কাটা দাগ মোছার ক্রিম
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। মানুষের সৌন্দর্যের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তার চেহারা। একজন মানুষের চেহারা তত বেশি সুন্দর এবং নিখুত তাকে দেখতে ততটা ভালো লাগে। কোন কারণে যদি আপনার মুখে কাটা দাগ থাকে বা পুড়ে যাওয়া দাগ থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা কাটা দাগ মোছার ক্রিম, কাটা দাগ দূর করার ঔষধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে।
আরো পড়ুন – হাত ফাটার ক্রিম এর নাম
কাটা দাগ দূর করার ঔষধ
শরীরের যেকোন যায়গার কাটা দাগ দূর করার ভালো ক্রিমের নাম হলো TCM cream. বাংলাদেশী নামি বেনামি অনেক কোম্পানির কাটা দাগ মোছার ক্রিম ও রয়েছে তবে TCM cream হচ্ছে সম্পূর্ন বিদেশী ও শতভাগ কার্যকরী। আপনি যদি আসল TCM cream ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অবশ্যই শরীরের কাটা দাগ বা পোড়া দাগ দূর হবেই।
এটা সত্য যে দাগের ধরনের উপর নির্ভর করে কোন কোন সময় সম্পূর্ন দাগ দূর করা সম্ভব হয় না তবে লম্বা সময় ব্যবহার করলে শরীরের কাঁটা দাগ/ পোড়া দাগ অনেকাংশেই দূর হয়ে যায়।
কাটা দাগ মোছার ক্রিম প্রাইস – TCM cream price in bd
বাংলাদেশে কাটা দাগ মোছার ক্রিম দাম ৪০০ – ৪৫০ টাকার মত পড়বে। তবে খেয়াল রাখতে হবে TCM Cream টি বাংলাদেশী নয় তাই আপনি সরাসরি কোন কিনতে পারবেন না। দারাজ সহ অনেক অনলাইন মার্কেটে বিভিন্ন সেলার এই পন্যগুলো আমদানি করে বিক্রি করে। বিশ্বস্থ কোন সেলার এর মাধ্যমে পন্যটি ক্রয় করতে পারেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন ঔষধের দোকানে TCM Cream টি কিনতে পাওয়া যায় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো অরিজিনাল হয় না। তাই কেনার আগে অবশ্যই চেক করে দেখতে হবে ক্রিমটি আসল কিনা। উপরে আমরা আসল ও নকল ড্রোনের একটি ছবি দিয়েছি। এছাড়াও ক্রিমটি হাতে নিলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন এটি আসলে কি না।
আরো পড়ুন – মেয়েদের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভালো ডে ক্রিম কোনটি
কাটা দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
কোন কারনে আপনি যদি কাঁটা দাগ দূর করার জন্য ক্রিম ব্যবহার করতে না যান সে ক্ষেত্রে আমরা ঘরোয়া কিছু উপায় বলে দিতে পারি। আশা করছি এই ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরণ করলে কিছুটা হলেও কাটা দাগ দূর হয়ে যাবে।
মধু – প্রতিদিন কাটা দাগের যাওয়গায় সামান্য কিছু মধু লাগিয়ে রাখুন এবং ফলাফল পেতে নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরন করুন। এছাড়াও সামান্য গরম পানিতে কয়েকফোটা মধু মিশিয়া কাটা দাগের স্থানে লাগাতে পারেন।
লেবুর রস – লেবুর রসের উপকারিতা আমরা কম বেশি সবাই জানি। শরীরের কোন জায়গায় কাটা দাগ থাকলে নিয়মিত লেবুর রস মাখাতে পারেন। এতে করে কাটা স্থানের দাগ অনেকাংশেই দূর হয়ে যাবে।
শষা – কাটাস্থানে নিয়মিত কাচা শষা মাখার আলাদা একটা উপকারিতা রয়েছে। শষার কষ কাটা দাগ দূর করতে অনেক ভালো ভূমিকা রাখে।
আলোভেরা – এলোভেরা ত্বক এবং চুলের জন্য বেশ কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। নিয়মিত এলোভেরা রস মুখে মাখলে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং কাটা দাগ থাকলে তার দূর হয়।
মেথি পাতার রস – অনেকেই জানেনা কিন্তু মেসি পাতার রস ত্বকের জন্য বেশ উপকারী একটি জিনিস। আপনার ত্বকে পুরাতন পোড়া দাগ কিংবা কাটা দাগ থাকলে মেথি পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন। লম্বা সময় ব্যবহারে মুখের কাটা দাগ দূর করে মেথি পাতার রস।
কাঁচা হলুদ বাটা – কাঁচা হলুদ সাধারণ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়। তবে কাঁচা হলুদ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবেও কাজ করে। শরীরের কোন অংশের কাটা বা পোড়া দাগ দূর করার জন্য কাঁচা হলুদ বাটা খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
