গ্যাস সিলিন্ডারের দাম
বর্তমান সময়ে সব জিনিসেরই দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। সিলিন্ডারের দামও দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। আগে গ্রামে না থাকার পরে সিলিন্ডার ব্যবহার করা হতো। এখন শহরের নতুন নতুন বাসা বাড়িতে এবং গ্যাস লাইন দেওয়া হচ্ছে না বলে সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হয়। অনেকেই আজকের গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত বা এলপিজি গ্যাসের দাম কত সে সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করে থাকেন।
তাই আজকে আমরা গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত এবং গ্যাস সিলিন্ডার কিভাবে সাশ্রয় ভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালো লাগবে।
আরো পড়ুন – কম খরচে কুয়াকাটা হোটেল লিস্ট ও ভাড়া তালিকা
সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ
বাংলাদেশে বর্তমানে ১৮ টি কোম্পানি এলপি গ্যাস বাজারজাতকরণ করছে। তার মধ্যে অন্যতম প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-
- বসুন্ধরা এলপি গ্যাস
- টোটাল এলপি গ্যাস
- ওমেরা এলপি গ্যাস
- যমুনা এলপি গ্যাস
- ইনডেক্স এলপি গ্যাস
- বিএমএলপি গ্যাস
- লাফস এলপি গ্যাস
- জেএমআই এলপি গ্যাস
- ইউনিভার্সেল এলপি গ্যাস
- নাভানা এলপি গ্যাস
- সেনা এলপি গ্যাস বি
- ইট্রো মেক্স
আজকের গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ২০২৩
প্রায় প্রতি মাসে এলপি গ্যাসের দাম কম বেশি হচ্ছে তাই এখানে সকল প্রকারের সিলিন্ডারের দাম এবং বিক্রয় মূল্য তালিকা দেওয়া আছে। এ তালিকা অনুসারে বা বিভিন্ন ওজনের এলপিজি এবং বসুন্ধরা লিমিটেডের জ্বালানি গ্যাস কিনতে পাওয়া যাবে। সর্বশেষ বাজার মূল্য অনুসারে এলপি গ্যাসের আজকের দাম এবং প্রতি কেজি সিলিন্ডার গ্যাসের তালিকা নিচে যুক্ত করা হয়েছে। অনেক জায়গার বাজারের মূল্য সময়ের ব্যবধানে কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে। নিচে আজকের গ্যাস সিলিন্ডারের দাম তালিকা দেওয়া হলো-
সাড়ে পাঁচ কেজি ওজনের সিলিন্ডার দাম- ৫৮৯ টাকা
১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম- ১২৮৪ টাকা
সাড়ে ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম- ১৩৩৮ টাকা
১৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ১৬০৫ টাকা
১৬ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ১৭১২ টাকা
১৮ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ১৯২৬ টাকা
২০ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ২১৪০ টাকা
২২ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ২২৫৫ টাকা
২৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ২৬৭৫ টাকা
৩০ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ৩২১০ টাকা
৩৩ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ৩৫৫১ টাকা
৩৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ৩৭৪৫ টাকা
৪৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম- ৪৮১৫ টাকা
গ্যাস বাঁচানোর উপায়
অনেকের বাড়িতে রান্নার জন্যই সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। সেজন্য প্রতি মাসে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। যত কম গ্যাস খরচ করে রান্নার পর্ব সেরে নেওয়া যায় ততই বাচবে গ্যাস। নিচে এমন কিছু টিপস দেয়া হলো যেগুলো মেনে চললে গ্যাস সাশ্রয় করা সহজ হবে-
রান্নার উপকরণ গুছিয়ে রাখা- রান্না শুরু করার প্রয়োজনীয় সবকিছু উপকরণ প্রথমে গুছিয়ে নিতে হবে। যখন যেটা প্রয়োজন সেটা হাতের কাছেই যাতে পাওয়া যায়। এতে করে সময় কম নষ্ট হবে গ্যাসও বাঁচবে।
ঢেকে রান্না করা- চেষ্টা করবেন সব সময় রান্না ঢেকে করার জন্য। খাওয়া তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হবে সময় এবং গ্যাস দুটোই বেঁচে যাবে। প্রায় সবার বাড়িতে মাংস কমবেশি রান্না হয় তাই ঢেকে রান্না করলে পানি কম লাগবে সেদ্ধ তাড়াতাড়ি হবে।
প্রেসার কুকারে রান্না করা- বেশিরভাগ বাড়িতে প্রেসার কুকার থাকে। প্রেসার কুকারে রান্না করলে গ্যাস খুব সাশ্রয়ী হবে আবার রান্নায় পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। বেশি পানি দিলে তা কমাতেও সময় লাগবে তাই মাংস রান্না থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাত বা তরকারি ও প্রেসার কুকারে রান্না করা যায়।
চুলার আচ মাঝারি আচে রাখুন- চুলার আচ মাঝারি রাখার চেষ্টা করতে হবে। বেশি আচে রান্না করলে খাবার সেদ্ধ হওয়ার আগেই পুড়ে যায় এবং অল্প আঁচে রান্না করলে গ্যাস বেশি খরচ হয়। চা-কফি তা তৈরির জন্য বারবার পানি গরম করার চাইতে একেবারে গরম করে ফ্লাক্সে রেখে দিতে পারেন এতে করে গ্যাস অনেকটা সাশ্রয় হবে।
সঠিক মাপের পাত্র ব্যবহার করা- খেয়াল রাখতে হবে রান্নার পাত্র যেন সঠিক মাপের হয়। যে পাত্রে রান্না করবেন তার মাপ যেন সঠিক হয় প্রয়োজনের তুলনায় ছোট পাতিলে রান্না করলে আচ বাইরে বের হয়ে যায়। আর বড় পাতিলে রান্না করলেন গরম হতে সময় নেয়। তাই সঠিক মাপের পাত্রে রান্না করে উত্তম।
যেসব কারণে সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে
গ্যাস সিলিন্ডারের দাম সম্পর্কে আজকে আমরা জানলাম। তবে কি কি কারনে সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয় তা অবশ্যই জেনে রাখা দরকার।
- গ্যাস লিক হলে
- সব সময় চুলা জ্বালিয়ে রাখলে
- রাতে চুলা জ্বালিয়ে রাখলে
- গ্যাসের পাইপ লিক হলে
- চুলার ফিটিং লুজ হলে
- সিলিন্ডার ছিদ্র হওয়ার পরেও পরিবর্তন না করে জোড়া তালি দিলে
- সিলিন্ডার চুলার খুব কাছাকাছি রাখলে
- সিলিন্ডার বদলানোর সময় চুলা বন্ধ না রাখলে
গ্যাস সিলেন্ডারের দুর্ঘটনা এড়াতে করনীয়
উপরে আমরা গ্যাস সিলিন্ডারের দাম উল্লেখ করেছি । এখন জানব গ্যাস সিলেন্ডারের দুর্ঘটনা এড়াতে করনীয় কি-
- এলপিজি সিলিন্ডার খাড়া করে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে উপর বা কাত করে রাখা যাবে না।
- এমন ভাবে রাখতে হবে যেন আশপাশে কোন কিছুই সাথে ধাক্কা না লাগে
- সিলিন্ডার কোন পাটার উপর না বরং মাটিতে সমতলপৃষ্ঠে রাখতে হবে এবং
- চুলা সিলিন্ডার থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উপরে রাখতে হবে
- সিলিন্ডার কোনোভাবেই চুলার আগুনের খুব কাছাকাছি রাখা যাবে না
- সিলিন্ডারটি লম্বা পাইপের সাহায্যে চুলা থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে স্থাপন করতে হবে
- সিলেন্ডার রান্নাঘরের চুলার নিচে ক্যাবিনেটের ভিতরে কিংবা বদ্ধ অবস্থায় না বরং খোলামেলা জায়গা এবং সমান সমভূমিতে রাখতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস চলাচল করে।
- সিলিন্ডার সরাসরি সূর্যের আলো নিচে রাখা যাবে না ছায়াযুক্ত শুকনো পরিষ্কার স্থানে রাখতে হবে
- সিলিন্ডার যেখানে থাকবে সেখানকার একটি জানালা সব সময় খোলা রাখার চেষ্টা করতে হবে
