মোনাস ১০ এর কাজ কি
সাধারণত অনেক সময় আমরা ডাক্তারের সাজেশন ছাড়াও অনেক ধরনের ঔষধ সেবন করে থাকি। হোক সেটা ফার্মেসি থেকে আনা অথবা কারো সাজেস্ট করা। তাই অনেকে মোনাস ১০ এর কাজ কি এবং এর বিকল্প মেডিসিন গুলো কি কি এবং কার্যকারিতা উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করে থাকেন।
আজকে আমরা মোনাস ১০ এর কাজ কি এবং এর বিকল্প মেডিসিন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।
আরো পড়ুন – চোখের এলার্জির ড্রপের নাম, চোখের এলার্জি দূর করার উপায়
মোনাস ১০ এর ব্যবহার
মোনাস ১০ যেসব রোগ এবং রোগের নিয়ন্ত্রণে কাজ করে তা হলো-
- দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা
- এলার্জিক রায়নাইটিস
- মৌসুমী এলার্জিক রায়নাইটিস
- এসমা
- হাঁপানি রোগের প্রধান ঔষধ হিসেবে ব্যাপকভাবে সেবন করা হয়
- এছাড়াও যাদের নাকের প্রবাহ
- কাশি ঠান্ডা জনিত সমস্যা আছে তাদের সাময়িকভাবে সেবন করতে দেওয়া হয়
- মোনাস ১০ এলার্জিক রায়নাইটিস এর চিকিৎসা ও ব্যবহার করা হয়
- খিচুনির সমস্যা দূর করে নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়
- শ্বাসতন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করা
- অ্যাজমা রোগীদের অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই মূলত ব্যবহার করা হয়
- ধূমপান সংক্রান্ত শ্বাসতন্ত্রের জন্য ব্যবহার করা হয়
- এছাড়াও শ্বাসতন্ত্রের সংকোচ
- নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট
- চাপল শ্বাস
- লাইটিং চ্যাপল
মোনাস ১০ কি কাজ করে?
মোনাস ১০ এর মূল কাজ হলো লিওকো ট্রাইন নামক পদার্থের কার্যক্ষমতা বন্ধ করা। লিওকো ট্রাইন হলো শরীরে উৎপন্ন হয় এমন এক পদার্থ যা শরীরে অ্যাজমা এবং এনার্জি রাইনাইটিস অপাচিত প্রতিক্রিয়া উৎপন্ন করে।
মোনাস ১০ এর পদার্থ গুলোর কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং এজমা ও এলার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ গুলো কমিয়ে দেয়। এতে করে শরীরে এলার্জি এবং অ্যাজমার সমস্যা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম
যাদের নাকের প্রদাহ বা সর্দি কাশি ইত্যাদি ঠান্ডা জনিত সমস্যা আছে তাদের সাময়িকভাবে সাধারণত ১০ দিন বা একমাস সেবন করতে দেয়া হয়। আর যদি এজমা সমস্যা থাকে তবে সব সময় এ ওষুধ সেবন করতে হয়। এই ওষুধ খাওয়ার আগে বা পরে খাওয়া যায়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ওষুধটি সেবন করতে হবে। তিনি আপনাকে আপনার রোগের পরিমাণ এবং আপনার শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে খাওয়ার জন্য ডোজ দিবেন।
মোনাস ১০ খাওয়ার ডোজ
মোনাস ১০ এর কাজ কি তা জানার পরবর্তীতে মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম এবং ডোজ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। যদিও এগুলো আপনার চিকিৎসকের কাছেই জেনে নেওয়া যাবে। তিনি আপনার সার্বিক অসুস্থতা বয়স এবং রোগের ধরন অনুযায়ী ডোজ এবং নিয়মগুলি বলে দিবেন। তবে সাধারনত মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম হলো-
- ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর হাঁপানি ও এলার্জির জন্য- ৪ মিলিগ্রাম দিনে
- ৬ থেকে ১৪ বছর হাঁপানি এবং এলার্জিক রায়নাইটিস দিনে- ৫ মিলিগ্রাম
- ব্যায়াম প্ররোচিতশন- ৫ মিলিগ্রাম
- প্রাপ্তবয়স্ক ও ১৫ বছর বা তার বেশি বয়স হলে হাঁপানি ও এলার্জির রাইনাইটিস- ১০ মিলিগ্রাম
- অনুশীলন প্ররোচিত- ১০ মিলিগ্রাম
যদি আপনি একটি ডোজ মিস করেন মনে করার সাথে সাথেই সেটা সেবন করুন এবং যদি এটি পরবর্তী ডোজের কাছাকাছি হয় তাহলে এড়িয়ে যান এবং আপনার স্বাভাবিক ডোজ সময় অনুযায়ী পুনরায় শুরু করুন। ডোজ দ্বিগুণ করবেন না। ওভার ডোজ সন্দেহ হলে অবিলম্বে আপনার নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
মোনাস ১০ এর দাম
বাজারে যে এলার্জির ট্যাবলেট গুলো পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো মোনাস ১০। মোনাস ১০ এর দাম হল পার পিস ১৬ টাকা। পাঁচটির প্যাকেটের দাম ৮০ টাকা। ১৫টির প্যাকেটের দাম ২৪০ টাকা। ৩০ এর প্যাকেটের দাম ৪৮০ টাকা।
অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে মোনাস ১০ এর বিক্রিয়া
মোনাস ১০ সঙ্গে অন্যান্য কিছু ঔষধ বা ভেষজ গ্রহণ করলে গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। রেগুলার কোন ঔষধ সেবন করলে ডাক্তার যখন আপনাকে মোনাস ১০ সাজেস্ট করবেন। অথবা ফার্মাসিস্ট আপনাকে দেবেন তখন আপনি আপনার ফার্মাসিস্ট কে রেগুলার ইউজ করা ওষধের কথা বলতে ভুলবেন না। যেসব ঔষধের ক্ষেত্রে এর বিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় সেগুলো হল-
- Phenobarbital
- Phenytoin
- Rifampicin
মোনাস ১০ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
সাধারণত সবগুলো ঔষধ সবার শরীরে এডজাস্ট করে না। অনেক সময় মনাস টেনের যেসব সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সেগুলো অনেকের মধ্যেই আবার দেখা যায় না। দীর্ঘদিন সময় থেকে মোনাস ১০ খেলে এসব সমস্যা হতে পারে। তাই এসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যোগাযোগ করবেন। মোনাস টেনে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হল-
- ডায়রিয়া
- দুর্বলতা
- জ্বর জ্বর ভাব
- বমি বমি ভাব
- মাথা ব্যথার সমস্যা
- ঘুমের সমস্যা
- বেশি ব্যথা
- গলায় কালো দাগ দেখা যেতে পারে
- ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে পারে
- চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে
মোনাস ১০ এর বিকল্প medicine
বাজারে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি বা শ্বাসকষ্টের ওষুধ পাওয়া যায়। অনেকেরই মোনাস ১০ শারীরিকভাবে এডজাস্ট হয় না বাজারে এর বিকল্প মেডিসিন গুলো হল-
- Amekast
- Arokast
- Arovent
- Croma
- Ezevent
- Lumona
- M lukas
- Montex
- Montica
সর্তকতাঃ মোনাস ১০ এর কাজ কি
এই ওষুধটি ব্যবহারের পূর্বে আপনার ডাক্তারের কাছে আপনার বর্তমান যেসব রোগ আছে শারীরিক অসুস্থতা অসুবিধা কি কি সেবন করছেন সেগুলো খুলে বলুন। এসব ব্যক্তি এবং শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রে মোনাস ১০ খাওয়ার জন্য সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরী। সেগুলো হলো-
গর্বঅবস্থায় এবং স্তন্যপান গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত এবং নিয়ন্ত্রিত কোন গবেষণা নেই। তবে এটি গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি কেউ ব্যায়াম করার হাঁপানের জন্য মোনাস খেয়ে থাকেন তাহলে ব্যায়াম করার ২ ঘণ্টা আগে মোনাস খেতে হবে। আকস্মিক শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দিতে মনাস্তাইন ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনার ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই মোনাস ১০ ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। যদি আপনার অসুখ ভালো হয়ে যায় তবুও।
মোনাস ১০ এর কাজ কি সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর
মোনাস টেন খাওয়ার আগে বা পরে কখন ব্যবহার করা উচিত?
খাওয়ার আগে বা পরেই নেওয়া যেতে পারে তবে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন।
মোনাস ১০ খাওয়ার সময় কি অ্যালকোহল সেবন করা নিরাপদ?
না এলকোহল গ্রহণ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
এই ওষুধ সেবন কি আসক্তি হয়ে উঠতে পারে?
না। এটি আসক্তি সৃষ্টিকারী কোন ঔষধ নয়।
ডোজ নির্ধারিত সময়ের আগে বন্ধ করা যাবে?
আপনার ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া ঔষধ বন্ধ করা যাবে না এতে করে বিপরীত প্রভাব পড়তে পারে।
এটি ব্যবহার করার সময় ভারী যন্ত্রপাতি ড্রাইভ বা পরিচালনা নিরাপদ?
এটির ব্যবহার কিছু লোকের মাথা ঘোরা বিভ্রান্তি বা বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়ার পর বাইরে না যাওয়া এবং কোন যানবাহন বা যন্ত্রপাতি না চালানো উচিত।
গর্ভাবস্থায় মোনাস ১০ ব্যবহার করা যাবে কি না?
হ্যা, গর্ভাবস্থায় মোনাস ১০ ব্যবহার করা যাবে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সেবন করবেন।
মোনাস ১০ কি এন্টিবায়োটিক?
না। মোনাস ১০ এন্টিবায়োটিক নয়।
মোনাস ১০ এর কাজ কি
আজকে আমরা মোনাস ১০ এর কাজ কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি এবং এর বিকল্প ঔষধ এবং মোনাস ১০ ব্যবহারের নিয়মসহ এ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি মোনাস ১০ এর কাজ কি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন সব আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।
আর পড়ুন –
- নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ঢাকা তালিকা
- চোখের এলার্জির ড্রপের নাম, চোখের এলার্জি দূর করার উপায়
- ডাস্ট এলার্জি কেন হয় ও ডাস্ট এলার্জি চিকিৎসা বিস্তারিত