উপরে আমরা কাটা দেয় দূর করার ঘরোয়া কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে। আপনাকে সবগুলো উপাদান একসাথে ব্যবহার করতে হবে না। খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন আপনার ত্বকের জন্য কোন উপাদানটি ভালো কাজ করে। কেননা শরীরের গঠন ও ত্বকের ধরন অনুযায়ী এক একজনের শরীরে এক এক উপাদান ভালো কাজ করে।
কাটা দাগ দূর করার ডাক্তারি উপায়
এতক্ষন আমরা শরীরের কাটা বা পোড়া দাগ দূর করার কাটা দাগ মোছার ক্রিম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই পর্যায়ে আমরা কাটা দাগ দূর করার ডাক্তারি উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। অর্থাৎ ডাক্তারি ছোট খাটো কিছু সার্জারি ও চিকিৎসার মাধ্যমে শরীরের পোড়া দাগ কিংবা কাটা দাগ খুব সহজেই দূর করা যায়।
শরীরের পোড়া দাগ দূর করার ডাক্তারি উপায় –
স্কার রিভিশন – এই পদ্ধতিতে শরীরের বড় কোন কাটা নাই কিংবা পোড়া দাগ থাকলে তা সুন্দর ও চিকন করা। হয় আপনার শরীরে যদি এমন কোন দাগ থাকে যা সম্পূর্ণরূপে দূর করা সম্ভব নয় তবে স্কার রিভিশন আপনার জন্য ভাল একটা অপশন হতে পারে। এতেকরে আপনার কাটা দাগ কিছুটা চিকন ও সুন্দর হবে যাতে মানুষের চোখে কম পড়ে।
মাইক্রোনিডলিং – এই পদ্ধতিতে কাটা বা পোড়াদাগের উপর সুই দিয়ে অসংখ্য ছিদ্র করা হয় এতে করে দাগ শুকানোর সময় কিছু কমে যায়।
ডার্মাবেশন – এক বিশেষ ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে শরীরের কাটা বা পুড়ে যাওয়া অংশে ঘষা দেয়া হয়। এতে করে শুকানোর সময় দাগ কিছুটা লোপ পায়।
স্কিন গ্রাফট – শরীরের কোন অংশ পুড়ে গেলে বা কেটে বিকৃত হয়ে গেলে অন্য অংশের চামড়া নিয়ে এসে বিকৃত অংশ মুছে দেয়া হয়। এই বিশেষ পদ্ধতির নাম হচ্ছে স্কিন গ্রাফট।
ফিলার – শরীরের কোন অংশ গর্ত হয়ে গেলে শরীরের চর্বি দিয়ে গর্ত ফিলাপ করার পদ্ধতিকে বলা হয় ফিলার। এই পদ্ধতিতে কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া শরীরের ছোট ছোট গর্তগুলো পূরন করা যায়।
স্কিন রিমুভেবল – শরীরের কোন অংশের বড় স্থান পড়ে গেলে ঐ পোড়া চামড়া সম্পূর্ন ফেলে দেয়া হয়। এই বিশেষ ধরনের পদ্ধতিকে বলা হয় স্কিন রিমুভেবল।
লেজার পদ্ধতি – লেজারের মাধ্যমে শরীরের হালকা দাগ বা ব্রোনের দাগগুলো খুব সহজেই তুলে ফেলা যায়।
নাকের কাটা দাগ দূর করার উপায়
নাকের কাটা দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় + কাটা দাগ দূর করার ডাক্তারি উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই পর্যায়ে আমরা দেখবো নাকের কাটা দাগ দূর করার উপায় গুলো কি
নাকের কাটা বা পোড়া দাগ মূলত দুইভাবে দূর করা হয়।
- ক্রিমের মাধ্যমে
- সার্জারি মাধ্যমে
নাকের ছোট অংশ যদি কেটে যায় বা পুড়ে যায় তাহলে সাধারনত ডাক্তাররা ক্রিমের মাধ্যমে চিকিতসা দিয়ে থাকেন। তবে যদি দাগ অনেক পুরাতন ও বড় হয় সেক্ষেত্রে সার্জারির মাধ্যমে চিকিতসা করা হয়।
নাকের কাটা দাগ দূর করার জন্য TCM cream বেশ জনপ্রিয়। এর সার্জারির জন্য কসমেটিক সার্জারি ব্যবহার করা হয়। সাধারনত রোগীর বয়স ও কাটা দাগের ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা চিকিতসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
তলপেটের কাটা দাগ দূর করার উপায়
সিজারে বাচ্চা হওয়ার পরে নারীদের তলপেটে এক ধরনের কাটা দাগ রয়ে যায়। নারীদের এই তলপেটের কাটা দাগ দূর করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে স্কার রিভিশন। এই ছোট সার্জারির মাধ্যমে শরীরের যেকোন কাটা ও পুড়ে যাওয়া দাগকে চিকন ও সুন্দর করা সম্ভব হয়। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই দাগ সম্পূর্ন মুছে ফেলা সম্ভব হয় না তবুও অনেকাংশ ই কমে যায়।
মন্তব্য
আজকে আমরা কাটা দাগ মোছার ক্রিম, কাটা দাগ দূর করার ঔষধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে। কোন প্রশ্ন বা মতামত জানার থাকলে এই পোষ্টের কমেন্ট বক্সে করতে পারেন। আমরা দ্রুত উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ
আরো পড়ুন –