বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার

বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার

নবজাতক বাচ্চাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল নাভি। সাধারণত জন্মের পরবর্তীতে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে নাভি নিজ থেকে শুকিয়ে পড়ে যায়। তবে অনেক কারনে বাচ্চার নাভি দেরিতে শুকায় বা নাভিতে ঘা দেখা যায়। বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার সম্পর্কে আজকে আমরা একটা আর্টিকেল শেয়ার করব। আশা করছি ভালো লাগবে।

বাচ্চার নাভি না শুকানোর কারণ

Untitled design 2023 11 13T200256.908

বিভিন্ন কারণেই নবজাতক বাচার নাভি শুকায় না। অনেক সময় এটি বাচ্চার শারীরিক কোন রোগের কারণেও হতে পারে। তবে বেশিরভাগ সময় নিজেদের অসাবধানতার কারণে নবজাতকের নাভি শুকাতে দেরি হয়। বাচ্চাদের নাভি শুকানোর পাউডার ব্যবহারের পূর্বে বাচ্চার নাভি না শুকানোর কারণগুলো জানা প্রয়োজন।

  • জন্মের পরবর্তী সময়ে নাভি ঢেকে রাখা
  • নবজাতকের নখ না কাটা
  • পড়ানোর সময় নাভির উপরে পড়ানো
  • নাভি পরিষ্কার না রাখা
  • নবজাতক বাচ্চাকে রোদের আলোয় না নেওয়া
  • নাভিতে আলো বাতাস না লাগানো
  • নাভিতে বারবার হাত লাগানো
  • বাচ্চাকে ধরার পূর্বে হাত ভালোভাবে না ধোয়া
  • বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি

শিশুর নাভি শুকানোর পাউডারের নাম

সাধারণত বাচ্চার নাভির সঠিকভাবে যত্ন নিলেই নিজ থেকে শুকিয়ে যায়। তবে কোন কারণে বাচ্চার নাভি না শুকালে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বাজারে বাচ্চার নাভি শুকানোর বিভিন্ন ধরনের পাউডার পাওয়া যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-হেক্সিকোড,নেবানল পাউডার। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪০-৬০ টাকা।

বাচ্চার নাভি শুকানোর সহজ উপায়

নবজাতকের নাভি শুকানোর সহজ উপায় সম্পর্কে কমবেশি অনেকেই জানে। সাধারণত কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এবং কিছু নিয়ম ফলো করার মাধ্যমেই বাচ্চার নাভি নিজ নিজেই শুকিয়ে যায়। তবে শীতকালে বাচ্চা জন্মগ্রহণ করলে অনেক সময় নাভির ঘা শুকাতে সময় লাগে।

  • বাচ্চার নাভি পরিষ্কার রাখা
  • বাচ্চার নাভি না ঢেকে রাখা
  • অপরিষ্কার হাতে নাভি না ধরা
  • বাচ্চাকে আলো বাতাস যুক্ত স্থানে রাখা
  • প্রতিদিন বিশ মিনিট রোদে রাখা
  • নারিকেল তেল দেওয়া
  • নাভি ঝরে না যাওয়া পর্যন্ত শিশুকে সরাসরি গায়ে পানি ঢেলে গোসল করানো উচিত নয়
  • জন্মের পর প্রথম তিন সপ্তাহ স্পঞ্জ এর সাহায্যে শিশুর শরীর আস্তে আস্তে মুছে মুছে পরিষ্কার করা উচিত
  • ডায়াপার পড়ানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন নাভিতে কোন অবস্থায় ঢেকে না রাখে

নাভিতে ইনফেকশন হলে করণীয়

বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার

বাচ্চাদের নাভির ইনফেকশন হলে বাচ্চাদের জন্য অনেক যন্ত্রণাদায়ক হয়। সেজন্য জন্মের পর বাচ্চাদের নাভির বিশেষ যত্ন নিতে হয়। অনেকেই ঘরোয়া বিভিন্ন টোটকা ব্যবহার করতে চায়। তবে তা করা মোটেও উচিত নয় এতে বিপরীত হতে পারে।

  • এক্ষেত্রে ইসপিরিট ব্যবহার না করাই উত্তম
  • নাভির জায়গায় বেটারিন দিয়ে আস্তে আস্তে পরিষ্কার করতে হবে
  • সেইসঙ্গে ডাক্তারে পরামর্শ অনুযায়ী  বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার ব্যবহার করতে হবে
  • প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক বা ইনজেকশন চিকিৎসকের পরামর্শ মত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
  • নাভির ঘাতে ঘাসের রস হলুদ বা ঘরোয়া কোন ধরনের টোটকা ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না

বাচ্চার নাভি থেকে রক্ত বের হয় কেন?