- না হলে ঘরের উপরেও নিচে পর্যাপ্ত ফেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে হবে
- সিলিন্ডার পরিবর্তনের সময় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন চুলা চালানো না থাকে
- আগুন বিদ্যুৎ এবং তাপের যেকোনো উৎসব সেইসঙ্গে ধার্য প্রচলিত বা বিস্ফোরক পদার্থ এবং ভিন্ন কোন গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে এলপিজি সিলিন্ডার দূরে রাখতে হবে।
- যেখানে সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে তার আশেপাশে আগুন জ্বালানো ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- সিলিন্ডারের উপরে ভারী বোঝা রাখা যাবে না
- রান্না শুরু করার আধা ঘন্টা আগে রান্না ঘরে দরজা জানালা খুলে দিতে হবে
- এবং রান্না শেষে চুলার lg সিলিন্ডারের রেগুলেটর সুইচ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে
- অনেকদিনের বদ্ধ ঘরে প্রবেশের পর সবার আগে দরজা জানালা খুলে দিতে হবে
- যদি ঘরের ভিতরে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায় তাহলে দরজা জানালা খুলে দিয়ে সাথে সাথে ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে
- এ সময়ের মধ্যে ম্যাচের কাঠি জ্বালানো ইলেকট্রিক সুইচ সিলিন্ডারে যেগুলো মোবাইল ফোন অন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অনেক সময় অনেকে সিলিন্ডারে লিকেজ খোঁজার সময় মোমবাতিমা ম্যাচের কাঠি ব্যবহার কনসেটা কোন অবস্থাতে করা যাবে না।
- অতিরিক্ত গ্যাস বের করার জন্য এলপিজি সিলিন্ডারে চাপ দেয়া ঝাকানো কিংবা সিলিন্ডার গরম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- এতে তরল এলপিজি দ্রুত গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে অস্বাভাবিক চাপ পেরে বিসফরিত হতে পারে।
- পূর্ণ সিলিন্ডার যেকোনো দুই চাকার যানজট মোটরসাইকেল কিংবা ভারসাম্য কম এমন বাহনে পরিবহন করা যাবে না
- এছাড়া বছর অন্তত একবার গ্যাস সিলিন্ডারটি এবং এর সাথে ব্যবহার হওয়া নানা রকম সামগ্রিক নিয়মিত ডিস্ট্রিবিউটর সরবরাহকারী দিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
- সিলিন্ডারে বালব গ্যাসের পাইপা ফিটিংস দুর্বল হলে কিংবা সিলিন্ডারের ছিদ্র থাকলে সেটা সাথে সাথে বদলে ফেলতে হবে মেরামত বা ঝালাই করা যাবে না।
- তেল বা পিচ্ছিল কোন পদার্থ সিলিন্ডারে ব্যবহার করে নাড়াচড়া করা থেকে বিরত থাকতে হবে
- যেকোনো ধরনের জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাসা বিশেষ করে রান্নাঘরের মধ্যে নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি যেমন গ্যাস ডিটেক্টর এবং ফায়ার এক্সিটিং কিংবা হাতের কাছে কম্বলের মত মোটা কাপড় রাখা যেতে পারে।
গ্যাস সিলিন্ডারের দাম
আজকে আমরা আজকের গ্যাস সিলিন্ডারে দাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি এবং পাশাপাশি সিলিন্ডারের সম্পর্কে কিছু টিপস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মন্তব্য মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আমরা অতি শীঘ্রই রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন নতুন নতুন সব আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইট বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।
আরো পড়ুন –
- মোনাস ১০ এর কাজ কি? মোনাস ১০ বিকল্প মেডিসিন
- দূর থেকে ভালোবাসার স্ট্যাটাস, উক্তি, পোষ্ট, কবিতা
- স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা ইসলামিক স্ট্যাটাস, উক্তি