অটিস্টিক শিশুদের স্কুল চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামের সেরা অটিজম স্কুল

Table of Contents show

অটিস্টিক শিশুদের স্কুল চট্টগ্রাম

আগেকার সময় প্রতিবন্ধী অথবা প্রতিবন্ধী শিশুরা অবহেলিত হলেও এখন কিন্তু সরকার তাদের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সম্প্রতি এক গবেষনায় দেখা গেছে বর্তমানে আমাদের দেশের প্রায় ৭ শতাংশ শিশু শারিরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মায়। এর মধ্যে আবার অটিজম এর পরিমান সবচেয়ে  বেশি।

প্রতিবন্ধী সনাক্ত করণ জরিপের আওতায় বর্তমান প্রতিবন্ধীর সংখ্যা 16 লাখ 65 হাজার 708 জন। অন্যান্য শহরের মত  চট্টগ্রামেও বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিবন্ধী স্কুল আছে । যেখানে শিশুদেরকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়এবং শিশুদেরকে হাতে-কলমে শেখানো মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়। আজকের আর্টিকেলে অটিস্টিক শিশুদের স্কুল চট্টগ্রাম এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে জেনে নেবো অটিজম কি, অটিজমের কারণ এবং বাংলাদেশের অটিজম পরিস্থিতি এবং এর করনীয় কি সেই সম্পর্কে

অটিজম কি

Autism Spectrum Disorder (ASD) বা বাংলায় অটিজম হচ্ছে বাচ্চাদের মস্তিষ্ক বিকাশ জনিত এক বিশেষ ধরনের রোগ। সাধারনত এই রোগে আক্রান্ত বাচ্চারা সঠিক সময়ে কথা বলতে পারে না, মানুষের দিকে হাসিমুখে তাকানো বা সাধারনত বাচ্চারা যেসব দুষ্টমি করে সেগুলো করে না। অবশ্য বাচ্চার মস্তিষ্কের ধরনের উপর নির্ভর করে এই রোগের লক্ষন বিভিন্ন হতে পারে।

অবশ্য ডাক্তার রা বার বার ই বলে আসছেন অটিজম মানেই প্রতিবন্ধী নয়। অর্থাৎ অটিজম হচ্ছে বাচ্চাদের অন্যান্য রোগের মত একটি সাধারন রোগ যা মস্তিষ্কে হয়ে থাকে। অন্যান্য রোগ যেমন চিকিৎসা করলে ভালো হয় অটিজম ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয়।

অটিজমের কারণ

অটিজম কেন হয় এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে ডাক্তাররা কোন কারণে বের করতে পারেনি। তবে চিকিৎসকগণ গবেষণা করে কিছু সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করেছেন যেগুলোর কারণে অটিজম হতে পারে। যেমন…

  • শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় যদি অ্যালকোহল সেবন করেন
  • গর্ভকালীন সময় পরিবেশগত কারণে কারণে বাড়ছে মস্তিষ্কের বিকাশে সঠিকভাবে তাহলে
  • মৃগী রোগের ঔষধ সেবনের ফলে
  • বাচ্চা গর্ভে থাকা অবস্থায় পায়ের অতিরিক্ত ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে

বাংলাদেশের অটিজম পরিস্থিতি এবং এর করনীয়

শুধু বাংলাদেশে নয় সারা পৃথিবীতে এখন অটিজম পরিস্থিতি ব্যাপক বিস্তার সৃষ্টি করেছেন। তবে বাংলাদেশ ও এখন দিন দিন অটিজম পরিস্থিতি ব্যাপক বিস্তার লাভ করতেছে। এর প্রধান কারণ হতে পারে বর্তমান বাংলাদেশ গর্ভবতী মায়েদের উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস এর মত অনেক রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ধরনের গর্ভবতী মায়েদের শিশুর মধ্যে অটিজম হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

অটিস্টিক শিশুদের স্কুল চট্টগ্রাম

এর মধ্যে আরেকটি কারণ হতে পারে বেশি বয়সে বিবাহ করা অথবা স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হওয়ার কারণেও অটিজম পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে একজন শিশু।

তবে বাংলাদেশ এখন চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক উন্নত মানের হওয়ায় আস্তে আস্তে অটিজম পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হচ্ছেন। একজন মা যখন বাচ্চা নেওয়ার কথা চিন্তা করবেন তখন অবশ্যই আগেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। একজন ভাল ডাক্তার যখন আপনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝতে পারবেন আপনি বাচ্চা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত তাহলে তিনি আপনাকে পরামর্শ দিবেন।

আর যদি আপনার কোন শারীরিক সমস্যা থাকে তাহলে তিনি অবশ্যই একটা ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে আপনাকে আগে সুস্থ করার চেষ্টা করবেন। তাই অবশ্যই বাচ্চা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

অটিস্টিক স্কুল চট্টগ্রাম এ শিক্ষকের যোগ্যতা

অটিস্টিক শিশুদের স্কুল চট্টগ্রাম এ শিক্ষকের যোগ্যতা সাধারণত অনার্স পাস হয়ে থাকে। অন্যান্য সাধারণ স্কুলের মত এখানেও শিক্ষাগত যোগ্যতা এক রকম হয়। তবে অটিস্টিক স্কুলের শিক্ষকদের কে আলাদাভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিভাবে একজন অটিস্টিক শিশু কে পরিচালনা করবেন সেই বিষয় শেখানো হয়।

অর্থাৎ নিয়োগের পর প্রত্যেক শিক্ষককে ৬ মাসের বিশেষ একটা ট্রেনিং সেশনে উপস্থিত হতে হয়। এই ট্রেনিং সেশনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের কিভাবে পড়াতে হয় এবং কিভাবে তাদের যত্ন নিতে হয়। এছাড়াও সাইন ল্যাংগুয়েজ সহ বিভিন্ন টেকনিকাল বিষয় ও শিখানো হয় এই ট্রেনিং সেশনে।

অটিস্টিক স্কুলের খরচ

অটিস্টিক স্কুল গুলোতে সাধারণত কোনো রকমের বেতন দিতে হয় না কেননা সরকার দায়ভার পুরোটাই বহন করেন। বাচ্চাদের পড়াশোনার বই খাবার সহ অন্যান্য সকল খরচ সরকার বহন করে যাতে করে শিশুরা স্বাচ্ছন্দে পড়ালেখা চালাতে পারে। তবে যেগুলো বেসরকারি অটিস্টিক স্কুল আছে সেগুলোতে অটিস্টিক শিশুদের জন্য বেতন দিতে হয়।

কেন না বেসরকারি অটিস্টিক স্কুল গুলো নিজেদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় সেহেতু তারা শিশুদের দেখাশুনা পড়াশোনা দেখভাল করার জন্য কিছু বেতন নিয়ে থাকেন। বেতন কত তা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটির উপর। সাধারনত মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মত হয়ে থাকে।

চট্টগ্রামের সেরা অটিস্টিক স্কুল

চট্টগ্রাম যেহেতু একটি বিভাগীয় শহর এখানে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন অটিস্টিক স্কুল গড়ে উঠেছে। এ পর্যায়ে আমরা চট্টগ্রাম অটিস্টিক স্কুলের নাম ও তার ঠিকানা গুলো সম্পর্কে জানাবো।

চট্টগ্রাম বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ খুলশী চট্টগ্রাম-৪২০২

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ০১৭১৮০০৪৯১৫

ফেনী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ মিজান রোড ফেনী-৩৯০০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৫২৩১০৯০

কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ পার্ক রোড কুমিল্লা-৩৫০০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ০১৭১৪৮৫৬৬২৪

নাঙ্গলকোট বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ নাঙ্গলকোট কুমিল্লা-৩৫৮০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ ০১৮১৮৪০২৬৯৮

চাঁদপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ আতাইকুলা রোড, শালগাড়িইয়া, পাবনা-৬৬০০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৬০২১১৪৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ সালাম মঞ্জিল বিপনিবাগ চাঁদপুর-৩৬০০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ০১৭২১২৫৫১০৩৫

সনি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ উলচাপাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬৬০০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭২৭২৭৯৭৭৯

নোয়াখালী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

ঠিকানাঃ মা মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী-৩৮০০

ফোন/মোবাইল নাম্বারঃ০১৭১৪৬৫৩৫৭৩

অটিজম রোগ কি ভালো হয়

জন্মের পর থেকে সঠিকভাবে চিকিৎসা ও দেখাশোনা করলে অটিজম সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়। ইতোপূর্বে অটিস্টিক বাচ্চাদের প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা করা হতো কিন্তু বর্তমানে গবেষণা করে দেখা গেছে যথার্থ চিকিৎসার ফলে এই রোগ থেকে সম্পূর্ণরূপে ভর্তি হওয়া কি সম্ভব।

গবেষকদের মতে অটিজম কোন মারাত্মক রোগ নয় বরং এটি মস্তিষ্কের সাধারণ রোগ গুলোর মধ্যে একটি। তবে যথাসময়ে ও যথানিয়মে না করালে বাচ্চা চিরদিনের মতো প্রতিবন্ধী হতে পারে। তাই যথা সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

অটিজম স্কুলে কি সাধারন ছাত্ররা ভর্তি হতে পারে?

অটিজম স্কুল এর সাধারণ ছাত্ররা ভর্তি হতে পারে না। যেহেতু অটিস্টিক শিশুরা মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অর্থাৎ তাদেরকে সবকিছু ভিন্নভাবে শেখাতে হয় তাই তাদের শেখানোর পদ্ধতি সাধারণ শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনেকটাই ভিন্ন। অটিস্টিক শিশুদের মানসিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন কৌশলে মাধ্যমে তাদের পড়ানো হয়।

তবে একটা নির্দিষ্ট সময়ে অটিস্টিক শিশুরা সাধারণত সরকারি বা বেসরকারি স্কুলে ভর্তি হতে পারে।

মন্তব্য

উপরে আমরা অটিস্টিক শিশুদের স্কুল চট্টগ্রাম নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি। আশা করছি ব্লগটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু ও প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

আরো পড়ুন –

Easy Teching

ইজি টেকিং - একটি বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাংলা ভাষায় সবার মাঝে সঠিক তথ্য পৌছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।

Leave a Reply