সাধারণত দুই ধরনের কারণেই নবজাতক বাচ্চার নাভি থেকে রক্ত পড়তে পারে। সেগুলো হলো-

১। সংক্রমণ অর্থাৎ নবজাতক বাচ্চার নাভিতে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটলে নাভি থেকে রক্ত পড়তে পারে।

২। পোর্টাল- পোর্টাল হাইপ্রেশনের কারণে নবজাতক বাচ্চার নাভি থেকে রক্ত পড়তে পারে।

বাচ্চাদের নাভিতে হার্নিয়া হওয়ার কারণ

সাধারণত বিভিন্ন কারণে শিশুদের নাভিতে হার্নিয়া হয়ে থাকে। বাচ্চাদের নাভির কর্ডটি একটি ছোট মুখের মাধ্যমে শিশুর পেটের পেশীর মধ্যে দিয়ে যায়। এই মুখটি জন্মের পর বন্ধ হয়ে যায়। তাই, যখন পেটের দেয়ালগুলি পেটের পেশীগুলির মধ্যে একত্রিত হতে ব্যর্থ হয়, তখন জন্মের সময় বা পরে একটি নাভির হার্নিয়া হতে পারে।

আরো পড়ুন – নবজাতকের নাভিতে তেল ব্যবহারের উপকারিতা

বাচ্চাদের নাভিতে হার্নিয়া হওয়ার লক্ষণ

হার্নিয়া বাচ্চাদের জন্য খুবই কষ্টকর একটি অবস্থা। হার্নিয়া হওয়ার লক্ষণগুলো হল-

  • সাধারণত বাচ্চাদের নাভিতে হার্নিয়া হলে বাচ্চারা অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে।
  • কান্নাকাটি করতে করতে মুখের বর্ণনীল হয়ে যায়।
  • যখন শিশু কান্না করে বা কাশি অথবা মলত্যাগ করার চেষ্টা করে। এই কাজটি পেটের ওপর চাপের সৃষ্টি করে, যার ফলে নাভিটি বড় হয়।
  • যখন তারা শিথিল হয়ে যায় তখন তাদের খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।
  • বেশিরভাগ সময়েই তারা ব্যাথা তৈরি করে না।
  • শিশুদের নাভির হার্নিয়া সাধারণত ব্যথাহীন হয়।
  • বয়সন্ধিকালে নাভির হার্নিয়া পেটে একটা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

নবজাতকের নাভির সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে মায়েদের করণীয়

সাধারণত গর্ভাবস্থায় মায়েদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে জন্মের পর শিশুদের অনেক রকম রোগ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। তেমনি গর্ভাবস্থায় কিছু অসাবধানতার ফলে নবজাতকেরা বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। নবজাতকের নাভির সংক্রমণ ও ইনফেকশন থেকে মুক্তি লাভ করতে হলে প্রেগনেন্সিতে মাকে অবশ্যই ধনুষ্টংকার প্রতিরোধী টিকা নিতে হবে

নাভি সম্পর্কে কুসংস্কার

বাচ্চার নাভি শুকানো সম্পর্কে অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার রয়েছে। যা বর্তমান সময়ে মানা একদমই উচিত নয়। এতে শুধুমাত্র বাচ্চার ক্ষতি হয় না। পুরো পরিবারকে হতে ভোগান্তির শিকার হতে পারে। এসব সম্পর্কে অবশ্যই সচেতন থাকা উচিত। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত বাচ্চার নাভিতে কোন কিছুই ব্যবহার করা উচিত নয়।

  • রসুন পোড়া ব্যবহার করা
  • বারবার গরম তেল দেওয়া
  • নাভিতে গরম শেক দেওয়া
  • নাভিতে মায়ের সিঁদুর লাগানো
  • নবজাতকের নাভিতে মায়ের বুকের দুধ লাগানো
  • কোন কোন অঞ্চলে পাতা বাটার রস

ডাক্তারের পরামর্শ

সাধারণত নবজাতকের নাভির জন্মের পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে ঝরে পড়ে যায়। কিন্তু কোন কারণে নাভি ঘা ইনফেকশন অথবা নাভি থেকে পুঁজ রক্ত পড়লে অবশ্যই সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা এই নাভির এই ইনফেকশন অতি দ্রুত শরীরে অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার

মন্তব্য

আজকে আমরা বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার এর নাম ও নবজাতকের নাভি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এই আর্টিকেলে শেয়ার করেছি। আশা করছি নবজাতকের মায়েদের জন্য এটি অনেক উপকার হবে। বাচ্চার নাভি শুকানোর পাউডার আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনাদের কোন মন্তব্য মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরাও রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুন – 

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply