অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ বিস্তারিত 2023

অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে উন্নত বিশ্বের যে দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা ভ্রমণ করে তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। তুলনামূলক অল্প খরচে পড়াশোনার সুযোগের পাশাপাশি পড়াশোনা শেষ করে চাকুরীর সুবিধা থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ার গমন করে থাকে।

আজকে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে।

আরো পড়ুন – অস্ট্রেলিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা

অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স ভর্তির যোগ্যতা

সাধারণত অনার্স লেভেলে পড়াশোনা করতে গেলে বেশ কঠিন কিছু শর্ত আরোপ করা হয়। সে তুলনায় মাস্টার্সে ভর্তি হতে সহজ কিছু শর্ত বণ করলেই চলে। ভর্তির যোগ্যতা নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর এবং কোন ডিপার্টমেন্টে মাস্টার্স করতে চাচ্ছেন তার ওপর। তবে আমরা একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব এবং কমন কিছু শর্ত নিয়ে আলোচনা করব।

  • বাংলাদেশের যে কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্থাৎ অনার্স পাস হতে হবে।
  • পূর্বের যেকোনো অ্যাকাডেমীর পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬০% নাম্বার বাধ্যতামূলক।
  • আইএলটিস/ জি আর ই/ টোফেল এক্সামে পাসড হতে হবে।
  • সাধারনত আই এলটি এস এ ৬.৫, জি আর ই তে ৫৫-৬০ এবং টোফেলে ৫৫ থেকে ৬০ মার্কস থাকলে নিরাপদ ধরা হয়।
  • যেকোন ডিপার্ট্মেন্টে ভর্তির ক্ষেত্রে বর্তমানে কম্পিউটার নলেজকে প্রাধান্য দেয়া হয়। কম্পিউটার নলেজ থাকলে স্কলারশীপ পাওয়া তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়।
  • ইংরেজি ভাষার দক্ষতা
  • দেশে পুলিশি কোন ঝামেলায় নাম থাকতে পারবে না

অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ বিস্তারিত

স্কলারশিপ ব্যতীত একজন বিদেশী শিক্ষার্থীর অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স করতে বছরে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ হয়ে থাকে। তবে স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় ধরন ও ডিপার্টমেন্টের উপর নির্ভর করে এই খরচ কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীরা স্কলারশিপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পড়াশোনা করতে যান। সে ক্ষেত্রে পার্শিয়ালি স্কলারশিপ কিংবা ফুল ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে গেলে খরচ অনেক অংশই কম হয়।

মাস্টার্স এর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য অনার্স এবং পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে। অনার্স করতে একজন বিদেশী শিক্ষার্থীর বছরে ১৫ থেকে ১৮ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ হতে পারে।

এবং পিএইচডি করতে একজন বিদেশী শিক্ষার্থীর বছরে ২০ থেকে ২৮ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ হতে পারে। তবে যেমনটা আমরা এত পূর্বে বলেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় ধরন ও ডিগ্রির উপর নির্ভর করে খরচ কমবেশি হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স ভর্তির সময়

অন্যান্য উন্নত দেশের মতো অস্ট্রেলিয়াতে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরে দুইবার ভর্তি নিয়ে থাকেন। কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে তবে বেশিরভাগ অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ফেব্রুয়ারি এবং জুলাই মাসে নতুন দুটি সেশন শুরু হয়।

আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য টার্গেট করেছেন প্রথমে খবর নিতে হবে সেখানে সর্বমোট কয়টি সেশন রয়েছে। এরপরে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট সেশন টার্গেট করে প্রস্তুতি নিতে হবে। কেননা একটি সেশনে এডমিশন মিস করলে পরবর্তী ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে।

ছাত্রদের জন্য অস্ট্রেলিয়া থাকা খাওয়ার খরচ

গড়ে একজন ছাত্র অস্ট্রেলিয়ায় থাকা খাওয়ার জন্য বছরে ১৩ থেকে ১৫ হাজার ডলার খরচ করে থাকে যা বাংলাদেশী টাকায় ১০ লক্ষ টাকার কিছু কম বেশি হতে পারে। অর্থাৎ গড়ে একজন ছাত্র মাসে প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে অস্ট্রেলিয়াতে।

যদিও স্কলারশিপ নিয়ে গেলে অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি বা হোস্টেলে থাকার সুযোগ হয়। সে ক্ষেত্রে থাকা এবং খাওয়ার খরচ অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রদের কমিউনিটি রয়েছে। সেখানে যোগাযোগ করলে কম খরচে ফ্ল্যাট শেয়ার করে থাকা যায়।

ফ্ল্যাট শেয়ার করে থাকলে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ভালোভাবে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তবে নিজে আলাদা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতে গেলে খরচ অনেক বেশি হয়ে যায় এবং সে ক্ষেত্রে প্রায় এক লক্ষ টাকার মতো মাসে খরচ হয়ে যায়।

আরো পড়ুন – অস্ট্রেলিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা 

অস্ট্রেলিয়া স্কলারশীপ আবেদন

বাংলাদেশের ছাত্রদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে যেমন- ফুল ফান্ডিং লিভিং এক্সপেন্সেস, টাইপ এন্ড স্কলার্শিপ ফুল ফান্ডিং স্কলার্শিপ, পারসিয়াল ফান্ডিং স্কলার্শিপ। শুধুমাত্র বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী নয় এশিয়ার অনেক দেশ বিশেষ করে ইন্ডিয়া ও পাকিস্তান থেকে প্রচুর পরিমাণ শিক্ষার্থী প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়া যায়।

বিগত কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের বেশ বড় একটি কমিউনিটি গড়ে উঠেছে। এতে করে নতুন যে কোন ছাত্র খুব সহজেই সেই নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ায় পার্ট টাইম চাকরি

অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রেলিয়াতে ও পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা মূলত রেস্টুরেন্ট, কিংবা ফাস্টফুড শপে পার্টটাইম চাকরি করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন শোরুমে পার্ট টাইম সেলসম্যান হিসেবেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমাদের দেশে এরকম নিয়ম না থাকলেও অস্ট্রেলিয়াতে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করা খুবই কমন একটা ব্যাপার।

বিশেষ করে যারা পার্শিয়াল স্কলারশিপ নিয়ে যাবেন তারা পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু পার্ট টাইম চাকরি না করলে খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে যেতে পারে। প্রথম অবস্থায় চাকরি খুঁজে পাওয়া কিছুটা কষ্টকর হবে তবে অস্ট্রেলিয়া শিক্ষার্থীদের কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তাহলে খুব সহজে চাকরি ম্যানেজ হয়ে যাবে।

অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ

মন্তব্য

উপরে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স খরচ সম্পর্কিত যে কোন প্রশ্ন থাকলে এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। এছাড়া আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে এড হতে পারেন নতুন তথ্য জানার জন্য।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply