প্রস্থ কত?
উত্তর-পদ্মা সেতু প্রস্থ হলো ১৮.১০ মিটার বা ৫৯.৬৫ ফুট।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কত কিলোমিটার।
উত্তর- দুই প্রান্তে মোট ১৪ কিলোমিটার।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতুর ভায়া ডাক পিলার কয়টি
উত্তর- পদ্মা সেতুর ভায়া ডাক পিলার ৮১ টি।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতুর প্রকল্পে নদী শাসন হয়েছে কত কিলোমিটার?
উত্তর- পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদী শাসন হয়েছে দুই পারে ১২ কিলোমিটার।
প্রশ্ন-মাটির কত মিটার গভীরে গিয়ে পাইপ বসানো হয়েছে?
উত্তর- পদ্মা সেতুতে মাটির ১২০ থেকে ১২৭ মিটার গভীরে গিয়ে পাইপ বসানো হয়েছে।
প্রশ্ন-পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা কত?
উত্তর- পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতার ষাট ফুট।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা কত?
উত্তর- পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা ৩৮৩ ফুট।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতুর মোট পাইলিং সংখ্যা কত?
উত্তর- পদ্মা সেতুর মোট পাইলিং সংখ্যা হলো ২৬৪ টি।
প্রশ্ন-প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং কয়টি?
উত্তর- প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং রয়েছে ৬টি করে তবে ১২ টি পিলারের জন্য সাতটি করে রয়েছে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় কবে?
উত্তর- পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২৬ নভেম্বর ২০১৪ সালে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয় কবে?
উত্তর- পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ২৩ জুন।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা কয়টি?
উত্তর- পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা ৪২ টি।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর এক পিলার থেকে আরেক পিলারের দূরত্ব কত?
উত্তর- পদ্মা সেতুর এক পিলার থেকে আরেক পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর পিলার স্পেন সংখ্যা কয়টি?
উত্তর- পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা ৪২ এবং স্পেনের সংখ্যা ৪১ টি। প্রতিটি স্প্যান লম্বা ১৫০.১২ মিটার বা ২৯২.৫ ফুট এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার বা ৭৪ ফুট।
প্রশ্ন-কবে পদ্মা সেতুর পিলারের উপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়?
উত্তর- পদ্মা সেতুর পিলারের উপর প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর।
প্রশ্ন- পদ্মার কোন পিলারের উপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়?
উত্তর- শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও৩৮ নম্বর পিলারের উপরে স্পেন বসানো হয়।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতুর কোন কোন পিলারের উপর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছে?
উত্তর- পদ্মা সেতুর ৩৭ ও৩৮ নং পিলারের উপর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর সর্বশেষে স্পেন কত তারিখে বসানো হয়?
উত্তর- ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা দুই মিনিটে পদ্মা সেতুর ১২ এবং ১৩ নম্বর পিলারের উপর সর্বশেষ ৪১ তম স্প্যান বসানো হয়।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর লেন কয়টি?
উত্তর- পদ্মা সেতুর ৭২ ফুটের লেন চারটি।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর রেল লাইনের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর- পদ্মা সেতুর রেল লাইনের দৈর্ঘ্য১৭৩ কিলোমিটার।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতুর রেল লাইনে স্থাপন হবে কোথায়?
উত্তর- পদ্মা সেতুর রেললাইন স্থাপন হবে নিচ তলায়।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট ব্যয় কত?
উত্তর- পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩.৩৯ কোটি টাকা।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল কত?
উত্তর- পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল ১০০ বছর।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নাম কি?
উত্তর- পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম হলো চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
প্রশ্ন- কবে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়?
উত্তর- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারা পদ্মা সেতু ২৫ জন ২০২২ সালে উদ্বোধন করা হয়।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু প্রকল্পে জনবল কতজন নিয়োগ দেয়া হয়?
উত্তর- প্রায় চার হাজার।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু কয়টি জেলাকে যুক্ত করেছে?
উত্তর- পদ্মা সেতুর দক্ষিণের একুশ টি জেলাকে যুক্ত করেছে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর কারণে প্রতি বছর কত শতাংশ জিডিপি বাড়বে?
উত্তর- পদ্মা সেতুর কারণে প্রতিবছর ১.২% জিডিপি বাড়বে।
প্রশ্ন- বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু কোনটি?
উত্তর- বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর নাম পদ্মা সেতু।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় কবে?
উত্তর- পদ্মা সেতুর প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় ১৯৯৯ সালে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন কে?
উত্তর- পদ্মা সেতু ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কোন দেশ?
উত্তর- বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে কতদিন লেগেছে?
উত্তর- পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে ২৭৬৮ দিন সময় লেগেছে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুতে কয়টি ল্যাম্প পোস্ট আছে?
উত্তর- পদ্মা সেতুতে মোট ২৪ টি ল্যাম্পপোস্ট আছে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু প্রকল্পে কত টন রড ব্যবহার করা হয়েছে?
উত্তর- পদ্মা সেতুতে এক লক্ষ আট হাজার টন রড ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতুতে কত টন সিমেন্ট ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর- পদ্মা সেতুতে প্রায় ৭ লক্ষ টন সিমেন্ট ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে কত টন স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে?
উত্তর- প্রায় ২৯ হাজার টন স্টিলের প্লট ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্ন- কত মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় সেতু?
উত্তর- নয় মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু নির্মাণে কতটি দেশের উপকরণ ব্যবহার করা হয়?
উত্তর- পদ্মা সেতু নির্মাণের ৬০ টি দেশের কোন না কোন উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্ন-পদ্মা সেতু কতটি দেশের মেধা শ্রম দিয়ে নির্মিত?
উত্তর- পদ্মা সেতু ২০ টি দেশের মানুষের মেধা ও শ্রম দিয়ে নির্মিত।
প্রশ্ন- কে সেতুতে প্রথম টোল দেয়?
উত্তর- পদ্মা সেতুতে প্রথম টুল দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু পার হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কত টাকা ্টোল দিয়েছেন?
উত্তর- পদ্মা সেতু পার হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজের গাড়ির জন্য ৭৫০ টাকা টনদানি এবং তার বহরে থাকে অন্যান্য গাড়ির জন্য মোট ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দেন।
প্রশ্ন- পদ্মা সেতু পার হওয়া প্রথম নারী বাইকার কে?
উত্তর- পদ্মা সেতু পার হওয়া প্রথম নারীর নাম রুবায়াত রুবা।
আরো পড়ুন – সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় ২০২৩
এক নজরে পদ্মা সেতুর এ টু জেড ও পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ২০২৩
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান আকারে তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হলো-
- পদ্মা সেতুর পুরো নাম পদ্মা বহুমুখী সেতু
- সেতুর উদ্বোধন হয় ২৫ জুন ২০২২
- উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড
- নকশা প্রণয়ন করেছে আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম এ ই সি ও এম
- জমি অধিগ্রহণ হয়েছে ৯১৮ হেক্টর
- নির্মাণ খরচ ৩০ হাজার কোটি টাকা
- পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার বা ২০ হাজার ১৮০ ফুট প্রস্থ ১৮.১০ মিটার বা ৫৯.৪ ফুট
- নির্মাণ কাজ শুরু ২০১৪ সালের নভেম্বরের ২৬ তারিখ
- নির্মাণ কাজ শেষ ২৩ জন ২০২২
- সেতুটির মোট পিলার ৪২ টি
- স্পেন সংখ্যা ৪১ টি
- ভায়া ডাক্ট পিলার ৮১ টি
- সংযোগ সড়কের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার
- সংযোগ সড়ক হচ্ছে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে
- সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ
- দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছে কোরিয়ান এক্সপ্রেস ওয়ে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
- ভূমিকম্প সহনশীল মাত্রা নয় রিখটার স্কেল
- সেতুর মেয়াদ প্রায় ১০০ বছর
পদ্মা সেতু সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য
- সেতুর নিকটতম সেনানিবাস হলো পদ্মা সেনানিবাস
- প্রতিদিন গড়ে ৭৫ হাজার যান চলাচল করে
- প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার
- প্রতিটি স্পেনের ওজন ৩২০০ টন
- ভেতর স্থানাঙ্ক ২৩>৪৪৬০ ডিগ্রি উত্তর এবং ৯০ দশমিক ২৬ ২৩ ডিগ্রী পূর্ব
- পানির স্তর থেকে এই সেতুর উচ্চতা ৬০ ফুট এবং এর পাইলিং গভীরতা ৩৮৩ ফুট
- সেতুর উপরের তলায় চার লেনে সড়ক এবং নিচতলায় থাকবে রেললাইন
- দুই পাড়ে নদী শাসন ১২ কিলোমিটার
