কি খেলে পায়খানা নরম হবে
পেট কষা পায়খানা ঠিক ভাবে না হওয়াকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এটি কোন বড় ধরনের রোগ নয় একজন সাধারন সুস্থ মানুষের মাঝে মাঝে কারণে তাদের উপর নির্ভর করে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে পায়খানা শক্ত হওয়া কিংবা মলত্যাগের পর পেট ভালোভাবে পরিষ্কার হয়নি এই রকম অনুভূতি হতে পারে যা খুবই অস্বস্তিকর। নিয়ম মেনে খাবার গ্রহণ করলে সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
যাদের মাঝে মাঝে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তারা হুট করে কোন চিকিৎসা গ্রহণ না করে ঘরোয়াভাবে লম্বা সময়ের পরিকল্পনা করে এই রোগ মোকাবেলা করতে পারেন এতে করে কোনরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই দীর্ঘসময়ের জন্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আজকে আমরা কি খেলে পায়খানা নরম হবে তা জানাবো এবং সেইসাথে ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করব।
পায়খানা কষা কেন হয়?
যেকোনো রোগ প্রতিরোধ করার পূর্বে আমাদের কারণ জানতে হবে তাহলে দীর্ঘ সময়ের জন্য রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব। সাধারণত খাবারে অনিয়ম করার কারণে পায়খানা কষা বা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দেখা দিতে পারে। শুরু থেকে সঠিকভাবে আবেদন করলে পরবর্তীতে পাইলস বা অর্শ্ব রোগ, গেজ রোগ সহ পায়ুপথের বিভিন্ন জটিল রোগ দেখা দিতে পারে।
নিচে আমরা পায়খানা কষা হওয়ার প্রধান কয়েকটি কারণ আলোচনা করার চেষ্টা করছি
- নিয়মিত ও যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণ না করলে। কোন কোন খাবারে ফাইবার থাকে তাহলে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব।
- খাবারের পর নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করা
- ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে পায়খানা কষা হতে পারে। বিশেষ করে ভারি এন্টিবায়োটিক কিংবা আয়রন ট্যাবলেট, ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ওষুধ সেবনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে পায়খানা কষা হতে পারে।
এছাড়াও শারীরিক পরিশ্রম করা, কিংবা অতিরিক্ত মানসিক টেনশন করার কারণে পেট কষা অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন – গ্যাস্ট্রিকের ঘরোয়া চিকিৎসা
কি খেলে পায়খানা নরম হবে
প্রথমত মাথায় রাখতে হবে কোষ্ঠকাঠিন্য কোন মারাত্মক রোগ নয়। জীবনযাপন এর মান পরিবর্তনের মাধ্যমে এবং কিছু নিয়ম ফলো করলে এই রোগ থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়। এ পর্যায়ে আমরা কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আলোচনা করবো যেগুলো ফলো করলে কোন ঔষধ ছাড়াই পায়খানা নরম করা সম্ভব হবে
খাবার তালিকায় পরিবর্তন
জামাটা ইতোপূর্বে বলেছি এবং প্রধান কারণ আছে খাবারের অনিয়ম করা। তাই সর্বপ্রথম আপনাকে সঠিকভাবে খাবার গ্রহণ করতে হবে। নিজে আমরা খাবার গ্রহণের কয়েকটি নিয়ম আলোচনা করব
- খাবারের তালিকা যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। একজন সুস্থ মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্য হারাতে দৈনিক 30 গ্রাম ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভাত, রুটি, ডাল, লাল আটা এবং লাল চাল, পেপে, বেল এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে তাই দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় এই আইটেমগুলো রাখতে হবে।
- খাবারের তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি রাখতে হবে। কেননা সবুজ শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।
- প্রচুর পরিমাণে ফলমূল খেতে হবে। গ্রহণের সময় ফলের চামড়া হাফেলে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে করে শরীরে পানির ঘাটতি অনেকাংশেই পূরণ হয়ে যাবে।
যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে হবে
কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা কষা হওয়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হচ্ছে পানি কম পান করা, এটা আমরা সবাই কম বেশি জানি। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এড়াতে নিয়মিত ও যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে হবে। যদি সম্ভব হয় পানির পাশাপাশি মাঝে মাঝে স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।
একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ২ লিটার পানি পান করা উচিত। পানির পরিমাণ কম হলে শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ নানাবিদ জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ইসবগুলের ভুসি খান
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষেত্রে ইসবগুলের ভুষি অন্যতম প্রধান একটি হাতিয়ার। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তাদের কম বেশি সবাই এই ইসবগুলের ভুসির নাম শুনেছেন। সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর আগে অর্থাৎ দিনে দুইবার ইসুবগুলের ভুষি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।
বর্তমানে ডাক্তারি ভাবে প্রমাণিত যারা নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খান তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যসহ পরিপাকতন্ত্রের জটিল কোন রোগ হয় না। নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি গ্রহণের ফলে শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখে।
পায়খানা কষা হওয়ার লক্ষণ
মাঝে মাঝে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ফলে কিংবা পানি কম খাওয়ার ফলে সামরিক পেট ব্যথা কিংবা পায়খানা কষা হয়। এটি খুবই স্বাভাবিক এবং সামরিক একই সমস্যা যা পানি খেলে ঠিক হয়ে যায়। তবে মাঝে মাঝে পরিপাকতন্ত্রের জটিলতার ফলে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগে রূপ ধারণ করে। কখন বুঝবেন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে। নিজে আমরা কয়েকটি লক্ষণ বর্ণনা করছি
- পায়খানা শুকনো ,খড়খড়ে ও শক্ত চাকার মত হওয়া
- পায়খানার আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হওয়া এবং পায়খানা করতে কষ্ট হওয়া
- টয়লেট শেষে পেট পরিষ্কার হয়নি এমন অনুভব হওয়া
- মাঝে মাঝে পায়খানার সাথে রক্তের মত সামান্য তরল বের হওয়া
- পেটে ব্যথা ও বমি বমি ভাব হওয়া
- ক্ষুধামন্দা ও খাবার গ্রহণের অনিচ্ছা দেখা দেয়
এই ধরনের সমস্যা দুইদিন বেশি দেখা দিলে ধরে নিতে হবে আপনার সমস্যাটি স্বাভাবিকভাবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই কর্মচিকিত্সা পাশাপাশি প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
পায়খানা নরম করার ঔষধ
সাধারণত পায়খানা নরম করার জন্য মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়া এবং ডুরালেক্স (Duralax) এই ওষুধগুলো ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। তবে রোগীর বয়স এবং শারীরিক কন্ডিশন এর উপর নির্ভর করে ওষুধের ধরন ও পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। আমার কখোনই সাজেশন দিব না শুরুতে পায়খানা নরম করার জন্য কি ব্যবহার করতে হবে।
উপরে আমরা কি খেলে পায়খানা নরম হবে এর ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেছি। পায়খানা নরম করার জন্য প্রথমে ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো অনুসরণ করতে পারেন। এরপর কাজ না হলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন।
আরো পড়ুন – গ্যাস্ট্রিকের ঘরোয়া চিকিৎসা