- মুন্সিগঞ্জ জেলায় লৌহজগের সঙ্গে শরীয়তপুর মাদারীপুর জেলা সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হবে
- দক্ষিণ-পশ্চিমা পশ্চিমাঞ্চলের ২৯ টি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ হবে
আরো পড়ুন – আগামী তিন দিনের আবহাওয়ার খবর [সমগ্র বাংলাদেশ]
পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব
সেতু নির্মাণে ব্যয় যুক্ত হয়ে পিসিয়াি ২.১ এবং ইআইআর দাঁড়াবে ২২ শতাংশ। যার অর্থ হল এ সেতু নির্মাণ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে খুবই লাভজনক হবে। পদ্মা সেতু নির্মিত হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ টি জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ দূরত্ব প্রায় দুই থেকে চার ঘন্টা কমে যাবে। ঢাকার সাথে যোগাযোগ সরাসরি করা যাবে এবং ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটবে।
কাঁচামালের সরবরাহ সহজ হবে এবং শিল্পায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। অর্থাৎ ছোট বড় নানা শিল্প গড়ে উঠবে এবং কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।
বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক ও পদ্মা সেতুর টোল
ট্রেলার
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল- ১৩৭৫ টাকা
পদ্মা সেতুতে টোল- ৬000 টাকা
মোট টোল- ৭৩৭৫ টাকা
ভারী ট্রাক
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল- ১১০০
পদ্মা সেতুর টোল- দুই হাজার আটশ
মোট টোল- ৩৯০০ টাকা
মাঝারি ট্রাক
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল- ৫৫0
পদ্মা সেতুতে টোল- ২১০০ টাকা
মোট টোল- ২৬৫০ টাকা
মিনি ট্রাক
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল-৪১৫ টাকা
পদ্মা সেতুতে টোল- ১৬০০ টাকা
মোট- ২০১৫ টাকা
বড় বাস
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল- ৪৯৫ টাকা
পদ্মা সেতুতে টোল- ২৪০০ টাকা
মোট টোল- ২৮৯৫ টাকা
মিনিবাস
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে টোল- ২৭৫ টাকা
পদ্মা সেতুতে টোল- ১৪০০ টাকা
মোট টোল- ১৬৭৫ টাকা
মাইক্রোবাস
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল- ২২0 টাকা
পদ্মা সেতু টোল- ১৩০০ টাকা
মোট টোল- পনেরশ বিশ টাকা
সিডার কার
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের টোল- ১৪0 টাকা
পদ্মা সেতুর টোল- ৭৫০ টাকা
মোট টোল- ৯৮০ টাকা
মোটরসাইকেল
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের- ৩০ টাকা
পদ্মা সেতুতে টোল- ১00 টাকা
মোট টোল- ১৩0 টাকা
পদ্মা সেতুতে যানবাহনের টোলের হার
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার টোল নির্ধারণ করেন-
মোটরসাইকেল- ১00 টাকা
কার বা জিপ- ৭৫০ টাকা
পিকআপ ভ্যান- বারোশো টাকা
মাইক্রোবাস- ১৩০০ টাকা
ছোট বাস- ১৪০০ টাকা
মাঝারি বাস ৩২ আসন বা এর বেশি- দুই হাজার টাকা
বড় বাস- ৩ excel ২৪০০ টাকা
ছোট ট্রাক পাঁচ টন পর্যন্ত- ১৬০০ টাকা
মাঝারি ট্রাক পাঁচ টনের বেশি থেকে ৬ টন- ২১০০ টাকা
মাঝারি ট্রাক ৮ টনের বেশি ১১ টন পর্যন্ত- ২৮০০ টাকা
ট্রাক ৩ এক্স এল পর্যন্ত- ৫৫০০ টাকা
ট্রেলার ৪ এক্সেল পর্যন্ত- ৬০০০ টাকা
ট্রেইলার ৪ এক্সেলের বেশি- ৬০০০ সংখ্যায় প্রতি এক্সেলে এক হাজার ৫০০ করে টাকা যোগ করে টোল দিতে হবে।
পূর্বে ফেরীতে টোল যেমন ছিল
মোটরসাইকেল- ৭০ টাকা
কার বা জিপ- ৫০০ টাকা
পিকআপ ভ্যান- ৮০০ টাকা
মাইক্রোবাস- ৮৬০ টাকা
ছোট বাস- ৯৫0 টাকা
মাঝারি বাস- ১৩৫০ টাকা
বড় বাস- ১৪০০ টাকা
পাঁচ টন পর্যন্ত ট্রাকে- ১০৮০ টাকা
৫ টন থেকে ৮ টন পর্যন্ত ট্রাকে- ১৮০০ টাকা
৮ থেকে ১১ টন পর্যন্ত ট্রাক- ১৮৫০ টাকা
ট্রাক- ৩৯৪০ টাকা
মন্তব্য
আজকে আমরা সকল গুরুত্বপূর্ণ পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য অথবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব এবং বিভিন্ন আপডেট তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।
আরো পড়ুন –
- ই ক্যাপ 400 এর উপকারিতা ও অপকারিতা
- কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও অপারেশন খরচ ২০২৩
- সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়ার উপায় ২০২৩